Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
পিএসি জেএফ-১৭ থান্ডার (উর্দু: جے ایف-١٧ گرج), বা সিএসি এফসি-১ জিয়াওলং (চীনা: 枭龙; ফিনিন: Xiāo Lóng; আক্ষরিক: "ভয়ংকর ড্রাগন"), হলো একটি হালকা এক ইঞ্জিন বিশিষ্ট মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান। পাকিস্তান এরোনেটিকাল কমপ্লেক্স এবং চীনের চেংদু এয়ারক্রাফট ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপ (সিএসি) একত্রে এই যুদ্ধবিমানটি নকশা ও প্রস্তুত করেছে। জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানটি আকাশ হতে জরিপ বা নিরীক্ষা, স্থল আক্রমণ এবং শত্রু বিমানের আক্রমণ প্রতিহত করার মতো বহুবিধ কাজে ব্যবহার উপযোগী। পাকিস্তান এই যুদ্ধবিমানটির নামকরণ করেছে জেএফ-১৭, যার অর্থ জয়েন্ট ফাইটার-১৭, অপরদিকে চীন এর নামকরণ করেছে এফসি-১ জিয়াওলং, যার অর্থ ফাইটার চায়না-১ ভয়ংকর ড্রাগন।
এই নিবন্ধটি অন্য একটি ভাষা থেকে আনাড়িভাবে অনুবাদ করা হয়েছে। এটি কোনও কম্পিউটার কর্তৃক অথবা দ্বিভাষিক দক্ষতাহীন কোনো অনুবাদক কর্তৃক অনূদিত হয়ে থাকতে পারে। |
এই নিবন্ধটির রচনা সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে। কারণ ব্যাকরণ, রচনাশৈলী, বানান বা বর্ণনাভঙ্গিগত সমস্যা রয়েছে। |
জেএফ-১৭ থান্ডার | |
---|---|
ভূমিকা | মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান |
উৎস দেশ | চীন / পাকিস্তান |
নির্মাতা | ছেংতু এয়ারক্রাফট ইন্ডাস্ট্রি গ্রুপ/ পাকিস্তান এরোনেটিকাল কমপ্লেক্স |
প্রথম উড্ডয়ন | ২৫ আগস্ট ২০০৩ |
প্রবর্তন | ১২ মার্চ ২০০৭ |
অবস্থা | সেবা দান করছে |
মুখ্য ব্যবহারকারী | পাকিস্তান বিমান বাহিনী
মিয়ানমার বিমান বাহিনী নাইজেরিয়া বিমান বাহিনী |
নির্মিত হচ্ছে | চীনে: জুন ২০০৭ – বর্তমান পাকিস্তানে: জানুয়ারি ২০০৮ – বর্তমান |
নির্মিত সংখ্যা | ১৪৭+[1] |
কর্মসূচির খরচ | 500 million US$ |
ইউনিট খরচ | ব্লক ১: ১৫ থেকে ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (এভয়নিক্স ভেদে) ব্লক ২: ২৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্লক ৩: ৩২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রকল্পিত) |
যা হতে উদ্ভূত | প্রজেক্ট সাবের ২ সুপার-৭ |
রূপভেদ | জেএফ-১৭এ ব্লক-১ জেএফ-১৭এ ব্লক-২ জেএফ-১৭বি ব্লক-২ (২-সিটার) জেএফ-১৭সি ব্লক-৩ এফসি-১ রুবি (মায়ানমার) |
আশির দশকে পাকিস্তান ভবিষ্যতে তাদের ৩য় প্রজন্মের যুদ্ধবিমান গুলোকে রিপ্লেস করার জন্য নিজেদের প্রয়োজন অনুজায়ী একটি আধুনিক মাল্টিরোল ফাইটারজেট নির্মানের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। তাদের লক্ষ ছিলো এফ-৭ এর ডিজাইনের উপর ভিত্তি করে কম খরচের ভেতর একক ইঞ্জিনের একটি বহুবিদ লাইট ফাইটার তৈরি করা, যা হবে মার্কিন এফ-১৬ এর সমতুল্য কিন্তু দাম হবে তুলনামূলক সস্তা।
