Loading AI tools
ব্রিটিশ বিরোধী বাঙালি বিপ্লবী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
নিকুঞ্জ সেন (১ অক্টোবর ১৯০৬ — ২ জুলাই ১৯৮৬) ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে একজন বাঙালি বিপ্লবী ও লেখক।[1]
নিকুঞ্জ সেন | |
---|---|
জন্ম | ১ অক্টোবর ১৯০৬ |
মৃত্যু | ২ জুলাই ১৯৮৬ কলকাতা পশ্চিমবঙ্গ ভারত |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
পেশা | শিক্ষকতা |
প্রতিষ্ঠান | বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স |
পরিচিতির কারণ | ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন ও সমাজসেবা |
বিপ্লবী নিকুঞ্জ সেনের জন্ম ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১ লা অক্টোবর অধুনা বাংলাদেশের ঢাকার কামারখাড়ায়। পড়াশোনা সেখানেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বি.এ. পাশ করে কলকাতায় আসেন এম.এ পড়তে। তবে ছাত্র জীবন থেকেই তিনি ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের সমর্থক ছিলেন। ১৯০৫ সালে ঢাকার ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবী হেমচন্দ্র ঘোষ স্থাপিত বিপ্লবীদের গুপ্ত সমিতি যুগান্তর দলের 'মুক্তি সংঘ' এর সাথে যুক্ত হন ও পরবর্তীকালে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর 'বেঙ্গল ভলেন্টিয়ার্স' এর সদস্য হন। কুমিল্লায় ললিত বর্মনের নেতৃত্বে দলকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে তিনি সেখানে প্রেরিত হন।[2] তার ও ললিত বর্মনের বিপ্লবী প্রচেষ্টার ফল হিসাবে পেলেন কুমিল্লার ফয়জুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয়ের দুই সহপাঠী কিশোরীকে। তারা হলেন শান্তি ঘোষ ও সুনীতি চৌধুরী। এঁরাই কুমিল্লার জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মি.স্টিভেন্সকে ১৯৩১ সালে ১৪ ডিসেম্বর হত্যা করেন। নিকুঞ্জ সেন কিন্তু শিক্ষকতার মাধ্যমে দল ও সংগঠনকে শক্তিশালী করার উদ্দেশ্যে ঢাকার বিক্রমপুরের বানারিপাড়া স্কুলে যোগ দেন। ছাত্র হিসাবে পেলেন বাদল গুপ্তকে। তার আসল নাম ছিল সুধীর গুপ্ত। বাদলকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করেন নিকুঞ্জ সেন। বাদলও বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সে স্বেচ্ছাসেবী হিসাবে যোগ দেন।[3]
বিপ্লবী হেমন্ত ঘোষের অপর সহযোগী বিনয় বসুও (১৯০৮-১৯৩০) চিকিৎসা শাস্ত্রের পড়াশোনা ছেড়ে ১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স দলে দেন ও সহযোদ্ধাদের নিয়ে বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্সের ঢাকা শাখা গড়ে তোলেন।
বিপ্লবীদের লক্ষ্য ছিল কারা কর্তৃপক্ষের অত্যাচারী ইন্সপেক্টর জেনারেল কর্নেল এন.এস সিম্পসন। রাজবন্দীদের উপর অত্যাচার চালানোর জন্য সিম্পসন বিপ্লবীদের কাছে কুখ্যাত ছিলেন। সিম্পসনকে হত্যার সাথে সাথে ব্রিটিশ সরকারের মধ্যে ত্রাস সৃষ্টি করার জন্য অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। সিম্পসনকে হত্যা করা হবে তার অফিসে। তদানীন্তন সচিবালয়ে - কলকাতার রাইটার্স বিল্ডিঙে (বর্তমানে বিবাদি বাগে অবস্থিত মহাকরণ) - হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত নেন। সিদ্ধান্ত নেওয়া হল নেতৃত্ব দেবেন বিনয় বসু। আর সঙ্গে থাকবেন বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত (১৯১১-১৯৩১)। সেই মত ১৯৩০ সালের ৮ ডিসেম্বর তারিখে বিনয় বসু, বাদল গুপ্ত ও দীনেশ গুপ্ত একত্রে মিলে ইউরোপীয় বেশ ভূষায় সজ্জিত হয়ে রাইটার্স ভবনে প্রবেশ করেন ও সিম্পসনকে গুলি করে হত্যা করেন। নিকুঞ্জ সেন শুধু এদের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন না, এই অভিযানের সমস্ত পরিকল্পনা ও প্রস্তুতিতে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।[4] এই অভিযানের সময় তিনি ধরা পড়েন নি। তিনি আত্মগোপন করেছিলেন। পরে ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দে গ্রেপ্তার হয়ে ৭ বৎসর কারারুদ্ধ থাকেন।
পরবর্তীকালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে আবার গ্রেপ্তার হন এবং ১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে মুক্তি পান। এই সময় সুভাষচন্দ্রের ফরওয়ার্ড ব্লক সংগঠনের কাজে নিয়োজিত থাকেন। শেষে শরৎচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে গঠিত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিকান দলে যোগ দেন। দলের মুখপত্র 'মহাজাতি' তারই সম্পাদনায় প্রকাশিত হত। জ্যোতিষ জোয়ারদারের 'নিশানা' ও সুভাষ সংস্কৃতি পরিষদ' এর সঙ্গেও তার বিশেষ যোগ ছিল।
স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন উত্তর ২৪ পরগণা জেলার বাগু গ্ৰামে সপ্তগ্ৰাম সর্বেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় -এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান শিক্ষক ছিলেন। অপূর্ব সাংগঠনিক প্রতিভার অধিকারী হওয়ার ফলে সমাজ সেবা কেন্দ্র বাগু, শিখরপুর, নয়াবাদ প্রভৃতি সপ্তগ্রামের 'পল্লী নিকেতন' এর সম্পাদক ছিলেন।
নিকুঞ্জ সেন যেমন সুবক্তা ছিলেন তেমনই সুলেখক ছিলেন। তার রচিত গ্রন্থগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল -
উত্তর ২৪ পরগণার রাজারহাট-বিষ্ণুপুরে এক জনবসতি তার স্মরণে "বিপ্লবী নিকুঞ্জ সেন পল্লী" নামে নামাঙ্কিত হয়।
বিপ্লবী নিকুঞ্জ সেন ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দের ২ রা জুলাই মৃত্যুবরণ করেন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.