ভগবান কৃষ্ণের পালক পিতা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
নন্দ বা নন্দ গোপ বা নন্দ ঘোষ বা নন্দ বাবা হরিবংশ ও পুরাণ অনুসারে, "পাবন গোয়ালা" রূপে বিখ্যাত গোপালক জাতির প্রধান ছিলেন। তিনি ছিলেন ভগবান কৃষ্ণের পালক-পিতা।[১]
নন্দ প্রাচীন যাদব সাম্রাজ্যের এক শক্তিশালী অংশ গোকুলের অধীশ্বর বা শীর্ষস্থানীয় ছিলেন।[২] সম্পর্কে নন্দ বসুদেবের খুড়তুতো ভাই ছিলেন।[২][৩] বসুদেব নিজের নবজাত শিশু কৃষ্ণের লালন-পালনের জন্য নন্দের কাছে রেখে যান। নন্দ ও তার স্ত্রী যশোদা দুজনে মিলে কৃষ্ণ ও বলরাম উভয়েরই প্রতিপালন করেন। নন্দের পুত্র হওয়ার কারণে কৃৃষ্ণের আরেক নাম "নন্দনন্দন" রাখা হয়েছে।[৪][৫]
অনেক শাস্ত্রে, নন্দকে রাজা নন্দ (নন্দ রায়) হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে।[৬][৭] নন্দ রাজা বসুদেবের আত্মীয় তথা নিকটতম মিত্র ছিলেন। [৮]
ভাগবত পুরাণ অনুসারে, গোকুল রাজ্যের রাজা নন্দ, রাজা বসুদেবের খুড়তুতো ভাই ছিলেন।[৯] মথুরার রাজা উগ্রসেনের ভ্রাতুষ্পুত্রী দেবকীর সঙ্গে রাজা বসুদেবের বিবাহ হয়েছিল। দেবকীর জ্যাঠতুতো ভাই দুরাচারী কংস উগ্রসেনকে কারাগারে পাঠিয়ে মথুরার রাজ্য স্বয়ং হস্তগত করেছিল। দেবকীর গর্ভজাত অষ্টম পুত্রের দ্বারা কংস বধের আকাশবাণীর প্রভাবে কংস দেবকীর সমস্ত পুত্রকে জন্মের পরপরই মেরে ফেলার পরিকল্পনা গ্রহণ করে।[৬] এইরকমভাবে, দেবকীর ছয়টি পুত্রকে হত্যা করা হয়। কিন্তু সপ্তম পুত্রের গর্ভটিকে যোগমায়া দ্বারা রোহিণীর গর্ভে সংস্থাপিত করে দেওয়া হয়,[১০] রোহিণী বসুদেবের আরেক স্ত্রী ছিলেন যিনি রাজা নন্দের রক্ষণাবেক্ষণে ছিলেন, তার বলরাম নামক পুত্রের জন্ম হয় এবং কৃষ্ণকে স্বয়ং বসুদেব নন্দের হাতে সমর্পণ করেন। কৃষ্ণ ও বলরাম দুজনকেই গোপনরেশ নন্দ ও তার পত্নী যশোদা প্রতিপালন করে বড়ো করেছিলেন।[১১][১২]
নন্দ গোপ একবার শুক্লতীর্থে গমন করেন; পথে তিনি প্রতিদিন দশ কোটি সতেজ ফুল দ্বারা কোটেশ্বর শিব-এর আরাধনা করেছিলেন। কিছুকাল পর, শিব প্রসন্ন হয়ে তাকে নিজের গণ-এ অন্তর্ভুক্ত করেন, আর এইভাবে নন্দ গোপেশ্বর আখ্যায়িত হন।[১৩]
ব্রজে বরসানার নিকট নন্দগ্রাম/নন্দগাঁও একটি ধর্মীয় স্থান হিসেবে পরিচিত। এটি অধীনস্থ সামন্ত নন্দ বাবার রাজধানী ছিল যেখানে তিনি নিজের অনুগামীদের ও গোয়ালাদের সঙ্গে বসবাস করতেন।[১৪]
নন্দের নিবাস স্থলকে নন্দ ভবন বলা হয়ে থাকে, যেখানে কৃষ্ণ বড় হয়েছিলেন এবং নিজের ছোটবেলার কয়েকটি বছর অতিবাহিত করেছিলেন, সেখানে মহাবন-এ প্রমুখ প্রসিদ্ধ মন্দির রয়েছে। হলুদ রঙের এই স্থাপত্যের ভিতরে চুরাশিটি স্তম্ভ (চৌরাসী খাম্বা) আছে যার গায়ে কৃষ্ণের ছোটবেলার অনেক কাহিনী চিত্রিত রয়েছে। মনে করা হয় যে, এই প্রকৃতিতে ৮৪,০০০,০০ প্রজাতির জীবজন্তু আছে আর প্রত্যেক স্তম্ভ ব্রহ্মাণ্ডে বসবাসকারী ১,০০০,০০ জীবযোনির প্রতীক।[১৫]
নন্দ ঘাট পবিত্র নদী যমুনার তটে অবস্থিত। ঘাটটি কথিত এই ঘটনার সাথে সম্বন্ধিত যে, একবার নন্দকে যমুনা নদীতে স্নান করার সময় বরুণদেবের অনুসারীগণ বন্দী করেছিল এবং কৃষ্ণ তাকে উদ্ধার করেছিলেন। [১৬]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.