Loading AI tools
সুয়েডীয় ফুটবল খেলোয়াড় উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ (বসনীয়: [zlǎtan ibraxǐːmoʋitɕ]; জন্ম ৩ অক্টোবর ১৯৮১) হলেন একজন সুইডিশ পেশাদার ফুটবল খেলোয়াড় যিনি স্ট্রাইকার হিসেবে ইতালির ফুটবলের শীর্ষ স্তর সেরিয়ে আ ক্লাব এসি মিলান এবং সুইডেন জাতীয় দলের হয়ে খেলেন। ইব্রাহিমোভিচ তার ক্যারিয়ার শুরু করেন ১৯৯০ সালের পরবর্তী সময়ে মালমো এফ এফ ক্লাবের হয়ে রোনাল্ড অ্যান্ডারসনের তত্ত্বাবধানে। আয়াক্স তাকে সই করায় এবং রোনাল্ড কোইম্যানের তত্ত্বাবধানে তার অনেক খ্যাতি হয়। পরে তিনি জুভেন্টাসে সই করেন ১৬ মিলিয়ন ইউরোর বদলে। ইব্রাহিমোভিচ খ্যাতি অর্জন করেন সিরি এ তে খেলে, দাভিদ ত্রেজেগের সাথে তার স্ট্রাইকিং পার্টনারশিপের মাধ্যমে।
ব্যক্তিগত তথ্য | |||
---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচ[1] | ||
জন্ম | ৩ অক্টোবর ১৯৮১ | ||
জন্ম স্থান | মালমো, সুইডেন | ||
উচ্চতা | ১.৯৫ মিটার[2] | ||
মাঠে অবস্থান | স্ট্রাইকার | ||
ক্লাবের তথ্য | |||
বর্তমান দল | এসি মিলান | ||
জার্সি নম্বর | ১১ | ||
যুব পর্যায় | |||
১৯৮৯–১৯৯১ | এফ সি রোসেনগার্ড | ||
১৯৯১–১৯৯৫ | এফ বি কে বালকান | ||
১৯৯৫–১৯৯৯ | মালমো এফ এফ | ||
জ্যেষ্ঠ পর্যায়* | |||
বছর | দল | ম্যাচ | (গোল) |
১৯৯৯–২০০১ | মালমো এফ এফ | ৪০ | (১৬) |
২০০১–২০০৪ | আয়াক্স | ৭৪ | (৩৫) |
২০০৪–২০০৬ | জুভেন্টাস | ৭০ | (২৩) |
২০০৬–২০০৯ | ইন্টার মিলান | ৮৮ | (৫৭) |
২০০৯–২০১০ | বার্সেলোনা | ২৯ | (১৬) |
২০১০–২০১১ | → এসি মিলান (ধার) | ২৯ | (১৪) |
২০১১–২০১২ | এসি মিলান | ৩২ | (২৮) |
২০১২–২০১৬ | প্যারিস সেইন্ট-জার্মেইন | ৬২ | (৫৫) |
২০১৬–২০১৭ | ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড | ৩৪ | (২৯) |
২০১৭–২০১৯ | এলএ গ্যালাক্সি | ৫৬ | (৫২) |
২০২০– | এসি মিলান | ৬০ | (৩৩) |
জাতীয় দল‡ | |||
২০০১ | সুইডেন অনুর্ধ্ব-২১ | ৭ | (৬) |
২০০১– | সুইডেন | ১২১ | (৬২) |
* কেবল ঘরোয়া লিগে ক্লাবের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা গণনা করা হয়েছে এবং ১৬:৪৪, ২৪ মে ২০২২ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সকল তথ্য সঠিক। ‡ জাতীয় দলের হয়ে ম্যাচ ও গোলসংখ্যা ২১:৪১, ২৯ মার্চ ২০২২ (ইউটিসি) তারিখ অনুযায়ী সঠিক। |
২০০৬ সালে তিনি ইন্টার মিলানে সই করেন খেলবার জন্য এবং সেখানে থাকতে থাকতেই তিনি অর্জন করেছেন অনেক খেতাব। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য খেতাবগুলো হল ইতালীয় "অস্কার দেল ক্যালসিও" এবং সুইডিশ "গাল্ডবোলেন" এবং সুইডেন উয়েফা ২০০৮ এবং ২০০৯ এ বছরের শ্রেষ্ঠ দল হিসেবে ভূষিত হয়েছিল। এর সাথেও ২০০৮ এবং ২০০৯ সালে লিগের সবচেয়ে বেশি গোলদাতা হিসেবে ভূষিত হয়েছিলেন। এরপর ২০০৯ এর গ্রীষ্মকালে তিনি বার্সেলোনাতে পরিবর্তিত হন এবং সেখানে খেলা শুরু করেন। তার সময় বার্সেলোনাতে খুবই কম ছিল। এরপরেই ওই মরসুমের শেষে তিনি এ সি মিলানে চলে আসেন। তাকে এ সি মিলান বার্সেলোনা থেকে সবচেয়ে বেশি দাম দিয়ে নিয়ে আসে। ওই মরসুমে তিনি ছিলেন সবথেকে বেশি দামি খেলোয়াড়।[3] তিনি ২৪ মিলিয়ন ডলার দিয়ে এসি মিলানে আসেন। জুলাই ২০১২ তে তিনি পারি সাঁ-জের্মাঁ ফুটবল ক্লাবের সাথে তিন বছরের চুক্তি করেন।
তার খেলার ধরনকে বিখ্যাত ডাচ প্লেয়ার মার্কো ফন বাস্তেনের সাথে তুলনা করা হয়। এবং ইভ্রাহিমোভিচকে তার সময়ের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে গণ্য করা হয়।[4][5][6][7] ২০১৩ তে সুইডেনের হয়ে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তার দর্শনীয় বাইসাইকেল কিক তাকে বিখ্যাত ফিফা পুস্কাস খেতাব এনে দেয় এবং তার এই গোল বছরের সেরা গোলের শিরোপা পায়।[8] ২০১৩ তে দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার মাধ্যমে তিনি পৃথিবীর তৃতীয় শ্রেষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে পরিচিত হন।[9]
ইভ্রাহিমোভিচ মুসলিম পরিবারে সুইডেনে এক বোসনিয়ান বাবা শেফিক ইভ্রাহিমোভিচ এবং এক ক্রোটস মা জুর্কা গ্রাভিকের কাছে জন্মগ্রহণ করেন।[10] তার বাবা জন্মগ্রহণ করেন বিজেলজিনাতে এবং তার মা জন্মগ্রহণ করেন পর্কস নামে এক গ্রামে জেডার কান্ট্রিতে।[11] তাদের ছয়জন বাচ্ছার মধ্যে ইভ্রাহিমোভিচ বড় হন সুইডেনের রোসেনগার্ড নামক এক শহরে।
একজোড়া ফুটবল বুট পাওয়ার পরে ইভ্রাহিমোভিচ ফুটবল খেলা শুরু করেন মাত্র ৬ বছর বয়সে। তিনি প্রথম জীবনে খেলেছেন দুটো স্থানীয় ক্লাব এফ সি রোসেনগার্ড এবং এফ বি কে বালকান এর হয়ে।[12][13] তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন যে যখন তার দল বালকান হাফ টাইমের পরে ৪-০ গোলে হারছিল তখন তিনি নামেন বিকল্প হিসেবে মাঠে নামেন হাফ টাইমের পরে এবং তিনি ৮ গোল করে বালকানকে জেতান। তার যৌবনে তিনি তার নিজের শহরের ক্লাব মালমো এফ এফের জন্য নিয়মিত খেলতেন।[13] ১৫ বছর বয়স নাগাদ ইভ্রাহিমোভিচ ফুটবল খেলা ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন মালমোতে ডকে চাকরি পাওয়ার পরে, কিন্তু তার ম্যানেজার তাকে ফুটবল ছাড়তে বাধা দেন এবং তাকে তার খেলা আরও এগিয়ে নিয়ে জেতে বলেন।[14] ইভ্রাহিমোভিচ সফল ভাবে নবম শ্রেণীতে সম্পন্ন করেন স্কুলজীবন। যদিও তিনি মালমো বোর্গারস্কোলা স্কুলে ভর্তি হন উচ্চতর শিক্ষার জন্য কিন্তু তিনি কিছুদিন পরেই স্কুলজীবন থেকে বেরিয়ে আসেন ফুটবলে পুরোপুরি মনোযোগ দেবার জন্য।
