Loading AI tools
ইংরেজ ক্রিকেটার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বার্নার্ড জেমস টিন্ডল বোসানকুয়েত (ইংরেজি: Bernard Bosanquet; জন্ম: ১৩ অক্টোবর, ১৮৭৭ - মৃত্যু: ১২ অক্টোবর, ১৯৩৬) মিডলসেক্সের এনফিল্ড এলাকার বুলস ক্রসে জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ১৮৯৮ থেকে ১৯১৯ সময়কালে মিডলসেক্সের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি লেগ ব্রেক, গুগলি বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন বার্নার্ড বোসানকুয়েত। ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্তির লক্ষ্যে গুগলি বোলিং ভঙ্গীমা আবিষ্কারে তিনি ক্রিকেট বিশ্বে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছেন। ১১ ডিসেম্বর, ১৯০৩ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। ১৯০৫ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | বার্নার্ড জেমস টিন্ডল বোসানকুয়েত | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | বুলস ক্রস, এনফিল্ড, মিডলসেক্স, ইংল্যান্ড | ১৩ অক্টোবর ১৮৭৭|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১২ অক্টোবর ১৯৩৬ ৫৮) ওয়াইকহার্স্ট, ইউহার্স্ট, সারে, ইংল্যান্ড | (বয়স|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | লেগ ব্রেক, গুগলি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ১৩৭) | ১১ ডিসেম্বর ১৯০৩ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ৫ জুলাই ১৯০৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৮৯৮-১৯০০ | অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৮৯৮-১৯১৯ | মিডলসেক্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৮৯৮-১৯০৪ | এমসিসি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৩১ আগস্ট ২০১৭ |
১৮৯১ থেকে ১৮৯৬ সময়কালে এটন কলেজের পক্ষে ক্রিকেট খেলেন। এরপর অক্সফোর্ডের অরিয়্যাল কলেজ থেকে ব্লু লাভ করেন তিনি। ব্যাটসম্যান হিসেবে মাঝারীমানের সফলতা লাভের পাশাপাশি ১৮৯৮ থেকে ১৯০০ সময়কালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে ফাস্ট-মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন তিনি। ছাত্রাবস্থায় তিনি বেশ কয়েকটি খেলায় মিডলসেক্সের পক্ষে অংশ নেন ও শৌখিন খেলোয়াড় হিসেবে দলের নিয়মিত খেলোয়াড় হন। টেবলটপ খেলা চলাকালীন বলকে ঘূর্ণায়মান আনয়ণে নতুন ধরনের কৌশল আবিষ্কারে সক্ষম হন যা পরবর্তীকালে গুগলি নামে পরিচিতি পায়। অক্সফোর্ডে অবস্থানকালে তিনি এর অনুশীলন করতেন। ১৯০০ সালের দিকে দ্রুতগতিসম্পন্ন বোলিং কৌশল বাদ দিয়ে তিনি ক্রিকেট খেলাগুলোয় এর ব্যবহার করতে শুরু করেন। তবে, ১৯০৩ সালে বল হাতে সফলতম মৌসুম অতিবাহিত করেন। তার নতুন ধরনের ডেলিভারিগুলো সকলের মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। কয়েকটি ছোট পর্যায়ের বৈদেশিক সফরের পর ১৯০৩-০৪ মৌসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরের লক্ষ্যে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) পূর্ণাঙ্গ সদস্যরূপে মনোনীত হন।[ব 1] এ সফরেই ইংল্যান্ডের পক্ষে তার টেস্ট অভিষেক ঘটে। ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্যাপক অর্থে ব্যর্থ হলেও বোলার হিসেবে নিজেকে মেলে ধরেন ও প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদেরকে গুগলি বোলিংয়ে কাবু করেন।
