Loading AI tools
আকবরের দরবারে মোগল সভ্য, বহু লোককাহিনীতে হাজির হন যা তাঁর বুদ্ধির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বীরবল অথবা রাজা বীরবল (আ-ধ্ব-ব: [biːrbəl]; জন্মসূত্রে নাম মহেশ দাস; ১৫২৮–১৫৮৬)[3] মোঘল সম্রাট আকবরের দরবারের অন্যতম সভাসদ ছিলেন। তাঁর চাতুর্যের জন্যই তিনি মূলত সকলের কাছে সুপরিচিত। তিনি একজন ব্রাহ্মণ ছিলেন এবং ১৫৫৬-১৫৬২ সালের দিকে একজন কবি ও গায়ক হিসেবে রাজদরবারে নিয়োগ লাভ করেন। পরবর্তীতে তিনি সম্রাটের অত্যন্ত কাছের হয়ে পড়েন এবং নানা সেনা অভিযানে গমন করেন যদিও প্রকৃতপক্ষে তিনি এই বিষয়ে কোনরূপ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন নি। ১৫৮৬ সালের সম্রাট তাঁকে ভারতের উত্তর-দক্ষিণ দিকে (বর্তমান আফগানিস্তান) পাঠান। কিন্তু এই অভিযান অত্যন্ত শোচনীয়ভাবে ব্যর্থ হয় এবং বিদ্রোহী উপজাতিদের আক্রমণে বহু সৈন্যসহ বীরবল মৃত্যুবরণ করেন।[4] তাঁর মৃত্যু সম্রাটকে অত্যন্ত ব্যথিত করে।
বীরবল | |
---|---|
জন্ম | মহেশ দাস ১৫২৮ বর্তমানের উত্তর প্রদেশ, ভারত |
মৃত্যু | ১৫৮৬ সোয়াত উপত্যকা, বর্তমানে পাকিস্তান |
দাম্পত্য সঙ্গী | উর্বশী দেবী |
পিতা | গঙ্গা দাস |
মাতা | অনভা দাবিত[1] |
ধর্ম | সনাতন ধর্ম[2] |
পেশা | ব্রাহ্মণ, আকবরের দরবারের অন্যতম সভ্য (নবরত্নের সদস্য)। |
আকবরের শাসনামলের শেষের দিকে তাঁর ও বীরবলের মধ্যকার মজার ঘটনাগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশিত হতে থাকে। এই কাহিনীগুলোতে তাকে অত্যন্ত চতুর হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ধীরে ধীরে এই কাহিনী পুরো ভারতীয় উপমহাদেশে জনপ্রিয় হয়। এই গল্পে তিনি তার পরিপার্শ্বের সকলকে এবং স্বয়ং সম্রাটকেও বোকা বানান। বিংশ শতাব্দীর সময় থেকে এই কাহিনীর উপর নাটক, চলচ্চিত্র এবং বই লেখা হতে থাকে। বর্তমানে কিছু পাঠ্যবইয়ে এসব কাহিনীকে স্থান দেয়া হয়েছে।
ভারতের উত্তর প্রদেশের কল্পি নামক স্থানে ১৫২৮ সালের মহেশ দাস নামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।[3] লোককথা অনুযায়ী, স্থানটি যমুনার তীরবর্তী তিকওয়ানপুর।[5] তার পিতা গঙ্গা দাস এবং মাতা অনভা দাবিত। তিনি হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারের তৃতীয় সন্তান।পরিবারটির পূর্ব হতেই কবিতা ও সাহিত্য সম্পর্কে অনুরাগ ছিল।[1][6]
বীরবল হিন্দি, সংস্কৃত ও পার্সিয়ান ভাষায় জ্ঞানার্জন করেন। তিনি সংগীত এবং ব্রজ কবিতায় পারদর্শী হয়ে ওঠেন। তিনি সংগীতে ছন্দ প্রয়োগের ব্যাপারে অত্যন্ত দক্ষ ছিলেন। তার কবিতা ও গানের কারণে তিনি বিখ্যাত হন। তিনি রেবার রাজা রাম চন্দ্রের রাজপুত কোর্টে ব্রাহ্ম কবি নামে কাজ করেন।যখন তিনি একটি সম্মানিত এবং ধনী পরিবারের এক কন্যাকে বিয়ে করেন, তখন তার অবস্থার উত্তরণ ঘটে । ইমপিরিয়াল কোর্টে কাজ করার পূর্বে তার অর্থনৈতিক অবস্থা খুব একটা ভাল ছিল না।[7]
