Loading AI tools
অদ্বৈত আশ্রম থেকে প্রকাশিত পত্রিকা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
প্রবুদ্ধ ভারত (ইংরেজি: Awakened India) ( অর্থ' - 'জাগ্রত ভারত') হল রামকৃষ্ণ ভাবধারায় একটি ইংরেজি ভাষার মাসিক আধ্যাত্মিক পত্রিকা। এটি ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দের জুলাই থেকে ভারতের সনাতন ধর্মীয়, মনস্তাত্ত্বিক, দার্শনিক, ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ের নানা রচনা প্রকাশিত হয়। এটিতে বইয়ের পর্যালোচনার একটি বিভাগ রয়েছে যেখানে বিশ্বজুড়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনাগুলি পর্যালোচনা করা হয়। এটি উত্তরাখণ্ডের অদ্বৈত আশ্রম, মায়াবতীতে সম্পাদিত এবং কলকাতায় মুদ্রিত ও প্রকাশিত হয়। নিরবচ্ছিন্ন ভাবে প্রকাশিত ‘প্রবুদ্ধ ভারত’ই দেশের একমাত্র প্রাচীন ইংরেজি পত্রিকা।[1]
সংক্ষিপ্ত শিরোনাম (আইএসও ৪) | Prabuddha Bharata |
---|---|
পাঠ্য বিষয় | মানববিদ্যা, সামাজিক বিজ্ঞান, ভারতবিদ্যা, বেদান্ত, আধ্যাত্মিকতা, ধর্ম, সংস্কৃতি |
ভাষা | ইংরাজী |
সম্পাদক | স্বামী বীরেশানন্দ |
প্রকাশনা বিবরণ | |
প্রকাশক | |
প্রকাশনার ইতিহাস | জুলাই ১৮৯৬ – বর্তমান |
পুনরাবৃত্তি | মাসিক |
সূচীকরণ | |
আইএসএসএন | ০০৩২-৬১৭৮ |
এলসিসিএন | ca30000793 |
ওসিএলসি নং | 781901638 |
সংযোগ | |
১৮৮০ এর দশকের শেষের দিকে সমগ্র ভারত ভ্রমণে স্বামী বিবেকানন্দ উপলব্ধি করেছিলেন যে, আধ্যাত্মিক জ্ঞান ও দর্শনে সমৃদ্ধ ভারতবর্ষের অতীতের আধ্যাত্মিক গৌরব ধ্বংসাত্মক আক্রমণে এবং সমসাময়িক ঔপনিবেশিকতায় হ্রাস অথবা লুপ্ত হয়েছে। সামাজিক জাগরণের মাধ্যম হিসাবে জার্নাল তথা পত্র পত্রিকার গুরুত্ব অসীম। ভারতীয় আধ্যাত্মিক জ্ঞানের মূল প্রচারের জন্য, বেদান্তের বার্তা মানুষের ভাষায় বহন করার জন্য কিছু জার্নাল শুরু করতে চেয়েছিলেন বিবেকানন্দ। জীবদ্দশায় তিনটি পত্রিকা - ইংরাজীতে 'ব্রহ্মবাদিন' (১৮৯৫) এবং 'প্রবুদ্ধ ভারত ' (১৮৯৬) এবং বাংলায় 'উদ্বোধন'(১৮৯৯)।
স্বামী বিবেকানন্দের নির্দেশে ১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে তার অনুগামী পি. আইয়াসামি, বি আর রাজারাম আইয়ার , জি জি নরসিংহাচার্য, এবং বি ভি কামেশ্বর আইয়ার প্রমুখের প্রচেষ্টায় মাদ্রাজে (বর্তমানে চেন্নাইয়ে) প্রবুদ্ধ ভারত এর প্রকাশনা শুরু হয়। এরা ১৮৯৩ খ্রিস্টাব্দে স্বামীজির আমেরিকা গমনের পূর্বে