শীর্ষ প্রশ্ন
সময়রেখা
চ্যাট
প্রসঙ্গ
ভূত্বকীয় পাত সংস্থান তত্ত্ব
টেকটোনিক প্লেট উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
Remove ads
ভূত্বকীয় পাত সংস্থান তত্ত্ব বা ভূত্বক গঠনের পাত তত্ত্ব বা টেকটনিক প্লেট বলতে একটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্বকে নির্দেশ করা হয়, যার দ্বারা পৃথিবীর অশ্মমণ্ডলে একে অপরের দিকে চলাচল করতে সক্ষম কিছু পাতলা, অনমনীয় খণ্ড তথা পাতের সমন্বয়ে তৈরি ভূত্বক বা পৃথিবীর উপরিতলের বর্ণনা দেওয়া হয়।
![]() | এই নিবন্ধটির রচনা সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ ব্যাকরণ, রচনাশৈলী, বানান বা বর্ণনাভঙ্গিগত সমস্যা রয়েছে। |

পাতের সংজ্ঞা: সিয়াল ও সিমা সমেত পৃথিবীর মহাদেশ ও মহাসাগরীয় তলে কতগুলি অনমনীয় এবং কঠিন খণ্ড আপেক্ষিকভাবে গুরুমণ্ডলের অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের উপর চলমান । এই খণ্ডগুলিকে সাধারণভাবে টেকটনিক পাত বলা হয়।
সর্বপ্রথম ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দে জার্মান আবহবিদ আলফ্রেড ওয়েগনার প্রকাশ করেন "মহীসঞ্চারণ তত্ত্ব"[১] ,(Continental Drift Theory) যার থেকেই এই ধারণাটির জন্ম হয়। ভূত্বক গঠনের পাত সংস্থান তত্ত্ব (Plate tectonics) আধুনিক বিজ্ঞানের একটি আবিষ্কার। গবেষণার দৌলতে এটি এখন আর নিছক কোনো তত্ত্ব নয়, বরং বিজ্ঞানসম্মত একটি ঘটনা, যা পৃথিবীতে সংঘটিত ভূমিকম্পের জন্য দায়ী বলে ভূবিজ্ঞানীরা মনে করেন। বিজ্ঞানীরা এই তত্ত্বটিকে ব্যবহার করে ভূমিকম্প ছাড়াও আগ্নেয়গিরির উদগীরণ, পর্বত সৃষ্টি এবং মহাসাগর ও মহাদেশ সৃষ্টির ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন।[২]
Remove ads
ব্যুৎপত্তি
ইংরেজি পারিভাষিক নাম Tectonic plate-এর tectonic শব্দটি লাতিন ভাষা tectonicus হয়ে গ্রিক ভাষার গ্রিক: τεκτονικός ("গড়ার গুণসম্পন্ন") শব্দটি থেকে এসেছে।[৩]
আবিষ্কারের সূত্র
আলফ্রেড ওয়েগনার লক্ষ্য করেন, পৃথিবীর মানচিত্রে মহাদেশগুলোর পার্শ্বদেশ বা সীমানা বা তটরেখা একটি আরেকটির থেকে অনেক অনেক দূরে হলেও অদ্ভুতভাবে পরস্পরের সাথে মিলে যায়। তা দেখেই তিনি তার তত্ত্বটি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ব্যাখ্যা দেন যে, বহুকাল আগে সবগুলো মহাদেশ মিলে একত্রে একটি অতিমহাদেশ তৈরি হয়েছিল, প্যানজিয়া নামে পরিচিতি পায়। কালের আবর্তে এটি ভূত্বকীয় পাতগুলির নড়াচড়ায় আলাদা আলাদা মহাদেশে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই তত্ত্বটিকে বলা হয় মহীসঞ্চারণ তত্ত্ব (Continental Drift Theory)। তিনি তার তত্ত্বের সমর্থনে মাদাগাস্কার দ্বীপ ও ভারতে প্রাপ্ত ফসিলের সাদৃশ্য দেখান।[১] তার এই তত্ত্বটির উপর ভিত্তি করে বিজ্ঞানীরা পরবর্তীতে বিভিন্ন গবেষণা ও তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দের দিকে প্রতিষ্ঠিত করেন আধুনিকতম তত্ত্ব নব-বৈশ্বিক ভূত্বকীয় পাত, যা সাধারণ্যের কাছে ভূত্বকীয় পাত (টেকটনিক প্লেট) হিসেবে সমধিক পরিচিত।[২]
