ঘৃতকুমারী

উদ্ভিদের প্রজাতি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

ঘৃতকুমারী

ঘৃতকুমারী (বৈজ্ঞানিক নাম: Aloe vera), (ইংরেজি: Medicinal aloe, Burn plant) একটি রসালো উদ্ভিদ প্রজাতি। এটি এলো পরিবারের একটি উদ্ভিদ। ঘৃতকুমারী গাছ দেখতে অনেকটাই কাঁটাওয়ালা ফণীমনসা বা ক্যাকটাসের মতো। অ্যালোভেরা ক্যাক্টাসের মত দেখতে হলেও ক্যাক্টাস নয়। লিলি প্রজাতির উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস আফ্রিকার মরুভূমি অঞ্চল ও মাদাগাস্কার। অ্যালোভেরা আজ থেকে ৬০০০ বছর আগে মিশরে উৎপত্তি লাভ করে। ভেষজ চিকিৎসা শাস্ত্রে এলোভেরার ব্যবহার পাওয়া যায় সেই খ্রিস্টপূর্ব যুগ থেকেই।

দ্রুত তথ্য ঘৃতকুমারী Aloe vera, বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস ...
ঘৃতকুমারী
Aloe vera
Aloe vera plant with flower detail inset
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
প্রতিশব্দ[1][2]
  • Aloe barbadensis Mill.
  • Aloe barbadensis var. chinensis Haw.
  • Aloe chinensis (Haw.) Baker
  • Aloe elongata Murray
  • Aloe flava Pers.
  • Aloe indica Royle
  • Aloe lanzae Tod.
  • Aloe maculata Forssk. (illegitimate)
  • Aloe perfoliata var. vera L.
  • Aloe rubescens DC.
  • Aloe variegata Forssk. (illegitimate)
  • Aloe vera Mill. (illegitimate)
  • Aloe vera var. chinensis (Haw.) A. Berger
  • Aloe vera var. lanzae Baker
  • Aloe vera var. littoralis J.Koenig ex Baker
  • Aloe vulgaris Lam.
বন্ধ
Aloe vera - MHNT

ঘৃতকুমারী

Thumb
ঘৃতকুমারী উদ্ভিদ

ঘৃতকুমারী বহুজীবী ভেষজ উদ্ভিদ এবং দেখতে অনেকটা আনারস গাছের মত। এর পাতাগুলি পুরু, দুধারে করাতের মত কাঁটা এবং ভেতরে লালার মত পিচ্ছিল শাঁস থাকে। সবরকম জমিতেই ঘৃতকুমারী চাষ সম্ভব, তবে দোঁআশ ও অল্প বালি মিশ্রিত মাটিতে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়। নিয়মিত জল সেচের দরকার হলেও গাছের গোড়ায় যাতে জল না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সাধারণত শেকড় থেকে গজানো ডাল বা ‘শাখা’ এর সাহায্যে এই গাছের বংশবৃদ্ধি হয়।

Thumb
ঘৃতকুমারীর মুকুল, স্থান:শখেরবাজার,কলকাতা

এই ঘৃতকুমারীতে রয়েছে ২০ রকমের খনিজ পদার্থ। মানবদেহের জন্য যে ২২টি অ্যামিনো অ্যাসিড প্রয়োজন এতে সেগুলো বিদ্যমান। এছাড়াও ভিটামিন A, B1, B2, B6, B12, C এবং E রয়েছে।

উপকারিতা

সারাংশ
প্রসঙ্গ

ঘৃতকুমারীর পাতা ও শাঁস ব্যবহার করা হয়। এর পাতার রস যকৃতের জন্য উপকারী। ঘৃতকুমারীর পাতার শাঁস বেঁটে ফোঁড়ায় লাগালে যন্ত্রণা কমে যায়। পোড়াস্থানে লাগালে উপকার পাওয়া যায়। হাঁপানি ও এলার্জি প্রতিরোধে ঘৃতকুমারী বৈজ্ঞানিকভাবে কার্যকরী। এটি ত্বকের জন্য খুব উপকারী। ত্বকের দাগ, ব্রণ, এবং শুষ্কতা দূর করতে অনেক কার্যকরী ।

Thumb
অ্যালোভেরা
Thumb
ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা

হার্ট সুস্থ রাখতে অ্যালোভেরা : হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে অ্যালোভেরার জুস। অ্যালোভেরা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এটি ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণ করে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে এবং রক্তে অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। দূষিত রক্ত দেহ থেকে বের করে রক্ত কণিকা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে দীর্ঘদিন হৃদযন্ত্র সুস্থ ও সক্রিয় থাকে।

মাংসপেশী ও জয়েন্টের ব্যথা প্রতিরোধে অ্যালোভেরা :-   অ্যালোভেরা মাংসপেশীর ব্যথা কমাতে সাহায্য করে থাকে। এমনকি ব্যথার স্থানে অ্যালোভেরা জেলের ক্রিম লাগালে ব্যথা কমে যায়।

দাঁতের যত্নে অ্যালোভেরা :-  অ্যালোভেরার জুস দাঁত এবং মাড়ির ব্যথা উপশম করে থাকে। দাঁতে কোন ইনফেকশন থাকলে তাও দূর করে দেয়। নিয়মিত অ্যালোভেরার জুস খাওয়ার ফলে দাঁত ক্ষয়রোধ করা সম্ভব।