এই লক্ষে ১৯৮৮ সালে পাকিস্তান মার্কিন এারোনটিক্যাল কম্পানী 'গ্রামেন এ্যারোস্পেস কর্পোরেশনের' সাথে যৌথ ভাবে একটি ফাইটার নির্মানের লক্ষে প্রজেক্ট সাবের ২ নামক প্রজেক্ট শুরু করে। যেহেতু এই প্রজেক্টে এফ-৭ এর উপর ভিত্তি করে ফাইটার নির্মানের পরিকল্পনা করা হয়, তাই প্রজেক্ট স্যাবর-২ এর অধীনে যেই ফাইটারটি নির্মান করা হবে, তাই এর নাম এফ-৭ অনুরুপে রাখা হয় সুপার-৭। কিছুদিন পর এই স্যাবর-২ প্রজেক্টে চীনও এসে যুক্ত হয়। চুক্তি অনুজায়ী স্যাবর-২ কে চীন এবং পাকিস্তানের রিকোয়ার্ডমেন্ট অনুজায়ী বানানো হবে। ফাইটারটির সমস্ত ইকুয়েপমেন্ট, এভয়নিক্স হবে আমেরিকান, তবে ম্যাস প্রোডাকশন করা হবে চীন এবং পাকিস্তানে।
চাইনিজ, পাকিস্তানি এবং গ্রামেন কম্পানীর টেকনিশিয়ানরা এফ-৭ এয়ারফ্রেমের ডিজাইনকে বেইস করে সুপার-৭-কে ডিজাইন করা শুরু করে। কিন্তু ১৯৯০ সালে আফগান ইস্যু এবং পাকিস্তানের পরমাণু গবেষণার অযুহাতে আমেরিকা পাকিস্তানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। যার কারণে পাকিস্তানের পক্ষে মার্কিন গ্রামেন কম্পানীর সাথে প্রজেক্টটি চালিয়ে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে ১৯৯০ সালের শুরুর দিকে পাকিস্তান স্যাবর-২ প্রজেক্ট থেকে বেরিয়ে যায়।
পাকিস্তান বেরিয়ে যাবার পর চীন এবং গ্রামেন কম্পানী স্যাবর-২ প্রজেক্টটি আরো কিছুদিন চালিয়ে যায়। কিন্তু ১৯৮৯ সালে চীনের তিয়ানানমেন স্কয়ারের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে বড় ধরনের রাজনৈতিক ইস্যু সৃষ্টি হলে ১৯৯০ সালের শেষের দিকে আমেরিকা চীনের উপরেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। নিষেধাজ্ঞার ফলে চীনের পক্ষেও গ্রামেন কম্পানীর সাথে 'স্যাবর-২' প্রজেক্টে কাজ করা অসম্ভব হয়ে পরে। ফলে চীন, পাকিস্তান উভয় পার্টনার চলে যাওয়ায় 'স্যাবর-২' প্রজেক্ট পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। তবে গ্রামেনের সাথের 'স্যাবর-২' প্রজেক্ট বাতিল হয়ে গেলেও ওই প্রজেক্ট থেকে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করে চীন বিমানটি নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যেতে থাকে। সেই সাথে ফাইটারের নাম অনুজায়ী প্রজেক্টের নামই রেখে দেয় 'সুপার-৭'।
১৯৮৮ সালে চীন 'প্রজেক্ট-১০' নামক আরেকটি ফাইটার প্রজেক্ট শুরু করছিলো। 'প্রজেক্ট ১০' এর আওতায় পরবর্তীতে জে-১০ সিরিজের ফাইটারগুলো তৈরি করে। অপরদিকে 'সুপার-৭' প্রজেক্টের আওতায় তৈরি হয় জেএফ-১৭ সিরিজের ফাইটারগুলো।