ধারণা করা হয়, ১৫৫৬ থেকে ১৫৬২ সালের মধ্যে বীরবলের সাথে আকবরের প্রথম দেখা হয়। এর কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি সম্রাটের কবি রাই হন।[8] আকবর তাকে বীরবল নাম দেন এবং রাজা উপাধিতে ভূষিত করেন। এরপর থেকে তিনি এই নামেই পরিচিত হন।[7]
বীরবল নামটি এসেছে বীর বর থেকে যার মানে সাহসী এবং মহান। কিন্তু এই উপাধিটা কিছুটা অপ্রাসঙ্গিক, কারণ তিনি রণকৌশলে তেমন দক্ষ ছিলেন না। আকবর তার হিন্দু সভাষদদের তাদের ঐতিহ্যানুযায়ী নাম প্রদান করতেন। এস.এইচ হোদিভালা বলেন, এই নামগুলো বেতাল পঞ্চবিংশতী হতে নেয়া হতে পারে। কারণ উক্ত বইয়ের বীর বর নামক এক চরিত্র একজন বিচারককে অনেক সম্মান প্রদর্শন করেন। আকবর সাহিত্য বিষয়ের প্রতি অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন। তিনি সংষ্কৃত ও ভাষার বই ফার্সিতে অনুবাদ করতেন।[9]
বীরবলের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা তাকে সম্রাট আকবরের নয়জন উপদেষ্টা অর্থাৎ নবরত্নের একজন করে তোলে। অন্যান্য রত্নরা হলেন টোডার মল, মান সিংহ, ভগবান দাস প্রমুখ। ক্রমেই তিনি একজন ধর্মীয় উপদেষ্টা, সামরিক কর্মকর্তা এবং সম্রাটের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হয়ে পড়েন। সম্রাটকে তিনি প্রায় ৩০ বছর সেবা দান করেন।[10][11]
১৫৭২ সালে সম্রাট তাকে ও এক বিশাল সেনাবাহিনী নিয়ে শের আফগান কোয়ালি খানকে তার বড় ভাই হাকিম মির্জার আক্রমণ থেকে রক্ষা করার জন্য পাঠান। এটিই ছিল তার প্রথম সামরিক অবদান। যদিও তার কোন সামরিক অভিজ্ঞতা ছিল না, তবুও অন্যান্য উপদেষ্টাদের মতো (যেমনটা টোডার মল অর্থনীতিতে অবদান রাখেন) তাকে সম্রাট বিভিন্ন অভিযানের নেতৃত্ব দিয়ে পাঠান।[12]
আবুল ফজল এবং আবদুল কাদির বাদওয়ানি কোর্টের ঐতিহাসিক ছিলেন। যদিও ফজল বীরবলকে সম্মান করত এবং তাকে প্রায় পঁচিশটি সম্মানজনক উপাধি দেয় ও দু'হাজার অভিযানের নেতা হিসেবে স্বীকৃতি দেন, কাদির বীরবলকে সহ্য করতে পারত না। তার সহ্য হত না কেন একজন ব্রাহ্মণ হিন্দু সঙ্গীতশিল্পী হয়ে সে সম্রাটের এত প্রিয় ও বিশ্বাসভাজন হয়ে ওঠে।[8] কিন্তু একই সময়ে আকবরের অন্যান্য সভাষদরা তার প্রতিভা সম্পর্কে অবগত হয়েও তাকে পছন্দ করতেন না বলে জানা যায়।[11]
