কৃষ্ণাপত্তনাম বন্দর
কৃষ্ণাপত্তনাম বন্দর হল অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের নেল্লোর জেলার একটি গভীর জলের বেসরকারি বন্দর। উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কৃষ্ণাপত্তনাম বন্দর হল অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের নেল্লোর জেলার একটি গভীর জলের বেসরকারি বন্দর। উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কৃষ্ণাপত্তনাম বন্দর হল অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের নেল্লোর জেলার একটি গভীর জলের বেসরকারি বন্দর।এই বন্দর কেপিসিএল নামেও পরিচিত। জাহাজ বন্দরটি ভারতের পূর্ব উপকূলে চেন্নাই বন্দর থেকে ১৯০ কিলোমিটার (১২০ মা) ও নেল্লোর শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার (১১ মা) দূরে অবস্থিত[2][3] এবং বন্দরটির জলের গভীরতা ১৮.৫ মিটার। বন্দরটিতে হায়দ্রাবাদ ভিত্তিক সি.ভি.আর গোষ্ঠীর ৯২% ও লন্ডন ভিত্তক ৩আই গ্রুপ পিএলসি সংস্থার ৮ % শেয়ার রয়েছে।[4]
কৃষ্ণাপত্তনাম বন্দর | |
---|---|
অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
স্থানাঙ্ক | |
বিস্তারিত | |
চালু | ২০০৮ |
পরিচালনা করে | কে.পি.সি.এল-কৃষ্ণাপত্তনাম পোর্ট কোম্পানি লিমিট্রেড |
মালিক | নভযুগা ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি এল.ট.ড |
পোতাশ্রয়ের ধরন | সমুদ্র বন্দর (প্রকৃতিক পোতাশ্রয়) |
উপলব্ধ নোঙরের স্থান | ১৪ |
পরিসংখ্যান | |
বার্ষিক কার্গো টন | ৪৫ মিলিয়ন টন (২০১৭-২০১৮)[1] |
বার্ষিক কন্টেইনারের আয়তন | ৪,৮১,৪০৮ টিইইউ (২০১৭-১৮) [1] |
বার্ষিক আয় | ₹ ১৮০০ কোটি (২০১৪-২০১৫) |
ওয়েবসাইট http://www.kpcl.com/ |
এই বন্দরটি ঐতিহাসিক ভিজয়ানগর সাম্রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। এই বন্দর সেই সময় শ্রী কৃষ্ণদেবরায় কর্তৃক পরিচালিত হত। সুতরাং, এই জন্য বন্দরের নাম রাখা হয়েছে কৃষ্ণাপত্তনাম বন্দর।[5]
কৃষ্ণাপত্তনাম হল ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ রাজ্যের দক্ষিণতম উপকূলবর্তী জেলা নেল্লোরের মুথুকুর মণ্ডলের একটি বন্দর শহর। ইতিহাস বলে যে, বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সম্রাট শ্রী কৃষ্ণদেবড়িয়া এই বন্দর পরিচালনা করতেন, এই জন্য বন্দরকে কৃষ্ণাপত্তনাম বন্দর নামে অভিহিত করা হয়। বন্দরের পিছনে বকিংহাম খালের মধ্য দিয়ে ছোট নৌকা পরিচালনা করা হয় এবং দক্ষিণে চেন্নাই ও উত্তরে কৃষ্ণ নদী বদ্বীপের মধ্যে পণ্য পরিবহনের জন্য একটি জলপথ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। পরবর্তীতে ১৯৬০ সালে লৌহ আকরিক এই পোর্ট থেকে কাঠের নৌকা দ্বারা রপ্তানি করা শুরু হয় এবং ১৯৮০ সালের প্রথম দিকে ভারত সরকার বন্দরটিকে একটি ছোট পোর্ট হিসাবে ঘোষণা করে।
