পয়ামে ইনসানিয়াত
আবুল হাসান আলী নদভীর প্রতিষ্ঠিত একটি অরাজনৈতিক সামাজিক, আধ্যাত্মিক, মানবিক ও দাওয়াতি সংগঠন উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পয়ামে ইনসানিয়াত (উর্দু: پیام انسانیت, অনুবাদ 'মানবতার বার্তা') ভারতীয় দার্শনিক আবুল হাসান আলী হাসানী নদভীর চিন্তা ও দর্শনের আলোকে প্রতিষ্ঠিত একটি অরাজনৈতিক সামাজিক, আধ্যাত্মিক, মানবিক ও দাওয়াতি সংগঠন। তিনি ১৯৫১ সালে অনানুষ্ঠানিকভাবে সংগঠনটির গোড়াপত্তন করেন, যা ১৯৭৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে। এই আন্দোলন ছিল নদভীর অন্যতম প্রিয় কর্মসূচি এবং একটি বাহন যার মাধ্যমে তিনি ভারতে শান্তি আনতে চেয়েছিলেন। তিনি এটিকে মুসলমানদের জন্য দেশের উন্নত ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দেওয়ার একমাত্র বিকল্প হিসেবে দেখেছিলেন।[১] এই আন্দোলন আন্তঃধর্মীয় সম্পর্কের উন্নতির জন্য স্বাধীনতা-উত্তর ভারতে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলোর অন্যতম।[২]
پیام انسانیت | |
![]() | |
গঠিত | ২৮ ডিসেম্বর ১৯৭৪ |
---|---|
প্রতিষ্ঠাতা | আবুল হাসান আলী নদভী |
আইনি অবস্থা | সক্রিয় |
উদ্দেশ্য | আত্মধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষা, মানবসেবা |
অবস্থান | |
আমীর | রাবে হাসানী নদভী |
মহাসচিব | বিলাল আব্দুল হাই হাসানী নদভী |
ওয়েবসাইট | aipiftsap |
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ
আবুল হাসান আলী নদভী উপলব্ধি করেন, ভারতের বিশাল অমুসলিম জনগোষ্ঠীর সাথে দৈহিক এবং রাজনৈতিক শক্তি পরীক্ষায় অবতীর্ণ হওয়াটা মুসলমানদের জন্য আত্মঘাতি পদক্ষেপ। তাই তিনি ভারতীয় মুসলমানদের অস্তিত্ব রক্ষার একমাত্র উপায় হিসেবে প্রতিবেশী অমুসলিমদের মানবতা ও সহমর্মিতার প্রতি উদ্বুদ্ধ করার জন্য এই সংগঠনের সূচনা করেন। ১৯৫১ সালে লখনউয়ের আমিনুদ্দৌলা পার্কে এক হিন্দু-মুসলিম জনসভায় খোদা পুরস্তি আওর নফস পুরস্তি নামে একটি ভাষণ প্রদানের মাধ্যমে তার এ মানবতাবাদী দাওয়াতি কার্যক্রমের সূচনা হয়। এরপর তিনি সারা ভারতে এই পয়গাম নিয়ে সফর করেন। ১৯৫৪ সালে লখনউয়ের গঙ্গা প্রসাদ মেমোরিয়াল হলে পয়ামে ইনসানিয়াতের সভা হয়। আস্তে আস্তে ১৯৭৪ সালে এসে এটি আন্দোলনের রূপ ধারণ করে। কিন্তু বিশেষ কারণে পয়ামে ইনসানিয়াতকে তিনি সাংগঠনিকরূপ দেননি। এর জন্য কোনো কমিটি ও ফান্ড ছিল না। আবুল হাসান আলী নদভী নিজেই ছিলেন এ আন্দোলনের ভিত্তি। তার ভাতিজা মুহাম্মদ মিয়া, তামীরে হায়াত সম্পাদক ইসহাক জলিস নদভী, আবদুল করিম পারেখ, কাজী আব্দুল হামিদ প্রমুখ তার সাথে এ ধরনের প্রোগ্রামে সঙ্গী হতেন।[৩]
সংগঠনটির মূল প্রতিপাদ্য আবুল হাসান আলী নদভীর একটি বক্তৃতা। আলী নদভী বলেন,
“ | আফসোস! বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান সামাজিক, নৈতিক ও মানবিক অবক্ষয় প্রতিরোধ এবং নৈতিকতা ও মানবিকতার বিকাশদানের লক্ষ্যে এখন পর্যন্ত কোনো দল বা সংগঠন চোখে পড়ে না। আমরা অনেক অপেক্ষা করেছি, শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছি, যা আছে তাই নিয়েই ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ি। | ” |
— [৪] |
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
সংগঠনটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে:[৪]
- মানবিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে সকল সম্প্রদায়ের মাঝে প্রেম-ভালোবাসা ও সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির পরিবেশ গড়ে তোলা।
- ক্রমবর্ধমান সামাজিক, নৈতিক ও মানবিক অবক্ষয় রোধ এবং নৈতিকতা ও মানবিকতার বিকাশ দান করা।
- মাদকতা, নগ্নতা, অশ্লীলতা ও অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশ দান করা।
- সমাজ থেকে সুদ, ঘুষ, দূর্নীতি, মজুদদারী, কালোবাজারী, সাম্প্রদায়িকতা ও অর্থনৈতিক লুণ্ঠনের পথসমূহ নির্মূল করা।
- সমাজ থেকে সকল প্রকার জুলুম-অত্যাচার, অন্যায়-অবিচার, হত্যা-রক্তপাত ও হিংসা-বিদ্বেষের অবসান ঘটানো।
- জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে নিঃস্ব, দরিদ্র, বিপদগ্রস্ত ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ কবলিত মানুষের সেবায় এগিয়ে আসা।
- দেশ, জাতি ও মানবতা রক্ষায় নতুন প্রজন্মের মধ্যে জ্ঞানার্জন, চরিত্র গঠন ও সমাজ সেবার চেতনা জাগ্রত করা।
কর্মসূচি
সংগঠনটির কর্মসূচি ৪টি। যথা:[৪]
- দাওয়াহ; ইসলামের শান্তির আদর্শ প্রচার।
- তালিম; ইসলামি শিক্ষার সম্প্রসারণ।
- ইসলাহ; সমাজ ও নৈতিকতার সংশোধন।
- খিদমাহ; আর্তমানবতার সেবা।
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.