১৯০৪ সালে আরও সফলকাম হন। শতাধিক উইকেট লাভ করেন তিনি। বোলিংয়ের শীর্ষে আরোহণকালে ১৯০৫ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৮/১০৭ বোলিং পরিসংখ্যান দাঁড় করান। এরফলে ইংল্যান্ডের জয়লাভ সহজতর হয়। তবে, চমৎকার গুড লেন্থ বোলিংয়ে তিনি প্রভূত্বঃ অর্জন করতে পারেননি ও ছন্দবিহীন প্রদর্শনকারীর ভূমিকাতেই রয়ে যান। ১৯০৫ সালের পর বোসানকুয়েতের বোলিং কৌশল গ্রহণযোগ্যতা পায়নি; তিনি এর বাস্তব ব্যবহার ছেড়ে দেন ও ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতার কারণে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে কমই অংশ নিতেন।
১৩ অক্টোবর, ১৮৭৭ তারিখে মিডলসেক্সের এনফিল্ড এলাকার বুলস ক্রসে বোসানকুয়েতের জন্ম। বার্নার্ড টিন্ডল বোসানকুয়েত ও ইভার মড কটন দম্পতির পাঁচ সন্তানের মধ্যে জ্যেষ্ঠ ছিলেন। ছোট এক ভাই ও তিন বোন ছিল তার। তার কাকা ও একই নামের বার্নার্ড বোসানকুয়েত দার্শনিক ছিলেন[1][2] ও তার আত্মীয়-স্বজনের অনেকেই জনপ্রিয় ছিলেন। তার দাদা জেমস হোয়াটম্যান বোসানকুয়েত ব্যাংকার ছিলেন ও বাইবেলতুল্য ইতিহাসবিদের সম্মাননা লাভ করেন। বোসানকুয়েত এন্ড কোং নামীয় একটি ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতেন তার বাবা। এছাড়াও, লন্ডনে চামড়া ও পশমের দালালীগিরির অংশীদার ছিলেন। ১৮৯৭ থেকে ১৮৯৮ সময়কালে মিডলসেক্সের হাই শেরিফ এবং এনফিল্ড ক্রিকেট ক্লাবের অধিনায়কত্ব করেন।[3][4]
স্লাউয়ের সানিমেড স্কুলে অধ্যয়নের পর বোসানকুয়েত ১৮৯১ থেকে ১৮৯৬ সময়কালে এটন কলেজে পড়াশোনা করেন।[3] এটনে অধ্যয়নকালে সারের পেশাদার ক্রিকেটার মরিস রিড ও বিল ব্রোকওয়েলের কাছ থেকে ক্রিকেটে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ১৮৯৬ সালে প্রথম একাদশের পক্ষে খেলায় অংশগ্রহণকালীন তার খেলায় তারা উন্নতিসাধনের চেষ্টা চালান।[ব 2][1][5] উইনচেস্টার কলেজের বিপক্ষে তিন উইকেট পান ও দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ২৯* রান তুলেন। তবে, লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে হ্যারো স্কুলের বিপক্ষে বোসানকুয়েত ১৪০ মিনিট ক্রিজে অবস্থান করে ১২০ রান তুলেন।[6][7] এ সময়ে তিনি ফাস্ট-মিডিয়াম মিডিয়াম পেস বোলিং করতেন ও ব্যাটিংয়ের উন্নতি সাধনের চেষ্টা করেন।
১৮৯৭ সালে অক্সফোর্ডের অরিয়্যাল কলেজে ভর্তি হন। তবে, ১৯০০ সালে সনদবিহীন অবস্থাতেই এখান থেকে চলে আসেন। এ সময়ে তিনি অনেকগুলো ক্রীড়ায় দক্ষতা প্রদর্শন করেন।[3] ১৮৯৮ সালে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। মিডলসেক্সের অধিনায়ক এ. জে. ওয়েবের নির্বাচিত একাদশের বিপক্ষে খেলেন তিনি। ঐ মৌসুমে তিনি ব্যাটিংয়ে খুব কমই সফল হয়েছিলেন। ১৭ রান ছিল তার সর্বোচ্চ রান। তবে, বল হাতে তিনি অধিক সফলতা পান। অক্সফোর্ডের সদস্যরূপে দুইবার ইনিংসে পাঁচ উইকেট পান। ফলশ্রুতিতে ক্রিকেটে ব্লু লাভ করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলায় মনোনীত হয়ে তিনি অপরাজিত ৫৪* রান তুলেন যা ঐ মৌসুমে তার সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল।