Loading AI tools
আধা-সামরিক বাহিনী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
জাতীয় রক্ষীবাহিনী একটি নিয়মিত আধা-সামরিক বাহিনী যা নবপ্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে রক্ষীবাহিনী আইন, ১৯৭২ দ্বারা গঠন করা হয়।[2] শুরুতে মুজিব বাহিনী ও কাদেরিয়া বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে এই বাহিনীর পত্তন করা হয়। ঢাকার শেরেবাংলা নগরে এই বাহিনীর সদরদপ্তর স্থাপন করা হয়। ক্যাপ্টেন এএনএম নূরুজ্জামানকে রক্ষীবাহিনীর প্রধান করা হয়। আনুষ্ঠানিক নাম জাতীয় রক্ষীবাহিনী হলেও সাধারণত এই বাহিনীকে রক্ষীবাহিনী বা সংক্ষেপে জেআরবি (JRB) বলে অভিহিত হতো।
জাতীয় রক্ষীবাহিনী | |
---|---|
সক্রিয় | ৮ ফেব্রুয়ারি, ১৯৭২ থেকে ৯ অক্টোবর, ১৯৭৫ |
দেশ | বাংলাদেশ |
আনুগত্য | (বাংলাদেশ সরকার ) |
ধরন | আধা সামরিক বাহিনী |
ভূমিকা | বিদ্রোহ দমন, সন্ত্রাসবাদ দমন,[1] সাম্যবাদ বিরোধী, রাজনৈতিক প্রয়োগকারী |
আকার | ১৬,০০০ (১৯৭৫) |
অংশীদার | ব্রিগেডিয়ার এ এন এম নূরুজ্জামান বীর উত্তম (পরিচালক)
লেফটেনেট কর্নেল আবুল হাসান খান, উপপরিচালক (প্রশাসন) সরোয়ার হোসেন মোল্লা , উপপরিচালক (অপারেশন) আনোয়ার উল আলম, উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ) সাবিহ উদ্দিন আহমেদ, উপপরিচালক (সিগন্যাল) ব্রিগেডিয়ার এ কে এম আজিজুল ইসলাম, উপপরিচালক (জোনাল কমান্ডার, চট্টগ্রাম) লেফটেনেট কর্নেল এ এম খান (মেডিকেল) |
সদর দপ্তর | শেরেবাংলা নগর, ঢাকা |
ডাকনাম | রক্ষীবাহিনী |
পৃষ্ঠপোষক | শেখ মুজিবুর রহমান |
মাস্কট | শেখ মুজিবুর রহমানের তর্জনী |
বিযুক্ত | ৯ অক্টোবর, ১৯৭৫ |
প্রতীকসমূহ | |
পদচিহ্ন |
প্রাথমিকভাবে বিদ্রোহ দমন এবং আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য গঠিত হয়।[2] পরে এই বাহিনী রাজনৈতিক হত্যাসহ মানবাধিকার অপব্যবহারের অসংখ্য অভিযোগে যেমন[3][4][5] গুম,[6] গোলাগুলি,[7] এবং ধর্ষণের[5] সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। এটি সশস্ত্র শাখা হিসেবে দেখা যায়[8] এবং এটি শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি আনুগত্যের শপথ গ্রহণ করে।[9]
এই বাহিনীকে অনেক শিক্ষাবিদ এবং সাংবাদিক যেমন, গোলাম মুরশিদ নিন্দা করে কারণ তিনি এই বাহিনীকে গেস্টাপোর সাথে তুলনা করেছিলেন।[10] অ্যান্থনি মাসকারেনহাস বলেছিলেন যে এটার ধোঁকা নাৎসির বাদামি শার্টের ধোঁকা থেকে সামান্যই আলাদা।[11] হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে যে, জাতীয় রক্ষীবাহিনী কর্তৃক সংঘবদ্ধ সংস্থাগত সহিংসতা দায়মুক্তির সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করেছিল, যার সাহায্যে স্বাধীন বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী মানবাধিকারের অপব্যবহার অব্যাহত রেখেছে।[3] তবে আওয়ামী লীগপন্থী সমালোচকরা এই অভিযোগ নাকচ করে দেয়।[12][13]
১৯৭৫ সালে এই বাহিনী অবলুপ্ত করা হয়। অবলুপ্ত হওয়ার পর রক্ষীবাহিনীর অনেক সদস্য নিয়মিত সামরিক বাহিনীতে আত্মীকৃত হন।[14][15][16]