ইভ্রাহিমোভিচ ১৯৯৬ সালে তার প্রথম চুক্তি করেন মালমোর সাথে এবং রাতারাতিই তিনি ১৯৯৯ সালে আলসভেন্সকান এ সিনিয়রে যোগ দেন, যা হল সুইডেনের সবচেয়ে বড় লিগ। ওই মরসুমে মালমো লিগ টেবিলে ১৩ নম্বর স্থান ধারণ করে এবং দ্বিতীয় বিভাগ থেকে বেরিয়ে যায়। আর্সেন ওয়েঙ্গার তাকে আর্সেনালে যোগ দিতে বলেন কিন্তু তিনি নাকোচ করেন এবং ওই সময়েই লিও বেনহ্যাকারও তার ওপর উৎসাহ দেখান নরওয়ের মস এফ কে এর বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলবার জন্য।[15] ২২ শে মার্চ ২০০১ সালে অবশেষে মালমো এবং আয়াক্সের মধ্যে চুক্তি হয় এবং ৮.৭ ইউরোতে ইভ্রাহিমোভিচ আয়াক্স দলে চলে আসেন।
ইভ্রাহিমোভিচ কোচকো আর্দ্রিয়ান্সের অধীনে কিছুদিন খেলার সময় পান কিন্তু যখন আর্দ্রিয়ান্সের পদচ্যুতি ঘটল ২৯ শে নভেম্বর ২০০১ এ তখন তিনি তার নতূন কোচ রোনাল্ড কোয়েম্যান তাকে আয়াক্সের প্রথম একাদশে মাঠে নামান এবং সেই বছর আয়াক্স খেতাব জেতে। পরের মরসুমে ইভ্রাহিমোভিচ অলিম্পিক লিওনের বিরুদ্ধে মাঠে নামেন তার প্রথম উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এবং সেই খেলাতে তিনি ২ টো গোল করেন এবং দলকে ২-১ গোলে জেতান, ১৭ ই সেপ্টেম্বর ২০০২ সালে। তিনি সেই লিগে ৪ টি গোল করেন কিন্তু কোয়ার্টার ফাইনালে এ সি মিলানের কাছে আয়াক্স হার মানে এবং লিগ থেকে ছিটকে যায়। আয়াক্সের হয়ে শেষ মরসুমে খেলবার সময় ইভ্রাহিমোভিচ এন এ সি ব্রেদার বিরুদ্ধে একটি অসাধারণ গোল করেন ২২শে আগস্ট ২০০৪ সালে, যেই গোলকে ইউরোস্পোর্টসের দর্শকরা "বছরের সেরা গোল" আখ্যায় ভূষিত করেন।[16] ২০০৩-২০০৪ মরসুমে তিনি একটিই মাত্র গোল করেছিলেন সেল্টা দ্য ভিগোর বিরুদ্ধে এবং সেই মরসুমে আয়াক্স গ্রুপ পর্যায়েই লিগ থেকে বাদ হয়ে যায়।
২০০৪ সালের ১৮ ই আগস্ট মাসে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে একটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে গিয়ে তিনি আয়াক্সে তার টিমমেট রাফায়েল ভ্যান ডার ভার্ট কে আহত করে ফেলেন, যেটা নিয়ে পরে জল্পনা ওঠে যে তিনি নাকি ইচ্ছে করেই তার টিম সতীর্থকে আহত করেন এবং যার ফলেই আয়াক্স তাকে জুভেন্টাসের কাছে তাকে বিক্রি করে দেয় ৩১ শে আগস্টে। মে ২০১২ তে রাফায়েল ভ্যান ডার ভার্ট এই ঘটনার তিক্ত শত্রুতা মেটায় যখন তিনি একটি ফোটো শুট করেন যে তিনি ইভ্রাহিমোভিচের মুখে গলফের বল মারছেন।[17]
২০০৪ সালে ১৬ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে আয়াক্স ছেড়ে ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসে যোগ দেন।