Loading AI tools
মানুষ কর্তৃক পানি সম্পদের ব্যবস্থাপনা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা হচ্ছে পানি সম্পদের পর্যাপ্ত ব্যবহারের জন্য পরিকল্পনা, উন্নয়ন, বণ্টন ও পরিচালনা সম্পর্কিত কার্যক্রম। এটি পানিচক্র ব্যবস্থাপনার একটি দিক।
পানি আমাদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রকে পানির বরাদ্দ সম্পর্কিত বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সমস্যাগুলোর সাথে তাল মিলিয়ে যেতে হবে। বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান অনিশ্চয়তা ও ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাবের সাথে সাথে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা আরো কঠিন হয়ে পড়বে। সম্ভবত চলমান জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন পরিস্থিতি দেখা দিবে, যা মোকাবিলা করা হয়নি। ফলস্বরূপ, জল সম্পদ বরাদ্দজনিত অসুবিধা এড়াতে বিকল্প ব্যবস্থাপনা কৌশলগুলো বের করা হচ্ছে।
আদর্শভাবে, পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার সাথে পানির জন্য প্রতিযোগিতামূলক সমস্ত চাহিদার সম্পর্ক রয়েছে এবং সমস্ত ব্যবহার ও চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে ন্যায়সঙ্গত ভিত্তিতে পানি বরাদ্দের জন্য অনুসন্ধান করা হয়। অন্যান্যদের (সম্পদ ব্যবস্থাপনা) মতো, এটি বাস্তবে করাটা প্রায় অসম্ভব।
ভবিষ্যতে পানিভিত্তিক সম্পদের জন্য অন্যতম বড় একটি সমস্যা হলো বর্তমান ও ভবিষ্যতের পানি সম্পদ বরাদ্দের টেকসইতা।[1] পানি যখন দুষ্প্রাপ্য হয়, পানি ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়- যেটি মানুষের প্রয়োজন ও পরিবেশে পানি সম্পদের টেকসইতার মতো প্রয়োজনীয় ধাপের মধ্যে ভারসাম্য খুঁজে বের করে।
পানি এ গ্রহের সকল জীবনের জন্য একটি অপরিহার্য সম্পদ। পৃথিবীর সকল পানি সম্পদের মধ্যে কেবলমাত্র ২.৫ শতাংশ বিশুদ্ধ। বিশুদ্ধ পানির দুই-তৃতীয়াংশ বরফের ক্যাপ ও হিমবাহের মধ্যে আবদ্ধ আছে। অবশিষ্ট এক শতাংশের মধ্যে এক-পঞ্চমাংশ দূরবর্তী, অগম্য এলাকায় আছে এবং মৌসুমি মহাপ্লাবন ও বন্যায় অধিক ঋতুভিত্তিক বৃষ্টিপাত ব্যবহার করা যায় না।[3] সময়ের অগ্রগতির সাথে সাথে পানি দুষ্প্রাপ্যতর হয়ে উঠছে, পরিষ্কার, নিরাপদ, সুপেয় পানির সুগম্যতা দেশগুলোর মধ্যে সীমিত। বর্তমানে পৃথিবীর বিশুদ্ধ পানির কেবলমাত্র ০.০৮ শতাংশ[4] স্বাস্থ্যব্যবস্থা, পানি পান, উৎপাদন, অবসর ও কৃষির ক্রমবর্ধমান চাহিদার জন্য মানবজাতি কর্তৃক শোষিত হয়। স্বল্প পরিমাণ পানির অবশিষ্টতার জন্য বিশ্বব্যাপী কিছু লোকালয়ে প্রাকৃতিক উৎসগুলো থেকে আমাদের কাছে অবশিষ্ট বিশুদ্ধ পানির সঠিক ব্যবহার একটি চলমান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০২৫ সালের মধ্যে ৪৮টি দেশে ২.৮ বিলিয়নেরও বেশি মানুষ পানির ধকলের সম্মুখীন হবে। এসব দেশের মধ্যে, ৪০টি পশ্চিম এশিয়া, উত্তর আফ্রিকা বা সাব-সাহারান আফ্রিকাতে অবস্থিত (প্লেট ৩)। পরবর্তী দুই দশকে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও বর্ধিত চাহিদা সকল পশ্চিম এশীয় দেশকে পানির সংকটের দিকে ঠেলে দিবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০৫০ সালের মধ্যে, পানির ধকল বা সংকটের সম্মুখীন দেশের সংখ্যা ৫৪ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে, যা চার বিলিয়ন মানুষের সমন্বিত জনসংখ্যার সমান- প্রকল্পিত বৈশ্বিক জনসংখ্যা ৯.৪ বিলিয়নের প্রায় ৪০%। [5]
