দ্রাবক হলো এমন একটি পদার্থ যা অন্য একটি পদার্থকে দ্রবীভূত করতে পারে। দ্রবীভূত হওয়া পদার্থকে দ্রবীট বলা হয়। দ্রাবক এবং দ্রবীটের মধ্যে পারস্পরিক আকর্ষণ বল থাকে। এই আকর্ষণ বল দ্রবীটকে দ্রাবকের মধ্যে দ্রবীভূত করতে সাহায্য করে।[1]
দ্রাবককে দুই ভাগে ভাগ করা যায়:[2]
- জৈব দ্রাবক: জৈব পদার্থ দিয়ে তৈরি দ্রাবক। যেমন: জল, ইথানল, অ্যাসিটোন, বেনজিন, টলুয়েন ইত্যাদি।
- অজৈব দ্রাবক: অজৈব পদার্থ দিয়ে তৈরি দ্রাবক। যেমন: জলীয় দ্রবণ, অ্যাসিড, ক্ষার ইত্যাদি।
দ্রাবকের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো:[3]
- দ্রাবকতা: দ্রাবক একটি পদার্থকে কতটা দ্রবীভূত করতে পারে তা দ্রাবকতার উপর নির্ভর করে। দ্রাবকতা একটি তাপমাত্রার ফাংশন। তাপমাত্রা বৃদ্ধির সাথে সাথে দ্রাবকতা বৃদ্ধি পায়।
- নিরপেক্ষতা: একটি দ্রাবককে নিরপেক্ষ বলা হয় যদি এটি দ্রবীটের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া না করে।
- স্থিতিশীলতা: একটি দ্রাবককে স্থিতিশীল বলা হয় যদি এটি দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করা যায়।
দ্রাবক বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হয়।[4] যেমন:
- রাসায়নিক বিক্রিয়াতে: রাসায়নিক বিক্রিয়াতে দ্রাবক একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দ্রাবক দ্রবীটকে দ্রবীভূত করে বিক্রিয়াটিকে দ্রুত এবং সহজ করে তোলে।
- দ্রবণের প্রস্তুতি: বিভিন্ন ধরনের দ্রবণ তৈরি করতে দ্রাবক ব্যবহার করা হয়। যেমন: খাবার, ওষুধ, রাসায়নিক পদার্থ ইত্যাদি।
- পরিস্কারক হিসেবে: দ্রাবক বিভিন্ন ধরনের দ্রবণ তৈরি করে পরিস্কারক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যেমন: ডিটারজেন্ট, ওয়াশিং সলিউশন, প্রসাধনী ইত্যাদি।
দ্রাবকের গুণমান নির্ভর করে এর দ্রাবকতা, নিরপেক্ষতা এবং স্থিতিশীলতার উপর। একটি ভালো দ্রাবককে নিম্নলিখিত গুণাবলী থাকতে হবে:[5]
- উচ্চ দ্রাবকতা: দ্রাবকটি যে দ্রবীটকে দ্রবীভূত করতে হবে তার উচ্চ দ্রাবকতা থাকতে হবে।
- নিরপেক্ষতা: দ্রাবকটি দ্রবীটের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া করা উচিত নয়।
- স্থিতিশীলতা: দ্রাবকটি দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করা যায়।
দ্রাবক নির্বাচন করার সময় নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করতে হবে:[6]
- দ্রবীটের প্রকৃতি: দ্রবীট কী ধরনের পদার্থ তা বিবেচনা করতে হবে। জৈব পদার্থ দ্রবীভূত করতে জৈব দ্রাবক এবং অজৈব পদার্থ দ্রবীভূত করতে অজৈব দ্রাবক ব্যবহার করা হয়।
- দ্রাবকতার প্রয়োজনীয়তা: দ্রবীটকে কতটা দ্রবীভূত করতে হবে তা বিবেচনা করতে হবে। বেশি দ্রাবকতা প্রয়োজন হলে উচ্চ দ্রাবকতা সম্পন্ন দ্রাবক ব্যবহার করতে হবে।
- নিরপেক্ষতা: দ্রবীটের সাথে রাসায়নিক বিক্রিয়া করা যাবে না এমন দ্রাবক নির্বাচন করতে হবে।
- স্থিতিশীলতা: দীর্ঘ সময় ধরে ব্যবহার করা যায় এমন দ্রাবক নির্বাচন করতে হবে।
Stoye, Dieter (২০০০)। "Solvents"। উলম্যানস এনসাইক্লোপিডিয়া অব ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিস্ট্রি। ওয়েইনহেইম: উইলি-ভিসিএইচ। ডিওআই:10.1002/14356007.a24_437।
Lowery and Richardson, pp. 181–183
Malmberg CG, Maryott AA (জানুয়ারি ১৯৫৬)। "Dielectric Constant of Water from 0° to 100 °C"। Journal of Research of the National Bureau of Standards। 56 (1): 1। ডিওআই:10.6028/jres.056.001 ।