পৃত্থিমপাশা জমিদার বাড়ি
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পৃথিমপাশা জমিদার বাড়ি (যা পৃথিমপাশা নবাব বাড়ি নামেও পরিচিত) বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলায় জমিদারী আমলের স্মৃতি বিজড়িত এক ঐতিহাসিক এবং অপূর্ব স্থাপনার নাম পৃথিমপাশা জমিদার বাড়ি। পৃথিমপাশায় রয়েছে দু’টি জমিদার বাড়ি। এই জমিদার বাড়ির মতো জীবন্ত জমিদার বাড়ি বাংলাদেশে আর দ্বিতীয়টি নেই [১][২][৩][৪]
পৃথিমপাশা জমিদার বাড়ি | |
---|---|
পৃথিমপাশা জমিদার বাড়ি | |
বিকল্প নাম | পৃথিমপাশা নবাব বাড়ি |
সাধারণ তথ্যাবলী | |
ধরন | বাসস্থান |
অবস্থান | কুলাউড়া উপজেলা |
ঠিকানা | পৃথিমপাশা ৩ নং ওয়ার্ড |
শহর | মৌলভীবাজার জেলা |
দেশ | বাংলাদেশ |
উন্মুক্ত হয়েছে | ১৭০০ শতকে |
স্বত্বাধিকারী | নবাব আলী আমজাদ খাঁর পরিবার |
কারিগরী বিবরণ | |
উপাদান | ইট, সুরকি ও রড |
ইরানের রাজা রেজা শাহ পাহলভি যখন এই বাড়ি সফরে আসেন তখন তার সফরকে নিরাপত্তা দিতে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের প্রধান হুকুম জারি করলে আইয়ুব খান কে পাঠানো হয়। (পরবর্তীতে ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান মার্শাল'ল জারি করে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হোন।)
মৌলভীবাজার জেলা সদর থেকে ২৫ একর বিস্তৃত সাজানো-গোছানো জমিদার বাড়ির অবস্থান ৪৭ কিলোমিটার পূর্বে। পুরোনো কয়েকটি স্থাপনার সঙ্গে রয়েছে জমিদার নির্মিত শিয়া সম্প্রদায়ের একটি চমৎকার নকশা খচিত ইমামবাড়া। প্রত্যেকটি স্থাপনাতে আভিজাত্যের ছাপ স্পষ্ট। পাশেই রয়েছে চমৎকার শান বাঁধানো ঘাটসহ সুবিশাল দীঘি।[১][৫][৬]
এই এলাকাটি এক সময় ছিল ত্রিপুরা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। এখানকার পাহাড়ি এলাকায় নওগা কুকি উপজাতির বেশ প্রতাপ ছিল। শ্রীহট্ট সদরে (বর্তমানে সিলেট) সেই সময় একজন কাজী ছিলেন যার নাম মোহাম্মদ আলী। ১৭৯২ সালে ইংরেজ শাসকদের পক্ষ হয়ে নওগা কুকিদের বিদ্রোহ দমনে মোহাম্মদ আলী গুরত্বপূর্ন ভূমিকা রাখেন। ইংরেজ সরকার এতে খুশি হয়ে মোহাম্মদ আলীর পুত্র গাউস আলী খাঁনকে ১২০০ হাল বা ১৪,৪০০ বিঘা জমি দান করেন।[৭]1857 সালের সিপাহী বিদ্রোহের সময় চট্টগ্রাম থেকে হাবিলদার রজব আলীর নেতৃত্বে একদল বিদ্রোহী সৈন্য সিলেট আসলে তার সমর্থন চান। তিনি সরাসরি সাহায্য না করে তাদেরকে পাহাড়ী এলকায় অবস্থান করার পরামর্শ দেন। যুদ্ধ শেষে গাউস আলী খানকে বিদ্রোহে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করে তবে প্রমানের অভাবে ছেড়ে দেয়া হয়।[৮]উত্তরাধিকার সূত্রে এউ জমিদারীর মালিক হন তার ছেলে আলী আহমদ খান। আলী আহমদের সময়ে জমিদারীর আয় ব্যাপক বৃদ্দি পায় এবং তিনি ব্রিটিশ আনুকুল্যও লাভ করেন। তার সময়ে চাদনীঘাট এবং সুরমা নদীর তীরে সিলেট শহরের গোড়াপত্তন হয়। ১৮৭২ সালে ছেলে আলী আমজাদ খানের নামে একটি ক্লক টাওয়ার স্থাপন করেন যা এখন আলী আমজাদের ঘড়ি নামে বিখ্যাত। নবাব আলী আমজাদ খাঁন তখনকার সময়ে বৃহত্তর সিলেটের মধ্যে সবচেয়ে স্বনামধন্য এবং প্রভাবশালী জমিদার ছিলেন। সিলেটের বিখ্যাত সুরমা নদীর তীরে চাঁদনীঘাটের সিঁড়ি সমাজসেবায় তার একটি অন্যতম দৃষ্টান্ত। ঐ সময় পৃথিমপাশা জমিদার বাড়িতে ত্রিপুরার মহারাজা রাধা কিশোর মানিক্য বাহাদুরসহ বহু ইংরেজ ভ্রমণ করে গেছেন। ইরানের রাজাও ভ্রমণ করে গেছেন। জমিদার বাড়ির ঐতিহ্য ধরে রাখতে আলী আমজাদ খাঁন মৌলভীবাজার ও কুলাউড়ায় বিভিন্ন স্কুল-কলেজ এবং সুপেয় পানির জন্য দীঘি খনন করেছিলেন। [১][৩][৯]
আলী আমজাদ খানের পুত্র নবাব আলী হায়দার খান ভারতবর্ষে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও রাজনীতিবিদ ছিলেন।[১০] পৃথিমপাশা জমিদার পরিবারের সন্তান নবাব আলী সারওয়ার খান, নবাব আলী আব্বাস খান প্রমুখরাও বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ এবং সংসদ সদস্য ছিলেন।
এই বাড়ির ভেতর সবকিছু পুরানো আমলের কারুকাজ খচিত মনে হলেও সেগুলো পরিষ্কার ঝকঝকেই আছে এখনো। জমিদারদের ব্যবহার করা অনেক জিনিসপত্র রয়েছে এ বাড়িতে। রক্ষণাবেক্ষণ করার জন্য এখানে লোক রয়েছে। নবাব আলী আমজাদ খাঁর উত্তসুরিরাই দেখাশুনা করেন জমিদার বাড়িটি।[৩][১১]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.