১৯৯৫ সালে জয়েন্টলি ডিজাইন এন্ড ডেভলাপমেন্টের চুক্তিতে পাকিস্তান 'সুপার-৭' প্রজেক্টে যোগ দেয়। চুক্তি অনুজায়ী চীন-পাকিস্তান উভয় দেশের ইঞ্জিনিয়ারগন ফাইটারটিকে ডেভলাপ করবে এবং পাকিস্তান ফাইটারটির জন্য ইউরোপিয় কান্ট্রি থেকে এভয়নিক্স, সাব-সিস্টেম সংগ্রহ করবে। প্রজেক্টের ৫৮% শেয়ারের মালিক হবে পাকিস্তান, বাকি ৪২% শেয়ারের মালিক হবে চীন। প্রজেক্টটির ব্যায়ভার নির্ধারন করা হয় ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
একই বছর রাশিয়ার বিখ্যাত 'মিকোয়ান এয়ারক্রাফট কর্পোরেশন (মিগ)' সুপার-৭ প্রজেক্টের ডিজাইন সাপোর্টার হিসেবে জয়েন করে। মিকোয়ানের ইঞ্জিনিয়ারগন চীন-পাকিস্তানকে রাশিয়ান 'মিগ-৩৩' ফাইটারের ডিজাইনটি ক্রয় করার অফার করে। মিগ-৩৩ ছিলো সোভিয়েত আমলে মিকোয়ান ডিজাইন ব্যুরোর ডিজাইনকৃত একটি সিঙ্গেল ইঞ্জিন ফাইটার। আমেরিকান এফ-১৬ কে কাউন্টারের জন্য সোভিয়েতরা একে ডিজাইন করেছিলো। তবে রাশিয়ান জেনারেলরা সিঙ্গেল ইঞ্জিনের চেয়ে ডবল ইঞ্জিন ফাইটারকেই বেশি প্রাধান্য দিতো। যার কারণে মিগ-৩৩ ম্যাস প্রোডাকশনে যেতে পারেনি। পরবর্তিতে 'সুপার-৭' প্রজেক্টকে ডেভলাপ করতে চীন-পাকিস্তান মিগ-৩৩ এর ডিজাইনটি কিনে নেয় এবং আগের ডিজাইনগুলোর সাথে কো-অর্ডিনেট করে ফাইটারটিকে ডেভলাপ করতে থাকে।
১৯৯৫ সালে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হলেও ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত সুপার-৭ প্রজেক্টের সমস্ত কার্যক্রম কথা-বার্তা আর কাগজে-কলমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। ১৯৯৯ সালের দিকে প্রজেক্টটি প্রায় বন্ধই হয়ে যেতে বসেছিলো, কারণ পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এই প্রজেক্টে নিযুক্ত চীফ প্রজেক্ট ডিরেক্টরের মনে হয়েছিলো চীনারা এই ফাইটারটিকে ডেভলাপ করতে পারবেনা। ফলে প্রজেক্টটি সামনে এগুনোর পরিবর্তে পিছিয়ে যেতে শুরু করে।
২০০০ সালে সুপার-৭ প্রজেক্ট যখন প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে, তখন সুপার-৭ এর চীফ প্রজেক্ট ডিরেক্টর হিসেবে নিযুক্ত হন এয়ার মার্শাল শাহীদ লতিফ, পাক এয়ারফোর্সের সোর্ডস অফ অনার খেতাব প্রাপ্ত একজন এফ-১৬ পাইলট। তিনি ছিলেন পাক এয়ারফোর্সের প্রথম ৬ জন পাইলটের একজন, যারা ১৯৮২ সালে এফ-১৬ ফাইটারকে আমেরিকা থেকে উড়িয়ে পাকিস্তানে নিয়ে এসেছিলো।
প্রজেক্ট ডিরেক্টর হওয়ার পর তিনি সুপার-৭ প্রজেক্টের বেসিক ধারনাই পাল্টে ফেলেন। পূর্বে এই প্রজেক্টের কাজ ছিলো এফ-৭-কে আপগ্রেড করে একটি ফাইটার বানানো, কিন্তু শাহীদ লতিফ ঠিক করেন যে এয়ারফ্রেমটি এফ-৭ এর উপর বেইস করা হলেও, ফাইটারটির এভয়নিক্স এবং অপারেশন ফ্যাসেলিটি এফ-১৬ কে বেইস করে নির্মান করা হবে। তিনি নিজেই এফ-১৬ পাইলট হওয়ায়, ইঞ্জিনিয়ারদেরকে এফ-১৬ এর সুবিধা-অসুবিধা গুলো তুলে ধরে সেই অনুজায়ী ফাইটারটিকে ডেভলাপ করার নির্দেশ দিতে থাকেন। সেই সাথে ২০০৪ সালের ভেতরেই ফাইটারটি আকাশে উড়ার টাইমলাইনও বেধে দেয়া হয়।