[6] পরবর্তীতে তিনি মিডলসেক্সের পক্ষে দুই খেলায় অংশ নেন।[6] কিন্তু নিজেকে মেলে ধরতে পারেননি। ১৭ রান তুলেন ও কোন উইকেট পাননি।[6][8] ১৮৯৮ সালে সকল প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৪.০০ গড়ে ১৬৮ রান তুলেন ও ১৮.৭০ গড়ে ৩০ উইকেট পান।[9][10] মৌসুম শেষে প্লাম ওয়ার্নারের নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরূপে যোগ দেন ও আমেরিকা সফরে বের হন। ঐ সফরে বোলার হিসেবে সফলতা দেখান।[6]
১৮৯৯ সালে অক্সফোর্ডের পক্ষে তার রেকর্ডের উত্তরণ ঘটান। বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার পূর্বে দুইটি অর্ধ-শতক ও তিনবার পাঁচ উইকেট পান। কেমব্রিজের বিপক্ষে ব্যাট হাতে ব্যর্থ হলেও প্রথম ইনিংসে ৭/৮৯ পান। তার এ সাফল্যে দল নির্বাচকমণ্ডলী জেন্টলম্যানের বিপক্ষে প্লেয়ার্সের সদস্যরূপে খেলান। মর্যাদাজনক এ খেলায় অংশ নিয়ে তিনি কেবলমাত্র এক উইকেট লাভ করলেও মূল্যবান ৬১ রান তুলেন।[6] মিডলসেক্সের পক্ষে তিনি আরও দুই খেলায় অংশ নেন। ঐ মৌসুমে সকল খেলায় অংশ নিয়ে ২৭.৯৩ গড়ে ৪১৯ রান ও ২২.৭২ গড়ে ৫৫ উইকেট পান।[6][9][10] মৌসুমের শেষদিকে আই জিঙ্গারি’র পক্ষে কয়েকটি প্রথম-শ্রেণীবিহীন খেলায় অংশ নেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৬ উইকেট পান। ফলশ্রুতিতে কে. এস. রঞ্জিতসিংজীর নেতৃত্বে আমেরিকা সফরে যান।[6]
অক্সফোর্ডে অবস্থানকালে চূড়ান্ত মৌসুমে পরিসংখ্যানগতভাবে নিজের সেরা অবস্থানে ছিলেন। লন্ডন কাউন্টির বিপক্ষে প্রথমবারের মতো প্রথম-শ্রেণীর খেলায় সেঞ্চুরি করেন। সাসেক্সের বিপক্ষে নিজস্ব সেরা বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। দ্বিতীয় ইনিংসে ৯/৩১ সহ খেলায় ৬৫ রান দিয়ে ১৫ উইকেট তুলে নেন। ১৯০০ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলায় অক্সফোর্ডে পক্ষে সর্বশেষবারের মতো অংশ নেন। খেলায় তিনি ৪২ ও ২৩ রান তুলেন।[6] মৌসুমের বাদ-বাকী সময়ে মিডলসেক্সের পক্ষে খেলেন। লিচেস্টারশায়ারের বিপক্ষে দ্বিতীয় খেলায় উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করার দূর্লভ কৃতিত্বের অংশীদার হন। প্রথম ইনিংসে ১১০ মিনিটে ১৩৬ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭০ মিনিটে ১৩৯ রান তুলেন।[6][11] এছাড়াও মিডলসেক্সের পক্ষে আরও তিনটি অর্ধ-শতকসহ এক ইনিংসে একবার পাঁচ উইকেট পান। তবে তুলনামূলকভাবে কম বোলিং করতে থাকেন। কেবলমাত্র একবারই এক ইনিংসে ১৩ ওভারের বেশি বোলিং করতে দেখা যায় তাকে।[6] ঐ মৌসুমের সকল প্রথম-শ্রেণীর খেলায় বোসানকুয়েত ৩৪.২০ গড়ে ১,০২৬ রান ও ২৩.২০ গড়ে ৫০ উইকেট সংগ্রহ করেন।[9][10]
অক্সফোর্ডের পক্ষে সকল খেলায় অংশ নিয়ে বোসানকুয়েত ২৫.০৩ গড়ে ৮০১ রান তুলেন ও ১৯.৪৯ গড়ে ১১২ উইকেট পান।[12][13] অন্যান্য খেলার মধ্যে গোলক নিক্ষেপ ও বিলিয়ার্ডে অংশ নিয়ে অর্ধ-ব্লু লাভ করেন। এছাড়াও আইস হকিতেও অংশ নেন তিনি।[3]
