Loading AI tools
একটি দীর্ঘমেয়াদী মানসিক রোগ যা ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন ঘটায় এবং স্মৃতিশক্তি, যুক্তি এবং সামাজ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
চিত্তভ্রংশ একটি মানসিক রোগ যাতে আক্রান্ত ব্যক্তির বুদ্ধি, স্মৃতি ও ব্যক্তিত্ব লোপ পায় এবং রোগ ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে[11][12]। সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিরা এ রোগে আক্রান্ত হয় এবং হঠাৎ করেই অনেক কিছুই মনে করতে পারেন না। ফলে তার আচরণে কিছুটা অস্বাভাবিকতা লক্ষিত হয়। মস্তিষ্কের কোষ সংখ্যা (নিউরন) বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে নির্দিষ্ট হারে কমতে থাকে। বয়সের সঙ্গে শারীরিক রোগব্যাধি মস্তিষ্কের ক্ষতি করে যদি স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ভন্ডুল করে দেয়, একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় চিত্তভ্রংশ বা ইংরেজি পরিভাষায় ডিমেনশিয়া বলে। চিত্তভ্রংশের সবচাইতে প্রচলিত রূপ হল আলৎসহাইমারের রোগ (৭৫%)[12]।
চিত্তভ্রংশ | |
---|---|
প্রতিশব্দ | ভীমরতি,[1] বার্ধক্যজনিত স্মৃতিভ্রংশ |
১৮০০র দশকে চিত্তভ্রংশে আক্রান্ত একজনের চিত্র | |
বিশেষত্ব | স্নায়ুবিদ্যা, মনোরোগ বিজ্ঞান |
লক্ষণ | চিন্তাভাবনা এবং মনে রাখার ক্ষমতা হ্রাস, মানসিক সমস্যা, ভাষার সমস্যা, অনুপ্রেরণা হ্রাস[2][3] |
রোগের সূত্রপাত | ধীরে ধীরে[2] |
স্থিতিকাল | দীর্ঘ মেয়াদী[2] |
কারণ | আলৎসহাইমারের রোগ, ভাসকুলার ডিমেনশিয়া, লেউই বডিস ডিমেনশিয়া, ফ্রন্ট টেম্পোরাল ডিমেনশিয়া[2][3] |
রোগনির্ণয়ের পদ্ধতি | সংজ্ঞানাত্মক পরীক্ষায় (মিনি-মানসিক অবস্থা পরীক্ষা)[3][4] |
পার্থক্যমূলক রোগনির্ণয় | প্রলাপ[5] |
প্রতিরোধ | প্রাথমিক শিক্ষা, উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ, অতিস্থূলতা প্রতিরোধ, ধূমপান নিষেধ, সামাজিক অংশগ্রহণ[6] |
চিকিৎসা | সহায়ক পরিচর্যা[2] |
ঔষধ | কোলিনস্টেরেস বাধাপ্রদায়ক (অল্প সুবিধা)[7][8] |
সংঘটনের হার | ৫০ মিলিয়ন (২০২০)[9] |
মৃতের সংখ্যা | ১.৯ মিলিয়ন (২০১৫)[10] |
বিভিন্ন রোগের কারণে চিত্তভ্রংশ রোগ হতে পারে, যেমন, এইডস, দীর্ঘমেয়াদী ধূমপান ও মদ্যপান, আলৎসহাইমার, ভিটামিন বি-র অভাব, কার্বন মনোক্সাইড বিষক্রিয়া, মস্তিষ্কের রোগ, অনৈতিক জীবনযাপন, ইত্যাদি।[13]।
চিত্তভ্রংশের প্রাথমিক বিস্তার খুবই ধীরে হয়, এমনকি মাস কিংবা বছর ধরেও হতে পারে। ভুলে যাওয়ার কারণে রোগী হতাশা, নিদ্রাহীনতা ও অন্যান্য সমস্যায় ভোগে এবং আস্তে আস্তে অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে[13]।
চিত্তভ্রংশের বিভিন্ন প্রকারভেদ :
মূলত প্রবীণ ব্যক্তিরাই এ রোগে ভোগেন। ৬০ বছরের কম রোগীদের হার ০.১ শতাংশ, ৬০-৬৪ বছর বয়সী রোগীদের মধ্যে এ রোগের হার ১ শতাংশ, ৬৫-৮৪ বছর বয়সী রোগীদের মধ্যে এ রোগের হার ৩ থেকে ১১ শতাংশ এবং ৮৫ বছরের বেশি বয়সী রোগীদের মধ্যে এ রোগের হার ২৫ থেকে ৪৭ শতাংশ[11]।
কিছু কিছু ওষুধ যেমন donepezil, nemantidine, এবং tacrine রোগীর চিন্তাশীলতা ও শনাক্তকরণ ক্ষমতা বাড়ায়। এসব ওষুধ চিত্তভ্রংশের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়[13]। চিত্তভ্রংশ রোগটি জটিল হয়ে গেলে রোগীর সেরে ওঠার আর কোনো সম্ভাবনা থাকে না।
চিত্তভ্রংশ রোগটি শনাক্ত হওয়ার পরপরই চিকিৎসা সেবা শুরু করা দরকার। রোগীর প্রত্যহিক জীবনের মান বাড়ানো, তাকে যথাযথ সম্মান, সঙ্গ এবং সেবা দেয়া, রোগী ও তার স্বজনদের প্রাত্যহিক কর্মতালিকার সমন্বয়- রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি-পাওয়াকে কমায়[11]।
রোগটি নিয়ে মুশকিল হলো, বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ভুলে যাবেন—এমনটি ধরেই নেওয়া হয়। ফলে চিত্তভ্রংশ রোগটি সম্পর্কে বেশির ভাগ মানুষ সচেতন থাকেন না। এখন এমন অনেক ওষুধ আবিষ্কার হয়েছে, যেগুলো সেবন করলে চিত্তভ্রংশ তীব্র হওয়া রোধ করা যায়। কিন্তু বেশির ভাগ রোগী আসেন একেবারে শেষ পর্যায়ে। বিভিন্ন রোগ থেকে চিত্তভ্রংশের উৎপত্তি। তাই ধূমপান থেকে বিরত থাকা ও সুস্থ জীবনযাপন করাটা জরুরি।
২০ সেপ্টেম্বর বিশ্ব চিত্তভ্রংশ সচেতনতা দিবস।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] চিত্তভ্রংশ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এ সচেতনতা দিবস আয়োজিত হয়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.