বোম্বে রাজ্য
ভারতের স্বাধীনতার সময় প্রতিষ্ঠিত একটি বৃহৎ ভারতীয় রাজ্য উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বোম্বে রাজ্য ছিল ভারতের স্বাধীনতার সময় প্রতিষ্ঠিত একটি বৃহৎ ভারতীয় রাজ্য। পরবর্তী বছরগুলোতে বোম্বে রাজ্যের সাথে অন্যান্য আরও কিছু অঞ্চল যুক্ত হয়। বোম্বে প্রেসিডেন্সি (মোটামুটি দক্ষিণ মহারাষ্ট্র এবং বিদর্ভকে বাদ দিয়ে বর্তমান ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের সমান) বড়োদা, পশ্চিম ভারত এবং গুজরাত (বর্তমান ভারতীয় গুজরাত রাজ্য) এবং ডেকান রাজ্য এজেন্সির দেশীয় রাজ্যগুলোর (যার মধ্যে বর্তমান ভারতের মহারাষ্ট্র এবং কর্ণাটক রাজ্যের কিছু অংশ অন্তর্ভুক্ত ছিল) সাথে একীভূত হয়ে এই প্রদেশ গঠিত হয়েছিল। ১৯৫৬ সালের ১ নভেম্বরে রাজ্য পুনর্গঠন আইনের অধীনে ভাষাতত্ত্বের ভিত্তিতে বোম্বে রাজ্য পুনর্গঠিত হয়। এর ফলে সৌরাষ্ট্র এবং কচ্ছ রাজ্য বিলুপ্ত হয়ে বোম্বে রাজ্যের সাথে একীভূত হয়ে যায়। পরবর্তী কালে ১৯৬০ সালের ১ মে তারিখে ভাষার ভিত্তিতে বোম্বে রাজ্য দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। উত্তরাংশের গুজরাতি সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চল নিয়ে গঠন করা হয় গুজরাত রাজ্য এবং বাকি মারাঠি ভাষী অঞ্চল নিয়ে মহারাষ্ট্র রাজ্য। [১]
বোম্বে প্রদেশ
(১৯৪৭–১৯৫০) | |||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
ভারতের প্রাক্তন রাজ্য | |||||||||||||||||||
১৯৪৭–১৯৬০ | |||||||||||||||||||
বোম্বে রাজ্য, ১৯৫৬-১৯৬০ | |||||||||||||||||||
বোম্বে রাজ্য (১৯৪৭–১৯৫০) | |||||||||||||||||||
রাজধানী | বোম্বে (১৫ আগস্ট ১৯৪৭† থেকে ১ মে ১৯৬০)† | ||||||||||||||||||
আয়তন | |||||||||||||||||||
• ১৯৫৬ | ৪,৯৪,৩৫৮ বর্গকিলোমিটার (১,৯০,৮৭৩ বর্গমাইল) | ||||||||||||||||||
জনসংখ্যা | |||||||||||||||||||
• ১৯৫৬ | 48,264,622 | ||||||||||||||||||
ইতিহাস | |||||||||||||||||||
• বোম্বে প্রেসিডেন্সি, ডেকান রাজ্য এজেন্সি এবং বরোদা, পশ্চিম ভারত ও গুজরাত রাজ্য এজেন্সির (আংশিক) বিলুপ্তি | ১৯৪৭ | ||||||||||||||||||
• Merged কচ্ছ রাজ্য | ১৯৫৬ | ||||||||||||||||||
• Merged সৌরাষ্ট্র রাজ্য | ১৯৫৬ | ||||||||||||||||||
• বিদর্ভ যুক্ত হয় | ১৯৫৬ | ||||||||||||||||||
১৯৬০ | |||||||||||||||||||
| |||||||||||||||||||
১৯৪৭ সাল থেকে ভারতের রাজ্য |
ইতিহাস
ব্রিটিশ শাসনামলে প্রত্যক্ষ ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ভারতের পশ্চিম উপকূলের একটি অংশ বোম্বে প্রেসিডেন্সির অংশ ছিল। ১৯৩৭ সালে বোম্বে প্রেসিডেন্সি ব্রিটিশ ভারতের একটি প্রদেশে পরিণত হয়।[২][৩]
১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীনতা লাভের পরে বোম্বে প্রেসিডেন্সি ভারতের অংশে পরিণত হয় এবং সিন্ধু প্রদেশ পাকিস্তানের অংশ হয়। ভারত কর্তৃক রক্ষিত অঞ্চলটি নিয়ে বোম্বাই রাজ্যে গঠন করা হয়। এর মধ্যে ডেকানের কোলহাপুর, এবং গুজরাতের বরোদা এবং ডাংয়ের মতো রাজ্যগুলি অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা পূর্বে বোম্বে প্রেসিডেন্সির রাজনৈতিক প্রভাবের অধীনে ছিল।
রাজ্যের সম্প্রসারণ