পরিচিত হয়েছিলেন এবং এই গৃহী ভক্তবৃন্দ চিঠি আদান প্রদানের মাধ্যমে স্বামীজির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে যুক্ত ছিলেন। বেদান্ত পণ্ডিত বি আর রাজাম আইয়ারে পত্রিকার প্রথম সম্পাদক হন এবং তিনি অকাল মৃত্যু (চব্বিশ বৎসর বয়সে) পর্যন্ত (১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দের জুন মাস) সম্পাদনা চালিয়ে যান। পূর্ণ দু'বছরের প্রকাশনার পর কিছু সময়ের (এক মাসের জন্য; ২২ জুন - ১৫ জুলাই ১৮৯৮ ) জন্য 'প্রবুদ্ধ ভারত' -এর প্রকাশনা বন্ধ হয়। ভগিনী নিবেদিতার স্মৃতিকথায় প্রকাশ, জার্নালটির এই অপ্রত্যাশিত বিরতি স্বামীজিকে ব্যথিত করেছিল, কেননা "স্বামী বিবেকানন্দ সবসময় এই কাগজটির প্রতি বিশেষ ভালবাসা পোষণ করতেন। জার্নালটির অসাম্প্রদায়িক নাম- "প্রবুদ্ধ ভারত " -- জাগ্রত ভারত" সুন্দর নামকরণ তিনিই করেছিলেন। নামটি হিন্দুদের আঘাত না করেই, বৌদ্ধদের কাছে টানার [ প্র-- বুদ্ধ গোতমের সঙ্গে --ভারত, অর্থাৎ বৌদ্ধ ধর্মের সাথে হিন্দুধর্ম] ইঙ্গিত ছিল। আর নামটির পিছনে তার এক মহৎ চিন্তাও ছিল - জাতির চেতনা প্রকাশের সঙ্গে রাজনৈতিক বা আঞ্চলিক সত্তার বাইরে স্বামীজি 'জাগ্রত ভারত' গড়তে চেয়েছিলেন। স্বামীজি ভারতকে এক সাংস্কৃতিক চেতনা হিসাবে দেখেছিলেন, যা বহু শতাব্দী ধরে সঞ্জীবিত ছিল।
ইতিমধ্যে স্বামী বিবেকানন্দ দেশে ফিরে এসে যখন আলমোড়ায় অবস্থান করছিলেন, সে সময় তিনি তার একজন ইংরেজ শিষ্য ক্যাপ্টেন জে এইচ সেভিয়ারকে পত্রিকা পরিচালনার দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। সেভিয়ার সম্মত হয়ে পত্রিকার পুনরুজ্জীবনের জন্য নিজের খরচে কলকাতা হতে হ্যান্ড-প্রেস, অক্ষরের হরফ, কাগজপত্র, কালি ইত্যাদি উপকরণের ব্যবস্থা করেন।[2] পত্রিকার সম্পাদকীয় কার্যালয় আলমোড়ায় স্থানান্তরিত হয় ১৮৯৮ খ্রিস্টাব্দের আগস্টে এবং ওই মাসেই বিবেকানন্দের সন্ন্যাসী শিষ্যদের একজন স্বামী স্বরূপানন্দের সম্পাদনায় প্রবুদ্ধ ভারত পুনরায় প্রকশিত হয়। এক বছর পর ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে অধুনা উত্তরাখণ্ডের মায়াবতীতে নব প্রতিষ্ঠিত অদ্বৈত আশ্রমে স্থানান্তরিত হয়।