[18] দলের শীর্ষ স্কোরার ডেভিড ট্রেজেগুয়েটের চোটজনিত সমস্যাজনিত কারণে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে প্রাথমিক একাদশে জায়গা করে নিয়েছিলেন এবং ১৬টি গোল করেছিলেন। ২০০৪ মৌসুমে শেষের দিকে, জুভেন্টাস রিয়াল মাদ্রিদ থেকে তাঁর জন্য ৭০ মিলিয়ন ইউরো প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে, যা পরে প্রচার হয়েছিল যে তার বাজার মূল্য বাড়ানোর জন্য ইব্রাহিমোভিয়ের এজেন্ট মিনো রাইওলা দ্বারা প্রচারিত স্টান্ট ছিল। ইতালিতে তার প্রথম মৌসুমের শেষে ইব্রাহিমোভিচকে সেরিয়ে আর বর্ষসেরা বিদেশী ফুটবলার হিসাবে মনোনীত করা হয় এবং ২০০৫ সালের নভেম্বরে তাকে '' গুলডবোলেন '' পুরস্কার দেওয়া হয়, যা বছরের সেরা সুইডিশ ফুটবলারকে দেওয়া হয়।[19][20] পরবর্তী মৌসুম তার প্রথম মৌসুমের তুলনায় খুব খারাপ ছিল; জুভেন্টাসের আক্রমণে তার ভূমিকা পাল্টে যায়, কারণ তার গোলের সংখ্যা কমে যায় এবং আরও বেশি করে সাইডলাইনে স্থান হোন, বিশেষত একজন টার্গেট প্লেয়ার হিসাবে বিল্ড-আপ খেলায় বেশি অংশ নিয়েছিলেন এবং তাঁর এসিস্টের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছিল। নতুন ম্যানেজমেন্ট ইব্রাহিমোভিচ এবং অন্যান্য শীর্ষ খেলোয়াড়দের জুভেন্টাসের সাথে থাকার জন্য রাজি করানোর চেষ্টা করেছিল, কিন্তু খেলোয়াড় এবং তার এজেন্ট অন্য ক্লাবে যাওয়ার ব্যাপারে অনড় ছিল।[21]
২০০৬ সালের ১০ আগস্ট ইব্রাহিমোভিচ চার বছরের চুক্তিতে ২৪ মিলিয়ন ইউরো দামে ইন্টার মিলানে যোগ দেন।[22] যোগ দেয়ার পরই ইব্রাহিমোভিচ বলেছিলেন যে শৈশব হতেই তিনি ইন্টার মিলানের একজন ভক্ত ছিলেন।[23]
ইব্রাহিমোভিচ ২৬ আগস্ট ২০০৬ সালে রোমার বিপক্ষে ২০০৬ সালের সুপারকপ্পা ইটালিয়ানাতে ইন্টারের হয়ে অভিষেক ঘটে, অতিরিক্ত সময়ের পরে ইন্টার জিতলে পুরো ৯০ মিনিট খেলেন।[24] ১৯ সেপ্টেম্বর ফিওরেন্তিনার বিপক্ষে ৩-২ ব্যবধানে জয়ে তাঁর সেরিয়ে আর অভিষেক গোল করেন।
ইব্রাহিমোভিচ তার ১০০তম সেরিয়ে আ ম্যাচটি ১ সেপ্টেম্বর ২০০৭ সান সিরোতে কাতানিয়ার বিপক্ষে খেলেছিলেন, যেখানে তিনি এর্নান ক্রেসপোর দ্বিতীয়ার্ধের বিকল্প হিসাবে মাঠে নামেন এবং ২-০ ব্যবধানে জয় পান।[25] সব মিলিয়ে ২৬ টি লিগ ম্যাচে তিনি ১৭টি গোল করেন এবং সেরিয়ে আর বর্ষসেরা খেলোয়াড় এবং বর্ষসেরা বিদেশী ফুটবলার উভয়ই নির্বাচিত হোন।
ইব্রাহিমোভিচ ২০০৯ সেরিয়ে আ মৌসুমে লিগের শীর্ষ গোলদাতা হিসাবে ২৫ গোল করে ইন্টারকে আরো একটি লিগ শিরোপা জিতিয়েছিলেন।[26]
২৩ শে জুলাই ২০০৯-এ ইব্রাহিমোভিচ ইন্টার মিলান ছেড়ে ৫৯ মিলিয়ন ইউরো ট্রান্সফার ফিতে বার্সেলোনায় যোগ দেন।
ইব্রাহিমোভিচের বার্সেলোনার হয়ে ২৩ আগস্ট ২০০৯ এ অভিষেক ঘটে। অভিষেক ম্যাচে অ্যাথলেটিক বিলবাওকে ২-১ গোলে পরাজিত করে স্প্যানিশ সুপার কাপ শিরোপা জিতেন, খেলায় তার এসিস্টে লিওনেল মেসি গোল করেন। ২০ অক্টোবর ২০০৯ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে রুবিন কাজানের বিপক্ষে বার্সেলোনার হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্রথম গোলটি করেন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.