কৃষ্ণাপত্তনাম বন্দর (কেপিসিএল) হল ভারতের সর্ববৃহৎ বেসরকারী বন্দর। জুলাই ২০০৮ সালে ইউপিএ-এর সভাপতি সোনিয়া গান্ধী বন্দরটির উদ্বোধন করেন।[6] বন্দরটি নবযুগা ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানীর লিমিটেড দ্বারা নির্মিত হয়েছিল, অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের সাথে একটি বিল্ড-শেয়ার-ট্রান্সফার (BOST) চুক্তির অধীনে সিভিআর গ্রুপের প্রধান উদ্বেগ। বন্দরটি ৪,৫৫৩ একর এলাকা জুড়ে বিস্তৃত রয়েছে। [7] বিল্ড-শেয়ার-ট্রান্সফার চুক্তি, ৩০ বছরের জন্য কার্যকর এবং আরও ৫০ বছর পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য বন্দরের উদ্যোক্তাগন রাজ্য সরকারকে মোট রাজস্বের ২.৬% প্রথম ৩০ বছরের, ৩০ তম বছর থেকে ৫.৪% এবং ৪০ তম বছর থেকে ১০.৮% দিতে হবে।[8] চুক্তিটিও বন্দরের তিনটি পর্যায়ে বন্দরের উন্নয়ন ঘটাবে, যা প্রথম পর্যায় জানুয়ারি ২০০৮ তারিখে সম্পন্ন হয়, ২০১২ সালে দ্বিতীয় পর্যায় এবং ২০১৭ সালের চূড়ান্ত পর্যায়ে কাজ শেষ হবে।[9][10]
বন্দর উন্নয়নের প্রথম পর্যায়ে ₹১৪০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছিল এবং ২০০৯ সালে এটি সম্পন্ন হয়েছিল। এই পর্যায়ে বন্দরটি ২৫ মিলিয়ন টন একটি বার্ষিক কার্গো হ্যান্ডলিং ক্ষমতা অর্জন করেছে।[7] এই পর্যায়ে দুটি যান্ত্রিক লৌহ আকরিক বার্থ, একটি যান্ত্রিক কয়লার বার্থ এবং একটি যান্ত্রিক সাধারণ কার্গো বার্থ স্থাপন করা হয়েছে। পোর্টের উন্নয়নের দ্বিতীয় পর্যায়ে $২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ করা হয় এবং কার্গো হ্যান্ডলিং ক্ষমতা বৃদ্ধি করে ৪০ মিলিয়ন টন করা হয়। ২০১৭ সাল নাগাদ বন্দরটি সম্পূর্ণরূপে বিকশিত হলে এটি ২০০ মিলিয়ন টন কার্গো প্রতিবছর পরিচালনা করবে। সম্প্রসারণের দ্বিতীয় পর্যায়ে মোট বার্থ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হবে ১২ টি, যার অর্ধেক বার্থ কয়লা নিয়ন্ত্রণ করবে, বাকিগুলি সাধারণ, বাল্ক এবং কনটেইনারের কার্গো পরিচালনা করবে। বন্দরের জলের গভীরতা ১৮ মিটার থেকে ২১ মিটার পর্যন্ত উন্নত করা হবে।[7][11]
২০১২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে কেপিসিএল তার কন্টেইনার টার্মিনালের বছরে কন্টেইনার পরিচালনা ক্ষমতা ১.২ মিলিয়নে উন্নিত করেছিল। এই কন্টেইনার টার্মিনালে ৫ টি প্যানাম্যাক্স গেন্টরি ক্রেন, ৬৫০ মিটারের দুটি বার্থ রয়েছে এবং ১৩.৫ মিটারের চ্যানেলের গভীরতার সাথে ৮,০০০ কন্টেইনার বহনকারী জাহাজ নোঙর করতে পাড়ে। টার্মিনালটির উন্নয়নে দ্বিতীয় পর্যায়ে ১১,০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগে করা হয় এবং ৪.৮ মিলিয়ন টন পন্য পরিবহন ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়। বন্দরের মাধ্যমে বাণিজ্য সহজতর করার জন্য বন্দর ও অন্তর্দেশীয় কন্টেইনার ডিপোতে একটি কন্টেইনার মালবাহী রেল স্টেশন গড়ে তোলার জন্য কনটেইনার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া (কনকর্ক) সাথে একটি চুক্তি করেছে কেপিসিএল। [12][13][14]
