নরম্যান গিফোর্ড (ইংরেজি: Norman Gifford; জন্ম: ৩০ মার্চ, ১৯৪০) ল্যাঙ্কাশায়ারের আলভার্সটন এলাকায় (বর্তমানে - কাম্ব্রিয়ার অংশ) জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ও সাবেক ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা।[1] ১৯৬৪ থেকে ১৯৭৩ সময়কালে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ওরচেস্টারশায়ার ও ওয়ারউইকশায়ারের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। দলে তিনি মূলতঃ স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলিং করতেন। এছাড়াও নিচেরসারিতে বামহাতে ব্যাটিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন ‘জিফ’ ডাকনামে পরিচিত নরম্যান গিফোর্ড।
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
জন্ম | আলভার্সটন, ল্যাঙ্কাশায়ার, ইংল্যান্ড | ৩০ মার্চ ১৯৪০|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | বামহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ৪২৩) | ১৮ জুন ১৯৬৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২১ জুন ১৯৭৩ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ওডিআই অভিষেক (ক্যাপ ৮১) | ২৪ মার্চ ১৯৮৫ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ ওডিআই | ২৬ মার্চ ১৯৮৫ বনাম পাকিস্তান | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ঘরোয়া দলের তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বছর | দল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬০–১৯৮২ | ওরচেস্টারশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৬২–১৯৭৭ | মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব (এমসিসি) | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
১৯৮৩–১৯৮৮ | ওয়ারউইকশায়ার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো, ১ জুলাই ২০১৮ |
প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট
ওরচেস্টারশায়ারে থাকাকালে তিনি ‘অ্যাপল নর্ম’ নামে পরিচিতি পান। ১৯৫৯ সালে ওরচেস্টারশায়ারের দ্বিতীয় একাদশে থাকাকালেই পেশাদার ক্রিকেটে শিক্ষানবীশ সময় অতিক্রম করেন। মে, ১৯৬০ সালে ড্র হওয়া দ্বিতীয় একাদশের খেলায় কেন্টের বিপক্ষে ১৮ ওভার বোলিং করে ২/২৫ বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন।
এর পরদিনই একই প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলার জন্য প্রথম একাদশের সদস্যরূপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। খেলায় তিনি প্রথম ইনিংসে চার উইকেট লাভ করেন। কিন্তু, ওরচেস্টারশায়ার তাদের ক্রিকেটের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ২৫ রানের ইনিংস খেললে ইনিংসের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল। এর পরের খেলায় কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিপক্ষে দশ উইকেট লাভ করেন। তন্মধ্যে, দ্বিতীয় ইনিংসে তার বোলিং পরিসংখ্যান ছিল ১৫.৫-৭-১৮-৬।
১৯৬০ সালে ১৭.৯০ গড়ে ৪১ উইকেট নিয়ে মৌসুম শেষ করেন। পরের বছর বেশ সফলতা পান। ১৯৬১ সালে গিফোর্ড তার খেলোয়াড়ী জীবনে মৌসুম সেরা ১৩৩ উইকেট লাভ করেন।
১৯৬২ ও ১৯৬৩ সালে আবারও সুন্দর সময় পাড় করেন যথাক্রমে ৯২ ও ৭২ উইকেট তুলে নিয়ে। ১৯৬২ সালে শৌখিন ও পেশাদার ক্রিকেটের পার্থক্য নিয়ে খেলা অবলোপনের চূড়ান্ত খেলায় প্লেয়ার্সের পক্ষে খেলেন।
১৯৬৩ থেকে ১৯৬৮ সালের মধ্যে প্রত্যেক মৌসুমেই ২০-এর কম গড়ে উইকেট পেয়েছিলেন। তন্মধ্যে, জুলাই, ১৯৬৮ সালে নিজস্ব সেরা বোলিং করেন। ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে ৮/২৮ তুললেও পরাজয় এড়াতে পারেনি তার দল। ১৯৬৪ সালে ওরচেস্টারশায়ার কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা জয় করে। পরের বছরও এ ধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হয়েছিল তারা। দলের এ সাফল্যে গিফোর্ড উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন। তবে, কেবলমাত্র ১৯৬৪ সালেই শতাধিক উইকেট পেয়েছিলেন।
১৯৭৪ সালে ওরচেস্টারশায়ারের আরও একটি কাউন্টি চ্যাম্পিয়নশীপের শিরোপা বিজয়ে প্রভূতঃ ভূমিকা পালন করেন। এরপর ১৯৮৩ সালে ওরচেস্টারশায়ারের প্রবল প্রতিপক্ষ ওয়ারউইকশায়ারের পক্ষে যুক্ত হন। ঐ বছর তিনি ১০৪টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পেয়েছিলেন যা তার সর্বশেষ শত উইকেট লাভের মাইলফলক ছিল।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট
