Remove ads
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস (পূর্বাশ্রমের নাম চন্দন কুমার ধর)[২][৩][৪] একজন বাংলাদেশী হিন্দু নেতা ও ধর্মগুরু। তিনি বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র। চট্টগ্রামে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা[৫] ফিরোজ খানের দায়েরকৃত অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।[৬][৭][৮]
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস | |
---|---|
জন্ম | চন্দন কুমার ধর মে, ১৯৮৫ (বয়স ৩৮–৩৯)[১] |
পেশা | হিন্দু ধর্মগুরু |
প্রতিষ্ঠান | বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ |
পরিচিতির কারণ | বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র |
অপরাধের অভিযোগ | রাষ্ট্রদ্রোহিতা |
অবস্থা | কারাগারে |
পূর্বে তিনি ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। [৯] বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।
২০২৪ সালের ২৫শে নভেম্বরে চিন্ময়কে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ঢাকা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে। জাতীয় পতাকার উপরে গেরুয়া পতাকা উত্তোলনের অভিযোগে একটি সমাবেশ সম্পর্কিত অভিযোগের পরে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়। [১০] পরদিন ২৬শে নভেম্বর চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়, যেখানে ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরিফুল ইসলাম তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।[১১] তার আইনজীবীরা কারাগারে থাকাকালীন তাকে ধর্মীয় অনুশীলন অনুসরণ করার অনুমতি দেওয়ার অনুরোধ করে, যাতে আদালত কারাগারের নিয়ম মেনে চলার নির্দেশ দেয়।[১২]
চিন্ময়ের জামিন মঞ্জুর না হওয়ার পর, তার অনুসারীরা আদালত ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে, যেটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের পর সহিংস হয়ে উঠে। সহিংসতার সময়, সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে এক আইনজীবীকে কুপিয়ে হত্যা করে।[১৩] [১৪] তার মৃত্যুতে আইনজীবী ও বিভিন্ন সংগঠন দেশজুড়ে পাল্টা বিক্ষোভ করে এবং ইসকন নিষিদ্ধের দাবি জানায়।[১৫] প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানান এবং ঘটনাটির যথাযথ তদন্তের আহ্বান জানান।[১৫]
২০২৩ সালের ৬ অক্টোবর, শিশু যৌন নিপীড়নের অভিযোগে ইসকন যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক শিশু সুরক্ষা কার্যালয় (সিপিটি) কর্তৃক চিন্ময়ের উপর ৫টি নিষেধাজ্ঞা জারি করে।[১৬] চিন্ময়কে ইসকনের নেতৃস্থানীয় পদে না থাকা, শিশু ও নারীদের সাথে যোগাযোগে বিরত থাকাসহ বিভিন্ন বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।[১৭] ইসকনের সিপিটি যুক্তরাজ্য দপ্তর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার সত্যতা নিশ্চিত করে,যা এখনও বহাল রয়েছে।[১৮][১৯][২০]
চিন্ময় বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক বিভাজন তৈরি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সমাবেশে মিথ্যা ও উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম।[২১][২২] দৈনিক ইনকিলাবে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২৪ সালে চট্টগ্রামের হাজারী গলিতে সেনা ও পুলিশ সদস্যদের ওপর এসিড হামলার নেপথ্যে তার ভূমিকা থাকার কথা উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে আরও বলা হয় চিন্ময় ইসকন প্রবর্তক মন্দিরের বিভিন্ন দায়িত্বে ছিলেন, সেখানে তার বিরুদ্ধে অনাথ কয়েকজন শিশুকে জোরপূর্বক বলৎকারের অভিযোগ উঠে, একপর্যায়ে তাকে মন্দিরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।[২৩] তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের হাটহাজারীর শ্রীশ্রী পুণ্ডরীক ধামে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিনের মালিকানাধীন পুকুর দখলের অভিযোগ রয়েছে।[২৩] এছাড়া, চট্টগ্রামের নিউমার্কেট চত্বরে মুক্তমঞ্চে জাতীয় পতাকার ওপর গেরুয়া পতাকা উড়িয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা[২৩][২৪] এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বিব্রত করতে একের পর এক কর্মসূচির নামে সহিংসতার মদদ দেওয়াসহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টির চেষ্টা করার অভিযোগ রয়েছে।[২৩]
২০২৪ সালের জুলাইয়ে চিন্ময়কে সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ইসকন থেকে বহিষ্কার করা হয়। এর আগে তিনি ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।[২৫]
২৮ নভেম্বর, আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ড ও চিন্ময়ের মুক্তির দাবির আন্দোলনে ইসকন বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে ইসকন বাংলাদেশ এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে চিন্ময়কে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের কথাও বলে।[২৬]
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তার গ্রেফতারের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের ওপর জোর দিয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে।[২৭] বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে হিন্দু ধর্মীয় নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের গ্রেফতার নিয়ে ভারত সরকারের এই বক্তব্যকে “ভিত্তিহীন” অভিহিত করে বলেছে, এ’ধরনের বক্তব্য দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিপন্থী। পাশাপাশি বলা হয় ভারত চিন্ময় দাসের গ্রেফতারের ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে।[২৮]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.