পানির সঠিক ব্যবহার ও প্রাকৃতিক পরিবেশের ওপর পানির পরিবেশগত প্রভাব কমাতে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় অনেক প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। পানিকে বাস্তুসংস্থানের অখণ্ড অঙ্গ হিসেবে পর্যবেক্ষণ একীভূত পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর ভিত্তিতে তৈরি, যেখানে বাস্তুসংস্থানের পরিমাণ ও গুণগত মান প্রাকৃতিক সম্পদের প্রকৃতি নির্ধারণে সহায়তা করে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
একটি সীমিত সম্পদ হিসেবে পানির সরবরাহ একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ তথ্যটি প্রজেক্ট ডেসাফিও দ্বারা অধিকৃত হয়েছে ('ডেমোক্রেটিজেশন অফ ওয়াটার এন্ড স্যানিটেশন গভার্নেন্স বাই মিনস অফ সোশিয়ো-টেকনিক্যাল ইনোভেশনস' এর সংক্ষিপ্ত রূপ), যা ৩০ মাসব্যাপী বিকাশ করা হয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের গবেষণা, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও প্রদর্শনের জন্য সপ্তম ফ্রেমওয়ার্ক প্রোগ্রামের দ্বারা অর্থায়িত হয়েছে। উন্নয়নশীল এলাকাগুলোর কারণে প্রজেক্টটি কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিল; যা অপরিহার্য পানি ও জনগণের স্বাস্থ্যসেবার সুগম্যতায় কাঠামোগত সামাজিক বৈষম্য দূর করে। ডেসাফিও প্রকৌশলীরা সৌর বিদ্যুৎ ও ফিল্টার দ্বারা পরিচালিত একটি পানি চিকিৎসা সিস্টেমের ওপর কাজ করেছিল, যা মিনাস গেরাইস রাজ্যের একটি খুব দরিদ্র সম্প্রদায়ের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ করে।[6]
যেকোনো সম্পদের সফল ব্যবস্থাপনার জন্য বিদ্যমান সম্পদগুলোর নিঁখুত জ্ঞান, যার ব্যবহারে এটি কাজে লাগানো যেতে পারে, সম্পদের জন্য প্রতিযোগিতারত চাহিদা, তাৎপর্য মূল্যায়নের জন্য পরিমাপকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং প্রতিযোগিতারত চাহিদার মূল্য ও নীতিগত সিদ্ধান্তকে কার্যে পরিণত করার ক্রিয়াকৌশল প্রয়োজন।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] সার্বিকভাবে, নতুন ব্যবস্থাপনায় অংশগ্রহণকারীদের নতুন অভিজ্ঞতা তৈরি করা এবং নতুন নীতি তৈরি করতে তাদের অভিজ্ঞতাগুলো বহিরাগতদের কাছে শেয়ার করে সরকারের বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া দরকার।[7]
যেহেতু পানির উৎসগুলো অনেক রাষ্ট্রীয় সীমানা অতিক্রম করতে পারে এবং পানির ব্যবহার আর্থিক মূল্য নির্ধারণে অসুবিধা অন্তর্ভুক্তি করে ও প্রচলিত রীতিতে ব্যবস্থাপনা করা অসুবিধা হতে পারে বিধায় পানিকে সম্পদ হিসেবে তৈরি করা বিশেষত কঠিন। উদাহরণগুলোর মধ্যে আছে বিরল প্রজাতিসমূহ বা বাস্তুসংস্থান বা প্রাচীন ভূগর্ভস্থ পানি মজুতের খুব দীর্ঘমেয়াদী মূল্য, কখনও কখনও যা জীবাশ্ম পানি হিসেবে পরিচিত।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
