Loading AI tools
বাংলা সাহিত্যের একটি কাল্পনিক চরিত্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
টেনিদা বা টেনি বা ভজহরি মুখার্জি হলো নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় সৃষ্ট একটি জনপ্রিয় কাল্পনিক চরিত্র।
টেনিদা | |
---|---|
টেনিদা চরিত্র | |
স্রষ্টা | নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় |
চরিত্রায়ণ | চিন্ময় রায় |
প্রকৃত নাম | ভজহরি মুখার্জি |
বাসস্থান | পটলডাঙা, কলকাতা |
উচ্চতা | ৬ ফুট ২ ইঞ্চি |
বন্ধু/অ্যাসিস্ট্যান্ট | প্যালারাম ক্যাবলা হাবুল |
তথ্য | |
ডাকনাম | টেনি ভজা |
লিঙ্গ | পুরুষ |
পদবি | মুখার্জি |
ধর্ম | হিন্দু ধর্ম |
জাতীয়তা | ভারতীয় |
টেনিদা মূলত উত্তর কলকাতার পটলডাঙায় বসবাসরত একটি স্থানীয় চরিত্র। টেনিদার প্রকৃত নাম ভজহরি মুখার্জি। পটলডাঙার আশেপাশে বসবাসরত চার তরুণ ছেলেদের একটি দলের নেতা টেনিদা পড়াশোনায় তেমন ভালো ছিলেন না। সাত বারের চেষ্টাতে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করেছিলেন তিনি। টেনিদা বিখ্যাত ছিলেন তার খাঁড়ার মত নাকের জন্যে, গড়ের মাঠে গোরা পেটানোর জন্যে। আর তার বিখ্যাত সংলাপ, "ডি-লা গ্রান্ডি মেফিস্টোফিলিস ইয়াক ইয়াক"। টেনিদা সম্বন্ধে গল্পকথক প্যালারাম বলেছেন, "টেনিদাকে নইলে আমাদের যে একটি দিনও চলে না। যেমন চওড়া বুক - তেমনি চওড়া মন।" "পাড়ার কারও বিপদ-আপদ হলে টেনিদাই গিয়ে দাঁড়িয়েছে সকলের আগে। লোকের উপকারে এক মুহুর্তের জন্য তার ক্লান্তি নেই - মুখে হাসি তার লেগেই আছে। ফুটবলের মাঠে সেরা খেলোয়াড়, ক্রিকেটের ক্যাপ্টেন। আর গল্পের রাজা। এমন করে গল্প বলতে কেউ জানে না।"
টেনিদা গল্প মূলত দুই ধরনের, (ক) টেনিদা তার তথাকথিত বীরত্বের বানানো গল্প বর্ণনা করেন।[1] (খ) টেনিদা ও প্যালা[2] বা চার তরুণ দলের অত্যধিক উল্লসিত অ্যাডভেঞ্চারের আকর্ষণীয় এবং শেষে রহস্যময় পরিস্থিতি মাধ্যমে সমাধানের গল্প বর্ণনা।[3] এই সিরিজের ছোটগল্পগুলি ব্যাপকভাবে কলকাতার উপর ভিত্তি করে রচিত।
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় টেনিদাকে বেশ কয়েকটি উপন্যাস ও ছোট গল্প এবং একটি নাটকে উপস্থাপিত করেছেন।
“ |
আমরা চার মূর্তি, মনে খুব ফুর্তি |
” |
টেনিদাকে নিয়ে 'চার মূর্তি' নামে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় প্রথম উপন্যাস লেখেন যা ১৯৫৭ খ্রিষ্টাব্দে 'অভ্যুদয় প্রকাশ মন্দির' থেকে গ্রন্থাগারে প্রকাশিত হয়। পরের উপন্যাস 'চার মূর্তির অভিযান' ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে গ্রন্থাগারে প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসের দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে টেনিদার আসল নাম যে ভজহরি মুখার্জি তা জানা যায়[n 1] এবং তার বিখ্যাত স্লোগান 'ডি-লা-গ্রান্ডি মেফিস্টোফিলিস ইয়াক্ ইয়াক্' এই উপন্যাসেই প্রথম শোনা যায়। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় টেনিদাকে নিয়ে যে সমস্ত উপন্যাস লিখেছেন, সেগুলি হল-
এছাড়াও নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী আশা দেবী কলম ধরেছিলেন টেনিদা পাঠকদের অনুরোধে। তার হাত দিয়ে 'টেনিদার অজলাভ' উপন্যাস ও কয়েকটি ছোটগল্পও বেরিয়েছে। পটলা, মুসুরী ইত্যাদি চরিত্র সঙ্গ দিয়েছে টেনিদাকে।[5]
টেনিদাকে নিয়ে নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় 'পরের উপকার করিও না' নামে একটিমাত্র নাটক রচনা করেছেন। নাটকটি তার 'পরের উপকার করিও না' গল্পের নাট্যরূপ। এই নাটকে টেনিদা তার আসল নাম ভজহরি মুখোপাধ্যায় নামে উপস্থাপিত হয়েছে। নাটকের অন্যান্য চরিত্ররা তাকে টেনিদা নামে না ডেকে ভজাদা নামে সম্বোধিত করেছে।[6]
টেনিদাকে নিয়ে বাংলায় একাধিক কমিক্স তৈরি হয়েছে। অরিজিৎ দত্ত চৌধুরী এই কমিক্সগুলোতে চিত্রনাট্য ও ছবি উভয়েরই শিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন। কমিক্সগুলি প্রথমে আনন্দমেলা ও পরে এবেলায় ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছ।
এর মধ্যে কিছু কাজ আনন্দ পাবলিশার্স বই হিসবে প্রকাশ করেছে " পটলডাঙার টেনিদা" শিরোনামে।
পরবর্তীতে পারুল প্রকাশনীর তরফ থেকে আরো দুটি বই প্রকাশিত হয়েছে "টেনিদার অভিযান" শিরোনামে।
টেনিদা কাহিনী একাধিকবার চলচ্চিত্রায়িত হয়েছে। ১৯৭৮ সালে উমানাথ ভট্টাচার্য পরিচালিত চারমূর্তি সিনেমায় টেনিদার ভূমিকায় অভিনয় করেন চিন্ময় রায়। এটি নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায়ের 'চারমূর্তি' উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিত। ২০১১ সালে চারমূর্তির অভিযান কাহিনী অবলম্বনে নির্মিত হয় টেনিদা (চলচ্চিত্র)। শুভাশিষ মুখোপাধ্যায় এই ছবিটিতে টেনিদার চরিত্রে অভিনয় করেন। ভবিষ্যতে 'ঝাউ বাংলোর রহস্য' অনুসারে টেনিদার আরো একটি চলচ্চিত্র নির্মান করতে চলেছেন সায়ন্তন ঘোষাল। যার সম্ভাব্য নাম 'টেনিদা অ্যান্ড কোং', এতে টেনিদার ভূমিকায় অভিনয় করবেন কাঞ্চন মল্লিক।[7][8]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.