তাকমিলাতু ফাতহুল মুলহিম
মুহাম্মদ তাকি উসমানির বই উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
তাকমিলাতু ফাতহুল মুলহিম বিশারহি সহীহিল ইমাম মুসলিম (আরবি: تکملة فتح الملهم بشرح صحيح الإمام مسلم) মুহাম্মদ তাকি উসমানির আরবি ভাষায় রচিত সহীহ মুসলিমের একটি ব্যাখ্যাগ্রন্থ। এটি মূলত শাব্বির আহমদ উসমানির রচিত ফাতহুল মুলহিমের সম্পূরক গ্রন্থ। শাব্বির আহমদ উসমানি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত ফাতহুল মুলহিমের ৩ খণ্ড রচনা করতে পেরেছিলেন। তার এই অসমাপ্ত কাজকে এগিয়ে নিতে পিতা মুহাম্মদ শফি উসমানির নির্দেশে মুহাম্মদ তাকি উসমানি ১৯৭৬ সালে গ্রন্থটি রচনায় হাত দেন। প্রায় ১৮ বছর পর ১৯৯৪ সালে গ্রন্থটি রচনার কাজ সমাপ্ত হয়।[১] এটি তাকি উসমানির সর্বশ্রেষ্ঠ রচনা। ৬ খণ্ডে সমাপ্ত এই গ্রন্থে ফিকহ, বিচার, রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজনীতি সহ প্রয়োজনীয় আলোচনা রয়েছে।[২]
![]() দারুল উলুম করাচি, ২০০৯ সংস্করণের প্রচ্ছদ | |
লেখক | মুহাম্মদ তাকি উসমানি |
---|---|
মূল শিরোনাম | আরবি: فتح الملهم بشرح صحيح الإمام مسلم |
দেশ | পাকিস্তান |
ভাষা | আরবি |
বিষয় | হাদিস |
প্রকাশিত | ১৯৯৪ |
প্রকাশক | দারুল উলুম করাচি |
মিডিয়া ধরন | শক্তমলাট |
পৃষ্ঠাসংখ্যা | ৩৮৫৩ |
ওসিএলসি | ১২৩৪২২৬৯০ |
বর্ণনা
এই ব্যাখ্যাগ্রন্থে মূল হাদিসের নাম্বার সহ মতন উল্লেখ করা হয়েছে, হাদিস বর্ণনাকারীর নামের উচ্চারণ বিশুদ্ধ করা ও তাদের জীবনী লিপিবদ্ধ করা হয়েছে, ইসলামি বিধি-বিধানের হিকমত ও রহস্য এবং অন্যান্য ধর্ম ও মতবাদের সাথে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করা হয়েছে, প্রত্যেক হাদিসের ব্যাখ্যা ও হাদিসের অধীনে আলোচিত মাসআলা বর্ণনা করা হয়েছে, ফকিহগণের মতামত ও দলিল-প্রমাণ উল্লেখ করা হয়েছে। এই গ্রন্থে লেখক ইসলামের সর্বজনস্বীকৃত ও স্বতঃসিদ্ধ বিষয় নিয়ে পশ্চিমাদের বিভিন্ন আপত্তির জবাব প্রদান করেছেন। যেমন: ইসলামে দাসপ্রথা, তালাকের বৈধতা, ব্যক্তি মালিকানা, ব্যাংকিং ইত্যাদি।[৩] পিতার নির্দেশে ১৯৭৬ সালের ২৫ মে তিনি গ্রন্থটি রচনায় হাত দেন। ১৯৯৪ সালের ৪ আগস্ট গ্রন্থটি রচনার কাজ সমাপ্ত হয়। গ্রন্থটির ৪টি সংস্করণ বের হয়েছে। ২টি দারুল উলুম করাচি থেকে, ১টি দারুল কলম দামেস্ক থেকে ও অন্যটি লেবানন থেকে। ৬ খণ্ড বিশিষ্ট এই গ্রন্থের প্রথম খণ্ড ৬৯২ পৃষ্ঠার, দ্বিতীয় খণ্ডে ৬৪৪ পৃষ্ঠা, তৃতীয় খণ্ডে ৬৭১ পৃষ্ঠা, চতুর্থ খণ্ডে ৬০৭ পৃষ্ঠা, পঞ্চম খণ্ডে ৬৩৫ পৃষ্ঠা এবং শেষ খণ্ডে আছে ৬০৪ পৃষ্ঠা।[৪]
মূল্যায়ন
সারাংশ
প্রসঙ্গ
মিশরীয় ইসলামি চিন্তাবিদ ইউসূফ আল-কারযাভী বলেন,
“ | আমি সহীহ মুসলিমের নতুন পুরাতন অনেক ব্যাখ্যাগ্রন্থ দেখেছি। কিন্তু মুফতি মুহাম্মদ তাকি উসমানির কিতাবের ন্যায় দেখিনি। এতে তিনি অনেক দূর্লভ ও মূল্যবান বিষয় একত্রিত করেছেন। বাস্তবেই এটিকে সহীহ মুসলিমের ব্যাখ্যাগ্রস্থ বলা যায়। এটি একটি বিশ্বকোষ। হাদিস, ফিকহ, দাওয়াত, তারবিয়াত ইত্যাদি বহু বিষয়ের আলোচনা তিনি এ গ্রন্থে করেছেন। আর ইংরেজিসহ বহু ভাষা সম্পর্কে দক্ষতা, বর্তমান যুগের শিক্ষা সংস্কৃতি ও নৈতিক চিন্তা মতবাদ সম্পর্কে পূর্ণ অবগতি থাকার কারণে ইসলামি বিধিবিধান ও ইসলামি শিক্ষা-সংস্কৃতিকে অন্যান্য ধর্ম ও মতবাদের সাথে তুলনামূলক বিশ্লেষণ ও ইসলামের বৈশিষ্ট্য ফুটিয়ে তুলতে তিনি সক্ষম হয়েছেন। যেমনটি তিনি তালাক সংক্রান্ত অধ্যায়ে করেছেন। আলোচ্য কিতাবটি জ্ঞানের পরিপূর্ণ গবেষণালব্ধ বিষয়ে ভরপুর। পাঠক উপলব্ধি করতে পারবেন যে, লেখক এতে কত শ্রম ও মেধা ব্যয় করেছেন। সহজ ও সাবলীল ভঙ্গিতে লিখেছেন। ভাষাশৈলীর কোন কঠিন পন্থা তিনি এতে অবলম্বন করেননি। ফলে তার কিতাবটি মৌলিকত্ব ও নতুনত্ব উভয়ের মাঝে সমন্বিত রূপে এসেছে। যা যেকোনো ইলম পিপাসু, সুন্নাতের আশেক ও ফিকহ গবেষককে আকৃষ্ট করবে। | ” |
— [৫] |
তিউনিসিয়ার প্রধান মুফতি মুহাম্মদ মুখতার সুলামী বলেন,
“ | সহীহ মুসলিমের অন্যান্য ব্যাখ্যাগ্রন্থের মাঝে এই তাকমিলার বৈশিষ্ট হচ্ছে,, এই কিতাবকারের গণ্ডি ও সীমানাকে ছিন্ন ভিন্ন করে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত এই আধুনিক যুগে তোমার সাথে বসবাস করবে। ফলে মুত্তাকী আলেমের পরশে ধন্য তার পৃষ্ঠ থেকে তুমি তোমার বিবেক ও অন্তরে এমন দিকনির্দেশনা পাবে যা মৌলিকত্ব ও যুক্তিতর্কের মাঝে সমন্বয় করবে। | ” |
— [৬] |
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.