Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
প্রাচীনকাল থেকেই পাখির উড্ডয়নের কলাকৌশল ও তার উৎপত্তি নিয়ে অনুসন্ধান চলে আসছে। আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০ অব্দে অ্যারিস্টটল সহ কয়েকজন দার্শনিক পাখির উড্ডয়নের গতিপ্রকৃতি ও কলাকৌশল উদ্ঘাটনের চেষ্টা করেন। পাখিকে কখনও কখনও পালকযুক্ত সরীসৃপ বলা হয়। তবে সরীসৃপের আঁশ থেকে কীভাবে পালকের উদ্ভব ঘটেছে সে সম্পর্কে এখনও নির্ভরযোগ্য কিছু জানা যায় না। আঁশ ও পালকের মধ্যবর্তী গঠন উটপাখি ও মুরগির পায়ে উপস্থিত আছে। ১৫০ বছর পূর্বে বর্তমান পাখিদের পূর্বপুরুষ আর্কিওপ্টেরিক্স-এর জীবাশ্ম আবিষ্কারের পরও পাখিদের উড্ডয়ন-কৌশলের উৎপত্তি নিয়ে এখনও বিতর্ক চলছে। আর্কিওপ্টেরিক্স-এর পূর্বপুরুষ বা তার নিজের পক্ষে কীভাবে উড্ডয়ন সম্ভব হয়েছিল তা এখনও জানা যায় নি[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]। সম্ভবত এর পূর্বপুরুষ অধিক সক্রিয় ও উষ্ণ রক্তের অধিকারী ছিল। আঁশ থেকে পালকের সৃষ্টি হয়েছিল প্রাথমিকভাবে দেহের তাপমাত্রা সংরক্ষণের জন্য।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পরবর্তীতে পালক অগ্রপদে বড় হতে থাকে এবং দ্রুত দৌড়ানোর সময় ভারসাম্য রক্ষা করত। এছাড়া লেজ ডাল থেকে ডালে ঝাঁপ দেওয়ার সময় হ্রাসপ্রাপ্ত হয়েছিল।
উড্ডয়ন-কৌশলের উৎপত্তি সম্পর্কে তিনটি প্রধান মতবাদ পাওয়া যায়। পাউন্সিং প্রোঅ্যাভিস মতবাদ, কার্সোরিয়াল মতবাদ এবং আর্বোরিয়াল মতবাদ।
পাউন্সিং প্রোঅ্যাভিস মতবাদ সর্বপ্রথম ১৯৯৯ সালে গার্নার, টেইলর ও টমাস প্রদান করেন। তাদের মতে, পাখিরা আসলে শিকারী প্রাণী থেকে উদ্ভূত হয়েছে যারা উঁচু স্থান থেকে অ্যাম্বুশ করে শিকার করত। এ সময় তারা তাদের সামনের দুই উপাঙ্গ ব্যবহার করত শিকার আকড়ে ধরার কাজে। প্রথম দিকে তারা শিকারকে টেনে নিয়ে যেত। পরে শিকার বহন করে নিয়ে যেত। শিকার ধরার সময় যে সময়টুকু এরা শূণ্যে ভেসে থাকত, সে সময় তাদের সামনের উপাঙ্গের গতি-প্রকৃতি ও গঠনের ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়। শিকার বহন করার করার জন্য তখন তারা পেছনের উপাঙ্গ ব্যবহার করা শুরু করে এবং সামনের উপাঙ্গ একসময় ডানা বা ডানার মত অঙ্গে রূপান্তরিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
কার্সোরিয়াল মতবাদ স্যামুয়েল ওয়েন্ডেল উইলিস্টন ১৮৭৯ সালে কার্সোরিয়াল মতবাদ প্রদান করেন এবং পরবর্তীতে ব্যারন নপক্সা মতবাদটির উন্নয়ন ঘটান। এ মতবাদ অনুসারে ভূমিতে দ্রুত দৌড়ানোর ফলে পাখির উড্ডয়নের উৎপত্তি ঘটেছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] পাখির পূর্বপুরুষ দীর্ঘ লেজযুক্ত দৌড়বাজ দ্বিপদী প্রাণী ছিল। এরা দ্রুত দৌড়াতে পারত এবং শক্তিশালী পশ্চাদপদের ওপর ভর দিয়ে লাফ দিতে পারত। এরা বাতাসের মধ্যে অগ্রপদ বিস্তৃত করতে পারত। আধুনিক অনেক পাখি ওড়ার আগে জোরে দৌড়ায়। বর্তমান পাখিদের মধ্যে উটপাখি অনেক জোরে দৌড়াতে পারে। ক্রমে ক্রমে এদের অগ্রপদ বড় হয়, আঁশ বড় হয় এবং তা পালকে পরিণত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] সবশেষে অগ্রপদ ডানায় রূপান্তরিত হয়।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
আর্বোরিয়াল মতবাদের মূল প্রবক্তা ওথনিল চার্লস মার্শ। ১৮৮০ সালে তিনি মতবাদটি প্রদান করেন। এ মতবাদে বলা হয়েছে, পাখির পূর্বপুরুষ বৃক্ষবাসী প্রাণী ছিল। তারা গাছে চড়ত এবং সেখান থেকে গ্লাইড করে মাটিতে নামত বা অন্য গাছে যেত। এ ব্যবস্থা বর্তমানকালের উড়ুক্কু কাঠবিড়ালীর মধ্যে দেখা যায়। অসবোর্নের মতে, বৃক্ষবাসী গ্লাইড করার ক্ষমতাযুক্ত পাখির পূর্বপুরুষ চতুষ্পদী প্যারাস্যুটযুক্ত প্রাণী ছিল। আবার বীবির মতবাদ অনুসারে আদি পাখির সকল পায়ে পশ্চাদমুখী পালক ছিল। এ ধরনের পাখি গাছ বা উঁচু জায়গা থেকে কিছুটা দূরত্বে বাতাসের মধ্যে দিয়ে গ্লাইড করতে বা উড়ে যেতে সক্ষম ছিল। সময়ের ব্যবধানে অগ্রপদ ক্রমশ বড় হয় এবং ডানাতে পরিণত হয়। যা প্রাণীকে উড়বার সময় ভর রক্ষা করতে সহায়তা করত। পশ্চাদপদের পালকের প্রয়োজনীয়তা কমে যায়, ফলে তা অদৃশ্য হয় এবং আধুনিক পাখির মত লেজ খাটো হয়। গাছে চড়া এবং গ্লাইড করার ফলে পাখিতে উড়ার ক্ষমতা সৃষ্টি হয়েছে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.