ফাইটারটির নাম এফ-৭ থেকে আসা 'সুপার-৭' নামটিও চেঞ্জ করে ফেলেন তিনি। যেহেতু তৈরিকৃত বিমানটি হবে এফ-১৬ এরই একটি নতুন রূপ, তাই ফাইটারটির নাম এফ-১৭ রাখার প্রস্তাব দেন তিনি। চীনের পক্ষ থেকে বলা হয় এটা যেহেতু জয়েন্ট প্রজেক্ট, সেহেতু এফ-১৭ এর সাথে 'যে' যুক্ত করে যেএফ-১৭ (Joint Fighter-17) রাখা হোক। অতঃপর এই নামটিই চূড়ান্ত করা হয়। তবে প্রজেক্টের নাম 'সুপার-৭' ই থাকে। এভাবে এয়ার মার্শাল শাহীদ লতিফের নেত্রিত্বে প্রজেক্টটি আকর্শিক ভাবে বড় একটি টার্ন নিয়ে এফ-৭ কে বাদ দিয়ে এফ-১৬ কে বেইস করে এগুতে শুরু করে।
১৯৯৫ সালের চুক্তি অনুজায়ী 'সুপার-৭' প্রজেক্টের আওতায় পাকিস্তান ১৯৯৫ সালের অক্টোবরে ফাইটারটির জন্য বিভিন্ন ধরনের এভয়নিক্স, সাব-সিস্টেম ক্রয়ের টেন্ডার ছাড়ে। সেসব ইকুয়েপমেন্টের ভেতর ছিলো রাডার, ইন্টার্নাল নেভিগেশন সিস্টেম, হেড আপ ডিসপ্লে, মাল্টিফাংশন্যাল ডিসপ্লে ইত্যাদি। উক্ত টেন্ডারে ফ্রান্সের থ্যালাস কম্পানী পাকিস্তানকে অফার করে আরডিওই-৩ রাডার, ব্রিটিশ ম্যারকনী কম্পানী অফার করে ব্লু হক রাডার, আর ইতালিয়ান ফ্লেয়ার কম্পানী অফার করে গ্রিফো এস৭ রাডার। এছাড়া এই কম্পানীগুলো ছাড়াও অন্যান্য আরো বিভিন্ন কম্পানী টেন্ডারের আওতায় থাকা অন্যান্য এভয়নিক্স, সাবসিস্টেমগুলোও অফার করে। এছাড়া সাউথ আফ্রিকান কম্পানী 'ডেনেল' অফার করে টি-ডারটার বিভিআর ক্ষেপণাস্ত্র।
শেষ পর্যন্ত যেএফ-১৭ এর জন্য ইতালিয়ান গ্রিফো এস৭ রাডারটি সিলেক্ট করে পাকিস্তান। একই সাথে আরো বিভিন্ন ইউরোপিয় ইকুয়েপমেন্টও সিলেক্ট করা হয়।
কিন্তু ১৯৯৮ সালে পাকিস্তান প্রথমবারের মত নিউক্লিয়ার বোমার পরিক্ষামূলক বিষ্ফোরন ঘটার। যার কারণে আমেরিকা পুনরায় পাকিস্তানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে । ফলে ইউরোপ-আমেরিকা থেকে 'সুপার-৭' প্রজেক্টের ইকুইপমেন্ট গুলো ক্রয়ের পদক্ষেপ ২-৩ বছরের জন্য পিছিয়ে যায়। সেই সাথে বেশ কিছু ইকুইপমেন্ট ক্রয়ের চুক্তিও ভেঙে যায়। ফলে জেএফ-১৭-কে পুরোপুরি ইউরোপ-আমেরিকান টেকনোলজি দ্বারা তৈরির পরিকল্পনাটি ভেঙে যায়।
তখন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, নিষেধাজ্ঞার কারণে যেসব ইউরোপিয় ইকুইপমেন্ট ক্রয় করা যাচ্ছেনা, সেগুলোর ক্ষেত্রে চাইনীজ এবং রাশিয়ান ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা হবে। তবে ২ বছর পর ২০০০ সালে আমেরিকা পাকিস্তানের উপর থেকে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়, তখন পাকিস্তান পুনোরায় ইউরোপ-আমেরিকান কম্পানীগুলো থেকে ইকুইপমেন্ট কেনা শুরু করে, যার কারণে পরবর্তিতে জেএফ-১৭ তে অনেক ইউরোপিয়-আমেরিকান ইকুইপমেন্ট ব্যবহার করা সম্ভব হয়।