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে বাঙালিদের স্বাধীনতা সংগ্রাম চরম লক্ষ্যে পৌঁছায় এবং একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়। কয়েক দিন পর ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর তারিখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন বাহিনী ও ভূতপূর্ব ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস-এর সদস্যদের নিয়ে একটি জাতীয় মিলিশিয়া গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এই লক্ষ্যে একটি জাতীয় মিলিশিয়া বোর্ডও গঠন করা হয়। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী সহ রাজনৈতিক নেতারা এই বোর্ডের সদস্য ছিলেন। ১৯৭২ সালের ৬ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মিলিশিয়া বোর্ডের প্রথম সভায় বলা হয়, ‘জাতি-ধর্ম-বর্ণ ও দলমত নির্বিশেষে যারা পাকিস্তান দখলদার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিয়েছেন, তাদের সবাইকে জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনীতে নেয়া হবে।[17]’ অস্থায়ী সরকারের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে প্রত্যাবর্তনের পর ২৪ জানুয়ারি তারিখে এই ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার একটি আদেশ জারি করে। মুক্তিযোদ্ধা ও ৩ নম্বর সেক্টর কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার এ এন এম নূরুজ্জামানকে জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনীর পরিচালক নির্বাচন করা হয়।
১৯৭২ সালের ২৪ জানুয়ারি তারিখে ‘জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী’ গঠনের ব্যাপারে আট দফা নীতিমালা সম্বলিত এক সরকারি প্রেসনোট জারি করা হয়। এতে প্রস্তাবিত বাহিনীর বিষয়ে আট দফা সিদ্ধান্ত ছিল যা নিম্নরূপ[18]:
(ক) অবিলম্বে একটি জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী গঠন করা হইবে এবং তালিকাভুক্ত হউক বা না হউক, সমস্ত মুক্তিযোদ্ধাকে ইহার আওতায় আনা হইবে।
(খ) প্রত্যেক মহকুমায় সেই এলাকার গেরিলাবাহিনীর জন্য শিবির প্রতিষ্ঠা করা হইবে। শিবিরগুলির পরিচালনা ব্যবস্থা এমনিভাবে করা হইবে যেন এসব যুবককে পুনর্গঠন কাজের উপযোগী করিয়া প্রয়োজনীয় ট্রেনিং দেওয়া সম্ভব হয়।
(গ) মহকুমাভিত্তিক শিবিরগুলি সেই এলাকার সমস্ত গেরিলাবাহিনীর মিলনকেন্দ্র হইবে।
(ঘ) উর্ধপক্ষে এগারোজন সদস্য লইয়া জাতীয় মিলিশিয়ার জন্য একটি কেন্দ্রীয় বোর্ড গঠন করা হইবে। বোর্ডের সদস্যগণকে সরকার মনোনয়ন দান করিবেন।
(ঙ) প্রত্যেক মহকুমা-শহরে জাতীয় মিলিশিয়ার জন্য মহকুমা বোর্ড থাকিবে। মহকুমা বোর্ডের সদস্য সংখ্যা অনধিক এগারোজন হইবেন।
(চ) প্রতিটি শিবিরে অস্ত্রশস্ত্র কার্যোপযোগী অবস্থায় রাখা, গুদামজাত করা ও হিসাবপত্র রাখার জন্য একটি করিয়া অস্ত্রাগার থাকিবে।
(ছ) ট্রেনিং-এর কার্যসূচি এমনভাবে প্রস্তুত করা হইবে যেন এসব যুবককে নিম্নে বর্ণিত ভূমিকা পালনের উপযোগী করিয়া তোলা যায়ঃ [ক] যেন তাহারা দেশের দ্বিতীয় রক্ষাব্যুহ হইতে পারেন; [খ] যখনই নির্দিষ্টভাবে প্রয়োজন হইবে তখনই যেন তাহারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও পুনর্বহালে উপযোগী হইতে পারেন; [গ] দেশের পুনর্গঠন কার্যে সরাসরি সহায়তা হয় এমন বিভিন্ন কাজের উপযোগী হন।
(জ) অস্বাস্থ্যকর বাসস্থান, অপুষ্টিকর খাদ্য এবং অপর্যাপ্ত বেতন ও ভাতার জন্য মুক্তিযুদ্ধের সময় এই গেরিলাদের এক বিরাট অংশ কষ্ট ভোগ করিয়াছেন। সেজন্যই তাহাদের খাদ্য, বাসস্থান, ও ভাতার প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হইবে।
১৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ তারিখে ঢাকার পিলখানায় বিডিআর ও মিলিশিয়া বাহিনীতে যোগ দেওয়ার জন্য সারাদেশ থেকে আগত মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে ব্যাপক গোলযোগ ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সরকারের হস্তক্ষেপে তা নিয়ন্ত্রণে এলেও জাতীয় মিলিশিয়া বাহিনী গঠনের প্রক্রিয়া চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়।
এমতাবস্থায়, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের সদস্যদের বাদ দিয়ে বিশেষ বাহিনী গঠন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এই অবস্থায় ১৯৭২ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে জাতীয় রক্ষীবাহিনী গঠনের সরকারি আদেশ জারি করা হয়। এএনএম নূরুজ্জামানকে এই বাহিনীর পরিচালক নিয়োগ করা হয়। এছাড়া উপ পরিচালক হিসেবে সরোয়ার হোসেন মোল্লা (অপারেশন) ও আনোয়ার উল আলম (প্রশিক্ষণ) নিযুক্ত করা হয়।
স্বাধীনতার পর টাইম মন্তব্য করেছে যে "মুক্তিবাহিনীর সাথে লড়াই করা অনেক চরমপন্থী তরুণ গেরিলা আওয়ামী লীগের মধ্যবয়স্ক রাজনীতিবিদদের মধ্যপন্থী কোর্সে সন্তুষ্ট নাও হতে পারে। উপরন্তু, বর্তমান ঢাকা সরকার দেশের গ্রামে একটি অত্যন্ত দূরবর্তী শক্তি যেখানে মুক্তিবাহিনীর স্থানীয় ক্যাডাররা অত্যন্ত দৃশ্যমান।[19] এই প্রতিবেদনে এর একজন কমান্ডার আলী আশরাফ চৌধুরীকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে: "আমাদের সামাজিক আদর্শ বাস্তবায়িত না হওয়া পর্যন্ত আমরা কখনোই আমাদের অস্ত্র ফেরত বা জমা করব না"।[19]
মাসুদুল হক তার বই বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে 'র' এবং সিআইএ বইটিতে আব্দুর রাজ্জাকের কথা উল্লেখ করেছেন, যিনি একজন তরুণ নেতা এবং বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রধান, বলেন মুজিব তাদের সব বন্দুক সমর্পণ না করতে বলেছিলেন।[20]
রক্ষীবাহিনীর অধিনায়কদের “লিডার” পদবিতে আখ্যায়িত করা হতো।
গোড়ার দিকে রক্ষীবাহিনী বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে অনেক অস্ত্রশস্ত্র, চোরাচালানের মালামাল উদ্ধার করে এবং মজুতদার ও কালোবাজারীদের কার্যকলাপ কিছুটা প্রতিহত করতে সক্ষম হয়। কিন্তু খুব শীঘ্রই বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট হতে থাকে, কারণ দেখা যায় এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে পাশাপাশি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড[3][4][5] গুম,[21] গোলাগুলি,[22] এবং ধর্ষণ[5] এসব অপরাধের সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। ঝটিকা বাহিনীর মতো রক্ষীবাহিনী প্রায়ই একেকটি গ্রামের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ত এবং অস্ত্র ও দুষ্কৃতিকারীদের খুঁজতো। তাদের যথেচ্ছাচার নিয়ন্ত্রণ বা তাদের কার্যকলাপের জবাবদিহিতার আইনগত কোন ব্যবস্থা ছিল না। অপরাধ স্বীকার করানোর জন্য গ্রেফতারকৃত লোকদের প্রতি অত্যাচারের অভিযোগও তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত হয়। তাদের বিরুদ্ধে লুটপাট এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগও ছিল। অ্যান্থনি মাসকারেনহাস তার ঐতিহাসিক গ্রন্থ Bangladesh: A Legacy of Blood তে উল্লেখ করেন রক্ষীবাহিনীর হাতে সারা দেশজুড়ে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়।[23] তাদের কার্যকলাপের সমালোচনা যখন তুঙ্গে ওঠে এবং পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হতে থাকে, তখন সরকার ১৯৭৪ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারি ‘জাতীয় রক্ষীবাহিনী অধ্যাদেশ ১৯৭২’ এ একটি সংশোধনী জারির মাধ্যমে রক্ষীবাহিনীকে বিনা ওয়ারেন্টে যেকোনো সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করার এখতিয়ার দেওয়া হয় এবং রক্ষীবাহিনীর সকল কার্যকলাপ আইনসঙ্গত বলে ঘোষণা করা হয়। এটি স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম দায়মুক্তি আইন বা ইমডেমনিটি হিসেবে পরিচিত।[24][25]
