Loading AI tools
আইরিশ অভিনেতা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পিটার সেমাস ওটুল (ইংরেজিː Peter Seamus O'Toole;[১] (/oʊˈtuːl/; ২রা আগস্ট ১৯৩২ – ১৪ই ডিসেম্বর ২০১৩) ছিলেন একজন আইরিশ বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ অভিনেতা। তিনি লন্ডনের রয়্যাল একাডেমি অফ ড্রামাটিক আর্টে মঞ্চনাটক বিষয়ে পড়াশুনা করেন এবং মঞ্চে কাজ শুরু করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে চলচ্চিত্রে কাজ শুরুর পূর্বে ব্রিস্টল ওল্ড ভিসে এবং ইংরেজ মঞ্চ কোম্পানিতে শেকসপিয়রীয় অভিনেতা হিসেবে সুনাম অর্জন করেন।
পিটার ওটুল | |
---|---|
Peter O'Toole | |
জন্ম | পিটার সিমুস ওটুল[১] ২ আগস্ট ১৯৩২ |
মৃত্যু | ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩ ৮১) সেন্ট জন্স উড, লন্ডন, ইংল্যান্ড | (বয়স
জাতীয়তা | অমীমাংসিত |
মাতৃশিক্ষায়তন | রয়্যাল একাডেমি অফ ড্রামাটিক আর্ট |
পেশা | অভিনেতা, লেখক |
কর্মজীবন | ১৯৫৪–২০১২ |
উচ্চতা | ৬ ফুট ২ ইঞ্চি |
দাম্পত্য সঙ্গী | সিন ফিলিপস (বি. ১৯৫৯; বিচ্ছেদ. ১৯৭৯) |
সঙ্গী | কারেন ব্রাউন (১৯৮২-১৯৮৮) |
সন্তান | ৩ জন |
তিনি টি. ই. লরেন্স চরিত্রে লরেন্স অফ অ্যারাবিয়া (১৯৬২) চলচ্চিত্রে অভিনয় করে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি অর্জন করেন এবং তার প্রথম শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি বেকেট (১৯৬৪), দ্য লায়ন ইন উইন্টার (১৯৬৮), গুডবাই, মিস্টার চিপস (১৯৬৯), দ্য রুলিং ক্লাস (১৯৭২), দ্য স্টান্ট ম্যান (১৯৮০), মাই ফেভারিট ইয়ার (১৯৮২) এবং ভেনাস (২০০৬) চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ অভিনেতা বিভাগে আরও সাতবার একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং অভিনয় বিভাগে কোন পুরস্কার লাভ না করা সর্বাধিক মনোনয়ন প্রাপ্তের রেকর্ড ধরে রাখেন। ২০০২ সালে ওটুলকে তার কর্মজীবনের স্বীকৃতি স্বরূপ একাডেমি সম্মানসূচক পুরস্কার প্রদান করা হয়।[২] তিনি চারবার গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার, একবার বাফটা পুরস্কার এবং একবার প্রাইমটাইম এমি পুরস্কার লাভ করেন।
ওটুল ১৯৩২ সালের ২রা আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মস্থান নিয়ে মত পার্থক্য রয়েছে। কেউ মনে করেন করেন তিনি আয়ারল্যান্ডের কাউন্টি গ্যালওয়ের কোনেমারাতে জন্মগ্রহণ করেছেন,[৩] আবার কেউ মনে করেন তিনি ইংল্যান্ডের লিডসের সেন্ট জেমস বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেছেন।[৪][৫] ওটুল তার জন্মস্থান ও জন্ম তারিখ সম্পর্কে নিশ্চিত নয় এবং তার আত্মজীবনীতে এর উল্লেখ নেই, তবে তিনি ২রা আগস্টকে তার জন্মতারিখ হিসেবে গ্রহণ করেছেন। তিনি বলেন তার দুই দেশের জন্ম সনদ রয়েছে, এবং তার আইরিশ জন্ম সনদে তার জন্ম তারিখ ১৯৩২ সালে জুন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। পিটারের একজন বড় বোন আছেন, তার নাম প্যাট্রিশিয়া।[১]
