গীতা মুখোপাধ্যায়

ভারতীয় রাজনীতিবিদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

গীতা মুখোপাধ্যায়

গীতা মুখোপাধ্যায় (৮ জানুয়ারি ১৯২৪ - ৪ মার্চ ২০০০) ছিলেন একজন রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মী; ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পাঁশকুড়া পূর্ব বিধানসভা আসনের চার বারের বিধায়ক এবং ১৯৬৭ থেকে ২০০০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পাঁশকুড়া লোকসভা কেন্দ্র এর সাত বারের নির্বাচিত সাংসদ ছিলেন। তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআই) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পরিষদের প্রার্থী ছিলেন।[] তিনি ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির নারী বিভাগ ভারতীয় মহিলা জাতীয় ফেডারেশনের সভাপতি ছিলেন। ভারতে সংসদীয় নির্বাচনে মহিলাদের জন্য এক-তৃতীয়াংশ আসন সংরক্ষণের আইনের দাবিতে আন্দোলনে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।[]

দ্রুত তথ্য ভারতীয় সংসদ এর সদস্য পাঁশকুড়া, পূর্বসূরী ...
সম্মাননীয় জননেত্রী
মহামান্যা
গীতা মুখোপাধ্যায়
Thumb
ভারতীয় সংসদ এর সদস্য
পাঁশকুড়া
কাজের মেয়াদ
১৯৮০-২০০০
পূর্বসূরীআভা মাইতি
উত্তরসূরীবিক্রম সরকার
বিধায়ক
কাজের মেয়াদ
১৯৬৭  ১৯৭৭
পূর্বসূরীরজনীকান্ত প্রামাণিক
উত্তরসূরীস্বদেশ রঞ্জন মাজি
নির্বাচনী এলাকাপাঁশকুড়া পূর্ব
ব্যক্তিগত বিবরণ
জন্মগীতা রায় চৌধুরী
( ১৯২৪-০১-০৮)৮ জানুয়ারি ১৯২৪
দক্ষিণ কলকাতা, বঙ্গপ্রদেশ, ব্রিটিশ ভারত
মৃত্যু৪ মার্চ ২০০০(2000-03-04) (বয়স ৭৬)
নয়াদিল্লি, ভারত
জাতীয়তাভারতীয়
রাজনৈতিক দলভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি
দাম্পত্য সঙ্গীবিশ্বনাথ মুখোপাধযায়
বাসস্থানফ্ল্যাট-১২, ব্লক-ডি, ১৮, বো স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০১২
বৌবাজার, কলকাতা
প্রাক্তন শিক্ষার্থীকলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় আশুতোষ কলেজ
জীবিকারাজনীতিক, সমাজকর্মী, লেখিকা
বন্ধ

প্রারম্ভিক জীবন এবং শিক্ষা

গীতা মুখোপাধ্যায় ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের ৮ জানুয়ারি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ নভেম্বর তিনি বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।[]

তিনি কলকাতার আশুতোষ কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্য নিয়ে কলাবিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত তিনি বঙ্গীয় প্রাদেশিক ছাত্র ফেডারেশনের সম্পাদক ছিলেন।[]

কর্মজীবন

সারাংশ
প্রসঙ্গ

১৯৪৬ খ্রিস্টাব্দে গীতা মুখোপাধ্যায় প্রথম ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিআই) বঙ্গ রাজ্য পরিষদের সদস্য হিসাবে নির্বাচিত হন।[] তিনি সকলের জনপ্রিয় 'গীতাদি' নামে পরিচিত ছিলেন; এবং সেই সময় থেকেই তিনি লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের পাঁশকুড়া আসন থেকে ২০০০ খ্রিস্টাব্দে তার মৃত্যুর সময় পর্যন্ত পুরোভাগে ছিলেন।[]

তিনি ১৯৮০ খ্রিস্টাব্দে সপ্তম লোকসভায় নির্বাচিত হন এবং ১৯৮০-৮৪ সময়কালে তিনি যে যে দায়িত্ব পালন করেন, সেগুলো হল:

  • সদস্য, কমিটি অন পাবলিক আন্ডারটেকিংস
  • সদস্য, কমিটি অন দ্য ওয়েলফেয়ার অফ সিডিউল্ড কাস্টস অ্যান্ড সিডিউল্ড ট্রাইবস
  • সদস্য, জয়েন্ট কমিটি অন ক্রিমিনাল ল (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ১৯৮০

১৯৮১ খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।[]

১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে ত্রয়োদশ লোকসভা নির্বাচনে তিনি সপ্তম বারের জন্যে নির্বাচিত হন।[] তাঁর কর্মজীবন প্রায় সাড়ে পাঁচ দশক বিস্তৃত ছিল। যাইহোক, লোকসভা নির্বাচনে নারীদের জন্যে আসন সংরক্ষণে তাঁর ইতিবাচক ভূমিকা তাঁকে পাদপ্রদীপের আলোয় এনেছিল। এছাড়াও তিনি যেসব কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, সেগুলো হল: ন্যাশনাল কমিশন অন রুরাল লেবার, ন্যাশনাল কমিশন অন ওমেন, ন্যাশনাল চিল্ড্রেন্স বোর্ড, প্রেস কাউন্সিলের সদস্য, এবং ন্যাশনাল ফেডারেশন অব ওমেন-এর সহ-সভাপতি। অন্যদিকে তিনি বার্লিনের ওমেন্স ইন্টারন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ফেডারেশনের সদস্য ছিলেন।[]

রাজনৈতিক কর্মজীবনের পাশাপাশি গীতা মুখোপাধ্যায় শিশুদের জন্যে কয়েকটা বইও লিখেছেন, যার মধ্যে আছে: ভারত উপকথা (ভারতের লোকগাথা), ছোটোদের রবীন্দ্রনাথ (শিশুদের জন্য রবীন্দ্রনাথ) এবং হে অতীত কথা কও; এবং বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেছেন ব্রুনো অ্যাপিৎজের ১৯৫৮ খ্রিস্টাব্দের উচ্চাঙ্গের বই নেকেড অ্যামং উলভস[][]

মৃত্যু

২০০০ খ্রিস্টাব্দের ৪ মার্চ তারিখে গুরুতর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গীতা মুখোপাধ্যায়ের জীবনাবসান হয়। মৃত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর। ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী তাঁর শোকবার্তায় জানিয়েছিলেন - "শ্রীমতী মুখোপাধ্যায়ের জীবন ছিল দৃঢ়সংকল্প এবং উৎসর্গীকৃত। তিনি নারী ক্ষমতায়নের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ ছিলেন। তাঁর জীবন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের, বিশেষত মহিলাদের জন্যে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।"[]

তথ্যসূত্র

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.