Loading AI tools
দুই রাষ্ট্রের মধ্যে রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দ্বিপাক্ষিকতা বা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বলতে দুটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের মধ্যকার রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পরিচালনা করা বোঝায়। একপাক্ষিকতা বা বহুপাক্ষিকতা যেখানে যথাক্রমে এক দেশ কিংবা বহুদেশ নিয়ে কাজ করে, দ্বিপাক্ষিকতা সেখানে দুটি দেশ নিয়ে কাজ করে। যখন দুটি রাষ্ট্র একে অপরকে সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়ন করতে চায়, তখন তারা আলোচনা ও সহযোগিতা এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য কূটনৈতিক প্রতিনিধি আদান-প্রদান করে। এটি দুটি রাষ্ট্র কর্তৃক গৃহীত চুক্তি, যা পারস্পরিক সম্মতির মাধ্যমে গঠিত হয়।
দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে স্বাক্ষরিত অর্থনৈতিক চুক্তি, যেমন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (ফ্রী ট্রেড এগ্রিমেন্টস বা এফটিএ) কিংবা বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ (ফরেইন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট বা এফডিআই) প্রভৃতি হল দ্বিপাক্ষিকতার সাধারণ উদাহরণ। যেহেতু অধিকাংশ অর্থনৈতিক চুক্তি রাষ্ট্রদ্বয়ের নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের দিকে খেয়াল রেখেই তৈরি করা হয়, সেহেতু প্রতি ক্ষেত্রেই নির্দিষ্ট কিছু পার্থক্য বিদ্যমান থাকে। এ কারণে দ্বিপাক্ষিকতার মাধ্যমে চুক্তিভুক্ত রাষ্ট্র অধিক উপযোগী সুবিধা লাভ করে থাকে। এ ক্ষেত্রে বহুপাক্ষিক কৌশলের চেয়ে লেনদেনের খাতে অধিক ব্যয় হয়ে থাকে, তবুও সার্বিকভাবে দ্বিপাক্ষিকতা লাভজনক। দ্বিপাক্ষিক কৌশলে উভয় পক্ষই মধ্যস্থতার মাধ্যমে নতুন চুক্তি করে থাকে। যখন উভয়ের জন্যই লেনদেনে ব্যয় কম হয় এবং অর্থনীতির ভাষায় উৎপাদক উদ্বৃত্তি থাকে, তখনই চুক্তি সম্পাদিত হয়। অনেক ক্ষেত্রে বৃহত্তর লাভের উদ্দেশ্যে আপাতভাবে অলাভজনক চুক্তিও সম্পাদিত হয়ে থাকে।
এর মাধ্যমে প্রভাবশালী রাষ্ট্র, ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। কারণ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনার মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রভাব বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।[1]
দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আর বহুদেশীয় সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘদিন বিতর্ক হয়েছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর রাজনীতিবিদেরা যুদ্ধপূর্ব দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ফলেই এ যুদ্ধ অনিবার্য হয়ে পড়ে বলে মনে করেন এবং ফলে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নেতিবাচক হিসেবে মনে করা হয়। এর ফলে বহুদেশীয় লীগ অব ন্যাশনস গঠিত হয়, যা ২৬ বছর পরেই ভূমিকাহীন হিসেবে প্রমাণিত হয়।
তীব্র মন্দার পরও দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির বিরুদ্ধে কথা ওঠে। কারণ তখন মনে করা হয় যে এ ধরনের চুক্তি তারিফ বৃদ্ধি চক্র সৃষ্টিতে প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল, যার ফলাফল হিসেবেই অর্থনীতির এরূপ নিম্নাগমন ঘটে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পশ্চিমাবিশ্ব জেনারেল এগ্রিমেন্ট অন তারিফস অ্যান্ড ট্রেড (গ্যাট বা জিএটিটি) এর মত বহুদেশীয় চুক্তির দিকে সরে আসে।
জাতিসংঘ, ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন প্রভৃতি উচ্চপর্যায়ের আধুনিক বহুদেশীয় সংস্থা থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে অধিকাংশ কূটনীতি দ্বিপাক্ষিক পর্যায়েই হয়ে থাকে। দ্বিপাক্ষিকতার মধ্যে কিছুটা নমনীয়তা এবং আপস-নির্ভর ব্যবস্থা থাকে; যা বহুদেশীয় ব্যবস্থায় অনুপস্থিত। অধিকন্তু ক্ষমতা, সম্পদ, অর্থ, রণসজ্জা এবং প্রযুক্তির মত বেশকিছু খাতে অসমতার কারণে শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো অধিক সুবিধা ভোগ করে থাকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মাধ্যমে; যেখানে বহুদেশীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় কূটনীতির বহুমাত্রিক ঐক্য এবং এক্ষেত্রে এক রাষ্ট্র-এক ভোট নীতি প্রযুক্ত হয়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.