আকবর দীন-ই-ইলাহি নামের একটি ধর্ম প্রচার করেন। এই ধর্ম হিন্দুধর্ম ও ইসলাম ধর্ম-এর সংমিশ্রণে তৈরি করা হয় এবং এই ধর্মমতে আকবর পৃথিবীতে এই সৃষ্টিকর্তার প্রেরিত মানুষ। আইন-ঈ-আকবরী অনুযায়ী বীরবল আকবর ছাড়া সেই সমস্ত মানুষের একজন ছিলেন যারা এই ধর্ম গ্রহণ করেছিল এবং এই ধর্ম গ্রহণকারী একমাত্র হিন্দু।[2] সম্রাটের সাথে বীরবলের সম্পর্ক অত্যন্ত মধুর ছিল, যদিও তিনি সম্রাটের চেয়ে চৌদ্দ বছরের ছোট ছিলেন। নবরত্নের মধ্যে বীরবল ছিল সবচাইতে দামি রত্ন।[9] বাদওয়ানী একে বিকৃত করে বলে, "তাঁর দেহ আমার দেহ, তাঁর রক্ত, আমার রক্ত"। বীরবল দুইবার শত্রুদের থেকে আকবের প্রাণ রক্ষা করেন বলে জানা যায়।[3]
কলকাতার ভিক্টোরিয়া হলে অবস্থিত আকবরী নয় রত্ন-এ দেখা যায়, বীরবল ঠিক আকবরের পরের স্থানেই আছেন। প্রথমে বীরবল সম্রাটকে বিনোদন দিলেও পরবর্তীকালে তাকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ অভিযানে পাঠানো হয়। বীরবল সম্রাটের কাছ থেকে একটি দোতলা বাড়ি লাভ করেন, যা সম্রাটের প্রাসাদের সীমানার মধ্যে ছিল।[7][13] তিনি বীরবলকে কাছে পেয়ে বেশ আনন্দিত ছিলেন এবং তিনিই একমাত্র সভাষদ ছিলেন যিনি সম্রাটের প্রাসাদের চত্বরের মধ্যে স্থান পান। আকবরের প্রাসাদের সাতটি দরজার একটির নাম ছিল বীরবলের দরজা [8]
লোককাহিনীতে তাকে সর্বদাই ধার্মিক হিন্দু হিসেবে দেখানো হয়েছে, যিনি আকবরের চেয়ে বয়সে ছোট। বিরুদ্ধভাবাপন্ন মুসলিমরা তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলে তিনি তাদের বিরুদ্ধে দৃঢ়। তার সাফল্যের কারণ ছিল তার দক্ষতা। এভাবে তিনি তার বুদ্ধিমত্তা এবং ধারালো কথার সাহায্যে সম্রাটের উপর ধর্মীয়, রাজনৈতিক এবং ব্যক্তিগত প্রভাব খাটান। যদিও ঐতিহাসিকভাবে তিনি কখনই এমনটা করেননি।[3][9]
বাদওয়ানী তাকে অবিশ্বাস করতেন, যদিও তিনি বীরবল সম্পর্কে বলেন, "প্রচুর ক্ষমতা এবং প্রতিভাধর"। ব্রজ ভাষার কবি রাই হোল আকবর এবং তার নবরত্নকে প্রশংসা করেন এবং বীরবলের মহত্বের উপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। আবুল ফজল তাকে শ্রদ্ধা করতেন মূলত তার আত্মিক গুরুত্ব এবং সম্রাটের বিশ্বাসভাজন হিসেবে, তার চতুরতা কিংবা কবিতার জন্য নয়।[3]
আধুনিক হিন্দু ঐতিহাসিকগণ মনে করেন, তিনি আকবরকে বিভিন্ন সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করেছেন এবং সনাতন মুসলিমরা তাকে হেয় করতেন কারণ তার কারণে সম্রাট ইসলামকে অবজ্ঞা করতেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত এমন কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি যার কারণে বলা যায় তিনি সম্রাটের ধর্মবিশ্বাসের উপর প্রভাব খাটাতেন।[9] বরং বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় যে তিনি সম্রাটের রাজনীতির উপর বেশ প্রভাব খাটাতেন। বীরবলের প্রতি সম্রাটের ভালবাসা, তার ধর্মীয় সহনশীলতা এবং সামাজিক স্বাধীনতাই এর কারণ ছিল, বীরবল নয়। ইতিহাস অনুযায়ী তিনি আকবরের ধর্মীয় নীতি এবং ধর্ম দীন-ই-ইলাহির সমর্থক ছিলেন। আইন-ই-আকবরী-এ পতিতা সম্পর্কিত একটি ঘটনায় বীরবলের সম্পৃক্ততা সম্পর্কে জানা যায়, যেখানে আকবর তাকে শাস্তি দিতে চান কারণ তার মত একজন ধার্মিক ব্যক্তির পক্ষে এমন কাজ বিশেষভাবে লজ্জাজনক।[3]