এই সংশোধনীর ৮ক অনুচ্ছেদে বলা হয়,
‘রক্ষীবাহিনীর যে কোনো সদস্য বা অফিসার ৮নং অনুচ্ছেদবলে বিনা ওয়ারেন্টে আইনের পরিপন্থী কাজে লিপ্ত সন্দেহবশত যেকোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারবে। এছাড়া যেকোনো ব্যক্তি, স্থান, যানবাহন, নৌযান ইত্যাদিতে তল্লাশির মাধ্যমে বাজেয়াপ্ত করতে পারবেন। যে কোনো ব্যক্তিকে গ্রেফতার এবং তার সম্পত্তি হস্তগত করার পর একটি রিপোর্টসহ নিকটতম থানা হেফাজতে পাঠিয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।’[26]
এই সংশোধনীর ১৬ক অনুচ্ছেদে বলা হয়,
‘সরল বিশ্বাসে কৃত বা ইচ্ছাকৃত কোন কাজের জন্য রক্ষীবাহিনীর কোন সদস্যের বিরুদ্ধে কোন মামলা, প্রসিকিউশন বা কোন আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না।’[27][28][29]
বাহিনীটির কাঠামোগত দুর্বলতার জন্য এবং জনগণের দৃষ্টিতে এর ভাবমূর্তি দ্রুত হ্রাস পেতে থাকলে অনেকে রক্ষীবাহিনী ছেড়ে পালিয়ে যায়। বাহিনীতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার ১৯৭৫ সালের ১৭ই ফেব্রুয়ারি মূল আদেশে (জাতীয় রক্ষীবাহিনী অধ্যাদেশ ১৯৭২) আরেকটি সংশোধনী জারি করে। এর মাধ্যমে বহুসংখ্যক গুরু ও লঘু অপরাধের উল্লেখ করা হয়, যার জন্য রক্ষীবাহিনীর যেকোনো সদস্যের বিশেষ আদালত ও সংক্ষিপ্ত আদালতে বিচার করা যাবে।[30]
এই সংশোধনীর ১৬খ অনুচ্ছেদে বলা হয়,
‘আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যা কিছুই থাকুক না কেন, সরকার রক্ষীবাহিনীর যেকোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সংঘটিত কোনো অপরাধের তদন্ত বা বিচারের উদ্দেশ্যে কোনো শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দিয়ে পরিচালককে নিয়োগ করতে পারবে।’[31]
১৯৭৫ সালে একটি সামরিক অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিব নিহত হন। তখন রক্ষীবাহিনীর ভারপ্রাপ্ত প্রধান ছিলেন লেফটেনেন্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) আবুল হাসান খান। এতে বাংলাদেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক পটভূমিতে মৌলিক পরিবর্তন ঘটে। এই অভ্যুত্থানের পরবর্তী কয়েক মাস ছিল অস্থিতিশীল এবং নাটকীয় পরিবর্তনে ভরপুর। এ রকম একটি জায়মান অবস্থায় নতুন সরকার জাতীয় রক্ষীবাহিনীকে অবলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। রক্ষীবাহিনীর সদস্যদের নিয়মিত সামরিক বাহিনীতে আত্মীকরণ করা হয়। এই অবলুপ্তির লক্ষ্যে ১৯৭৫ সালের ৯ অক্টোবর তারিখে সরকারি আদেশ প্রকাশ করা হয়। এই আদেশে বলা ছিল যে ১৯৭৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে জাতীয় রক্ষীবাহিনী অবলুপ্ত হয়েছে বলে গণ্য হবে।[32] রক্ষীবাহিনী থেকে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত শতাধিক অফিসার কর্নেল, জেনারেল পর্যন্ত চাকরি করে মেয়াদ শেষ করে অবসরে যায়। দুজন সেনা প্রধান পর্যন্ত হয়েছিলেন, এখনো অনেকেই সেনাবাহিনীতে উচ্চপদে ব্রিগেডিয়ার, মেজর জেনারেল পদমর্যাদা সম্পন্ন দেখা যায়।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.