দীঘিনালা উপজেলা
খাগড়াছড়ি জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
খাগড়াছড়ি জেলার একটি উপজেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দীঘিনালা বাংলাদেশের খাগড়াছড়ি জেলার অন্তর্গত একটি উপজেলা। আয়তনে এটি খাগড়াছড়ি জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা।
দীঘিনালা | |
---|---|
উপজেলা | |
মানচিত্রে দীঘিনালা উপজেলা | |
স্থানাঙ্ক: ২৩°১৪′৪৩.৪৭৬″ উত্তর ৯২°৪′০.১৯২″ পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | চট্টগ্রাম বিভাগ |
জেলা | খাগড়াছড়ি জেলা |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯১৬ |
সংসদীয় আসন | ২৯৮ পার্বত্য খাগড়াছড়ি |
সরকার | |
• চেয়ারম্যান | খালি |
আয়তন | |
• মোট | ৬৯৪.১২ বর্গকিমি (২৬৮.০০ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১,০৭,৩৬৩ |
• জনঘনত্ব | ১৫০/বর্গকিমি (৪০০/বর্গমাইল) |
সাক্ষরতার হার | |
• মোট | ৪৭.৫০% |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
পোস্ট কোড | ৪৪২০ |
প্রশাসনিক বিভাগের কোড | ২০ ৪৬ ৪৩ |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
দীঘিনালা উপজেলার মোট আয়তন ৬৯৪.১২ বর্গ কিলোমিটার।[1] এটি আয়তনের দিক থেকে খাগড়াছড়ি জেলার সবচেয়ে বড় উপজেলা।[2]খাগড়াছড়ি জেলার সর্ব-উত্তরে ও সর্ব-পূর্বে ২৩°০৪´ থেকে ২৩°৪৪´ উত্তর অক্ষাংশ এবং ৯১°৫৬´ থেকে ৯২°১১´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ জুড়ে দীঘিনালা উপজেলার অবস্থান।[1] খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে এ উপজেলার দূরত্ব প্রায় ২১ কিলোমিটার।[3] এ উপজেলার উত্তরে ভারতের ত্রিপুরা, দক্ষিণে রাঙ্গামাটি জেলার লংগদু উপজেলা; পূর্বে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলা, পশ্চিমে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা, পানছড়ি উপজেলা ও ভারতের ত্রিপুরা।
দীঘিনালার বড় আদামে প্রায় দুই একরের মতো জায়গাজুড়ে অবস্থিত গোবিন্দ মাণিক্যের দীঘি। গাছপালা শোভিত স্বচ্ছ পানির এই দীঘির সঙ্গে জড়িয়ে অহিংস নীতিতে বিশ্বাসী ত্রিপুরার মহারাজা গোবিন্দ মাণিক্যের স্মৃতি। নিজ রাজ্য ছেড়ে দীঘিনালায় স্বেচ্ছা নির্বাসন বেছে নিয়েছিলেন তিনি। তখন এ অঞ্চলের নাম ছিল রিয়াংদেশ। এলাকার বাসিন্দারা গোবিন্দ মাণিক্যের স্মৃতি অক্ষয় করে রাখতে খনন করেন এই দীঘি। দীঘির কারণে এই অঞ্চলের নাম বদলে রাখা হয় দীঘিনালা।[4][5]দীঘির তীরে নেই কোন নামফলক। পুররঞ্জন প্রসাদ চক্রবর্তীর ত্রিপুরা রাজমালা, প্রভাংশু ত্রিপুরার ত্রিপুরা জাতির মাণিক্য উপাখ্যান এবং হিস্ট্রি অব হিন্দুস্তান গ্রন্থের তথ্যসূত্র অনুযায়ী, মহারাজা গোবিন্দ মাণিক্য ছিলেন ত্রিপুরার ১৮৪তম রাজা। তিনি রাজর্ষি খেতাব পেয়েছিলেন। ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দেখ্রিষ্টাব্দে ত্রিপুরার সিংহাসনে আরোহণ করেন তিনি। এ সময় রাজ্যের ভুবনেশ্বরী মন্দিরে পূজার নামে ব্যাপক বলিদান প্রচলন ছিল। মহারাজা গোবিন্দ মাণিক্য রাজ্যভার গ্রহণের পর এক আদেশে বলিদান প্রথা বন্ধ করে দেন। তখন তার বৈমাত্রেয় ছোট ভাই নক্ষত্র নারায়ণ ও রাজ পুরোহিত রঘুপতি চোন্তাই বলিদান বন্ধের রাজ আদেশের বিরুদ্ধে প্রজাদের মধ্যে প্রচার চালাতে থাকেন। রাজ আদেশের বিরুদ্ধাচরণ করার অপরাধে রাজ পুরোহিত রঘুপতি চোন্তাইকে ত্রিপুরা রাজ্য থেকে নির্বাসন ও বৈমাত্রেয় ছোট ভাই নক্ষত্র নারায়ণকে বঙ্গদেশের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত করেন গোবিন্দ মাণিক্য। নক্ষত্র নারায়ণ বঙ্গদেশে গিয়ে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বড় ভাই গোবিন্দ মাণিক্যকে হটিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যের সিংহাসন দখলের ষড়যন্ত্র করেন। মহারাজা গোবিন্দ মাণিক্য এই ষড়যন্ত্রের কথা জানতে পেরে বৈমাত্রেয় ভাই নক্ষত্র নারায়ণকে রাজ্যভার দিয়ে ত্রিপুরা রাজ্যের রিয়াংদেশে (বর্তমানে খাগড়াছড়ির দীঘিনালার মাইনী নদীর তীরে) স্বেচ্ছা নির্বাসনে আসেন। মহারাজা গোবিন্দ মাণিক্য রিয়াংদেশে নির্বাসন জীবন কাটাচ্ছেন জেনে রিয়াংবাসীরা মহারাজার সামনে উপস্থিত হয়ে তার বৈমাত্রেয় ভাই নক্ষত্র নারায়ণের বিরুদ্ধে অস্ত্রধারণের অভিপ্রায় জানান। তখন মহারাজা তাদের জানিয়েছিলেন, তিনি স্বেচ্ছায় নক্ষত্র নারায়ণের হাতে ত্রিপুরা রাজ্যের শাসনভার তুলে দিয়ে নির্বাসনে এসেছেন। তিনি তার আনুগত্যের নিদর্শন প্রকাশের জন্য রিয়াংবাসীকে দীঘি খনন করতে বলেন। তখন মহারাজার নির্দেশ মেনে রিয়াংবাসীরা ১২টি দীঘি খনন করেন। তার মধ্যে দীঘিনালার এ দীঘিটি অন্যতম।
১৯১৬ সালে দীঘিনালা থানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৮৩ সালে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের ফলে উপজেলায় রূপান্তরিত হয়।[1] এ উপজেলায় বর্তমানে ৫টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম দীঘিনালা থানার আওতাধীন।
২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দীঘিনালা উপজেলার জনসংখ্যা ১,০৭,৩৬৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫৫,০৯২ জন এবং মহিলা ৫২,২৭১ জন।[3] মোট জনসংখ্যার ৩১.৭৩% মুসলিম, ৯.১৭% হিন্দু, ৫৭.৯৮% বৌদ্ধ এবং ১.১২% খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী রয়েছে।
২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী দীঘিনালা উপজেলার জনসংখ্যা ১,১৫,৪৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৫৮,৭৫৮ জন এবং মহিলা ৫৬,৬৭৮ জন। মোট জনসংখ্যার ৩৪.৯৮% মুসলিম, ২৪.৭৬% হিন্দু, ৩৮.৫০% বৌদ্ধ এবং ১.৭৫% খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বী রয়েছে। এ উপজেলায় চাকমা, ত্রিপুরা, মারমা প্রভৃতি জনগোষ্ঠীর বসবাস রয়েছে।
দীঘিনালা উপজেলার সাক্ষরতার হার ৪৭.৫০%।[1] এ উপজেলায় ১টি কলেজ, ১০টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২টি দাখিল মাদ্রাসা, ৭টি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।[3]
দীঘিনালা উপজেলায় যোগাযোগের প্রধান সড়ক খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়ক। যে কোন যানবাহনে যোগাযোগ করা যায়।
দীঘিনালা উপজেলার প্রধান প্রধান হাট-বাজারগুলোর মধ্যে দীঘিনালা থানা বাজার, বোয়ালখালী নতুন বাজার, মেরুং বাজার, বাবুছড়া বাজার,বড়াদাম বাজার উল্লেখযোগ্য।[1][8]
সংসদীয় আসন | জাতীয় নির্বাচনী এলাকা[9] | সংসদ সদস্য[10][11][12][13][14] | রাজনৈতিক দল |
---|---|---|---|
২৯৮ পার্বত্য খাগড়াছড়ি | খাগড়াছড়ি জেলা | কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা | বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ |
ক্রম নং | পদবী | নাম |
---|---|---|
০১ | উপজেলা চেয়ারম্যান | ধর্মজ্যোতি চাকমা |
০২ | ভাইস চেয়ারম্যান | সুসময় চাকমা |
০৩ | মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান | সীমা দেওয়ান |
০৪ | উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা[15] | মো: মামুনুর রশীদ |
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.