ভারতের উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে আফগানিস্তানের ইন্দু নদীর তীরে ইউসুফজাই উপজাতি মোঘল শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। ১৫৮৬ সালের অনেক সৈন্য হতাহতের পর আকবর তার নতুন দুর্গ এটক হতে বীরবলকে এক সেনাদলের সাথে উক্ত স্থানে কমান্ডার জইন খানকে সাহায্য করার জন্য পাঠান। বীরবল পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হন।[4] কিন্তু আফগানরা আগে থেকেই সেখানে প্রস্তুত হয়ে ছিলেন। এক মারাত্মক হামলায় বীরবল সহ প্রায় ৮০০০ সৈন্য উক্ত স্থানে মারা যান এবং বীরবলের দেহ আর কখনই খুঁজে পাওয়া যায়নি।[14]
এটি ছিল আকবরের সর্ববৃহৎ সামরিক ব্যর্থতা এবং সেনা ধ্বংসের ঘটনা। এই ঘটনার ফলশ্রুতিতে আকবর প্রচন্ড শোকাহত হন এবং তার সবচেয়ে প্রিয় সভাষদের মৃত্যুতে তিনি টানা দুইদিন কোনরুপ খাদ্য কিংবা পানীয় গ্রহণ করেননি।[8] তিনি আরো বেশি যন্ত্রণাকাতর হন কারণ হিন্দু শবদাহ রীতির ফলে তিনি বীরবলের দেহ আর কোনদিনই দেখতে পাননি। তিনি এই ঘটনাকে তার সিংহাসন লাভের পর সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটয়না বলে অভিহিত করেন।[9]
বাদওয়ানী লেখেন,[12]
সম্রাট বীরবলের মৃত্যুর পর যে সম্মান দেখান, আর কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মৃত্যুর চেয়ে অনেক বেশি। তিনি বলেন, "হায়! ওরা ওর দেহটাও ফিরিয়ে আনতে পারল না, তাহলে তা দাহ করা যেত।" কিন্তু শেষে তিনি নিজেকে এই বলে সান্ত্বনা দেন যে বীরবল এখন সকল পার্থিব প্রতিবন্ধকতা হতে সম্পূর্ণ মুক্ত এবং স্বাধীন। এবং তাঁর জন্য সূর্যরশ্মিই যথেষ্ট, তাঁকে আগুনে পোড়াবার কোন প্রয়োজন নেই।
আকবরের শাসনামলের প্রায় একশ' বছর পর এক গল্পগুলোর উদ্ভব হয়। মোঘল বীরদের জীবনী মহাথীর আক-উমরা-এ বীরবলকে তার কাব্য এবং চতুরতার জন্য উন্নত ভাগ্যের অধিকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তার চতুরতার প্রশংসা করা হয় এই বলে যে তার বুদ্ধিমত্তা সেই সময়ে উত্তর ভারতে ক্রমশ জনপ্রিয় হয় কারণ তখন আকবরের কারণে মোঘল শাসন কিছুটা সাম্যাবস্থায় এসেছে। একইভাবে, রাজা এবং তার প্রত্যুৎপন্নমতি মন্ত্রীদের কাহিনী ভারতে এর আগে থেকেই জনপ্রিয়। তন্মধ্যে তেনালী রমন ও রাজা বিজয়নগর এবং গোপাল ভাঁড় ও নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র উল্লেখযোগ্য।