Remove ads
কলকাতায় অবস্থিত একটি অঞ্চল উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
গড়িয়া দক্ষিণ কলকাতার একটি অভিজাত অঞ্চল। নাকতলা, নিউ গড়িয়া, চক গড়িয়া, গড়িয়া পার্ক, বাঘা যতীন, বৈষ্ণবঘাটা পাটুলি, টেকনো সিটি, মডেল টাউন, গাঙ্গুলিবাগান, তেঁতুলবেড়িয়া, পূর্ব তেঁতুলবেড়িয়া, রামগড়, বৃজি, কামালগাজি, মহামায়াতলা, বোরাল, শ্রীনগর, নয়াবাদ, পঞ্চসায়র, কন্দর্পপুর টাউন, ফরতাবাদ, বালিয়া ও অজয়নগরের অংশবিশেষ গড়িয়া নামে পরিচিত। গড়িয়ার উত্তরে আছে যাদবপুর, ঢাকুরিয়া, গোলপার্ক ও গড়িয়াহাট, উত্তর-পশ্চিমে রয়েছে বাঁশদ্রোণী ও টালিগঞ্জ, উত্তর-পূর্বে আছে সন্তোষপুর, দক্ষিণে আছে নরেন্দ্রপুর ও সোনারপুর এবং পূর্বে আছে মুকুন্দপুর। ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাসের দক্ষিণ অংশটি এই অঞ্চলের মাঝখান দিয়ে গিয়েছে। গড়িয়া কলকাতার একটি ব্যস্ত এলাকা। এখানে শহরের দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন টার্মিনাল রয়েছে। সেই জন্য এই অঞ্চলে যানজট একটি বড় সমস্যা।
গড়িয়া | |
---|---|
কলকাতার অঞ্চল | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | পশ্চিমবঙ্গ |
শহর | কলকাতা |
মেট্রো স্টেশন | কবি নজরুল, শহীদ ক্ষুদিরাম, কবি সুভাষ, গীতাঞ্জলি |
রেলওয়ে স্টেশন | গড়িয়া, নিউ গড়িয়া, বাঘাযতীন |
লোকসভা কেন্দ্র | যাদবপুর |
বিধানসভা কেন্দ্র | যাদবপুর |
সময় অঞ্চল | ভারতীয় প্রমাণ সময় (ইউটিসি+৫:৩০) |
পিন | ৭০০০৮৪, ৭০০০৪৭, ৭০০০৯৪ |
এলাকা কোড | +৯১ ৩৩ |
গড়িয়া পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা ও কলকাতা জেলার সীমান্তবর্তী বৃহৎ এলাকা। এটি আদিগঙ্গার তীরে অবস্থিত, কলকাতা শহরের দক্ষিণ শহরতলী। এটি অত্যন্ত প্রাচীন জনপদ। এই অঞ্চলের নামকরণের সবথেকে জনপ্রিয় মতটি হল, এটি গৌড়ীয় সম্প্রদায়ের আবাসভূমি। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু তাঁর নীলাচল যাত্রায় আদিগঙ্গার মধ্য দিয়ে যাত্রা করেন, বর্তমান গড়িয়ার কাছে তিনি থামেন এবং তারপর থেকেই অঞ্চলে বৈষ্ণবরা থাকতে শুরু করে। উল্লেখ্য যে, গড়িয়ার আশেপাশের বৈষ্ণবঘাটা ও কামডহরি (<কামদা হরি) একই ইতিহাসের সূত্রে আবদ্ধ।
মতান্তরে, ম্যানগ্রোভ গোত্রীয় গুড়িয়া (বৈজ্ঞানিক নাম: Kandelia candel) গাছের আধিক্য থাকার ফলে এই অঞ্চলটির নাম গড়িয়া। বলা হয় যে প্রাচীনকালে সুন্দরবন কলকাতার শিয়ালদহ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল তাই এই মতটি অস্বীকার যোগ্য নয়।
আরেকটি মতে, গৌড়ের ধর্মান্তরিত মুসলমান গোষ্ঠী, গৌড়িয়াদের বসবাসের অঞ্চল সেই থেকেই নাম গড়িয়া। বলা হয়, বর্তমানে এদের বসবাস গড়িয়ার পাটুলির উত্তরাংশে। তবে এই মতটি সর্বজনবিদিত নয়।
গড়িয়া কলকাতার একটি অতি প্রাচীন এলাকা। আদিগঙ্গার পূর্ব পাড়ে অবস্থিত। আগে গড়িয়া ছিল জনবিরল বসতি এলাকা। দেশভাগের পর পূর্ববঙ্গের শরণার্থীরা এখানে বসতি স্থাপন করতে শুরু করলে এখানকার ভৌগোলিক চিত্রটি যায় বদলে। গড়িয়ার জনসংখ্যা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। দক্ষিণ কলকাতায় যাদবপুর ও টালিগঞ্জের মতো গড়িয়াও হয়ে একটি শরণার্থী কেন্দ্র। এরপর ধীরে ধীরে গড়িয়ার নগরায়ন শুরু হয়। ১৯৯০ সালের পর যখন ইস্টার্ন মেট্রোপলিটান বাইপাস তৈরি হয়, তখন পরিবহন ক্ষেত্রে এই রাস্তার দক্ষিণে অবস্থিত গড়িয়ার গুরুত্ব বেড়ে যায়। গড়িয়া হয়ে ওঠে কলকাতার দ্বিতীয় চৌরঙ্গী। বাইপাসের মাধ্যমে গড়িয়ার সঙ্গে উত্তর কলকাতা, বিমানবন্দর এবং নতুন গড়ে ওঠা বিধাননগর (সল্ট লেক) ও নিউ টাউন যুক্ত হয়। গড়িয়ার প্রধান বাস টার্মিনাস-দুটি গড়ে ওঠে। গড়িয়া একটি পরিবহন ও বাণিজ্যকেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। কলকাতার কয়েকটি অত্যাধুনিক আবাসন চত্বর গড়ে উঠেছে গড়িয়ায়। এগুলি হল হাইল্যান্ড পার্ক, ওয়েস্টউইন্ড, অরবিট সিটি, সুগম পার্ক ও বেঙ্গল অম্বুজার উপহার।
গড়িয়ায় মোট চারটি বাস টার্মিনাস রয়েছে। এই চারটি বাস টার্মিনাসের মাধ্যমে গড়িয়া কলকাতার অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। গড়িয়ায় কলকাতা মেট্রোর কবি নজরুল, শহীদ ক্ষুদিরাম ও কবি সুভাষ (নিউ গড়িয়া) স্টেশন তিনটি অবস্থিত। কলকাতার শহরতলি রেলওয়ের শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার গড়িয়া ও বাঘাযতীন স্টেশনদুটি গড়িয়ায় অবস্থিত। পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন নিগমের অনেকগুলি রুট গড়িয়া থেকে পরিচালিত হয়। অনেক বেসরকারি বাসও এখান থেকে চালিত হয়। এমনকি গড়িয়ার টার্মিনাস থেকে দিঘায় যাওয়ার বাসও ছাড়ে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.