Loading AI tools
ভারতীয় রাষ্ট্রদূত উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কুলদীপ নায়ার (১৪ আগস্ট, ১৯২৩ - ২৩ আগস্ট, ২০১৮[১]) একজন ভারতীয় প্রথিতযশা প্রবীণ সাংবাদিক। তিনি রাজনৈতিক বিশ্লেষণের জন্য বিশেষভাবে প্রসিদ্ধ। তার লেখা ভারত সহ বিভিন্ন দেশের ৮০টি পত্র-পত্রিকায় ১৪টি ভাষায় প্রকাশিত হয়ে থাকে। মাতৃভাষা উর্দ্দু হলেও তিনি প্রধানত ইংরেজিতে লিখে থাকেন। জীবনের এক পর্যায়ে তিনি যুক্তরাজ্যে ভারতের হাইকমিশনার-এর দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি ব্রিটিশ ও স্বাধীন ভারতের ৮০ বৎসরের ইতিহাসের প্রত্যক্ষ সাক্ষী। তার গ্রন্থমালা ভারতের ইতিহাস ও ঐতিহাসিক বিশ্লেষণে সমৃদ্ধ। কুলদীপ নায়ারের লেখনী একাধারে গণতন্ত্র, তথ্য অধিকার ও মানবাধিকারের অতন্দ্র প্রহরী হিসাবে সক্রিয় রয়েছে। একই সঙ্গে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি প্রতিরোধে সর্ব্বদাই তিনি দৃঢ় হাতে কলম ধরেছেন। তিনি মনে করেন ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ভারত বিভাগ একটি ঐতিহাসিক বিভ্রাট যা দক্ষিণ এশিযার এই অংশে সাম্প্রদায়িকতাকে সমূলে প্রোথিত করেছে।
১৯২৩ খ্রিস্টাব্দের ১৪ই আগস্ট তারিখে কুলদীপ নায়ারের জন্ম ব্রিটিশ ভারতের অন্তর্ভূত পাঞ্জাবের শিয়ালকোট নামক স্থানে। তার পিতার নাম গুরুবাক সিং এবং মাতার নাম পূরাণ দেভী। শিখ ক্ষত্রিয় সম্প্রদায়ের এই পরিবারটির মাত্রভাষা উর্দ্দু। শৈশবে তিনি গান্ধা সিং হাই স্কুলে লেখাপড়া করেছেন; অত:পর মারী কলেজে।[২] বিএ (আনার্স) করার পর তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ণ ইউনিভার্সিটির মেডিল স্কুল অব জার্নালিজম থেকে উচ্চতর ডিগ্রী লাভ করেন। এছাড়া তিনি আইন অধ্যয়ন করতেন।
১৯৪৭-এ ব্রিটিশ ভারত বিভক্ত হয়ে দুটি রাষ্ট্র পাকিস্তান ও ভারত প্রতিষ্ঠিত হয়। হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে হিন্দু ধর্মাবলম্বী কুলদীপ পাকিস্তান ত্যাগ করেন ও ভারতে স্থায়ী হয়ে যান। শিয়ালকোট থেকে তিনি আসেন দিল্লিতে। মাতৃভূমি ত্যাগের অশ্রুবহ ঘটনা তাকে চিরকাল তাড়িয়ে নিয়ে বেড়িয়েছে। প্রভাবশালী সাংবাদিক হিসাবে ভারত-পাকিস্তানের শান্তিপূর্ণ সুসম্পর্ক প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি সর্ব্বদা সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন।
দিল্লির একটি উর্দু পত্রিকা দৈনিক আনজাম-এর রিপোর্টারের চাকরির মাধ্যমে যুবক কুলদীপ নায়ারের সাংবাদিকতার গোড়াপত্তন।[৩] পরবর্তী কালে একটি জাতীয় একটি বার্তা সংস্থায় তিনি কাজ করেছেন। দিল্লী থেকে প্রকাশিত দৈনিক স্টেটসম্যান পত্রিকায় আবাসিক সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন। মাঝে এক বছরের বিরতি ছাড়া দীর্ঘ ৪৫ বছর একটানা তিনি ‘বিটুইন দ্য লাইন’ শিরোনামে কলাম লিখছেন।
তার প্রথম চাকরি দিল্লীর দৈনিক আন্জাম পত্রিকায় রিপোর্টার হিসাবে। দৈনিক স্টেটসম্যান পত্রিকায় কাজ করেছেন দীর্ঘকাল। ১৯৯০ খ্রিস্টাব্দে তাকে লন্ডনে ভারতের হাইকমিশনার নিয়োগ করা হয়। ১৯৯৭-এর আগস্টে তিনি রাজ্যসভার সদস্য নির্ব্বাচিত হন। ২০০৭ থেকে তিনি উর্দ্দু ভাষায় পাকিস্তানের দৈনিক পত্রিকা জং এবং ওয়াক্ত-এ কলাম লিখছেন।
১৯৭৫-৭৭ মেয়াদে জরুরী অবস্থার বিরূদ্ধে লেখালিখির জন্য ইন্দিরা গান্ধী সরকার তাকে কারান্তরীণ করে।
২০১৮ সালের ২৩ আগস্ট ভোরে দিল্লির একটি হাসপাতালে প্রবীণ এই সাংবাদিক মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টুইটারে শোক প্রকাশ করে বার্তা দেন। এছাড়া আরো অনেকে শোক জানিয়েছেন।[১][৪]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.