পৃথিবীর মিঠাপানির সবচেয়ে বেশি প্রয়োগক্ষেত্র কৃষি, যা ৭০ শতাংশ।[8] জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় বিধায় অধিক খাদ্য গ্রহীত হয় (বর্তমানে ৬% এর ওপরে, ২০৫০ সালের মধ্যে যা ৯% এ পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হয়), শিল্পকারখানাগুলো ও নগর উন্নয়ন বিস্তৃত হয়, এবং উদীয়মান জৈব জ্বালানি ফসলগুলোর বাণিজ্যও মিঠাপানির সম্পদের অংশের দাবিদার। পানি স্বল্পতা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে উঠছে। [9] পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার জন্য খাদ্য যোগানের পর্যাপ্ত পানি আছে কি না, তা দেখার জন্য ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কায় আন্তর্জাতিক পানি ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের দ্বারা কৃষিতে পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনার একটি মূল্যায়ন চালানো হয়েছিল। [10] এটি একটি বৈশ্বিক মাপকাঠিতে কৃষির জন্য পানির বর্তমান সহজলভ্যতার পর্যালোচনা করেছিল এবং পানি স্বল্পতায় ভোগা লোকালয়গুলো ম্যাপিং করেছিল। এটি বের করে যে, পৃথিবীর এক-পঞ্চমাংশ লোক, ১.২ বিলিয়নের ওপরে, ভৌত পানি স্বল্পতার এলাকাতে বসবাস করে, যেখানে তাদের সকল চাহিদার পূরণের জন্য পর্যাপ্ত পানি নেই। আরও ১.৬ বিলিয়ন লোক আর্থিক পানি স্বল্পতা ভোগকারী এলাকায় বসবাস করে, যেখানে পানিতে বিনিয়োগের অভাব বা অপর্যাপ্ত মানবক্ষমতা কর্তৃপক্ষের জন্য পানির চাহিদা পূরণকে অসম্ভব করে তোলে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
প্রতিবেদনটিতে দেখা গেছে যে, ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন সম্ভব, কিন্তু আজকালকার খাদ্য উৎপাদনের চলমানতা ও পরিবেশগত প্রবণতা পৃথিবীর অনেক অংশে সংকট তৈরি করবে। খাদ্য উৎপাদন সম্পর্কে, বিশ্বব্যাংক ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক ইস্যু হিসেবে খাদ্য উৎপাদন ও পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনাকে লক্ষ্য করেছে, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ ও ক্রমবর্ধমান বিতর্কের জন্ম দিচ্ছে।[11] 'আউট অফ ওয়াটার: ফ্রম অ্যাবানডান্স টু স্কারসিটি এন্ড হাউ টু সলভ দ্য ওয়ার্ল্ড'স ওয়াটার প্রবলেমস' বইয়ের লেখকরা বিশ্বের পানি সমস্যা সমাধানের জন্য একটি ছয় দফা পরিকল্পনা প্রস্তাবনা করেন। এগুলো হলোঃ ১) পানি সম্পর্কিত তথ্য উন্নয়ন করা; ২) পরিবেশ সঞ্চিত করা; ৩) পানি প্রশাসনের সংস্কার করা; ৪) কৃষিজনিত পানি ব্যবহার পুনরুজ্জীবিতকরণ; ৫) নগর ও শিল্পকারখানা চাহিদা ব্যবস্থাপনা করা; এবং ৬) পানি সম্পদ ব্যবস্থাপনায় গরিব ও নারীদের কর্মসংস্থান করা। একটি বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলা করতে কৃষকদের খাদ্যের জন্য ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সংগ্রাম করতে হবে, যেখানে শিল্পকারখানা ও শহরগুলোকে অধিক দক্ষতার সাথে পানি ব্যবহারের উপায় খুঁজতে হবে।[12]