জুলাই, ১৯৬১ সালে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) তরফে ভারত ও পাকিস্তান সফরের জন্য দীর্ঘ তালিকায় তাকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু, শেষ পর্যায়ে তাকে দলে রাখা হয়নি। এর পরিবর্তে আন্তর্জাতিক একাদশের সদস্য হিসেবে রোডেশিয়া ও পাকিস্তান সফরে যান।
সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ইংল্যান্ডের পক্ষে পনেরো টেস্ট ও দুইটি একদিনের আন্তর্জাতিকে অংশগ্রহণের সুযোগ হয় তার। ১৮ জুন, ১৯৬৪ তারিখে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটে নরম্যান গিফোর্ডের।
১৯৬৪ সালের জুনে সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট খেলার জন্য মনোনীত হন। তবে খেলাটি বৃষ্টির কবলে পড়েছিল। প্রথম দুইদিন বৃষ্টির কারণে খেলা মাঠে গড়ায়নি। তবে, গিফোর্ড বেশ সুন্দর ক্রীড়াশৈলী উপহার দেন। বেশ মিতব্যয়ী বোলিং পরিসংখ্যান গড়েন। প্রথম ইনিংসে ১২-৬-১৪-২ ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭-৯-১৭-১।
হেডিংলিতে অনুষ্ঠিত তৃতীয় টেস্টেও তাকে রাখা হয়। তবে, খেলায় তিনি মাত্র দুই উইকেট লাভ করেন; যাতে অস্ট্রেলিয়া দল খুব সহজেই জয় পায়। এর সাত বছর পর তাকে পুনরায় টেস্ট ক্রিকেট খেলার জন্য ডাকা হয়।
১৯৭১ সালে গিফোর্ডকে পুনরায় ইংল্যান্ড দলে খেলার জন্য মনোনয়ন দেয়া হয়। পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ডেরেক আন্ডারউডের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি। পরবর্তী দুই বছর কেবল আসা-যাওয়ার পালায় অবস্থান করেন। ১৯৭৩-৭৪ মৌসুমে ভারত উপমহাদেশে দলের সাথে যান। ১৯৭৩ সালে নটিংহামে সফরকারী নিউজিল্যান্ড দলের বিপক্ষে নিজস্ব সর্বোচ্চ অপরাজিত ২৫ রান তুলেন। ১৯৭২-৭৩ মৌসুমে পাকিস্তান সফরে যান। ঐ সফরে সিরিজের করাচী টেস্টে ব্যক্তিগত সেরা বোলিং পরিসংখ্যান ৫/৫৫ লাভ করেন।
ঐ সফরের পর পরবর্তী গ্রীষ্মে তিনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আরও দুই টেস্টে অংশ নেন। কিন্তু, দল নির্বাচকমণ্ডলী আন্ডারউড ও গিফোর্ডকে আর কখনো টেস্টে খেলাননি। তবে, কাউন্টি ক্রিকেটে তখনও তিনি সপ্রতিভ ছিলেন।
অধিনায়কত্ব লাভ
টেস্ট আঙ্গিনা থেকে উপেক্ষিত হলেও ইংল্যান্ড দলের সদস্য ছিলেন নরম্যান গিফোর্ড। অপ্রত্যাশিতভাবে একদিনের আন্তর্জাতিকে দলনেতার দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৮৪-৮৫ মৌসুমে শারজায় অনুষ্ঠিত চারদেশীয় রথম্যানস কাপের খেলায় ৪৪ বছর বয়সে বিশ্রামে থাকা ডেভিড গাওয়ারের স্থলাভিষিক্ত হন তিনি।
অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তানের বিপক্ষে উভয় খেলাতেই ইংল্যান্ড দল পরাজিত হয়। তবে, গিফোর্ড ঠিকই তার ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শন করেছিলেন দ্বিতীয় খেলায় ৪/২৩ বোলিং পরিসংখ্যান গড়ে। তন্মধ্যে, প্রথম বলেই ইমরান খানকে শূন্য রানে ফেরৎ পাঠান। এভাবেই তার সংক্ষিপ্ত ওডিআই খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে।
চল্লিশোর্ধ্ব বয়সেও ওয়ারউইকশায়ারের পক্ষে খেলা চালিয়ে যান নরম্যান গিফোর্ড। ১৯৮৮ সালে ৪৮ বছর বয়সে ক্রিকেট খেলা থেকে অবসর নেন তিনি। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ২০৬৮টি প্রথম-শ্রেণীর উইকেট পেয়েছেন।
মূল্যায়ন
বিশিষ্ট ক্রিকেট লেখক কলিন বেটম্যান তার সম্পর্কে মন্তব্য করেন যে, ডেরেক আন্ডারউডকে ইংল্যান্ড দলের বাইরে থাকার জন্য দায়ী নরম্যান গিফোর্ড অবশ্যই বিশেষ কিছু গুণাবলীর অধিকারী। ক্রিকেট খেলায় গভীর জ্ঞান রাখতেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তিনি তার বামহাতের বোলিংয়ে সফলতা পেয়েছেন।
১৯৭৪ সালে ঘরোয়া ক্রিকেটে অসামান্য ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনের স্বীকৃতিস্বরূপ উইজডেন কর্তৃক অন্যতম বর্ষসেরা ক্রিকটোর হিসেবে ঘোষিত হন নরম্যান গিফোর্ড।
ব্যাটসম্যান হিসেবে তেমন সুবিধে করতে পারেননি তিনি। আট শতাধিক ইনিংস খেলে তিনবার অর্ধ-শতকের কোঠা অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছেন নরম্যান গিফোর্ড। মাত্র ১৩ গড়ে সাত সহস্রাধিক রান করেছেন।
অবসর
খেলোয়াড়ী জীবন থেকে অবসর নেয়ার পর কোচিং জগতে প্রবেশ করেন। প্রথমে সাসেক্স ও পরবর্তীতে ডারহামের কোচ হিসেবে নিযুক্তি লাভ করেন তিনি। বর্তমানে নিজ শহরের আলভার্সটন সি.সি.-এর স্কোরার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand in your browser!
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.