কৃষ্ণাপত্তনাম বন্দর টার্মিনালটি পূর্ব উপকূলের একটি প্রধান ট্রান্স-শিপমেন্ট হাব হিসাবে আবির্ভূত হতে পারে। কিছু আন্তর্জাতিক শিপিং কন্টেইনার লাইনের মাধ্যমে গতিশীল উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে।[15]
২০০৮ সালে যখন বন্দরের উদ্বোধন করা হয়, তখন লৌহ আকরিক বন্দরটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্যসম্ভার ছিল, যা ২০০৯-১০ সালে ১০.৫ মিলিয়ন টন পরিবহন করে বন্দরটি। কর্ণাটকের বেল্লি-হোসপেট অঞ্চল থেকে লোহার আকোরিক রপ্তানি নিষিদ্ধ হওয়ার পর থেকে বন্দরটি তার পন্য পরিবহনের ভিন্নতা (পোর্টফোলিওকে বৈচিত্রপূর্ণ) আনতে বাধ্য হয়। কয়লা এখন বন্দর কর্তৃক পরিবাহিত প্রাথমিক পণ্য, বন্দরটির দ্বারা কয়লা পরিবহন ২০০৮-০৯ সালে ১,০০,০০ টন থেকে কম ছিল এবং ২০১১-১২ সালে বন্দরটি কয়লা পরিবহন করে ১১.৩ মিলিয়ন টন। বন্দরটি এখন তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস, গাড়ির পণ্যসম্ভারের রপ্তানি, ভোজ্য তেল এবং সার পরিবহন করার পরিকল্পনা করেছে।[4] ২০১২-১৩ অর্থবছরে বন্দরটি ২১.২ মিলিয়ন টন কার্গো পরিচালনা করেছিল, যার মধ্যে তিন চতুর্থাংশই আমদানিকৃত কয়লা ছিল। ২৮ মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রার বিরুদ্ধে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বন্দরটি ২৫.১৬ মেট্রিক টন পণ্য পরিবহন করে। বন্দরটি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৬০% এর অত্যন্ত চিত্তাকর্ষক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে এবং পণ্য পরিবহন আগের বছরের ২৫.১৬ মেট্রিক টন থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৪০.৭২ মিলিয়ন টন।[16] বন্দরটি ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩৬.১১ মিলিয়ন টন পণ্য পরিবহন করেছে।
বন্দরটি চেন্নাই শহর থেকে ১৯০ কিলোমিটার দূরে ও নেল্লোর শহর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই বন্দর কলকাতা- চেন্নাই রেলপথ দ্বারা যুক্ত এবং বন্দর টি ৫ নং জাতীয় সড়ক থেকে মাত্র কয়ে কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
বন্দরটি দক্ষিণ ও মধ্য অন্ধ্রপ্রদেশ, পূর্ব কর্ণাটক, উত্তর তামিলনাড়ু ও মহারাষ্ট্রের দক্ষিণ-পূর্ব অংশের পণ্য দ্রব্য আমদানি-রপ্তানি করে।
কৃষ্ণাপত্তনাম ইনফ্রাটেক প্রাইভেট লিমিটেড দ্বারা ১২,০০০ একর জমিতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) স্থাপন করা হচ্ছে বন্দরের নিকটবর্তী স্থানে এবং কেপিসিএল দ্বারা স্থাপিত হচ্ছে একটি বিশেষ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত যানবাহন ব্যস্থা। এসইজেড প্রকল্পে ₹৬০০০ কোটি টাকার একটি বিনিয়োগের সম্ভবনা রয়েছে এবং ৩০,০০০ সরাসরি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে বলে আশা করা যায়।[17] এসইজেড মাহিন্দ্রা প্রকৌশলী দ্বারা ডিজাইন করা হচ্ছে এবং একটি বহুমুখী-পণ্যের এসইজেড হিসাবে নির্মিত হবে।[18]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.