পৃথ্বীরাজ চৌহান
আজমিরের রাজা (১১৪৯–১১৯২ খ্রিঃ) উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
রায় পিথোরা বা পৃথ্বীরাজ চৌহান (১১৪৯–১১৯২ খ্রিঃ) চৌহান রাজবংশের একজন রাজপুত রাজা,[১] যিনি দ্বাদশ শতাব্দীর শেষ অর্ধে উত্তর ভারতের আজমির এবং দিল্লীর শাসনকর্তা ছিলেন। [২]
হিমুর পূর্বে পৃথ্বীরাজ চৌহানই ছিলেন সর্বশেষ হিন্দু রাজা যিনি দিল্লীর সিংহাসনে আরোহণ করেছিলেন। তিনি মাত্র ১৩ বছর বয়সে ১১৬২ সালে সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনি আজমির ও দিল্লী এই দুটি রাজধানী হতেই শাসনকার্য পরিচালনা করতেন। দিল্লীর তমারা সম্রাজ্যের অধিপতি ছিলেন পৃথ্বীরাজের মাতামহ তৃতীয় আর্কপাল বা আনাঙ্গপাল, পৃথ্বীরাজ তার মাতামহের পরে দিল্লীর সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। তার অধীনে ছিলো বর্তমান রাজস্থান এবং হরিয়ানা রাজ্যের অধিকাংশ এলাকা। পৃথ্বীরাজ তুর্কি আক্রমণের বিরুদ্ধে ভারতের হিন্দু রাজাদিগকে একতাবদ্ধ করেন। ১১৭৫ সালে তিনি কনৌজের রাজা জয়চন্দ্রের কন্যা সংযুক্তাকে অপহরণ করে বিয়ে করেন তার অসম্মতিতে, যে ঘটনাটি ভারতে একটি জনপ্রিয় প্রেম উপাখ্যান হিসেবে প্রচলিত রয়েছে।
পৃথ্বীরাজ চৌহান ১১৯১ সালে তরাইনের প্রথম যুদ্ধে মুহাম্মাদ ঘুরিকে পরাজিত করেন। পরবর্তী বছর ঘৌরি পুনরায় আক্রমণ করলে তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে পৃথ্বীরাজ চৌহান পরাজিত ও বন্দী হয়ে পরবর্তীতে মৃত্যুবরণ করেন।
জীবনী
সারাংশ
প্রসঙ্গ
হিন্দু শাসকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ
প্রথমে নাগার্জুনকে পরাজিত করে পারিবারিক বিবাদের ফয়সালা করেন তিনি। নাগার্জুনের দখলিকৃত গুদাপুরা দুর্গ পুনরুদ্ধার করেন পৃথ্বীরাজ। জেজাকাভুক্তির চাণ্ডিলা বংসীয় রাজা পরমার্দিকেও পরাজিত করেছিলেন তিনি। চালুক্য বংশের সঙ্গেও পৃথ্বীরাজের পারিবারিক বিবাদ ছিল। চালুক্যরাজ দ্বিতীয় ভীমের সঙ্গে তাঁর শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এইও চালুক্যরাই পৃথ্বীরাজের বাবা সোমেশ্বরকে হত্যা করেছিল। এছাড়াও গাহদাবল রাজ্যের রাজা জয়চাঁদের কন্যা সংযুক্তাকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিলেন পৃথ্বীরাজ। পরবর্তীকালে সংযুক্তাকে বিবাহ করেন তিনি।
তরাইনের প্রথম যুদ্ধ, ১১৯১
মুহাম্মদ ঘুরি ১১৯১ সালে পাঞ্জাবের ভাটিন্ডা দুর্গ জয় করেন। এই স্থান ছিল পৃথ্বীরাজ চৌহানের সীমান্ত এলাকা।[৩] পৃথ্বীরাজ ভাটিন্ডার দিকে অগ্রসর হয়ে তরাইন নামক স্থানে থানেশ্বরের নিকটে প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হন। ঘুরি বাহিনীর অশ্বারোহীদের প্রতিপক্ষের মধ্যভাগের দিকে তীর নিক্ষেপের মাধ্যমে লড়াই শুরু হয়। পৃথ্বীরাজের বাহিনী তিন দিক থেকে পাল্টা আক্রমণ করে এবং যুদ্ধে আধিপত্য স্থাপন করে। ফলে ঘুরিরা পিছিয়ে যায়। পৃথ্বীরাজের ভাই গোবিন্দ তাই সাথে ব্যক্তিগত লড়াইয়ে মুহাম্মদ ঘুরি আহত হয়েছিলেন।[৩] এই যুদ্ধে পৃথ্বীরাজ ঘুরিদের প্রতিরোধ করতে সক্ষম হন।
তরাইনের প্রথম ও দ্বিতীয় যুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়
তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধ, ১১৯২

তরাইনের দ্বিতীয় যুদ্ধে (১১৯২) জয়লাভ করেন মুহাম্মদ ঘুরী। এই জয়লাভের মধ্য দিয়ে ভারতে সর্ব প্রথম তুর্কি সাম্রাজ্যের বিস্তার করেন মুহাম্মদ ঘুরী।
লোককথা
জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে
পৃথ্বীরাজের জীবনী অবলম্বনে বলিউড পরিচালক চন্দ্রপ্রকাশ দ্বিবেদী বানিয়েছেন চলচ্চিত্র ' সম্রাট পৃথ্বীরাজ'। এতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছেন অক্ষয় কুমার, সংযুক্তার ভূমিকায় সাবেক বিশ্বসুন্দরী মানুষী চিল্লার। চলচ্চিত্রটি ৩ জুন ২০২২ মুক্তি পায়। [৪]
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.