১৯০২-০৩ মৌসুমের শীতকালে লর্ড হকের দলের সদস্যরূপে আরও একটি সফরে যান। এবার দলটি ওয়ার্নারের নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া সফরে যায়। নিউজিল্যান্ডে তিনি নিউজিল্যান্ড প্রতিনিধিত্বকারী দলের বিপক্ষে দুই খেলায় অংশ নেন। একটি অর্ধ-শতক সহযোগে ১৮.৫০ গড়ে ১৪৮ রান তুলেন। তন্মধ্যে সাউথ আইল্যান্ডের বিপক্ষে ৮২ রান সংগ্রহ করেন।[6][9] এছাড়াও, তিনি ২২.৬১ গড়ে ১৮ উইকেট পান। তার বোলিংয়ের ধরন অনেকের কাছেই বেশ মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।[10][14] ১৮৭৭ সালে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে প্রথম টেস্ট খেলায় অংশগ্রহণকারী চার্লস ব্যানারম্যান একটি খেলায় আম্পায়ারিত্ব করেন। ওয়ার্নারকে তিনি বলেন যে, অস্ট্রেলিয়া সফরে পরবর্তী দলে বোসানকুয়েতের অংশগ্রহণ যেন নিশ্চিতরূপে থাকে। এ সফরটি আরও একটি ঘটনার কারণে স্মরণীয় হয়ে আছে। ক্যান্টারবারি উইজার্ডসের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে শুরুতে উইকেট পান। কিন্তু পরবর্তীতে তার বোলিং দূর্বলতর হতে থাকে।[15]
অস্ট্রেলিয়ায় বোসানকুয়েত তিনটি রাজ্যদলের বিপক্ষে খেলেন। ৩৩.৬০ গড়ে ১৬৮ রান করেন।[9][16] বোলার হিসেবে ৪২.৭৫ গড়ে আট উইকেট পান তিনি।[10] নিউ সাউথ ওয়েলসের ৪৬৩ রানের মধ্যে তার বোলিং অবদান ছিল ৬/১৫৩।[6] তন্মধ্যে তিনি অস্ট্রেলিয়ার তথা ঐ সময়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান ভিক্টর ট্রাম্পারেরও উইকেট পান। বোসানকুয়েত দুইটি লেগ ব্রেক ছোঁড়ার পর গুগলি বোলিং করে এ সাফল্য পান। পরবর্তীতে এ সম্বন্ধে তিনি বলেন যে, অস্ট্রেলিয়ায় তিনি এ ধরনের বোলিং প্রথম করেন যাতে ট্রাম্পার বোল্ড হন।[17] অনেক ক্রিকেটবোদ্ধাদেরকে শক্ত পিচেও তার এ ধরনের গুগলি বোলিংয়ে সাফল্যের প্রেক্ষিতে বেশ বিস্ময়ের জন্ম দেয়। ওয়ার্নার বোসানকুয়েতের বোলিংয়ে বিস্ময়ের কারণের কথা জানান।[16]
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বোসানকুয়েত সিরিজের প্রথম টেস্টে অংশ নেন ও ইংল্যান্ডের পক্ষে তার টেস্ট অভিষেকের কথা জানান দেন। শুরুতে দূর্বলভাবে ব্যাটিং করে অস্ট্রেলিয়া ২৮৫ রান তুলতে সমর্থ হয়। গুগলিতে ওয়ারউইক আর্মস্ট্রং ও সিড গ্রিগরিকে আউট করে ১৩ ওভারে ২/৫২ লাভ করেন।[6][18] ব্যাটহাতে তিনি একটিমাত্র রান তুলেন। তাস্বত্ত্বেও দল ৫৭৭ তুলে। দ্বিতীয় ইনিংসে ২৩ ওভার বোলিং করে ১/১০০ পান। ইংরেজ বোলাররা অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে বাঁধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ভিক্টর ট্রাম্পার অপরাজিত থাকেন ১৮৫ রানে ও দল ৪৮৫ রান তুলে।[6] বোসানকুয়েতের বলে মন্টি নোবেল স্ট্যাম্পড হন। ওয়ার্নার পরবর্তীতে লিখেন যে, তিনি বল হাতে বেশ সফলতা পান, গুগলিতে ট্রাম্পারকে বিভ্রান্ত করেন ও অন্যদের সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ান।[19] ইংল্যান্ডের জয়ের জন্য ১৯৪ রানের লক্ষ্যমাত্রা আসে। দলের ১৩ রানের জয়ের প্রয়োজন থাকাবস্থায় বোসানকুয়েত মাঠে নামেন। জয়সূচক রান আসার পূর্বে বোসানকুয়েত এক রান তুলেন।[20] হাতের আঘাতের কারণে দ্বিতীয় টেস্টে অনুপস্থিতি থাকেন তিনি।[21] সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকাবস্থায় তৃতীয় টেস্টে মাঠে ফিরে আসেন তিনি। চমৎকার ব্যাটিং উপযোগী পিচে অস্ট্রেলিয়ার ৩৮৮ রানের মধ্যে বোসানকুয়েত ৩/৯৫ পান।[22] কোন ব্যাটসম্যানই তার গুগলিতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেননি।