Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দ্বারকানাথ শান্তারাম কোটনিস (দেবনাগরী: द्वारकानाथ शांताराम कोटणीस, চীনা: 柯棣华) (অক্টোবর ১০, ১৯১০ – ডিসেম্বর ৯, ১৯৪২) ভারতের পাঁচজন চিকিৎসকের মধ্যে একজন যাঁরা দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধের সময় চীনে চিকিৎসা সহায়তার জন্য গেছিলেন। তিনি ভারত ও চীন দুই দেশের সম্পর্ক ও বন্ধুত্বের প্রতীক হিসেবে দুই দেশের মানুষের কাছে সম্মানিত।
দ্বারকানাথ শান্তারাম কোটনিস মহারাষ্ট্রের সোলাপুরে এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা শান্তারাম্ম কোটনিসের তিন পুত্র ও পাঁচ কন্যা ছিল। দ্বারকানাথ বম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেঠ গোবর্ধনদাস সুন্দরদাস মেডিক্যাল কলেজ থেকে চিকিৎসাশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। কোটনিস পিতার কাছ থেকে দেশপ্রেম ও সেবার ভাবনায় অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন।
জাপানের চীন আক্রমণের পরে ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে চু তে জওহরলাল নেহরুকে ভারত থেকে কয়েকজন চিকিৎসককে চীনে পাঠাতে অনুরোধ করেন। ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের ৩০শে জুন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের তৎকালীন সভাপতি সুভাষচন্দ্র বসু ভারতবাসীর কাছে এই বিষয়ে আবেদন করেন। এছাড়াও তিনি মডার্ণ রিভিউ পত্রিকায় দূর প্রাচ্যে জাপানের ভূমিকা বিষয়ে এক নিবন্ধ লেখেন। [1] সুভাষচন্দ্রের ডাকে সাড়া দিয়ে এলাহাবাদ থেকে মদনমোহন অটল, নাগপুর থেকে এম চোলকর, কলকাতা থেকে দেবেশ মুখোপাধ্যায় ও বিজয় কুমার বসু এবং সোলাপুর থেকে কোটনিস যোগদান করেন ও ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে চীনের উদ্দেশ্যে রওনা হন। [2]
পাঁচজনের এই চিকিৎসক দল চীনের ঊহান শহরের হানকো বন্দরে পদার্পণ করলে তাদের ইয়েনান পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখানে তাদের অভ্যর্থনা জানান মাও সে তুং, চু তে ও অন্যান্য চীনের কমিউনিস্ট পার্টির শীর্ষ নেতারা। চীন যাওয়ার পরে কোটনিস পিতার মৃত্যুসংবাদ পান কিন্তু কোটনিস সেবার ব্রত পরিত্যাগ করে দেশে ফিরে আসেননি। ১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি উটাই পর্বতের নিকটে জিন-চা-জি সীমান্তে মাও সে তুংয়ের নেতৃত্বে থাকা অষ্টম রুট বাহিনীতে যোগদান করেন। কোটনিস যুদ্ধ চলাকালীন অত্যন্ত প্রতিকূল পরিবেশে প্রায় ৮০০ আহত সৈন্যের চিকিৎসা করেন। এই সময়ে কিছুদিন জিন-চা-জি (晉察冀) সৈন্য বিভাগে ডঃ বেথুন স্বাস্থ্যবিধি বিদ্যালয়ে স্বাস্থ্য বিষয়ক ভাষণ দিতেন। পরে তাকে ইয়েনানের ডঃ বেথুন আন্তর্জাতিক শান্তি হাসপাতালের ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে প্রথম অধিকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয়। পাঁচজনের এই দলের বাকি সদস্যরা মিশন শেষে ভারতে ফিরে যান কিন্তু দ্বারকানাথ কোটনিস আর ফেরেননি। চীনা ভাষা শিখে নেন এবং সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন।
১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে কোটনিস ডঃ বেথুন আন্তর্জাতিক শান্তি হাসপাতালের এক সেবিকা গুয়ো কুইংলানকে (চীনা: 郭庆兰) বিবাহ করেন। ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ২৩শে আগস্ট তাদের এক ছেলের জন্ম হয়। নিয়ে রংঝেনের উপদেশ মতো ভারতের চীনা প্রতিশব্দ ইন (印) ও চীনের চীনা প্রতিশব্দ হুয়া (华) মিলিয়ে তার নাম রাখা হয় ইনহুয়া। [3][3][4]
প্রতিকূল যুদ্ধকালীন পরিবেশে প্রতিনিয়ত কাজের দরুন কোটনিসের স্বাস্থ্য ভেঙ্গে পড়ে। ইনহুয়ার জন্মের মাত্র তিন মাস পরেই কোটনিস মৃগীরোগে আক্রান্ত হন। পরপর একটানা খিঁচুনির ফলে ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দের ৯ই ডিসেম্বর কোটনিসের মৃত্যু হয়।
কোটনিসের জীবন নিয়ে শান্তারাম রাজারাম ভাঙ্কুদ্রের পরিচালনায় ও খ্বাজা আহমেদ আব্বাসের রচনায় ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে ডঃ কোটনিস কি অমর কহানি নামে একটি হিন্দী চলচ্চিত্র তৈরী হয়। [5] ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে কে ডি হ্যুয়া দাই ফু নামে এক চীনা চলচিত্রও তার জীবন নিয়ে তৈরি হয়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.