বিজয়লাল চট্টোপাধ্যায়
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বিজয়লাল চট্টোপাধ্যায় (সেপ্টেম্বর ১৮৯৮ — ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪) মুক্তিসংগ্রামী চারণকবি ও সাংবাদিক।
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবন
বিজয়লাল চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে। পিতার নাম কিশোরীলাল চট্টোপাধ্যায়। কৃষ্ণনগরের সি.এম.এস স্কুল হতে ম্যাট্রিক ও কৃষ্ণনগর সরকারি কলেজ থেকে আই.এ পাশ করেন। ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে বি.এ পড়ার সময় অসহযোগ আন্দোলনে যোগ দেন।
বৈপ্লবিক ক্রিয়াকলাপ
কৃষ্ণনগর কলেজের অধ্যাপক নৃপেন্দ্রচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় তার বিপ্লবীজীবন ও সাহিত্যমন্ত্রের দীক্ষাগুরু। জীবনের প্রথমদিকে সুভাষচন্দ্র, হেমন্তকুমার সরকার ও কবি নজরুলের অনুসারী হলেও রাজনৈতিক আদর্শে তিনি ছিলেন পরিপূর্ণ গান্ধীবাদী। দেশের স্বাধীনতাকামী সৈনিক হিসাবে তিনি পরিচিত ছিলেন। নদীয়া জেলা জাতীয় কংগ্রেসের সম্পাদক থাকাকালে ১৯২২ খ্রিস্টাব্দে ছয় মাস কারারুদ্ধ থাকেন তিনি।
কর্মজীবন
সারাংশ
প্রসঙ্গ
রবীন্দ্রনাথের আহ্বানে ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে কিছুদিন শান্তিনিকেতনে কাজ করেছেন। সাংবাদিকতা ছিল তার কর্মজীবনের পেশা। বহু পত্রিকা সম্পাদনার কাজ করেছেন। 'বঙ্গবাণী' পত্রিকার সহ-সম্পাদক থাকাকালে তার বিখ্যাত কাব্য সর্বহারার গান প্রকাশিত হয়। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার সাংবাদিকতার কাজ ছেড়ে লবণ সত্যাগ্রহ আন্দোলনের সময় নদীয়া জেলা কংগ্রেসের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে নয় মাসের কারাবাস ঘটে। ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে সাপ্তাহিক 'দেশ' পত্রিকার আবির্ভাবের মূলে বিজয়লালের সক্রিয় ভূমিকা ছিল। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে আবার আন্দোলনে যোগ দিয়ে এক বছর জেলে কাটান। পরে সাংবাদিক হিসাবে 'দৈনিক লোকসেবক', 'কৃষক', 'ঊষা' প্রভৃতি পত্রিকার সাংবাদিকতা করেন। উত্তরকালে চারণকবি হিসাবে খ্যাতি লাভ করেন। এক সময়ে বাংলার গ্রামে-গঞ্জে ঘুরে জনসাধারণের ঘুম ভাঙাবার, তাদের দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ করার ভার নিয়েছিলেন। স্থানীয় সম্প্রদায়কে সামাজিক সংস্কারের পথে দাঁড় করানো শুরু করেছিলেন তিনি।[১] দীর্ঘ কাল ধরে বহু কবিতা লিখে পত্রিকায় প্রকাশ করেছেন। তার গদ্য রচনাও তারুণ্য ও উদাত্ত যৌবনধর্মে বাণীময়। বহু বিষয় নিয়ে তিনি সুন্দর ও সহজ ভাষায় আলোচনা করে দেশের যুব সমাজকে এককালে নূতন নূতন চিন্তার খোরাক জুগিয়েছেন। রবীন্দ্রকাব্য ও জীবনের একজন গুণগ্রাহী সমালোচক হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছিলেন। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ তার বিশ্লেষণ ও সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলেন। তার রবীন্দ্রনাথ সংক্রান্ত গ্রন্থ 'বিদ্রোহী রবীন্দ্রনাথ' ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজ সরকার বাজেয়াপ্ত করে। দেশের প্রথম ও দ্বিতীয় সাধারণ নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় দু-বার জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হন।[২] বিধানসভায় বাগ্মিতার জন্য বিজয়লালের খ্যাতি ছিল। নদীয়া জেলার আন্দুলিয়ার পল্লী পরিবেশে আমৃত্যু গঠনমূলক কাজে লিপ্ত ছিলেন।[৩]
মৃত্যু
বিজয়লাল চট্টোপাধ্যায় ১৯৭৪ খ্রিস্টাব্দের ১৮ ই ফেব্রুয়ারি কল্যাণীর গান্ধী স্মৃতি হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।[৪]
প্রকাশিত গ্রন্থ ও কবিতা পুস্তক সমূহ
- চারণগীতি
- চারণকবি হুইটম্যান
- The Champion of the Proletariate (বিত্তহীন শ্রেণীর চ্যাম্পিয়ন)
- বিদ্রোহী রবীন্দ্রনাথ
- রিয়ালিস্টি রবীন্দ্রনাথ
- রবীন্দ্রসাহিত্যে পল্লীচিত্র
- রবিতীর্থে[৫]
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.