ওদিকে চীনের 'প্রজেক্ট-১০' এর আওতায় জে-১০ ফাইটার তৈরির কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। তখন 'সুপার-৭' প্রজেক্টের সময় এবং খরচ কমাতে জে-১০ ফাইটারের বেশিরভাগ অন-বোর্ড সিস্টেম গুলোকে জেএফ-১৭ প্রতিস্থাপন করা হয়। ফলে 'সুপার-৭' প্রজেক্ট আরো তরান্বিত হয়।
২০০৩ সালের ৩১শে মে জেএফ-১৭ এর প্রথম প্রোটোটাইপ PT-01 বিমানটি আকাশে উড়ে। পরবর্তি ২-৩ বছরে ফাইটারটিকে ক্রমান্বয়ে ডেভলাপ করে আরো ২ টি প্রটোটাইপ তৈরি এবং টেস্টিং করা হয়। এই পর্যায়ে নির্মিত প্রোটোটাইপ গুলোতে প্রায় সবই চীনা এভয়নিক্স এবং সাব সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। তবে পাকিস্তান ২০০৪ সালে ব্রিটেন, ফ্রান্স, স্পেন, ইতালী থেকে জেএফ-১৭ এর জন্য এভয়নিক্স এবং সাবসিস্টেম আমদানি করা শুরু করে এবং পরবর্তিতে নির্মিত বাকি সবগুলো ফাইটারে সেসব ইনস্টল করা হয়। ২০০৬ সালের এপ্রিলে ইউরোপিয় ইকুইপমেন্ট দ্বারা প্রস্তুৎকৃত জেএফ-১৭ এর চতুর্থ প্রোটোটাইপ পিটি-০৪ এর টেস্ট ফ্লাই সম্পন্ন হয়।
পরবর্তিতে আরো আপগ্রেড, মডিফিকেশনের মাধ্যমে নির্মিত ষষ্ঠ প্রোটোটাইপ পিটি-০৬ কে ম্যাস প্রোডাকশনের জন্য সিলেক্ট করা হয় এবং ২০০৭ সাল থেকে এর প্রোডাকশন শুরু হয়।
২০১০ সালে নতুন একটি চুক্তির আওতায় পাকিস্তান পুনরায় ইউরোপিয় দেশগুলোর থেকে আর্মামেন্ট, এভয়নিক্স, সাব-সিস্টেম ক্রয়ের আলোচনা শুরু করে। এসময় পাকিস্তান ফ্রান্সের এটিই এ্যারোস্পেস কম্পানীর সাথে ১.৩৬ বিলিয়ন ডলার ব্যায়ে ৫০ টি জেএফ-১৭ এর জন্য আর্মামেন্ট এবং এভয়নিক্স ক্রয়ের প্রাথমিক আলোচনা শুরু করে। এই প্যাকেজের মধ্যে ছিলো ফ্রান্সের তৈরি আরসি-৪০০ রাডার, এমআইসিএ, বিমান থেকে বিমানে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র সহ আরো বিভিন্ন ধরনের আর্মামেন্ট ও এভয়নিক্স। কিন্তু মাঝপথে বাধা সৃষ্টি করে ভারত। কারণ ভারত সেসময় ফ্রান্সের সাথে রাফায়েল ফাইটার ক্রয়ের আলোচনা চালাচ্ছিলো। রাফায়েল ফাইটারের চুক্তি চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে পাকিস্তানের কাছে জেএফ-১৭ এর জন্য ইকুইপমেন্ট সাপ্লাই করা বন্ধ করার জন্য ফ্রান্সের উপর চাপ সৃষ্টি করে ভারত। পাকিস্তানের ১.৩৬ বিলিয়ন ডলারের ডিলটির চেয়ে ভারতের ৫ বিলিয়নের ডিলটি বড় হওয়ায় সংগত কারণে ফ্রান্স পাকিস্তানের সাথে আলোচনাটি বাতিল করে দেয়। পাকিস্তান তখন ফ্রান্সকে বাদ দিয়ে ব্রিটেন, স্পেন, ইতালী এবং আমেরিকা থেকে ইকুইপমেন্ট ক্রয় করা শুরু করে। এর ধারাবাহিকতায় ব্রিটিশ কম্পানী মার্টিন বেকার, স্প্যানিশ কম্পানী ইন্দ্রা, ইতালীয়ান কম্পানী সেলেক্স এবং মার্কিন কোম্পানি নরথ্রপ গ্রামেনের সাথে বিভিন্ন ধরনের ইকুইপমেন্ট ক্রয়ের চুক্তি সম্পন্ন করে পাকিস্তান। পাকিস্তান উপলব্ধি করেছিলো আমেরিকা যেকোনো সময় তাদের উপর অবরোধ আরোপ করতে পারে, যার কারণে ইউরোপ থেকে কেনা ইকুইপমেন্ট গুলোর লজেস্টিক সাপ্লাই বা স্পেয়ার পার্টস সাপ্লাই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তাই তারা ইউরোপ-আমেরিকা থেকে এমন সব ইকুইপমেন্ট ক্রয় করে, যেগুলোর কোনো এক্সপেয়ার পার্টস লাগেনা, অথবা লাগলেও তা এককালীন ভাবে কিনে নিলেই চলবে। চীন এই ফাইটারটিতে চীনা ইঞ্জিন ব্যবহারের অফার করলেও পাকিস্তান তাতে রাজি হয়নি। পরে ফাইটারটিতে রাশিয়ান আরডি-৯৩ ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়। এছাড়া জেএফ-১৭ থান্ডারে ব্যবহৃত হয়েছে ব্রিনেটের বিখ্যাত মার্টিন বেকার কম্পানীর তৈরি পিকে-১৬এলই ইজেক্সন সিট। মার্টিন বেকার হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ইজেক্সন সিট নির্মানকারী কম্পানী। তাদের তৈরি সিটগুলো এপর্যন্ত ৪ হাজার পাইলটের জীবন বাঁচিয়েছে। এফ-৩৫, ইউরোফাইটার টাইফুন থেকে শুরু করে অনেক উন্নত ফাইটারে এই সিরিজের ইজেক্সন সিটগুলো ব্যবহৃত হয়।
এছাড়া পাকিস্তান তাদের এফ-১৬ ফাইটারের জন্য কেনা আমেরিকান সমরাস্ত্র গুলোকেও জেএফ-১৭ তে ব্যবহারের উপযোগী করে ডিজাইন করেছে।
আমেরিকান সমরাস্ত্র ছাড়াও জেএফ-১৭ থান্ডারে অন্যান্য দেশের কিছু সমরাস্ত্র ব্যবহৃত হয়, যেমন:
তবে এসব আর্মামেন্টের বিকল্প হিসেবে একই বিষয়শ্রেণী চাইনীজ আর্মামেন্টও বাবহৃত হয়। কোনো কারণে পশ্চিমা আর্মামেন্টের সাপ্লাই বন্ধ হলেও যাতে কোনো সমস্যা না হয়।
গান : 1× 23 mm GSh-23-2 ডবল ব্যারেল ক্যানন।
১টি 800 লিটার ট্যাংক ফুজিলাসের নিচে। এবং ২টি 1100 লিটার ট্যাংক উইংয়ে
অনবোর্ড এভয়নিক্স
এক্সটার্নাল মাউন্টেড এভয়নিক্স পড:
JF-17 এর স্মার্ট হেড-আপ ডিসপ্লে
➧ককপিট ভয়েস রিকগনিশন
➧ইন-ফ্লাইট এয়ার রিফুয়েলিং ক্যাপাসিটি
➧স্যাটেলাইট বেইসড নেভিগেশন সিস্টেম
➧ GPS গাইডেড ইন্টার্নাল নেভিগেশন সিস্টেম
➧ডিজিটাল ফ্লাইট কন্ট্রোল সিস্টেম (FCS)
➧অনবোর্ড অক্সিজেন জেনারেশন সিস্টেম (OBGS)
➧আইডেন্টিফিকেশন ফ্রেন্ডস অর ফোই (IFF)
➧ থ্রি-এক্সিস ডিজিটাল ফ্লাই-বাই-অয়্যার সিস্টেম (FBW)
➧ স্মার্ট হলোগ্রাফিক হেড আপ ডিসপ্লে (SHUD)
➧ হেলমেট মাউন্টেড ডিসপ্লে সিস্টেম (HMDS)
➧ ফুল গ্লাস ককপিট
➧ লিকুইড ক্রিস্টাল মাল্টিফাংশন্যাল কালার ডিসপ্লে
➧ হ্যান্ডস অন থ্রেটল এন্ড স্টিক (HOTAS)
➧ ডুয়াল রেডুন্ডেট মিশন কম্পিউটার
➧ ডুয়াল রেডুন্ডেট 1553 Mux bus আর্কিট্যাক্চার
➧ এয়ার ডেটা কম্পিউটার
➧ রাডার অল্টিমিটার
➧ BVR কমিউনিকেশন ডাটা লিংক
➧ VHF / UHF কমিউনিকেশন সিস্টেম
➧ এয়ার কম্ব্যাক্ট ম্যানুভারিং ইনুস্ট্রুমেন্ট (ACMI)
➧ এ্যানভানোমেন্ট কন্ট্রোল সিস্টেম (AC)
➧ ডে-নাইট অল ওয়েদার অপারেশন ক্যাপাবিলিটি
কাশ্মীরের আকাশে পাক এয়ারফোর্সের JF-17
প্যারিস এয়ারশো তে JF-17
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.