ওটুল ব্রিস্টল ওল্ড ভিস ও ইংরেজ মঞ্চ কোম্পানিতে শেকসপিয়রীয় অভিনেতা হিসেবে তার মঞ্চ কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯৫৪ সালে তার টেলিভিশনে অভিষেক হয়। ১৯৫৯ সালে তিনি প্রথম দ্য ডে দে রবড দ্য ব্যাংক অফ ইংল্যান্ড চলচ্চিত্রে একটি ছোট চরিত্রে অভিনয় করেন।[৬] ডেভিড লিন পরিচালিত লরেন্স অফ অ্যারাবিয়া (১৯৬২) চলচ্চিত্রে টি. ই. লরেন্স চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ওটুলের প্রথম বড় ধরনের সাফল্য আসে। মার্লোন ব্র্যান্ডোর কর্মব্যস্থতা ও আলবার্ট ফিনি এই প্রস্তাব প্রত্যাখান করলে ওটুলকে নির্বাচন করা হয়। প্রিমিয়ার সাময়িকীর সর্বকালের সেরা ১০০ অভিনয়ের তালিকায় তার অভিনয় শীর্ষ স্থান অধিকার করেন।[৭] এই চরিত্রে অভিনয়ের ফলে তিনি মার্কিন দর্শকের কাছে পরিচিতি লাভ করেন এবং তিনি তার আটটি শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়নের প্রথম মনোনয়ন লাভ করেন। তার টি. ই. লরেন্স চরিত্রটি ২০০৩ সালে আমেরিকান ফিল্ম ইনস্টিটিউটের করা তালিকায় ১০ম নায়ক হিসেবে নির্বাচিত হয়।[৮]
ওটুল দুটি ভিন্ন চলচ্চিত্রে একই চরিত্রে অভিনয়ের জন্য অস্কার মনোনীত কয়েকজন অভিনেতার একজন। তিনি বেকেট (১৯৬৪) এবং দ্য লায়ন ইন উইন্টার (১৯৬৮) চলচ্চিত্রে রাজা দ্বিতীয় হেনরি চরিত্রে অভিনয়ের জন্য এই পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। ওটুল লরন্স অলিভিয়ের নির্দেশনায় ১৯৬৩ সালে রয়্যাল ন্যাশনাল থিয়েটারে প্রথম মঞ্চস্থ নাটক হ্যামলেট এ অভিনয় করেন। তিনি উডি অ্যালেন রচিত ও ক্লাইভ ডোনার পরিচালিত হোয়াট্স নিউ পুসিক্যাট (১৯৬৫) চলচ্চিত্র পিটার সেলার্সের পাশাপাশি তার কৌতুকাভিনয়ের প্রতিভা প্রদর্শন করেন।[৯]
১৯৬৯ সালে তিনি গুডবাই, মিস্টার চিপস চলচ্চিত্রে নাম ভূমিকায় অভিনয় করে প্রশংসিত হন।[১০] এটি জেমস হিল্টনের উপন্যাসিকার সঙ্গীতধর্মী উপযোগকরণ। এতে তার বিপরীতে অভিনয় করেন পেটুলা ক্লার্ক। এই চলচ্চিত্রের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন এবং শ্রেষ্ঠ সঙ্গীতধর্মী বা হাস্যরসাত্মক চলচ্চিত্র অভিনেতার জন্য গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার লাভ করেন।
ওটুলের সারাজীবনের স্বপ্ন পূরণ হয় যখন ১৯৭০ সালে তিনি ডোনাল ম্যাককানের সাথে ডাবলিন অ্যাবি থিয়েটারে স্যামুয়েল বেকেটের ওয়েটিং ফর গডো নাটকে অভিনয় করেন। ১৯৭২ সালে তিনি মিগেল দে থের্ভান্তেস ও তার কাল্পনিক ডন কিহোতে বইয়ের চরিত্রে ১৯৬৫ সালের ব্রডওয়ের গীতিনাট্যের চলচ্চিত্র উপযোগকৃত ম্যান অফ লা মাঞ্চা চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। এতে তার বিপরীতে ছিলেন সোফিয়া লরেন। ছবিটিতে বেশিরভাগ অভিনয়শিল্পীর গানে দক্ষতা না থাকার কারণে নেতিবাচক সমালোচনা লাভ করে এবং বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হয়। অন্য অভিনয়শিল্পীগণ নিজেরাই গানে কণ্ঠ মেলালেও ওটুলের অংশের গানে কণ্ঠ দেন সিমন গিলবার্ট।[১১] ওটুল ও তার সহ-অভিনেতা জেমস কোকো দুজনের গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। একই বছর তিনি পিটার বার্নসের ব্যঙ্গাত্মক নাটক দ্য রুলিং ক্লাস অবলম্বনে একই নামের চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে ব্যর্থ হলেও ওটুলের অভিনয় প্রশংসিত হয় এবং তিনি তার পঞ্চম একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন।[১২]