রাজ্য পুনর্গঠন আইনের ফলে ১৯৫৬ সালের ১ নভেম্বরে কন্নড়ভাষী বেলগাভি (চাঁদ্গাদ তালুক ব্যতীত), বিজাপুর, ধারওয়াড়, এবং উত্তর কন্নড় জেলা বোম্বে রাজ্য থেকে মহীশূর রাজ্যে স্থানান্তর করা হয়।[৪]
তবে বোম্বাই রাজ্যটি উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসারিত হয়েছিল। হায়দ্রাবাদ রাজ্যের মারাঠাওয়াড়া অঞ্চল, দক্ষিণ মধ্য প্রদেশের মারাঠি-ভাষী বিদর্ভ অঞ্চল এবং গুজরাতি-ভাষী সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ রাজ্যগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য পূর্ব দিকে প্রসারিত হয়েছিল।বোম্বে রাজ্যকে স্থানীয় বাসিন্দারা "মহা দ্বিভাষি রাজ্য" বলতো।[৩]
১৯৫৬ সালে জওহরলাল নেহেরুর ইচ্ছার বিপরীতে রাজ্য পুনর্গঠন কমিটি বোম্বে রাজ্যের বদলে বোম্বেকে (বর্তমান মুম্বই) রাজধানী করে "মহারাষ্ট্র-গুজরাত" হিসেবে একটি দ্বিভাষিক রাজ্য প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছিল। ১৯৫৫ সালে লোকসভায় আলোচনায় ক্ষমতাসীন কংগ্রেস এই বোম্বে শহরটিকে একটি স্বায়ত্তশাসিত শহর হিসাবে গঠনের দাবি করেছিল।[৫]
১৯৫৭ সালের নির্বাচনে, সংযুক্ত মহারাষ্ট্র আন্দোলন উভয় প্রস্তাবেরই বিরোধিতা করে বোম্বেকে মহারাষ্ট্রের রাজধানী হিসাবে ঘোষণা করার জন্য জোর দাবি করে।[৬]
বোম্বে রাজ্যের বিলোপ
পরবর্তী কালে ১৯৬০ সালের ১ মে তারিখে ভাষার ভিত্তিতে বোম্বে রাজ্য দুই ভাগে বিভক্ত করে মহারাষ্ট্র এবং গুজরাত রাজ্য গঠন করা হয়।[৭]
সংযুক্ত মহারাষ্ট্র আন্দোলনের পরিচালিত বিক্ষোভের পুলিশের গুলিতে ১০৭ জন নিহত হওয়ার ফলশ্রুতিতে বোম্বে রাজ্যকে ভাষাগত ধারায় পুনর্গঠিত করা হয়।[৮]
বোম্বে রাজ্যের গুজরাতি-ভাষী অঞ্চলগুলোতে মহাগুজরাত আন্দোলনের পর সেসব অঞ্চল বোম্বে রাজ্য থেকে বিচ্ছিন্ন করে গুজরাত রাজ্য গঠন করা হয়।[৯] বোম্বেকে রাজধানী বোম্বে রাজ্যের মারাঠি-ভাষী অঞ্চল, মধ্য প্রদেশ ও বেরার থেকে আটটি জেলা, হায়দরাবাদ রাজ্যের পাঁচটি জেলা এবং এদের সাথে সংযুক্ত অসংখ্য দেশীয় রাজ্য অসংখ্য একীভূত করে মহারাষ্ট্র রাজ্য গঠিত হয়। [১০]
মুখ্যমন্ত্রী
ভারতের স্বাধীনতার পরে বোম্বে রাজ্যের তিনজন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন:
- বালসাহেব গঙ্গাধর খের বোম্বের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন।(১৯৪৬–১৯৫২)
- মোরারজি দেসাই (১৯৫২–১৯৫৬)
- যশবন্ত রাও চাঁন (১৯৫৬–১৯৬০)
গভর্নর
১৯৬০ সালে "বোম্বেয়ের গভর্নর" পদবি মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল হিসাবে স্থানান্তরিত হয়েছিল। [১১]
# | নাম | দায়িত্ব শুরু | সমাপ্তি | দায়িত্বকাল (বছর) |
---|---|---|---|---|
১ | রাজা স্যার মহারাজ সিংহ | ৬ জানুয়ারি ১৯৪৮ | ৩০ মে ১৯৫২ | ৪ |
২ | স্যার গিরিজা শঙ্কর বাজপাই | ৩০ মে ১৯৫২ | ৫ ডিসেম্বর ১৯৫৪ | ২ |
৩ | হরেকৃষ্ণ মাহতাব | ২ মার্চ ১৯৫৫ | ১৪ অক্টোবর ১৯৫৬ | ১ |
৪ | শ্রী প্রকাশ [f] | ১০ ডিসেম্বর ১৯৫৬ | ১৬ এপ্রিল ১৯৬২ | ৬ |
সূত্র : মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল [১১] এবং বৃহত্তর বোম্বে জেলা গেজেটিয়ার
- চিত্রানুগ
আরও দেখুন
- ভারতের রাজনৈতিক সংহতকরণ
- পৃথক মারাঠি রাজ্যের জন্য সংযুক্ত মহারাষ্ট্র আন্দোলন
- পৃথক গুজরাতি রাজ্যের জন্য মহাগুজরাত আন্দোলন।
তথ্যসূত্র
Wikiwand in your browser!
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.