ওজন হ্রাস করতে অ্যালোভেরা :-  ওজন কমাতে অ্যালোভেরা জুস বেশ কার্যকরী।[3] ক্রনিক প্রদাহের কারণে শরীরে মেদ জমে। অ্যালোভেরা জুসের অ্যান্টি ইনফ্লামেনটরি উপাদান এই প্রদাহ রোধ করে ওজন হ্রাস করে থাকে। পুষ্টিবিদগণ এই সকল কারণে ডায়েট লিস্টে অ্যালোভেরা জুস রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে অ্যালোভেরা :-  হজমশক্তি বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরা জুসের জুড়ি নেই। এটি অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে অন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া রোধ করে, যা হজমশক্তি বাড়িয়ে থাকে। অ্যালোভেরা ডায়রিয়ার বিরুদ্ধেও অনেক ভাল কাজ করে।

ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করতে অ্যালোভেরা :- অ্যালোভেরা জুস রক্তে সুগারের পরিমাণ ঠিক রাখে এবং দেহে রক্ত সঞ্চালন বজায় রাখে। ডায়াবেটিস শুরুর দিকে নিয়মিত এর জুস খেলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। সুতরাং খাওয়ার আগে বা খাওয়ার পরে নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস পান করুন, তাহলে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরা :-  ত্বকের যত্নে অ্যালোভেরার ব্যবহার সম্পর্কে আমরা সবাই কম-বেশি জানি। অ্যালোভেরার অ্যান্টি ইনফ্লামেনটরি উপাদান ত্বকের ইনফেকশন দূর করে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। 

রোগ-প্রতিরোগ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরা :- অ্যালোভেরা হলো অ্যান্টি ম্যাইকোবিয়াল এবং অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদানসমৃদ্ধ একটি গাছ। অ্যালোভেরা জুস নিয়মিত পান করলে রোগ-প্রতিরোগ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং দেহের টক্সিন উপাদান দূর করে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

মুখের দূরগন্ধ দূর করতে অ্যালোভেরা :-  অ্যালোভেরায় আছে ভিটামিন সি, যা মুখের জীবাণু দূর করে মাড়ি ফোলা, মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যালোভেরার জেল মাউথ ওয়াশ এর বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।

চুল সুন্দর করতে অ্যালোভেরা :-  অ্যালোভেরার গুনাগুন বলে শেষ করা যায় না, মাথায় খুশকি দূর করতে এর কোন তুলনা নেই। এমনকি ঝলমলে চুলের জন্যেও অ্যালোভেরা অনেক উপকারী। সুতরাং চুলের যত্নে অ্যালোভেরা আপনার নিত্যসঙ্গী।

মুখের ঘা সারাতে অ্যালোভেরা :-  অনেকের মুখে ঘা হয়, আর এই মুখের ঘা দূর করতে অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকরী। ঘায়ের জায়গায় অ্যালোভেরার জেল লাগিয়ে দিলে মুখের ঘা ভাল হয়।

ক্যান্সার প্রতিরোধে অ্যালোভেরা :- গবেষণায় দেখা গেছে যে, অ্যালোভেরায় রয়েছে অ্যালো ইমোডিন, যা স্তন ক্যান্সার বিস্তারকে রোধ করে। এছাড়াও অন্যান্য ক্যান্সার প্রতিরোধে অ্যালোভেরা অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।

রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে :-  অ্যালোভেরার অনেক গুণাগুণের মধ্যে আর একটি হল রক্তচাপ কমাতে এর কোন তুলনা নেই। অ্যালোভেরার ঔষধি গুণ রক্তচাপ কমায় এবং রক্তে কোলেস্টেরল ও চিনির মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে সাহায্য করে।

ক্ষতিকারক পদার্থ অপসারণ করতে :-  কিছু ক্ষতিকর পদার্থ দেহের মধ্যে প্রবেশ করে নানা ধরনের রোগের সৃষ্টি করতে পারে। ফলে তা দেহের জন্য মোটেও ভালো কিছু নয়। এই সকল ক্ষতিকর পদার্থ দেহ থেকে অপসারণ প্রয়োজন। অ্যালোভেরার রস পান করলে দেহের ক্ষতিকর পদার্থ প্রবেশ করতে পারে না। আর যদি প্রবেশ করেও ফেলে, তাহলেও অ্যালোভেরার জুস পানে তা অপসারণ হতে সাহায্য করে। এই ক্ষেত্রে অ্যালোভেরার জুসের গুণ অপরিসীম।

ক্লান্তি দূর করতে :-  দেহের দুর্বলতা দূর করতে অ্যালোভেরার জুসের গুণ অনেক। আপনি যদি অ্যালোভেরার জুস নিয়মিত পান করেন তাহলে দেহের ক্লান্তি দূর হবে এবং দেহকে সতেজ ও সুন্দর রাখবে।

কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দূর করতে আলোভেরা

:- 

অ্যালোভেরার জুসের মধ্যে যে জেল থাকে তার অনেক গুণ। এই জেল নিয়মিত পান করলে পেটের সমস্যা দূর হয়। আর যদি সুষম খাদ্যের পাশাপাশি নিয়মিত অ্যালোভেরার রস পান করেন তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হওয়া সম্ভব। এছাড়া অ্যালোভেরা জেলে প্রায় ২০ রকম অ্যামিনো অ্যাসিড আছে যা ইনফ্লামেশন এবং ব্যাকটেরিয়া রোধ করে হজম, বুক জ্বালাপোড়া রোধ করে থাকে। ঘৃতকুমারী মানব জীবনে খুবই প্রয়োজনীয়।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.