[6][23] জবাবে ইংল্যান্ড মাঠে নামে। বোসানকুয়েত ১০ রানে আউট হন। দূর্বলতর শট মারতে গিয়ে তিনি আউট হন ও দলীয় সংগ্রহ ২৪৫ রানে থেমে যায়।[24] অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংসে শুরুতে বোসানকুয়েত দূর্বলমানের বোলিং করেন। তৃতীয় দিনের খেলার শেষদিকে ফুল টস ও লং হপ মারেন। পরদিন সকালে তার বোলিংয়ের উত্তরণ দেখা যায়। গুড লেন্থের বলগুলো দিয়ে চমৎকার স্পেল সম্পন্ন করেন। সাত ওভারে ২৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট পান। আবারও তার গুগলিতে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ান।[25] ঐ ইনিংসে তিনি ৪/৭৩ পান। তবে, ব্যাট হাতে ব্যর্থ হন। দ্বিতীয় ইনিংসে ১০ রান করেন যাতে ইংল্যান্ড দল বিশাল ব্যবধানে পরাজিত হয়।[6]
চতুর্থ টেস্টে সিরিজের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ইংল্যান্ডের ২৪৯ রানের মধ্যে বোসানকুয়েতের অবদান ছিল ১২ রান যা প্রথম দিনের শেষ বল ছিল। জবাবে অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহ ১৩১। বোসানকুয়েত মাত্র দুই ওভার বোলিং করার সুযোগ পান। দ্বিতীয় ইনিংসেও তিনি ব্যাট হাতে সফলকাম হননি। মাত্র সাত রান তুলেন ও ইংল্যান্ড ২১০ রানে গুটিয়ে যায়। ৩২৯ রানের জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় ওয়ার্নার বিশ্বাস করতেন যে, অস্ট্রেলীয় ব্যাটসম্যানেরা এ লক্ষ্য অর্জনে সমর্থ হবে।[6][26] ক্লেম হিল ও সিড গ্রিগরির উইকেট পান তিনি। এরপর আরও চার উইকেট পান। এক পর্যায়ে তিনি ১২ রানে ৫ উইকেট দখল করেন। ইনিংসে তার বোলিং ছিল ৬/৫১। ইংল্যান্ড দল ১৫৭ রানে জয় পায় ও সিরিজ না হারার নিশ্চয়তা প্রদান করে। এক খেলা বাকী থাকতেই ইংল্যান্ড ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে যায়।[6][27] শেষ টেস্টে বোলিং সহায়ক পিচে অস্ট্রেলিয়া স্বান্তনাসূচক জয় পায়। খেলায় বোসানকুয়েত ২০ রান ও চার ওভার বোলিং করে কোন উইকেট পাননি।[6][28] সফরের চূড়ান্ত খেলায় প্রথম ইনিংসে ২২ ও ৩/৭০ পান। তন্মধ্যে একটি উইকেট পেয়েছেন ওয়াইড বলকে তিনবার বাউন্স মেরে যা উইকেট-রক্ষকের হাতে ক্যাচে পরিণত হয়।[6][29]
সফরের সকল প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়ে ৩৬.৬৮ গড়ে ৫৮৭ রান ও ২৭.২৭ গড়ে ৩৭ উইকেট পান।[9][10] টেস্ট খেলাগুলোয় ২৫.১৮ গড়ে ১৬ উইকেট ও ৮.৮৫ গড় ৬২ রান তুলেছেন তিনি। তন্মধ্যে, সর্বোচ্চ ছিল ১৬।[30][31] দেশে ফিরে আসার পর সফরের বিষয়ে উইজডেনে নিবন্ধ লেখেন।[32] উইজডেনে প্রকাশিত প্রধান প্রতিবেদনে লেখা হয়: গড় দিয়ে বোসানকুয়েতের মূল্যায়ন চলে না। প্রত্যেকেই জানেন যে, জীবিত বোলারদের মধ্যে তিনি সর্বাপেক্ষা অধিক রান দিয়ে থাকেন। তুঙ্গে থেকেও সকলেই ধারণা করেছিলেন যে, অন্যান্য বোলারের তুলনায় অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটিং সহায়ক পিচে তাকে আরও ভোগান্তির কবলে পড়তে হবে। ক্লিমেন্ট হিল মন্তব্য করেন যে, যে-কোন যোগ্যতার বিচারে একাদশে তার উপস্থিতি রাবার জয়ে সহায়ক হবে।[33]