১৯৮০ সালে তিনি দ্য স্টান্ট ম্যান চলচ্চিত্রে পরিচালক চরিত্রে অভিনয় করেন সমালোচকদের প্রশংসা লাভ করেন।[১৩][১৪] এই ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি তার ষষ্ঠ একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন। তিনি ম্যান অ্যান্ড সুপারম্যান নাটকে জন ট্যানার ও পিগম্যালিয়ন নাটকে হেনরি হিগিন্স চরিত্রে অভিনয় করেন মিশ্র সমালোচনা লাভ করেন এবং জেফ্রি বার্নার্ড ইজ আনওয়েল (১৯৮৯) নাটকে অভিনয় করে লরন্স অলিভিয়ে পুরস্কার লাভ করেন।[১৫]
১৯৫৯ সালে ওটুল ওয়েলসীয় অভিনেত্রী সিয়ান ফিলিপসকে বিয়ে করেন। তাদের দুই কন্যা - কেটা ও প্যাট্রিশিয়া ওটুল। ১৯৭৯ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। ফিলিপস পরবর্তীতে দুটি আত্মজীবনীতে লিখেন যে ওটুল তাকে মানসিক অত্যাচার করত, বিশেষ করে মদ্য পান করে এবং ফিলিপস যখন ওটুলের চেয়ে কম বয়সী একজনের সাথে প্রেমের সম্পর্কের কারণে তাকে ছেড়ে চলে যেতে চায় তখন ঈর্ষা-পরায়ণ হয়ে ওটুল তার উপর হাত তুলেন।[১৬]
ওটুল ও তার বান্ধবী মডেল কারেন ব্রাউন ১৯৮২ সাল থেকে একত্রে থাকা শুরু করেন।[১৭] ১৯৮৩ সালের ১৭ই মার্চ ওটুলের যখন ৫০ বছর বয়স তাদের পুত্র সন্তান লোরকান প্যাট্রিক ওটুল জন্মগ্রহণ করে। লোরকান একজন অভিনেতা। তিনি হ্যারো স্কুলের শিক্ষার্থী ছিলেন।[১৮]
ওটুল ২০১৩ সালের ১৪ই ডিসেম্বর লন্ডনের সেন্ট জন্স উডের ওয়েলিংটন হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।[১৯] ২১ ডিসেম্বর লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিন ক্রিমেটোরিয়ামে তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানে তাকে সমাধিস্ত করা হয়।[২০]
ওটুলের অবশিষ্টাংশ আয়ারল্যান্ডের কোনেমারাতে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। সেগুলো বর্তমানে আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রপতির বাসভবনে রাখা হয়েছে। আয়ারল্যান্ডের রাষ্ট্রপতি মাইকেল ডি হিগিন্স ওটুলের বন্ধু ছিলেন। তার পরিবার তার ইচ্ছানুসারে আয়ারল্যান্ডে ফিরে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন এবং তার অবশিষ্টাংশ পশ্চিম আয়ারল্যান্ডে নিয়ে যাবেন।[২১]
পিটার ওটুল আটবার শ্রেষ্ঠ অভিনেতার জন্য একাডেমি পুরস্কারের মনোনয়ন লাভ করেন, কিন্তু একবারও এই পুরস্কার লাভ করেন নি। টার্নার ক্লাসিক মুভিজ চলচ্চিত্র উৎসবে রবার্ট অসবর্নকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ওটুল কৌতুক করে নিজেকে "সর্বকালের সবচেয়ে হতভাগ্য" বলে উল্লেখ করেন।[২২]
বছর | চলচ্চিত্র | বিজয়ী | সূত্র |
---|---|---|---|
১৯৬২ | লরেন্স অফ অ্যারাবিয়া | গ্রেগরি পেক - টু কিল আ মকিংবার্ড | [২৩] |
১৯৬৪ | বেকেট | রেক্স হ্যারিসন - মাই ফেয়ার লেডি | [২৪] |
১৯৬৮ | দ্য লায়ন ইন উইন্টার | ক্লিফ রবার্টসন - চার্লি | [২৫] |
১৯৬৯ | গুডবাই, মিস্টার চিপস | জন ওয়াইন - ট্রু গ্রিট | [২৬] |
১৯৭২ | দ্য রুলিং ক্লাস | মার্লোন ব্র্যান্ডো - দ্য গডফাদার (প্রত্যাখান করেন) | [২৭] |
১৯৮০ | দ্য স্টান্ট ম্যান | রবার্ট ডি নিরো - রেজিং বুল | [২৮] |
১৯৮২ | মাই ফেভারিট ইয়ার | বেন কিংসলি - গান্ধী | [২৯] |
২০০৬ | ভেনাস | ফরেস্ট হুইটেকার - দ্য লাস্ট কিং অফ স্কটল্যান্ড | [৩০] |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.