Loading AI tools
বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
খান-এ-সবুর (১৯০৮ – ১৯৮২) একজন বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী।[১] তিনি আইয়ুব খান সরকারের সময় মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি পাকিস্তান সমর্থন করেন।[২][৩] তিনি ১৯০৮ সালে বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৯৮২ সালে মৃত্যুবরণ করেন।[৪]
খান-এ-সবুর | |
---|---|
মুসলিম লীগ | |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | ১৯০৮ ফকিরহাট, বাগেরহাট, বাংলাদেশ |
মৃত্যু | ১৯৮২ ৭৩–৭৪) ঢাকা | (বয়স
রাজনৈতিক দল | মুসলিম লীগ |
পেশা | রাজনীতি |
১৯০৮ সালের ১০ অক্টোবর খুলনায় জন্মগ্রহণ করেন, পিতা নজমুল হোসেন খান ছিলেন একজন বিশিষ্ট আইনজীবী। তিনি ১৯২৯ সালে খুলনা জিলা স্কুল থেকে প্রবেশিকা পরিক্ষা পাশ করেন। পরবর্তীতে ১৯৩১ সালে কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৩৩ সালে কলকাতা সিটি কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
সবুর খান, রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন ১৯৩৭ সালে কৃষক-প্রজা পার্টিতে যোগদানের মধ্য দিয়ে। ওই বছরই তিনি নিখিল ভারত মুসলিম লীগে যোগদান করেন এবং পরে ১৯৩৮ সালে বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম লীগের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। মুসলিম লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে তিনি খুলনা থেকে ১৯৪৬ সালে বঙ্গীয় আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম লীগের প্রচার সম্পাদক ছিলেন। ১৯৪৮ সালে দেশ বিভাগের সময় খুলনা অঞ্চল কিছু অংশ প্রথমে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা হলেও পরে সবুর খানের আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে তা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয়।[৫] সবুর খান ১৯৬২ সালে মৌলিক গণতন্ত্র ব্যবস্থায় পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং আইয়ুব খানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় যোগাযোগ মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পরিচালিত ছয়দফা কর্মসূচি তথা পূর্ব বাংলার স্বাধিকার ও বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সরাসরি বিরোধিতা করেন সবুর খান। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের বিপক্ষে প্রচারাভিযান চালান।
খান সবুর বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে এবং জামাতে ইসলামীর শীর্ষ নেতাদের সাথে মুক্তিবাহিনির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ১৯৭১ সালে, ঢাকায় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মুসলিম লীগ নেতা খান এ. সবুর বলেন, “পাক-ভারত যুদ্ধ বাধলে তা বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেবে। ভারত পাকিস্তানের দুর্ধর্ষ সেনাবাহিনীকে মোকাবেলা করতে পারবে না বলেই পূর্ব পাকিস্তানে মুক্তিবাহিনীর নামে পঞ্চম বাহিনী গড়ে তুলেছে। মুক্তিবাহিনী কাদের বিরুদ্ধে লড়ছে? দেশতো মুক্ত।“
২রা মে, ১৯৭১ সালে শান্তি কমিটির উদ্যোগে খুলনায় এক সভায় সবুর খান বলেন, “কতিপয় ব্যক্তি ব্যতীত 'বাঙালি জাতীয়তাবাদ' পাকিস্তানিরা প্রত্যাখ্যান করেছে। এটা কোনো মতবাদই নয়। বহু ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে পাকিস্তানের জন্ম হয়েছে। পাকিস্তানকে আমরা ধ্বংস হতে দিতে পারি না। আমরা সবাই পাকিস্তানি জাতীয়তাবাদের পক্ষে। জীবন দিয়ে হলেও আমরা পাকিস্তানকে রক্ষা করবো”।
৬ই অক্টোবর, ১৯৭১ সালে, খান আবদুস সবুর খানের বাসায় কাইয়ুম মুসলিম লীগের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে মুসলিম লীগ (কাইয়ুম) প্রধান কাইয়ুম খান বলেন, “রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের মাধ্যমে ভারতীয় প্ররোচনায় ইসলামের বদলে ভাষাকেই রাষ্ট্রের মূল ভিত্তি বলে প্রচার শুরু করা হয়। ভাষাভিত্তিক শ্লোগানের মূল উদ্দেশ্যই ছিলো পাকিস্তানের ধ্বংস করা”।
৭ই জুন, ১৯৭১ সালে মুসলিম লীগ নেতা খান এ. সবুর ঢাকায় এক বিবৃতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শুরুর আগে পাকিস্তানি পতাকা ও সঙ্গীত পরিবেশনের দাবি করেন।[৬]
২১শে মে, ১৯৭১ সালে খুলনায় প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী খান এ.সবুর, প্রাক্তন প্রাদেশিক মন্ত্রী এস.এম. আমজাদ হোসেন ও প্রাক্তন জাতীয় পরিষদ সদস্য এ.কে.এম. ইউসুফ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, “আমাদের সেনাবাহিনী আওয়ামী লীগের জাতীয় সংহতি বিরোধী কার্যকলাপ ব্যর্থ করে দিয়েছে। আমরা রাষ্ট্রদ্রোহীদের নির্মূলের কাজে নিয়োজিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য প্রদেশের জনসাধারণের প্রতি আহ্বান জানাই”।
পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীকে সহযোগিতা করার অপরাধে স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে দালাল আইনে তিনি গ্রেফতার হন এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত হন। বঙ্গবন্ধুর সরকার কর্তৃক সাধারণ ক্ষমা ঘোষণার ফলে তিনি মুক্তি পান।[৭] সবুর খান ১৯৭৬ সালে মুসলিম লীগকে পুনরুজ্জীবিত করেন এবং দলের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৭৯ সালে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে খুলনার তিনটি আসন থেকে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য এবং মুসলিম লীগ সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হন। ১৯৮২ সালের ২৫ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। চিরকুমার সবুর খান মৃত্যুর পূর্বে একটি কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করে তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি দান করে যান।[৪]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.