১৯০৪ মৌসুমটি বোসানকুয়েত ব্যাট ও বল হাতে সেরা সময় পার করেন। শুরুতে তার ব্যাটিং বেশ নিচুমানের ছিল। ছয় খেলার প্রথম নয় ইনিংসে দুই অঙ্কের কোঠায় স্পর্শ করতে পারেননি। তবে, বল হাতে তিনি ঠিকই সফলতা পেয়েছেন। সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা দলের বিপক্ষে এমসিসি দলের সদস্যরূপে ৯/১০৭ পান ও আই জিঙ্গারি’র সদস্যরূপে ইংল্যান্ড জেন্টলম্যানের বিপক্ষে ৭/৮৩ পান। তন্মধ্যে, শেষ খেলায় ১১ উইকেট পেয়েছিলেন।
পূর্ববর্তী মৌসুমে চমৎকার ক্রীড়াশৈলীর উপস্থাপনার কারণে উইজডেন কর্তৃক তিনি অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন। এ প্রসঙ্গে উইজডেন মন্তব্য করে যে, চমৎকার ব্যাটিং উপযোগী পিচেও শক্তিধর দলের বিপক্ষে তার ন্যায় অন্য কোন বোলার সহায়তা পাননি। কোন ব্যাটসম্যানই তিনি কীভাবে গুগলি বোলিং করেন তার রহস্য খুঁজে পাননি। অধিকন্তু, তিনি শীর্ষসারির বোলারদের তুলনায় খুব কমই খারাপ বল ছুঁড়েছেন।[34]
১৯০৫ সালে অস্ট্রেলীয়রা ইংল্যান্ড সফরে আসে। প্রথম টেস্ট শুরুর পূর্বে বোসানকুয়েত মাত্র তিনটি খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। নটিংহ্যামশায়ারের বিপক্ষে ৯৩ রান তুলেন।[6] সাসেক্সের বিপক্ষে উভয় ইনিংসে শতরান করেন যা তার খেলোয়াড়ী জীবনের দ্বিতীয় ছিল। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করতে ১০৫ মিনিট ও দ্বিতীয়টিতে ৭৫ মিনিট খরচ করেন তিনি।[35] মিডলসেক্সের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ৮/৫৩ ও খেলায় ১১ উইকেট সংগ্রহ করেন।[6] প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে একই খেলায় উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরিসহ ১০ উইকেট পান। ২০১৫ সাল পর্যন্ত আরও দুইজন খেলোয়াড় এ অর্জনের সাথে নিজেকে জড়িয়ে রেখেছেন।[ব 3][36]
দুইটি কাউন্টি খেলায় অংশ নেন তিনি। ব্যাট কিংবা বল হাতে খুব কম সফলতা পেলেও দ্বিতীয় টেস্ট খেলার জন্য মনোনীত হন বার্নার্ড বোসানকুয়েত। দুই ইনিংসে তিনি মাত্র ছয় ও অপরাজিত চার রান করেন এবং একমাত্র ইনিংসটিতে কোন বোলিং করেননি।[6] সিরিজের তৃতীয় টেস্টের পূর্বে কেন্টের বিপক্ষে মিডলসেক্সের সদস্যরূপে একটি খেলায় অংশ নিয়ে ১১ উইকেট পান। তৃতীয় টেস্টে ২০ ও অপরাজিত ২২ রান এবং খেলায় একটি উইকেট সংগ্রহ করেন তিনি। এটিই সিরিজের শেষ টেস্টে তার অংশগ্রহণ ছিল। চূড়ান্ত দুই টেস্টে দল থেকে বাদ দেয়া হয় তাকে।[6] উইজডেন মন্তব্য করে যে, বোসানকুয়েত পুরোপুরি হতাশাজনক ফলাফল করেছেন।[37] এছাড়াও অ্যালমেনাক প্রথম টেস্টের বিষয়ে আলোকপাত করে। প্রথম প্রয়াসেই তিনি ইংল্যান্ডের পক্ষে পুরো মৌসুমে খেলা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা রেখেছিলেন। কিন্তু, তিনি তার ক্রীড়াশৈলী ধরে রাখতে পারেননি। ফলশ্রুতিতে, লিডসের পর প্রথম একাদশ থেকে তাকে দলের বাইরে রাখা হয়।[38] ইংল্যান্ডের পক্ষে সাত খেলায় অংশ নিয়ে ১৩.৩৬ গড়ে ১৪৭ রান তুলেন ও ২৪.১৬ গড়ে ২৫ উইকেট তুলে নেন।[39]
মৌসুমের বাদ-বাকী সময়ে বোসানকুয়েত ইনিংসে তিনের বেশি উইকেট পাননি। তবে, এসেক্সের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন ও অপর তিনটি অর্ধ-শতক হাঁকান। জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে ৩৮ ও ১৯ রান করেন। ১৭ ওভার বোলিং করলেও কোন উইকেট লাভে ব্যর্থ হন।[6] ২০টি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় ৩৭.৪৩ গড়ে ১,১৯৮ রান এবং ২৭.৭৭ গড়ে ৬৩ উইকেট পান। এই মৌসুম শেষে তিনি খুব কমই বোলিং করতেন। ১৯০৫ সালের পর আর গুগলি ছুঁড়তেন না। পরবর্তী আট মৌসুমের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে মাত্র ২২ উইকেট পেয়েছিলেন।[9][10][40] তবে, এ সময়ে তার ব্যাটিংয়ের প্রভূতঃ উত্তরণ দেখা যায়।[3]
