গাজিয়ানতেপ
দক্ষিণ-মধ্য তুরস্কের নগরী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দক্ষিণ-মধ্য তুরস্কের নগরী উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
গাজিয়ানতেপ (তুর্কি: Gaziantep; আ-ধ্ব-ব:[ɡaːˈziantep]) পশ্চিম এশিয়ার রাষ্ট্র তুরস্কের একটি নগরী। এটি দেশটির দক্ষিণ-মধ্যভাগে, সাজিরসুইউ নদীর কাছে, আদানা নগরী থেকে ১৮৫ কিলোমিটার পূর্বে সিরিয়ার আলেপ্পো নগরী থেকে ৯৭ কিলোমিটার উত্তরে একটি চুনাপাথরের পাহাড় অঞ্চলে অবস্থিত। এটিতে আদিতে আনতেপ নামে পরিচিত ছিল। এটি প্রশাসনিকভাবে তুরস্কের গাজিয়ানতেপ প্রদেশটির রাজধানী। এটি সম্ভবত প্রাচীন আন্তিওখিয়া আদ তাউরুম নগরীটির অবস্থানে এবং আরেকটি প্রাচীন নগরী জেউগমা-র কাছেই অবস্থিত। ২০ লক্ষেরও বেশি অধিবাসীবিশিষ্ট নগরীটি জনসংখ্যার বিচারে তুরস্কের ৬ষ্ঠ বৃহত্তম নগরী।
গাজিয়ানতেপ | |
---|---|
মহানগর পৌরসভা | |
তুরস্কের অভ্যন্তরে গাজিয়ানতেপের অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ৩৭°০৪′ উত্তর ৩৭°২৩′ পূর্ব | |
দেশ | তুরস্ক |
অঞ্চল | দক্ষিণ-পূর্ব আনাতোলিয়া |
প্রদেশ | গাজিয়ানতেপ |
সরকার | |
• নগরাধ্যক্ষ | ফাতমা শাহিন (একেপি) |
আয়তন | |
• মোট | ৬,৮১৯ বর্গকিমি (২,৬৩৩ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১৯) | |
• মোট | ২০,৬৯,৩৬৪[1] |
• জনঘনত্ব | ৩০৩.৫/বর্গকিমি (৭৮৬/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | তুস (ইউটিসি+3) |
ডাক সংকেত | 27x xx |
এলাকা কোড | 342 ও 343 |
অনুমতি ফলক | 27 |
ওয়েবসাইট | www.gaziantep.gov.tr |
গাজিয়ানতেপ নগরীটি প্রাচীনকালে বাণিজ্যপথগুলির কাছে কৌশলগত অবস্থানে অবস্থিত ছিল। সাম্প্রতিক খননকার্যে কিছু মৃশিল্পজাত দ্রব্য খুঁজে পাওয়া গেছে। এগুলি নির্দেশ করে যে এখানে সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ সহস্রাব্দেও মানববসতি ছিল। মধ্যযুগে লোকালয়টি হামতাপ নামে পরিচিত ছিল। এটি সিরিয়ার সড়কগুলিকে রক্ষাকারী গুরুত্বপূর্ণ একটি কুঠি ছিল। পরবর্তীতে ১১৮৩ সালে তুর্কিরা এটি বিজয় করে নেয়। এরপর বিভিন্ন তুর্কমেন ও আরব রাজবংশ এবং মঙ্গোল ও তিমুরীয় হানাদার সেনাদের হাতে শহরটির নিয়ন্ত্রণ বহুবার হাত বদল হয়। শেষ পর্যন্ত ১৬শ শতকের শুরুতে এসে শহরটি উসমানীয় সাম্রাজ্যের অংশে পরিণত হয়। উসমানীয়রা শহরটিকে "আয়ুনতাব" ("সু-বসন্ত") নামে ডাকত। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৯১৯ সালে ব্রিটিশ এবং পরবর্তীতে ফরাসিরা এটি দখল করে। ততক্ষণে এটি ইউরোপীয় দখলের বিরুদ্ধে তুর্কি জাতীয়তাবাদী প্রতিরোধের একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। ১৯২২ সালে যখন এটি তুরস্কের অধীনে ফেরত আসে, তখন তুরস্ক প্রজাতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা মুস্তাফা কামাল আতাতুর্ক নগরটির নাম বদলে "গাজি" রাখেন, যার অর্থ "ইসলামের বিজয়ী বীর"।
গাজিয়ানতেপ একটি সুনির্মিত নগরী, এখানে পাথরের তৈরি ঘরবাড়ি, পাকা রাস্তা ও সু-আচ্ছাদিত বাজার রয়েছে। চারপাশে বাগান, আঙুরের ক্ষেত, জলপাই ও বাদামের বাগান শহরটিকে ঘিরে রেখেছে। এখানকার ঐতিহাসিক ভবনগুলির মধ্যে রয়েছে বাইজেন্টীয় সম্রাট ১ম ইউস্তিনিয়ান (জাস্টিনিয়ান) কর্তৃক খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতকে নির্মিত একটি দুর্গের ধ্বংসাবশেষ। এছাড়া এখানে ১১শ ও ১৬শ শতকে নির্মিত মসজিদও রয়েছে। মধ্যযুগীয় একটি ধর্মতাত্ত্বিক মহাবিদ্যালয়কে বর্তমানে একটি প্রত্নতাত্ত্বিক জাদুঘরে পরিণত করা হয়েছে, যেখানে এই অঞ্চলে খনন করে পাওয়া হিত্তীয় জাতির সীলমোহরের একটি অসাধারণ সংগ্রহ রয়েছে।
গাজিয়ানতেপের পারিপার্শ্বিক এলাকাটি দক্ষিণে সিরিয়া এবং পূর্বে ইউফ্রেটিস নদী দ্বারা সীমায়িত। অঞ্চলটি দ্রাক্ষাসুরা, হালুয়া ও বাকলাভা মিষ্টি এবং পেকমেজ (আঙুরের আচার) উৎপাদনের জন্য পরিচিত। এছাড়া এখানে পেস্তাবাদাম, মৌরি, তামাক ও ছাগলের চামড়ার পাপোশ তৈরি করা হয়। অঞ্চলটিতে প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান যেমন দুলুক (প্রাচীন দোলিকে), যেখানে প্রাচীন রোমান দেবতা জুপিটার দোলিকেনুসের মন্দিরটি অবস্থিত, প্রাচীন আসিরীয় কিলিসি নগরী (বর্তমান নাম কিলিস) এবং নব্য-হিত্তীয় সামাল নগরী (বর্তমান নাম জিনচির্লি হোইউক)।
গাজিয়ানতেপে রয়েছে রন্ধনশৈলীর সুদীর্ঘ ঐতিহ্য। এটিকে ইউনেস্কো (জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা) প্রণীত বিশ্বের সেরা ৩৬টি সুভোজনবিদ্যা নগরীর তালিকায় স্থান দেওয়া হয়েছে। শহরটির শ্রমশক্তির ৬০% খাবার শিল্পের সাথে জড়িত। এখানকার প্রায় অর্ধেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খাদ্য, বিশেষত মসলা, খাদ্যশস্য ও শুকানো ফলের ব্যবসার সাথে জড়িত।[2]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.