গর্ভাধান

প্রাচীন সংস্কৃত গ্রন্থে বর্ণিত একটি উত্তরণের আচার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ

গর্ভাধান (সংস্কৃত: गर्भाधान Garbhādhāna) (অর্থ: জরায়ুতে শুক্র স্থাপন) হিন্দুধর্মের ষোড়শ সংস্কারের প্রথম সংস্কার।[] এটি স্ত্রীর দ্বিতীয় বিবাহরূপ সংস্কার। গর্ভাধান সংস্কারে স্ত্রীর প্রথম রজোদর্শনের ষোলো দিনের মধ্যে স্বামী পবিত্র হয়ে সন্ধ্যায় সূর্যার্ঘ্য প্রদান করে যথাবিধি বহ্নিস্থাপনের পর পঞ্চগব্য দ্বারা স্ত্রীকে শোধন করে সন্তান উৎপাদনার্থ গ্রহণ করেন।[]

গার্হ্যসূত্র মতে, এই সংস্কারের সূচনায় স্ত্রী যথাবিধি সুসজ্জিত হন এবং স্বামী সৃষ্টি সংক্রান্ত বৈদিক স্তোত্র উচ্চারণ করতে করতে দেবগণকে আহ্বান জানান, যাতে তারা তার স্ত্রীকে গর্ভধারণে সহায়তা করেন। অতঃপর নারীপুরুষের যৌনক্রিয়া সংক্রান্ত স্তোত্রগুলি উচ্চারণ করতে করতে তারা আলিঙ্গন করেন। স্বামী পুরুষের উৎপাদন ক্ষমতা সংক্রান্ত স্তোত্র উচ্চারণ করতে করতে স্ত্রীর দেহে নিজ শরীর ঘর্ষণ করেন। আলিঙ্গনের পর পূষণের নিকট প্রার্থনার মাধ্যমে গর্ভস্থাপনের কাজ শুরু হয়। স্বামী স্ত্রীর দক্ষিণ স্কন্ধের উপর থেকে ঝুঁকে তার স্ত্রীর বক্ষ স্পর্শ করেন "হে সুবিন্যস্ত কেশধারী, তোমার হৃদয় বাস করে স্বর্গে, বাস করে চন্দ্রে, আমি তাহাকে জানি, তাহা আমাকে জানুক। আমি যেন শত শরৎ বাঁচিয়া থাকি।"[]

স্মৃতি শাস্ত্রে লিখিত আছে-

নিষেকাদ্ বৈজিকং চৈনো গাৰ্ভিকং চাপমৃজ্যতে।

ক্ষেত্রসংস্কার সিদ্ধিশ্চ গর্ভাধানফলং স্মৃতম্ ।।

অর্থাৎ – বিধি বিধান মতো এবং সংস্কার মতো গর্ভাধান থেকে শুভগুণ সম্পন্ন সুযোগ্য সন্তান সৃষ্ট হয় । আর এই সংস্কার থেকেই বীর্য ও গর্ভ সংক্রান্ত পাপের নাশ হয়। দোষ নষ্ট হয় । ক্ষেত্র সংস্কার হয় । এগুলিই হল গর্ভাধান সংস্কারের ফল বা পরিণতি।

সুশ্ৰুত সংহিতায় লিখিত আছে-

আহারাচার চেষ্টা ভিয়াদৃশোভি সমন্বিতৌ।

স্ত্রীপুংসৌ সমুপেয়াতাং তয়োঃ পুত্রোত্তপি তাদৃশঃ ।।

(সুশ্রুত সংহিতা / শরীর ২/৪৩/৫০)

অর্থাৎ- নর নারী যেমন আহার ব্যবহার বা প্রচেষ্টায় মিলিত হয়ে পরস্পর সহবাস করে তাদের পুত্র সন্তানও তেমনি স্বভাব প্রাপ্ত হয় ।

পাদটীকা

সুবলচন্দ্র মিত্র, সরল বাঙ্গালা অভিধান, নিউ বেঙ্গল প্রেস প্রাইভেট লিমিটেড, কলিকাতা, ১৯৮৪।

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Loading related searches...

Wikiwand - on

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.