Remove ads
বিবরণ
ভূত্বকীয় পাত মূলত পৃথিবীর অভ্যন্তরের গলিত অংশটির সবচেয়ে বাইরের আবরণ, যা আসলে পাথরের একটি স্তর, যার উপরে পৃথিবীর উপরস্থ সবকিছু অবস্থান করছে।[২]
ভূত্বকীয় পাতসমূহের সীমানার ধরন



তিন ধরনের ভূত্বকীয় পাত সীমানা লক্ষ্য করা যায়। সেগুলো হলঃ
- পরিবর্তক সীমা: দুটি ভূত্বকীয় পাত যখন সমান্তরাল ভাবে একে অন্যের বিপরীতে সরতে থাকে, তখন তাদের মধ্যবর্তী স্থানকে পরিবর্তক সীমা (Transform boundaries) বলা হয়ে থাকে। এই ক্ষেত্রে ভূত্বকীয় পাত সৃষ্টি বা ধ্বংস হয়না, তাই এদের সংরক্ষণশীল ভূত্বকীয় পাতসীমাও বলা হয়।
- বিমুখগামী সীমা: এই ক্ষেত্রে ভূত্বকীয় পাতে ফাটল ধরে এবং এরপর তারা পরস্পরের বিপরীতমুখী ভাবে অগ্রসর হতে থাকে। একে গঠনমূলক ভূত্বকীয় পাতসীমাও বলা হয়, কারণ এর ফলে নতুন ভূত্বকীয় পাতের উদ্ভব হয়।
- অভিসারমুখী সীমা: এই ক্ষেত্রে একাধিক টেকটনিক পাত পরস্পরগামী থাকে এবং একসময় সম্মিলিত হয়ে যায়। সাধারণত এইসকল ক্ষেত্রে পর্বতমালার সৃষ্টি হয়। একাধিক টেকটনিক পাত সম্মিলিত হয়ে একটাতে রুপান্তরিত হয় বলে একে বিধ্বংসীমূলক টেকটনিক সীমাও বলা হয়।
Remove ads
ভূত্বকীয় পাতসমূহ
পৃথিবীতে নিচের ভূত্বকীয় পাতসমূহ শনাক্ত করা হয়েছে।
প্রধান পাতসমূহ
সংজ্ঞাগত দিক দিয়ে এদের মধ্যে প্রধান ভূত্বকীয় পাত মোটামুটি ৬টি:
- আফ্রিকান পাত
- অ্যান্টার্কটিকা পাত
- ইন্দো-অস্ট্রেলীয় পাত
- ভারতীয় পাত
- অস্ট্রেলীয় পাত
- ইউরেশীয় পাত
- আমেরিকান পাত
অপ্রধান ভূত্বকীয় পাতসমূহ
ডজনখানেক অপ্রধান পাত থাকলেও মোটামুটি ৭টি হলো:
- আরবীয় পাত
- ক্যারিবীয় পাত
- হুয়ান দে ফুকা পাত
- কোকাস পাত
- নাজকা পাত
- ফিলিপিনীয় পাত
- স্কোশিয়া পাত
Remove ads
অন্যান্য জ্যোতিষ্কের ভূত্বকীয় পাত
ভূত্বকীয় পাত তত্ত্ব যদিও পৃথিবীকে ঘিরে শুরু হয়েছিল এবং পৃথিবীকেন্দ্রীকই আছে, কিন্তু বিজ্ঞানের আধুনিক গবেষণা অনুযায়ী ভূত্বকীয় পাত শুধু পৃথিবীতেই সীমাবদ্ধ নয়, এই তত্ত্ব অন্যান্য অনেক জ্যোতিষ্ক বা মহাকাশীয় বস্তুতে প্রযোজ্য। আমাদের সৌরজগতের শুক্র গ্রহ, মঙ্গল গ্রহ ছাড়াও বৃহস্পতি গ্রহের উপগ্রহসমূহে, শনি গ্রহের উপগ্রহ টাইটানে ভূত্বকীয় পাত অস্তিত্ব দেখা যায়। এছাড়াও আমাদের সৌরজগতের বাইরের অন্যান্য জ্যোতিষ্ককে ঘিরে আবর্তিত পৃথিবীসদৃশ মহাকাশীয় বস্তুতেও, বিশেষ করে যেসকল মহাকাশীয় বস্তুতে পানির বিশাল উৎস বা সমুদ্র রয়েছে, সেগুলোতে ভূত্বকীয় পাতের অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন।[৩]
Remove ads
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Remove ads