[3] বীরবলের কাহিনীগুলো নানা ভঙ্গিতে বলা হয় যার একটি বলা হয় আরব্য রজনীর মত করে। কয়েক বছর পরে মোল্লা দো পেঁয়াজার উদ্ভব ঘটে। এগুলো ১৯০০ সালের দিকে লেখেন এক মুসলিম লেখক। তিনি আকবরের সময়কার এক পার্সিয়ান ব্যক্তি থেকে অনুপ্রানিত হন। তিনি ছিলেন বীরবলের কাহিনীগত মুসলিম প্রতিরুপ এবং সনাতন মুসলিম ধর্মীয় প্রবক্তা এক চরিত্র। কিছু গল্পে তিনি আকবর ও বীরবল দুজনকেই উৎকৃষ্ট হিসেবে দেখিয়েছেন, আবার কিছু গল্পে তাকে অযত্নে দেখানো হয়েছে।[9]
সি.এম. নাঈম লেখেন যে এই কাহিনীগুলোকে ঐতিহাসিক প্রমাণ হিসেবে দেখা উচিত নয়। তবে এরা তখনকার রাজনৈতিক ইতিহাসকে দেখিয়েছে। "আকবর ও বীরবল" কাহিনীগুলো একজন হিন্দু কথকের মোঘল শাসনের প্রতি পক্ষপাত দেখায়। আকবরকে এই কাহিনীগুলোতে কিছুটা খারাপ হিসেবে দেখানো হয় এবং বীরবল সর্বদাই শ্রেষ্ঠ হয়। প্রতিটিবারেই সেখানে একজন শক্তিশালী শাসক থাকেন যিনি অত্যন্ত শক্তিশালী ভাবে তার শাসন কাজ করছিলেন। তার সাথে একজন হাস্য-রসাত্মক মন্ত্রী থাকতেন যার চতুরতা অত্যন্ত ধারালো এবং যার জনপ্রিয়তা কিংবদন্তিতুল্য ছিল। এই রসিকতা এবং কাহিনীগুলো আকবরসহ প্রায় সকল শক্তিশালী শাসককে নিয়েই হয়েছে, কারণ তিনি মানুষকে অনুপ্রাণিত করতেন, তাদের সাথে অনেক বেশি মিশতেন। নাঈম আরো বলেন যে অন্য কোন সভাষদকে না নিয়ে বীরবলকে নেয়ার কারণ হচ্ছে তিনি একজ ব্রাহ্মণ যিনি ভারতীয় ঐতিহ্যবাহী এক চরিত্র।[3]
এই কাহিনীগুলো মূলত মুখে মুখে চলে এসেছে।[15] এতে গুরত্ব দেয়া হয় কীভাবে সে অন্যান্য বিরোধী সভাষদদের টেক্কা দেয়, যারা তাকে সম্রাটের চোখে খাটো করতে চাইত। সাধারণত সে হাস্যকরভাবে এবং তীক্ষ্ণ ও বুদ্ধিমান উত্তর দিয়েই সমস্যার সমাধান করত। শেষে আকবর অবাক হতেন এবং মজা পেতেন। কিছু গল্পে আকবরই বীরবলকে একটি কবিতার লাইন দিয়ে কবিতাটি শেষ করতে বলতেন এবং কিছু গল্প সাধারণ হাস্যরসাত্মক। প্রায় অসম্ভব এক পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে বীরবল কীভাবে তা অতিক্রম করতেন বস্তুত তাই এই কাহিনীগুলির মূল বিষয়।[8]
আকবর ও বীরবলের গল্পগুলো অমর চিত্র কথা ও চাঁদমামা বইয়ে গ্রন্থিত হয়েছে।[16] শিশুতোষ বই এবং আরো নানা কমিক বইয়েও এই কাহিনীগুলোকে সংরক্ষণ করা হয়েছে।[17][18] এছাড়া বেশকিছু পেপারব্যাক মুদ্রণ, চলচ্চিত্র, পাঠ্যবই, বইয়ের তালকা এবং নাটকেও এই চরিত্রগুলো মুখ্য।[19] ভারতের টিভি চ্যানেল কার্টুন নেটওয়ার্ক ছোটা বীরবল ও আকবর অ্যান্ড বীরবল নামের দুটো টেলিভিশন ধারাবাহিক প্রচার করেছে।[20] সালমান রুশদির উপন্যাস দ্য এন্চ্যান্ট্রেস অফ ফ্লোরেন্স-এ বীরবল চরিত্রটি আছে।[21]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.