মূলত প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও নগরায়ণের জন্য পৃথিবীর ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা অর্থনৈতিক সুযোগসমূহ বৃদ্ধির জন্য হচ্ছে। এ দ্রুত নগরায়ণ পৃথিবীব্যাপী হচ্ছে কিন্তু এটি বেশিরভাগ নতুন উদীয়মান অর্থনীতিসমূহ ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে দেখা যায়। পৃথিবীর অনেক মেগাসিটি (১০ মিলিয়নের অধিক বাসিন্দাদের নিয়ে শহর বা নগর এলাকা) ধারণ করে চীন ও ভারত উভয়ই অতি দ্রুতগতিতে উন্নয়ন করছে। [13] মেগাসিটির সংখ্যা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিদ্যমান থাকবে, এ অনুমান করা হচ্ছে, ২০২৫ এ যা প্রায় ৫০ এ পৌঁছাবে। [14] উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে পানি স্বল্পতা মারাত্মকভাবে একটি প্রচলিত ও প্রভাবশালী ইস্যু। [15] মেরু অঞ্চলের চেয়েও অধিক গতিতে পূর্ব-গোলার্ধে বৈশ্বিক মিঠাপানি সম্পদ অবক্ষয় হচ্ছে। বর্তমানে, মিলিয়নের মতো মানুষ অপর্যাপ্ত মিঠাপানি নিয়ে বসবাস করে। [16] দূষিত মিঠাপানি সম্পদ, অতিমাত্রায় শোষিত ভূগর্ভস্থ সম্পদ, পারিপার্শ্বিক গ্রাম্য এলাকাগুলোতে অপর্যাপ্ত ফসল ফলানোর ক্ষমতা, দুর্বলভাবে নির্মিত ও পরিচালিত পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, অপ্রাতিষ্ঠানিক পানি ব্যবহারের উচ্চমাত্রা, এবং কৌশলগত ও পানি ব্যবস্থাপনা ক্ষমতার অপর্যাপ্ততা এগুলোর কারণ। [17]
নগর কেন্দ্রগুলোর আশেপাশের এলাকায় নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য কৃষি শিল্পকারখানা ও পৌর ব্যবহারকারীদের সাথে প্রতিযোগিতা করে। এ প্রতিযোগিতার দ্বারা ঐতিহ্যবাহী পানি সম্পদগুলো নগর বহমানতার দ্বারা দূষিত হচ্ছে। যেহেতু শহরগুলো পণ্য বিক্রয়ের সর্বোত্তম সুবিধাসমূহ দেয়, শস্য সেচ দিতে দূষিত পানি ব্যবহার করা ছাড়া কৃষকদের কাছে প্রায়ই অন্য কোনো বিকল্প থাকে না। একটি শহরের বর্জ্য পানি শোধনব্যবস্থা কিরকম, তার ওপর নির্ভর করে পানি ব্যবহারের সাথে সম্পর্কিত তাৎপর্যপূর্ণ স্বাস্থ্য ঝুঁকি থাকতে পারে। শহরের বর্জ্য পানিত দূষকদের একটি মিশ্রণ ধারণ করে। রান্নাঘর, টয়লেট ও বৃষ্টির পানিপ্রবাহের বর্জ্য পানি সাধারণত অতিরিক্ত মাত্রায় পুষ্টি, লবণ ও বিস্তৃত মাত্রায় প্যাথোজেন ধারণ করে। অ্যান্টিবায়োটিক ও অন্তঃস্রাবী ব্যাঘাত, যেমনঃ ইস্ট্রোজেন এর চিহ্নগুলোর সাথে ভারী ধাতুও উপস্থিত থাকতে পারে।[18]
উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলোর বর্জ্য পানি শোধনব্যবস্থার সর্বনিম্ন স্তর ভোগ করার ঝোঁক রয়েছে, যদিও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মরুভূমিরূপ শহরগুলোতে উদ্ভাবনী সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা স্থানীয় পুনর্ব্যবহার সক্ষমতার অধিক বর্জ্য পানি শোধনব্যবস্থা বৃদ্ধি করেছে। [19] প্রায়শই, শস্য সেচ দেওয়ার কাজে কৃষকরা যে পানি ব্যবহার করেন, তা নর্দমা থেকে প্যাথোজেন কর্তৃক দূষিত হয়। যেসব প্যাথোজেন সর্বাধিক ঝুঁকি প্রদর্শন করে, সেগুলো হল ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও পরজীবী কৃমিসমূহ। এসব প্যাথোজেনসমূহ সরাসরি কৃষকদের স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলে এবং পরোক্ষভাবে গ্রাহকদের ওপর প্রভাব ফেলে, যদি তারা দূষিত ফসল গ্রহণ করেন। প্রচলিত অসুখের মধ্যে আছে ডায়রিয়া, যা বার্ষিক ১.১ মিলিয়ন লোকের মৃত্যুর কারণ এবং শিশুমৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বসাধারণ কারণ। অনেক কলেরা প্রকোপও দুর্বলভাবে শোধিত বর্জ্য পানির ব্যবহারের সাথে সম্পর্কিত। অতএব, মিঠাপানি দূষণ হ্রাস করার প্রচেষ্টা বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের জন্য লড়াইয়ে একটি বড় ভূমিকা পালন করে।
বিজ্ঞানীরা 'মাল্টিপল-ব্যারিয়ার অ্যাপ্রোচ' নামে একটি পদ্ধতি ব্যবহার করে খাদ্যের দূষণ হ্রাসের উপায়গুলো অনুসন্ধান করতে কাজ করে যাচ্ছেন। এর মধ্যে ফসল উৎপাদন থেকে শুরু করে বাজারে বিক্রি পর্যন্ত খাদ্য উৎপাদন প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ, ও অবশেষে, সেগুলো গ্রহণ করা অন্তর্ভুক্ত। তারপর, কোথায় দূষণের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধ তৈরি করা সম্ভব, তা বিবেচনা করা। প্রতিরোধসমূহের মধ্যে নিরাপদতর সেচ ব্যবস্থা, খামারেই বর্জ্য পানি শোধনব্যবস্থা উৎসাহিতকরণ, প্যাথোজেনসমূহ নির্মূলকরণ, ও বাজার ও রেস্তোরাঁগুলোতে কাটার পরে কার্যকরভাবে ফসল পরিষ্কার করা অন্তর্ভুক্ত।[20]
আরবান ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেম (ইউডিএসএস)- একটি ডেটাচালিত নগর পানি ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি, যা পানি ব্যবহার সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করার জন্য নগরের আবাসিক এলাকাগুলোতে পানিপ্রবাহের সরঞ্জামগুলোর সাথে সংযুক্ত সেন্সরগুলো ব্যবহার করে। [21]
গৃহস্থালির পানি ব্যবহার স্বভাব উন্নতি করার জন্য এ পদ্ধতিটি ইউরোপীয় কমিশনের ২.৪৬ মিলিয়ন ইউরো অর্থায়নে উন্নয়ন করা হয়েছিল।
সরঞ্জামসমূহ ও সুবিধা সম্পর্কিত তথ্য, যেমনঃ ডিশওয়াশার, শাওয়ার, ওয়াশিং মেশিন, ট্যাপ- তারবিহীনভাবে রেকর্ড করা হয় এবং ব্যবহারকারীর মোবাইল ডিভাইসে ইউডিএসএস অ্যাপে পাঠানো হয়। তারপর, ইউডিএসএস অ্যাপটি বিশ্লেষণ ও গৃহকর্তাদের দেখাতে সক্ষম হয় যে কোন সরঞ্জামগুলো সর্বাধিক পানি ব্যবহার করছে, ও পানি ব্যবহার হ্রাসে কোন স্বভাব বা বৈশিষ্ট্যটি পরিহার করতে হবে। এটি অধিক সাশ্রয়ীভাবে তাদের ব্যবহার পরিচালনা করতে লোকদের অনুমতি দেয়। এ ইউডিএসএস লফবোরো ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ বিজনেস এন্ড ইকোনমিকসের ম্যানেজমেন্ট সায়েন্স ক্ষেত্রভিত্তিক, বিশেষত ড. লিলি ইয়াং এর নেতৃত্বে গৃহস্থালি পানি মাপকাঠিতে ডিসিশন সাপোর্ট সিস্টেম।
(পাঠক) [22]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.