ভারতীয় সংস্কৃতি, আধ্যাত্মিকতা, দর্শন, ইতিহাস, মনস্তত্ত্ব, শিল্পকলা সহ সামাজিক নানা বিষয়ে ভারত ও বিশ্বের কিছু মহান মনীষী মহান ব্যক্তিত্বরা তাঁদের সৃষ্টির সাক্ষর ‘প্রবুদ্ধ ভারত’-এর পাতায় রেখে গেছেন। কোন না কোন সময়ে কলম ধরেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জগদীশচন্দ্র বসু, ভগিনী নিবেদিতা, শ্রী অরবিন্দ, বাল গঙ্গাধর তিলক, যদুনাথ সরকার , জওহরলাল নেহরু, সুভাষচন্দ্র বসু, কার্ল ইয়ুং, ফ্রিত্জফ কাপরা, দলাই লামা, সর্বপল্লি রাধাকৃষ্ণণ, এ পি জে আবদুল কালাম এবং গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক এর মতো বিশিষ্ট জনেরা।[3] [4] ডঃ রাধাকৃষ্ণন এই জার্নালের প্রতিটি সংখ্যা খুব আগ্রহ নিয়ে পড়তেন।[5] একসময়ে এই পত্রিকা পড়ার জন্য অধীর আগ্রহ অপেক্ষা করতেন জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীও।[6] যোগ এবং ধ্যানের উপর 'বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী কার্ল জং'-এর থিসিসটি ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল এবং প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল প্রবুদ্ধ ভারতেই।' [7][8] স্বামীজি নির্দিষ্ট করে বলেছিলেন - "ভারততত্ত্ব বা দর্শন নিয়ে কেউ গবেষণা করলে , তাকে প্রবুদ্ধ ভারত পড়তেই হবে৷"[9]
পত্রিকাটি অভ্যন্তরীণ বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিবর্গের দ্বারা যাচাই করা রচনা, নিবন্ধ, বিষয়সমূহ প্রকাশ করে এবং প্রত্যাখ্যানের হার প্রায় আশি শতাংশ। পত্রিকার সম্পাদক দ্বারা আমন্ত্রিত গবেষণাপত্র সাধারণ স্থান পেয়ে থাকে। আমন্ত্রিত নয় এমন রচনা , নিবন্ধসমূহ প্রায় এক বছর বা তার বেশি সময় পড়ে থাকতে পারে।[10]
১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের মার্চ হতে প্রকাশিত পত্রিকাটির সম্পাদনা সংস্থার বিভিন্ন পদাধিকারিরা করেছেন। অদ্বৈত আশ্রমে স্থানান্তরিত হওয়ার পর প্রথম তিনজন সম্পাদকও ছিলেন আশ্রমের সভাপতি। এরপর সম্পাদক ও সভাপতি ছিলেন বিভিন্ন ব্যক্তি। ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে সভাপতিই সম্পাদক হতেন এবং প্রকৃত সম্পাদককে যুগ্ম সম্পাদক বলা হত। ১৯৯৩ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাস থেকে, আশ্রম সভাপতিকে ব্যবস্থাপক সম্পাদক বলা হয়, এবং সম্পাদককে আবার সম্পাদক বলা হয়।
× | সময়কাল | সম্পাদক |
---|---|---|
১ | জুলাই ১৮৯৬ - জুন ১৮৯৮ | বি. আর. রাজম আইয়ার |
২ | আগস্ট ১৮৯৮ - জুলাই ১৯০৬ | স্বামী স্বরূপানন্দ |
৩ | আগস্ট ১৯০৬ - ডিসেম্বর ১৯১৩ | স্বামী বিরজানন্দ |
৪ | জানুয়ারি ১৯১৪ - মে ১৯১৮ | স্বামী প্রজ্ঞানন্দ |
