নিশাপুর

উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

নিশাপুরmap

নিশাপুর বা নিশাবুর (উচ্চারণ; ফার্সি: نیشابور, এছাড়াও রোমান রূপে Nīshāpūr, Nišâpur, Nişapur, Nīshābūr, Neyshābūr, এবং Neeshapoor, যার উৎস মধ্য-পারসিক শব্দ: New-Shabuhr, অর্থ "শাপুরের নতুন শহর", "সুন্দর শাপুর",[] বা "শাপুরের নিখুঁত স্থাপত্য")[] হলো উত্তরপূর্ব ইরানের খোরাসান প্রদেশের একটি শহর এবং নিশাপুর শহরিস্তানের (বিভাগ) রাজধানী। বিনালুদ পর্বতমালার পাদদেশে অবস্থিত এই শহরটি আগে খোরাসান প্রদেশের রাজধানী ছিল। ২০১১ সালে এর জনসংখ্যা ছিল আনুমানিক ২৩৯,১৮৫, এবং পুরো প্রদেশে ৪৩৩,১০৫। "ফিরোজা ভূমি" বলে অভিহিত এই শহরের আশেপাশে ফিরোজা পাথরের অসংখ্য খনি আছে, যেগুলো প্রায় দুই হাজার বছর ধরে সারা বিশ্বে ফিরোজার যোগান দিচ্ছে।

Thumb
৯ম বা ১০ম শতাব্দীর একটি পাত্রের গায়ে ছবি এঁকে তার ওপর স্বচ্ছ গ্লেজ (পলিক্রোম) দেয়া হয়েছে। ইরান ছাতীয় জাদুঘর, তেহরান
দ্রুত তথ্য নিশাপুরنیشابور নেশাবুর, Country ...
নিশাপুর
نیشابور
নেশাবুর
Thumb
Thumb
Thumb
Thumb
Thumb
Thumb
Thumb
সীলমোহর
ডাকনাম: সাসানীয় এবং উমাইয়া যুগ: আবরশহর (উপরের শহর), খুদে দামেস্ক (ইবনে বতুতা)[]
Thumb
নিশাপুর
স্থানাঙ্ক: ৩৬°১২′৪৮″ উত্তর ৫৮°৪৭′৪৫″ পূর্ব
Country ইরান
প্রদেশখোরাসান
শহরিস্তাননিশাপুর শহরিস্তান
প্রতিষ্ঠা৩য় শতাব্দী
নিশাপুর পৌরসভা১৯৩১
সরকার
  মেয়রসেয়িদ আব্বাস হোসেইনি
  শহরিস্তানের প্রশাসকগোলাম-হোসেইন মোজাফফরি
উচ্চতা১,২৫০ মিটার (৪,১০০ ফুট)
জনসংখ্যা (২০১১)
  শহর২,৭৬,০৮৯[]
  Nishapur County৪,৩৩,১০৫[]
  Urban areas of Nishapur County২,৭০,৩০১
 2 Census
বিশেষণNishapuri
সময় অঞ্চলIRST (ইউটিসি+03:30)
ওয়েবসাইটwww.neyshaboor.com, Rowzaneh, Neyshabur Day
বন্ধ

৩য় শতাব্দীতে রাজা প্রথম শাপুর এই শহরটি গড়ে তোলেন সাসানীয় একটি সত্রপের রাজধানী হিসেবে। পরবর্তীতে এটি তাহিরি সাম্রাজ্রের কেন্দ্র হয়ে ওঠে এবং ৮৩০ সনে আবদুল্লাহ তাহির শহরটি সংস্কার করেন। সেলজুক সাম্রাজ্যকালে ১০৩৭ সালে তুঘরিল এটিকে তার রাজধানী হিসেবে বেছে নেন। আব্বাসী আমল থেকে মোঙ্গলদের খারেজম ও পূর্ব ইরান দখল করার আগ পর্যন্ত এই শহরটি ছিল মুসলিম বিশ্বের সংস্কৃতি, বাণিজ্য ও জ্ঞানবিজ্ঞানের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র। নিশাপুর, মারভ, হেরাত ও বলখ এই চারটি ছিল মধ্যযুগে বৃহত্তর খোরাসানের সবচেয়ে অগ্রসর ও উন্নত শহর।

১০ম শতাব্দীতে সামানি শাসনামলে নিশাপুর উন্নতির সর্বোচ্চ শিখরে আরোহণ করে, কিন্তু ১২২১ সালে মোঙ্গলরা সব ধ্বংস করে দেয়, এরপর অন্যান্য দখলদারদের আক্রমণ এবং ১৩শ শতাব্দীর ভূমিকম্পে শহরটি গুঁড়িয়ে যায়। এরপর এর উত্তরাংশে অল্পকিছু বসতি গড়ে ওঠে এবং একসময়কার সদাগুঞ্জরিত শহরটি এভাবে মাটিচাপা পড়ে থাকে; যতদিন না মার্কিন মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্টের একদল প্রত্নতাত্ত্বিক খননকারী এখানে এসে খনন শুরু করেন, ২০-শতকের মধ্যভাগে। তারা ১৯৩৫ থেকে ১৯৪০ সাল পর্যন্ত নিশাপুরে কাজ করেন, এবং ১৯৪৭-৪৮ সালের শীতকালে প্রকল্পটি সমাপ্ত করে ফিরে যান।[]

শিল্পকলা

মৃৎশিল্প

ইসলামী স্বর্ণযুগে, বিশেষ করে ৯ম ও ১০ম শতাব্দীতে, নিশাপুর হয়ে ওঠে মৃৎশিল্প ও এরকম অন্যান্য শিল্পের অন্যতম কেন্দ্র।[] নিশাপুরে পাওয়া অধিকাংশ সিরামিক শিল্পদ্রব্য এখন সংরক্ষিত আছে মেট্রোপলিটন মিউজিয়াম অফ আর্ট এবং তেহরান ও মাশহাদের বিভিন্ন জাদুঘরে। নিশাপুরে তৈরিকৃত সিরামিক দ্রব্যগুলোর সাথে সাসানীয় শিল্পকলা এবং মধ্যএশিয়ার সংযোগ পাওয়া যায়।[] বর্তমানে এখানে চারটি মৃৎশিল্পের কারখানা আছে।[]

গালিচা-বুনন

নিশাপুর বিভাগের গ্রামগুলোতে গালিচা ও মাদুর বোনা খুবই পরিচিত একটি কাজ। শাফিয়াবাদ, গারিনেহ, দাররুদ, বাঘশান, খারভ, বোজঘান, সায়্যিদ আবাদ, সার চাহ, সুলেইমানি, সুলতান আবাদ, এবং এশঘ আবাদ গ্রামগুলোতে প্রধান প্রধান গালিচা কারখানাগুলো অবস্থিত। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় কার্পেটগুলো নিশাপুরেই তৈরি হয়েছে, সেগুলো শোভা পাচ্ছে শেখ যায়েদ মসজিদ,[১০] সুলতান কাবুস গ্র্যান্ড মস্ক,[১১] আর্মেনিয়ান প্রেসিডেনশিয়াল প্যালেস, তেহরানে ফিনল্যান্ডের দূতাবাস এবং ওমানের মোহাম্মদ আল-আমীন মসজিদে।[১২]

নিশাপুরের গালিচায় আধুনিক কারুকার্য করা শুরু হয় ১৯৪৬-এ, যখন এখানকার এক সরাইখানায় প্রথম গালিচা-বুননের কারখানা খোলা হয়।

তথ্যসূত্র

অতিরিক্ত অধ্যয়ন

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.