১৯০৫ সালের পর ব্যবসায়িক দায়বদ্ধতার কারণে মাত্র কয়েকটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় তার অংশগ্রহণ ছিল। অল-রাউন্ডারের চেয়ে ব্যাটসম্যান হিসেবেই তিনি ভূমিকা রাখার চেষ্টা চালান। খুব কমই মিডলসেক্সের পক্ষে খেলেন। কোন অনুশীলনী বাদেই তিনি খেলায় অংশ নিতেন। ১৯০৬ সালে চার খেলায় অংশ নেন। সমারসেটের বিপক্ষে ৮৭ ও ১০১ রান তুলেন প্রথম খেলায় ও দ্বিতীয় খেলায় ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ৫/৫১ পান। তৃতীয় খেলায় মিডলসেক্সের বিপক্ষেও দুইটি অর্ধ-শতক করে তার চমৎকার ক্রীড়াশৈলী অব্যাহত রাখেন। ফলশ্রুতিতে জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে খেলার জন্য মনোনীত হন তিনি। ঐ খেলায় তিনি বোলিং না করলেও প্রথম ইনিংসে ৫৬ রান করেন।[6] সর্বমোট তিনি ৫১.৮৭ গড়ে ৪১৫ রান করেন ও ৪৬.০০ গড়ে আট উইকেট পান তিনি।[9][10] পরের মৌসুমে মিডলসেক্সের পক্ষে ছয় খেলায় অংশ নেন। এ সময় তিনি দুই উইকেট, তিনটি অর্ধ-শতকসহ ৩৫.০০ গড়ে ৩৫৮ রান তুলেন। ১৯০৮ সালে বোসানকুয়েত আরও নিজেকে মেলে ধরেন। ৫৪.০৫ গড়ে ১,০৮১ রান তুলেন ও ব্যাটিং গড়ে প্রথম-শ্রেণীর খেলায় শীর্ষস্থানে থাকেন। সমারসেট ও ল্যাঙ্কাশায়ারের বিপক্ষে মিডলসেক্সের সদস্যরূপে সেঞ্চুরিসহ তিনটি অর্ধ-শতক করেন তিনি।[6][9] লর্ডসে জেন্টলম্যান বনাম প্লেয়ার্সের খেলায় দুইবার প্রতিনিধিত্ব করেন। মৌসুম শেষের উৎসবমুখর খেলায় অবশ্য অর্ধ-শতকের সন্ধান পাননি তিনি। তাস্বত্ত্বেও সেপ্টেম্বরে অন্য দুইটি উৎসবমুখর খেলায় সাউথের পক্ষে নর্থের বিপক্ষে অর্ধ-শতক পান ও কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ী ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ইংল্যান্ড বহিঃএকাদশের সদস্যরূপে ২১৪ রান করেন যা তার খেলোয়াড়ী জীবনের সর্বোচ্চ ছিল।[6][41] এছাড়াও ঐ মৌসুমে তিনি ২৯.০০ গড়ে ১২ উইকেট পান।
১৯১১ সালের পূর্ব-পর্যন্ত আর কোন প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ করেননি বোসানকুয়েত। ১৯১১ মৌসুমের শেষদিকে স্কারবোরা উৎসবের শেষ দুই খেলায় অংশ নেন তিনি। প্রথম খেলাটিতে প্লেয়ার্সের বিপক্ষে জেন্টলম্যানের সদস্যরূপে ৭৫ মিনিটে সেঞ্চুরি তুলে নেন। তন্মধ্যে, সিডনি বার্নসের বোলিং আক্রমণ মোকাবেলা করেন তিনি।.[6][42] ১৯১২ সালে মিডলসেক্সের পক্ষে খেলেন ও অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলার জন্য মনোনীত হলেও ব্যাট বা বল কোনটিতেই অংশগ্রহণের সুযোগ হয়নি তার। এরপর আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে তিনটি প্রদর্শনী খেলায় অংশ নেন।[6] ১৯১৩ সালে দুইটি খেলায় অংশ নেন। এল. রবিনসন একাদশের পক্ষে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে দুইটি অর্ধ-শতক করেন। মৌসুমের শেষদিকে তৃতীয় অর্ধ-শতকটি হাঁকান। ১৯১৪ সালে ফ্রাঙ্ক টার্যান্টের আর্থিক সুবিধার খেলায় মিডলসেক্সের সদস্যরূপে হ্যাম্পশায়ারের বিপক্ষে খেলেন ও এল. রবিনসন একাদশের পক্ষে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখোমুখি হন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শেষে ১৯১৯ মৌসুমে সাত খেলায় অংশ নেন। মিডলসেক্সের পক্ষে ছয়টিতে অংশ নিয়ে ২৭.