Remove ads
বাংলার মধ্যযুগীয় সুফি সাধক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
নূর কুতুব আলমপ্রকৃত নাম নূরুদ্দীন নূরুল হক (মৃত্যু: আনুমানিক ৮১৮ হিজরি/১৪১৫ খ্রিষ্টাব্দ) ছিলেন মধ্যযুগে বাংলার একজন দরবেশ। পান্ডুয়ার পীর আউলিয়াদের মধ্যে তিনি সবচেয়ে বেশি মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। তার পিতা শেখ আলাউল হকও একজন পীর ছিলেন। পিতার মত নূর কুতুব আলম ছিলেন চিশতিয়া তরিকার পীর। [1]
রাজা গণেশের ক্ষমতাদখলের পর বাংলার মুসলিমদের উপর নির্যাতন শুরু হলে নূর কুতুব আলম জৌনপুরের সুলতান ইবরাহিম শর্কীকে বাংলা আক্রমণের অনুরোধ জানান। অনুরোধে সাড়া দিয়ে ইবরাহিম শর্কী বাংলার দিকে অগ্রসর হন। এর ফলে রাজা গণেশ তাকে অনুরোধ করেন যাতে ইবরাহিম শর্কীকে ফিরে যেতে বলা হয়। নূর কুতুব আলম অমুসলিমের পক্ষে মুসলিম সুলতানকে অনুরোধে অপারগতা প্রকাশ করেন এবং গণেশকে ইসলাম গ্রহণের শর্ত দেন। তবে গণেশ ইসলাম করেননি। তার বদলে তার পুত্র যদু ইসলাম গ্রহণ করে জালালউদ্দিন মুহাম্মদ নাম গ্রহণ করে মসনদে বসেন। এরপর ইবরাহিম শর্কী ফিরে যান।[1]
নূর কুতুব আলম সব ধরনের কায়িক শ্রম করতেন। দরগায় আগত ফকিরদের সেবা তিনি ব্যক্তিগতভাবে করতেন। তার পুত্র শেখ রাফকাতউদ্দিন ও শেখ আনোয়ার তার কাছে আধ্যাত্মিক শিক্ষা লাভ করেছিলেন। শেখ রাফকাতউদ্দিনের পুত্র শেখ জাহিদও দরবেশ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। শেখ হুসামউদ্দিন মানিকপুরী ছিলেন নূর কুতুব আলমের অন্যতম প্রধান মুরিদ।[1]
তার রচিত গ্রন্থ সংখ্যা ১২১টি। সেগুলো তার প্রধান মুরিদ ও খলিফা হুসামউদ্দিন মানিকপুরী সম্পাদনা করেন। তন্মধ্যে বিখ্যাত দুটি গ্রন্থ হলো মুগিসুল ফুকারা ও আনিসুল গুরাবা। মুগিসুল ফুকারার একটি পান্ডলিপি সংরক্ষিত আছে বিহারের ভাগলপুরের খলিফাবাগ একটি প্রায়ভেট লাইব্রেরিতে। আরেকটি অসম্পূর্ণ কপি সংরক্ষিত আছে এশিয়াটিক সোসাইটি অব বেঙ্গল কলিকাতার লাইব্রেরিতে (সংগ্রহ নং- ৪৬৬)। সেখানে আনিসুল গুরাবা’ বইটির ২টি কপি সংরক্ষিত আছে (সংগ্রহ নং: ১২১২ ও ১২১৩)। [2]
নুর কুতুবুল আলমের ১৩টি পত্রের গ্রন্থ সম্পাদনা করেন মুহাদ্দিস আব্দুল হক দেহলভী (র.)। যে গ্রন্থের নাম ‘মাকতুবাত ই নুর কুতুবুল আলম’। যা দিল্লির ইন্ডিয়ান আর্কাইভে সংরক্ষিত আছে।
নূর কুতুব আলম আনুমানিক ৮১৮ হিজরি বা ১৪১৫ খ্রিষ্টাব্দে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর পর তাকে পান্ডুয়ার শাশ হাজারি দরগায় দাফন করা হয়। তার পিতাকেও এখানে দাফন করা হয়েছিল। নূর কুতুব আলমের অনুসারীরা কয়েক শতাব্দী ধরে বাংলার মুসলিমদের জীবনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে গিয়েছেন।[1]
তার দরগা সংলগ্ন সরাইখানা ও মাদ্রাসার জন্য সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ওয়াকফ করেছিলেন। জেয়ারতের উদ্দেশ্যে সুলতান ব্যক্তিগতভাবে বছরে একবার রাজধানী একডালা থেকে পান্ডুয়া আসতেন।[1]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.