৫ | জুন ১৯১৮ - ডিসেম্বর ১৯২১ | স্বামী রাঘবানন্দ |
৭ | ডিসেম্বর ১৯২২ - ডিসেম্বর ১৯২৪ | স্বামী যতিশ্বরানন্দ |
৭ | জানুয়ারি ১৯২৫ - ডিসেম্বর ১৯২৬ | স্বামী বিবিধানন্দ |
৮ | জানুয়ারি ১৯২৭ - ডিসেম্বর ১৯৩০ | স্বামী অশোকানন্দ |
৯ | জানুয়ারি ১৯৩১ - ডিসেম্বর ১৯৩৪ | স্বামী পবিত্রানন্দ |
১০ | জানুয়ারি ১৯৩৫ - ডিসেম্বর ১৯৩৭ | স্বামী মৈথিলিয়ানন্দ |
১১ | জানুয়ারি ১৯৩৮ - ডিসেম্বর ১৯৩৯ | স্বামী তেজাসানন্দ |
১২ | জানুয়ারি ১৯৪0 - ডিসেম্বর ১৯৪১ | স্বামী বিপুলানন্দ |
১৩ | জানুয়ারি ১৯৪২ - ডিসেম্বর ১৯৪৪ | স্বামী গম্ভীরানন্দ |
১৪ | জানুয়ারি ১৯৪৫ - ডিসেম্বর ১৯৪৭ | স্বামী যোগেশ্বরানন্দ |
১৫ | জানুয়ারি ১৯৪৮ - ডিসেম্বর ১৯৪৯ | স্বামী ব্রহ্মময়ানন্দ |
১৬ | জানুয়ারি ১৯৫০ - ডিসেম্বর ১৯৫৪ | স্বামী বন্দনানন্দ |
১৭ | জানুয়ারি ১৯৫৫ - ডিসেম্বর ১৯৫৬ | স্বামী সৎস্বরূপানন্দ |
১৮ | জানুয়ারি ১৯৫৭ - ডিসেম্বর ১৯৫৮ | স্বামী নিহশ্রেয়াসানন্দ |
১৯ | জানুয়ারি ১৯৫৯ - ডিসেম্বর ১৯৬১ | স্বামী অনন্যানন্দ |
২০ | জানুয়ারি ১৯৬২ - ডিসেম্বর ১৯৬৩ | স্বামী চিদাত্মানন্দ |
২১ | জানুয়ারি ১৯৬৪ - ডিসেম্বর ১৯৬৫ | স্বামী কীর্তিদানন্দ |
২২ | জানুয়ারি ১৯৬৬ - জুলাই ১৯৬৮ | স্বামী আদিস্বরানন্দ |
২৩ | আগস্ট ১৯৬৮ - ডিসেম্বর ১৯৬৮ | স্বামী বুধনন্দ |
২৪ | জানুয়ারি ১৯৬৯ - ডিসেম্বর ১৯৭০ | স্বামী রসজ্ঞানন্দ |
২৫ | জানুয়ারি ১৯৭১ - ডিসেম্বর ১৯৭৬ | স্বামী তদ্রুপানন্দ |
২৬ | জানুয়ারি ১৯৭৭ - ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ | স্বামী বলরামানন্দ |
২৭ | মার্চ ১৯৭৯ - ডিসেম্বর ১৯৮৬ | স্বামী ভজনানন্দ |
২৮ | জানুয়ারি ১৯৮৭ - ডিসেম্বর ১৯৮৯ | স্বামী জিতাত্মানন্দ |
২৯ | জানুয়ারি ১৯৯০ - ডিসেম্বর ১৯৯৩ | স্বামী মুক্তিরূপানন্দ |
৩০ | জানুয়ারি ১৯৯৪ - ডিসেম্বর ১৯৯৬ | স্বামী আত্মরামানন্দ |
৩১ | জানুয়ারি ১৯৯৭ - ডিসেম্বর ১৯৯৮ | স্বামী সত্যপ্রিয়ানন্দ |
৩২ | জানুয়ারি ১৯৯৯ - ডিসেম্বর ২০০১ | স্বামী সুনির্মলানন্দ |
৩৩ | জানুয়ারি ২০০২ - ডিসেম্বর ২০০৪ | স্বামী যুক্তাত্মানন্দ |
৩৪ | জানুয়ারি ২০০৫ - অক্টোবর ২০১০ | স্বামী সত্যস্বরূপানন্দ |
৩৫ | নভেম্বর ২০১০ - জুলাই ২০১৪ | স্বামী সত্যময়ানন্দ |
৩৬ | আগস্ট ২০১৪ - জুলাই ২০২০ | স্বামী নরসিংহানন্দ |
৩৭ | আগস্ট ২০২০ - বর্তমান | স্বামী বীরেশানন্দ |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.