Loading AI tools
বাংলাদেশের রাজবাড়ি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
মং রাজবাড়ি বাংলাদেশ এর বাণিজ্য ও পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বিভাগ এর খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার মহামূনি নামক স্থানে অবস্থিত এক ঐতিহাসিক রাজবাড়ি। যা মূলত একটি চট্টগ্রামের পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর স্বায়ত্তশাসিত রাজবংশ ছিল।[1]
মং রাজবাড়ি | |
---|---|
বিকল্প নাম | মং সার্কেলের রাজবাড়ি মং রাজার রাজবাড়ি মানিকছড়ির মং রাজবাড়ি |
সাধারণ তথ্যাবলী | |
ধরন | বাসস্থান |
অবস্থান | মানিকছড়ি উপজেলা |
শহর | মানিকছড়ি উপজেলা, খাগড়াছড়ি জেলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
উন্মুক্ত হয়েছে | ১৭৯৬ |
স্বত্বাধিকারী | মূল প্রতিষ্ঠাতা - কংজয় ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বীকৃতি পাওয়া - কিওজা |
কারিগরী বিবরণ | |
উপাদান | ইট, সুরকি ও রড |
বাংলাদেশের বাণিজ্য ও পর্যটনের প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রামে পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে কয়েক শতাব্দী ধরে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা বাস করে। ঐ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর একটি হচ্ছে মং। আর এই মং নৃগোষ্ঠীর একটি আলাদা স্বায়ত্তশাসিত রাজশাসন ছিল। যা মং রাজবংশ নামে পরিচিত। প্রায় ১৭৯৬ সালে খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার মহামূনি নামক স্থানে রাজা কংজয় ত্রিপুরা রাজবংশের রাজকন্যাকে বিয়ে করে ত্রিপুরা রাজ্যের পাঁচশত পরিবার নিয়ে এখানে এসে এই রাজবংশ ও রাজবাড়িটি প্রতিষ্ঠা করেন। তবে তিনি এই রাজবংশ প্রতিষ্ঠা করলেও ভারত ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে প্রথম রাজা ও রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে তার পুত্র কিওজা স্বীকৃতি পান। রাজা কিওজার বয়স যখন মাত্র সাত বছর, তখন তার বাবা কংজয় ১৮২৬ সালে মারা যান। তাই এই রাজশাসন পরিচালনার জন্য একই বছর কিওজাকে সাত বছর বয়সেই সিংহাসনে আহরণ করতে হয়। প্রায় চৌদ্দ বছর যাবৎ তিনি তার চাচার তত্ত্বাবধায়নে উক্ত রাজবংশটি পরিচালনা করেন। তারপর একাধারে এই রাজবংশের বংশধররা উক্ত রাজশাসনটি পরিচালনা করতে থাকেন।
মং রাজবংশের সপ্তম রাজা মং প্রু সাইন মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি মিলিটারীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েন। মুক্তিবাহিনীদেরকে যুদ্ধ করার জন্য তার রাজ্যে ব্যবহৃত প্রায় ত্রিশ ধরনের অস্ত্র, গাড়ি ও খাবারের রসদ যোগান দেন। এছাড়াও যুদ্ধের সময় ভারতে আশ্রয়গ্রহণকারী বাংলাদেশী শরনার্থীরা যাওয়ার সময় উক্ত রাজবাড়িটিতে বিশ্রাম নিতেন। আর শরনার্থীদের জন্য রাজা খাবার, চিকিৎসা ও থাকার ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাজবাড়িতে আক্রমণ করলে রাজা তার পুরো পরিবার নিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। আর সেখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে ট্যাংক বহরের সাথে তিনি বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যার জন্য তিনি মিত্রবাহিনীর কাছ থেকে অনারারি কর্নেল র্যাঙ্ক পদবীতে ভূষিত হন। যুদ্ধ শেষে তিনি তার পরিবার নিয়ে উক্ত রাজবাড়িতে ফিরে আসেন। ১৯৮৪ সালে রাজা মং প্রু সাইন মুত্যুবরণ করেন।
জেলার প্রবেশদ্বার মানিকছড়ি উপজেলা ঐতিহাসিক মং সার্কেলের চীফ মং রাজার পুরাতন আদিনিবাস। তার পাশে জেলার একমাত্র বিশ্ব শান্তি উদ্দেশ্যে স্থাপিত রাজ মহামূনি বৌদ্ধ চৈত্য। চৈত্য টিলায় অনেক শত বছরের বটবৃক্ষ এবং স্থাপত্য শৈলী কালের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে আছে। রাজ প্রাসাদের হাজারো স্মৃতি বুকে লালন করে, এলাকার পাহাড়ি ও পুরাতন বাংগালী প্রজারা এখনো কেঁদে উঠে ঠুকরে ঠুকরে।
বর্তমানে রাজা সাচিংপ্রু চৌধুরী খাগড়াছড়ি সদরের গোলাবাড়ী হেডম্যান পাড়ায় (রাজ পাড়া) স্থায়ী ভাবে বসবাস করছে। মানিকছড়ির মং রাজার ঐতিহাসিক স্থাপত্য নির্দশন গুলো বর্তমানে বিলুপ্ত পথে রয়েছে । মং রাজা মংপ্রু সাইন আমলে মায়ানমার (বার্মা) মান্ডালয় থেকে বিশ্ব শান্তি মহামূনি রাজ বৌদ্ধ চৈত্যের মূহামনি বুদ্ধ মূর্তি স্থাপন করেন । তখন থেকে প্রতি বছরের পহেলা বৈশাখে ১৪ এপ্রিল মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উপলক্ষে মেলা বসে আসছে । এখানে আসা র্দশনার্থীরা মহামুনি বুদ্ধ চৈত্যের ঢুকলে ভেঙ্গে পড়ার আশংক্ষা করেছেন অনেক পুন্যার্থীরা। এ ছাড়া মহামুনি টিলায় সিড়িঁ গুলো বিভিন্ন অংশে ফাটল ও ভেঙ্গে গেছে । এই স্থাপনা গুলো বর্তমানে সংষ্কারের অভাবে বিভিন্ন অংশের ফাটল দেখা দিয়েছে। এছাড়া মুহামনি টিলায় পূরাকীর্তি স্থাপত্য মং রাজ পরিবারের রাজা ও পরিবারে সদস্যদের স্বৃতি মঠ, নানুমা দেবী হল, রাজ জেত বন বৌদ্ধ বিহার সহ গুরুত্ব পূর্ণ স্থাপনা গুলো সংস্কারের অভাবে বিলীনের পথে রয়েছে।
খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মানিকছড়ি আমতল অথবা মহামূনি নামক স্থানে নেমে রিক্সাই অথবা পায়ে হেঁটে মং রাজবাড়ীতে যাওয়া যায়।[2]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.