Loading AI tools
বাংলাদেশের ৫ম রাষ্ট্রপতি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
খন্দকার মোশতাক আহমেদ (১৯১৯ — ৫ মার্চ ১৯৯৬) ছিলেন একজন বাংলাদেশী আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশের ৫ম রাষ্ট্রপতি ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৫ সালের ৬ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[1]
খন্দকার মোশতাক আহমেদ | |
---|---|
বাংলাদেশের ৫ম রাষ্ট্রপতি | |
কাজের মেয়াদ ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ – ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ | |
পূর্বসূরী | শেখ মুজিবুর রহমান |
উত্তরসূরী | আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম |
ব্যক্তিগত বিবরণ | |
জন্ম | আনু. ১৯১৯ দাউদকান্দি, ত্রিপুরা জেলা, বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি, ব্রিটিশ ভারত (বর্তমান কুমিল্লা, বাংলাদেশ) |
মৃত্যু | ৫ মার্চ ১৯৯৬ ঢাকা, বাংলাদেশ |
রাজনৈতিক দল | ডেমোক্র্যাটিক লীগ |
অন্যান্য রাজনৈতিক দল | |
প্রাক্তন শিক্ষার্থী | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় |
মন্ত্রীসভা |
খন্দকার মোশতাক আহমেদ ১৯১৮ সালে ত্রিপুরা জেলার (বর্তমানে কুমিল্লা জেলা) দাউদকান্দির দশপাড়া গ্রামে তাঁর মাতুতালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পৈত্রিক নিবাস বৃহত্তর যশোর জেলার ঝিনাইদহ মহকুমায় (বর্তমানে ঝিনাইদহ জেলা)।
খন্দকার মোশতাক আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং আইনশাস্ত্রে বি.এল ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৪২ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম মহাসচিব।
খন্দকার মোশতাক ১৯৪২ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি আহমেদ যুক্তফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৫৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। কেন্দ্রীয় সরকার ১৯৫৩ সালের আর্টিকেল ৯২-এ ব্যবহার করে যুক্তফ্রন্ট সরকার ভেঙ্গে দিলে ১৯৫৪ সালে তাকে কারাবরণ করতে হয়। ১৯৫৫ সালে তিনি মুক্ত হয়ে আবার সংসদে যুক্তফ্রন্টের চিফ হুইপ হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি করার পর তিনি আবার বন্দি হন। ১৯৬৬ সালে ছয়-দফার সমর্থন করায় তাকে আবার কারাবরণ করতে হয়।[2] দেশের আটটি রাজনৈতিক দল ১৯৬৯ সালে আইয়ুব বিরোধী গণতান্ত্রিক সংগ্রাম পরিষদ গঠন করলে তাতে খন্দকার মোশতাক আহমেদ পশ্চিম পাকিস্তান অংশের সমন্বয়ক ছিলেন। ১৯৬৯ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে আইয়ুব খানের ডাকা গোল টেবিল বৈঠকে তিনি আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের সদস্য ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে তিনি পাকিস্তান জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন।
মুক্তিযুদ্ধের সময় মুজিবনগর সরকারে তিনি পররাষ্ট্র, আইন ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন।[3][4] দেশ স্বাধীন হবার পর শেখ মুজিবুর রহমানের সরকারে তিনি বিদ্যুৎ, সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব লাভ করেন। ১৯৭৫ সালে তাকে বাণিজ্য মন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি বাকশালের কার্যকরী কমিটির সদস্য ছিলেন।[5]
কিছু সেনা কর্মকর্তাদের দ্বারা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত হবার পর মোশতাক আহমেদ নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের জাতির সূর্যসন্তান বলে আখ্যা দেন।[6][7][8] এই পদে তিনি মাত্র ৮৩ দিন ছিলেন। রাষ্ট্রপতির দ্বায়িত্ব নেবার পর তিনি ইনডেমিনিটি বিল পাশ করেন। তিনি "জয় বাংলা" স্লোগান পরিবর্তন করে এর স্থলে "বাংলাদেশ জিন্দাবাদ" স্লোগান চালু করেন। এই সময় তিনি "বাংলাদেশ বেতার" এই নাম পরিবর্তন করে রেডিও পাকিস্তানের আদলে "রেডিও বাংলাদেশ" করেন। তার শাসনামলে চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, মোঃ মনসুর আলী ও এ. এইচ. এম. কামরুজ্জামানকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে (৩ নভেম্বর) হত্যা করা হয়।
১৯৭৫ এর ৩ নভেম্বরে খালেদ মোশাররফ এর নেতৃত্বে অভ্যুত্থানে খন্দকার মোশতাককে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এবং ছয়ই নভেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।[9]
১৯৭৬ সালে মোশতাক আহমেদ ডেমোক্র্যাটিক লীগ নামক এক নতুন দল প্রতিষ্ঠা করেন। একই বছর সামরিক শাসককে অপসারণের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে ২টি দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয় এবং আদালত তাকে ৫ বছরের শাস্তি প্রদান করে। জেল থেকে মুক্তিলাভের পর তিনি আবার সক্রিয় রাজনীতি শুরু করেন।[10]
১৯৯৬ সালের ৫ মার্চ তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.