ত্রিবেণী, হুগলি
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলী জেলার একটি ছোট শহর। উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ত্রিবেণী হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের হুগলি জেলার বাঁশবেড়িয়া পৌরসভার উত্তর অংশে অবস্থিত একটি ছোট শহর। এটি হিন্দুদের জন্য একটি পুরানো পবিত্র স্থান। এই স্থানের পবিত্রতা বহু শতাব্দী ধরে স্বীকৃত হয়ে আসছে এবং ১২ শতকের শেষ চতুর্থাংশে একটি সংস্কৃত ভাষায় লেখা অংশ "পাভনা-দুতাম"-এ উল্লেখ করা হয়েছে। মুসলমানদের বাংলা বিজয়ের প্রাথমিক পর্যায়ে ত্রিবেণী শহর অধিগৃহীত হয়েছিল।
ত্রিবেণী ত্রিসঙ্গম | |
---|---|
শহর | |
পশ্চিবঙ্গ ও ভারতে অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২২.৯৯° উত্তর ৮৮.৪০° পূর্ব | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
জেলা | হুগলি জেলা |
সরকার | |
• ধরন | পৌরসভা |
• শাসক | বাঁশবেড়িয়া পৌরসভা |
• পৌরসভার সভাপতি | শ্রীমতী অরিজিতা সিল (সরকার) |
আয়তন | |
• মোট | ৯.০৭ বর্গকিমি (৩.৫০ বর্গমাইল) |
উচ্চতা | ৪ মিটার (১৩ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১,০৩,৭৯৯ |
• জনঘনত্ব | ১১,০০০/বর্গকিমি (৩০,০০০/বর্গমাইল) |
ভাষা | |
• সরকারী | বাংলা |
সময় অঞ্চল | আই. এস. টি (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন | ৭১২৫০৩ |
আইএসও ৩১৬৬ কোড | আই.এন-ডব্লু.বি |
নিকতম প্রধান রেল জংশন | ব্যান্ডেল |
নিকটতম শহর/পৌরসভা | বাঁশবেড়িয়া |
ওয়েবসাইট | সরকারী ওয়েবসাইট |
ইতিহাস
ত্রিবেনী শহরের অবস্থান হল ২২.৯৯° উত্তর এবং ৮৮.৪০° পূর্ব।[1]
যমুনা, গঙ্গা ও সরস্বতী নামে তিনটি নদীর মিলন থেকে ত্রিবেণী নামটি পাওয়া যায়। সম্ভাব্য পূর্বে নামগুলি ছিল "মুক্তবেণী", এটি এলাহাবাদের প্রয়াগ থেকে এসেছে, এটি যুক্তবেণী নামেও পরিচিত। ১৯৮১ খ্রিস্টাব্দে জেমস রেনেলের বাংলার মানচিত্রে "টেরবোনি" নামে অভিহিত করা হয়েছিল। বিখ্যাত হিন্দু দার্শনিক এলাকা "শ্মশান ঘাট"-এর পাশ দিয়ে সরু নদীখাতে প্রবাহিত হত সরস্বতী নদী যা ছিল সপ্তগ্রামের দক্ষিণ-পশ্চিমে। পড়ে এই নদীপথ ছেড়ে গঙ্গা নদী বিশেষ করে হুগলি বা ভাগীরথী নামে পরিচিত হয়ে সমুদ্রে মিলিত হয়। ঘাটটি ভূরিশ্রেষ্ঠ সাম্রাজ্যের মহারাজা রুদ্রনারায়ণ রায়মুখুটি দ্বারা নির্মিত, যা ঘাটের কাছাকাছি ত্রিবেনীর মন্দিরগুলিতে গৌড়ীয় রীতির দৃশ্যমান প্রভাব ফেলেছিল। য়ামুনা, সাধারণত বাংলা ভাষায় যমুনা হিসাবে উল্লিখিত, অতীতে নদীটি গঙ্গার (হুগলি নদী) শাখা হিসাবে দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত ছিল, কিন্তু বর্তমানে নদীটি গঙ্গা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
এই শহরটি মালভূমি ও পাহাড়ের নৈকট্য থেকে দূরে গঙ্গার পশ্চিমাঞ্চলীয় উপকূলে অবস্থিত এবং এখানকার জাফর খান গাজী মসজিদ হল পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের নিকটতম অতীতের বেঁচে থাকা স্মৃতিস্তম্ভগুলির একটি। মসজিদটির একটি আরবি ক্রমবিন্যাস রয়েছে ১২৯৮ খ্রিস্টাব্দ, যদিও প্রমাণ পাওয়া যায় যে এটি সময়ের সাথে পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। তারিখটি আরও দৃঢ়ভাবে প্রমাণিত হয় যে ১২৭২ সালে মুসলিমদের বাংলার বিজয়ের প্রায় ৬০ বছর পর, নিকটবর্তী এলাকাগুলির সাথে "ত্রিবেণী" জনপদটি জাফর খান কর্তৃক দখল ছিল। মসজিদটির দরজাগুলিতে সনাতন বৈষ্ণব ভাস্কর্য খোদিত রয়েছে, যা থেকে অনুমান করা হয় যে মন্দিরের উপর সম্ভবত মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল।
শোনা যায়, স্বয়ং মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব ত্রিবেণীর ঘাটে পদার্পণ করেছিলেন । ত্রিবেণীর কালীতলা নামক স্থানে সনাতন ধর্মের দেবী মা কালীর একটি প্রাচীন মন্দির রয়েছে । বহুদিন অসংখ্য ভক্তগণের সমাবেশ ঘটে এই মন্দিরে । লোকমুখে শ্রুত, ঐতিহাসিক নীল বিদ্রোহে(১৮৫৯-১৮৬০) অংশগ্রহণকারী দুই ভাই রঘুনাথ সর্দার ও বিশ্বনাথ সর্দার (বিশে ডাকাত) এই বাঁশবেড়িয়া-ত্রিবেণী এলাকার বাসিন্দা ছিলেন ও তারা প্রাচীন কালীমন্দিরে ডাকাতির পূর্বে উপাসনার জন্য আসতেন ।
উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব
- বিশ্বনাথ সর্দার — নীল বিদ্রোহের নেতা
- রঘুনাথ সর্দার — নীল বিদ্রোহে অংশগ্রহণকারী
- জাফর খান গাজী — ইসলাম ধর্মপ্রচারক
- জগন্নাথ তর্কপঞ্চানন
যোগাযোগ
ত্রিবেণী রেলওয়ে স্টেশনটি পূর্ব রেলওয়ের হাওড়া রেল ডিভিশনে ব্যান্ডেল-কাটোয়া লাইনে অবস্থিত।
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand in your browser!
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.