৯১ গড়ে তিনটি অর্ধ-শতকসহ ৩৩৫ রান তুলেন।[6][9] এরপর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তাকে আর দেখা যায়নি। ২১ শতকসহ ৩৩.৪১ গড়ে ১১,৬৯৬ রান তুলে খেলোয়াড়ী জীবন শেষ করেন তিনি। বল হাতে ২৩.৮০ গড়ে ৬২৯ উইকেট পান।[39] এরপরও তিনি ক্লাব পর্যায়ের ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন।[1]
লেগ ব্রেক বোলার হবার পর বোসানকুয়েত বলকে খুবই ধীরগতিতে ডেলিভারি করতেন ও দেখতে তেমন বিপজ্জ্বনক ছিল না। তবে লেগ ব্রেক বোলিংয়ে অংশগ্রহণকালীন অফ ব্রেকের দিকে বল ফেলে বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানকে বিভ্রান্তের দিকে নিয়ে যেতেন ও এই গুগলি বলকে সম্পূর্ণভাবেই বল ডেলিভারির নতুন ধরনরূপে স্বীকৃতি দেয়া হয়।[16][34] এ প্রক্রিয়াটি অর্জনে বল অবমুক্ত করার পূর্ব-পর্যন্ত তার কব্জিতে থাকতো।[43] এ বৈসাদৃশ্যমূলক বোলিংয়ের কার্যকারিতা গুড লেন্থ বোলিংয়ে বেশ কয়েকবার প্রকাশ পায়। তবে, তিনি কখনো বিশ্বস্ত বোলার হিসেবে স্বীকৃতি পাননি। অন্যদিকে অনেকবার তিনি দীর্ঘ লম্ফ দিয়ে বোলিং করতেন ও ফুল টস দিয়ে খুব সহজেই রান প্রদান করতেন।[1][44] ওয়ার্নার বোসানকুয়েত সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, তিনি বিশ্বের অন্যতম বাজে সেরা বোলার।[25]
প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালীন সময় বোসানকুয়েত রয়্যাল ফ্লাইং কোরে লেফট্যানেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ছিলেন। ৫ এপ্রিল, ১৯২৪ তারিখে জনৈক সংসদ সদস্যের কন্যা মেরি জ্যানেট কেনেডি-জোন্সের সাথে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। তাদের সংসারে এক পুত্র রেজিনাল্ড বোসানকুয়েত জন্মগ্রহণ করে ও পরবর্তীকালে টেলিভিশনে সংবাদপাঠক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করে।[3] পিতার মৃত্যুর পর বোসানকুয়েত মিডলসেক্সের পৈত্রিক ভিটাবাড়ী বিক্রয় করে সারের ওয়াইকহার্স্ট ফার্মে স্থানান্তরিত হন। সেখানেই ১২ অক্টোবর, ১৯৩৬ তারিখে ৫৮ বছর বয়সে সারের ইউহার্স্ট এলাকার ওয়াইকহার্স্টে তার দেহাবসান ঘটে।[3] মৃত্যুকালে তিনি £২,২৭৬ পাউন্ড মূল্যমানের সম্পত্তি রেখে যান।[3]
গুগলি বোলিং আবিষ্কারের পূর্বে অপ্রত্যাশিত বিষয় ছিল।[45] শুরুতে গুগলিকে নিচুমূখী হাতের বোলিং কৌশল হিসেবে আখ্যায়িত করা হতো।[46] একবার নটিংহ্যামশায়ারের ব্যাটসম্যান উইলিয়াম গান স্ট্যাম্প ছেড়ে পিচে দৌড়ে এসে বোসানকুয়েতের একটি বল থামিয়ে দেবার চেষ্টা করেন। গানের দলীয় সঙ্গী আর্থার শ্রিউসবারি বোসানকুয়েতের বোলিংকে অখেলোয়াড়ীসূলভ হিসেবে আপত্তি উত্থাপন করেন।[17] একবার গুগলিকে অবৈধ ঘোষণা করা হবে না কেন, এর বিপরীতে বোসানকুয়েত জবাব দিয়েছিলেন যে, তা হতে পারে না, এটি অমর।[47] অনেক বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় গুগলিকে বোসি নামে ডাকা হতো।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.