Remove ads
হিমাচল প্রদেশের একটি জেলা উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কিন্নৌর ভারতের হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের প্রশাসনিক বারোটি জেলার একটি। জেলাটি তিনটি প্রশাসনিক এলাকায় বিভক্ত। পু, কল্পা এবং নিচর – এবং পাঁচটি তহশিল (জেলা) আছে। রিকং পিও কিন্নৌর জেলার সদরদপ্তর; এখান থেকে কিন্নৌর কৈলাশ পর্বত, (যাকে ভগবান শিবের আবাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়) দেখা যায়। ২০১১ সালের হিসাবে লাহুল এবং স্পিতির পরে কিন্নৌর জেলা হিমাচল প্রদেশের ১২ টি জেলার মধ্যে দ্বিতীয় জনবহুল জেলা।[২] কিন্তু এই জেলায় নয়টি ভাষা ব্যবহৃত হয়।[৩]
কিন্নৌর জেলা किन्नौर | |
---|---|
হিমাচল প্রদেশের জেলা | |
হিমাচল প্রদেশে কিন্নৌরের অবস্থান | |
দেশ | ভারত |
রাজ্য | হিমাচল প্রদেশ |
সদরদপ্তর | রিকং পিও |
তহশিল | হাংরাং, কল্পা,মোরাং,নিচর,পু,সাংলা |
আয়তন | |
• মোট | ৬,৪০১ বর্গকিমি (২,৪৭১ বর্গমাইল) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ৮৪,১২১ |
• জনঘনত্ব | ১৩/বর্গকিমি (৩৪/বর্গমাইল) |
• পৌর এলাকা | ০.০০% |
জনতাত্ত্বিক | |
• সাক্ষরতা | ২০১১ সালে কিন্নৌরের সাক্ষরতার হার ৮০, ২০০১ সালের ৭৫.২০ র তুলনায়।পুরুষ এবং নারীর সাক্ষরতার হার যথাক্রমে ৮৭.২৭ এবং ৭০.৯৬। ২০০১ সালে পুরুষ এবং নারীর সাক্ষরতার হার ছিল যথাক্রমে ৮৪.৩০ এবং ৬৪.৪০। কিন্নর জেলার সর্বমোট সাক্ষরতার পরিমাণ ছিল ৬০,৬৯৯ যার মধ্যে পুরুষ এবং নারী যথাক্রমে ৩৬,৬৯৭ and ২৪,০০২ তুলনায় ২০০১ সালে জেলার সাক্ষরতার হার ছিল ৫১,৯১৩ |
• লিঙ্গানুপাত | ২০১১ সালে কিন্নৌর জেলার লিঙ্গ অনুপাত প্রতি ১০০০জন পুরুষে ৮১৯ নারী।২০০১ সালে লিঙ্গ অনুপাত প্রতি ১০০০জন পুরুষে ৮৫৭ নারী ছিল।জনগণনা ২০১১ অধিদপ্তরের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতের গড় জাতীয় লিঙ্গ অনুপাত ৯৪০। ২০১১ সালের জনগণনা অনুসারে, শিশুর লিঙ্গ অনুপাত প্রতি ১০০০ ছেলেতে, ৯৫৩ জন মেয়ে,২০০১ সালে যা ছিল প্রতি ১০০০ ছেলেতে,৯৭৯ জন মেয়ে। [১] |
ওয়েবসাইট | দাপ্তরিক ওয়েবসাইট |
কিন্নর, রাজ্যের রাজধানী শিমলা থেকে ২৩৫ কিমি (১৪৬ মা) দুর। এটি পূর্ব তিব্বত সীমান্তবর্তী এবং হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের উত্তর-পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত। এটির তিনটি উচ্চ পর্বত পরিসর আছে ,জান্সকার, হিমালয় এবং ধৌলাধর যেগুলি শতদ্রু , স্পিতি,বাস্পা এই তিনটি উপত্যকা এবং তাদের শাখাগুলিকে পরিবেষ্টন করে আছে।পাহাড়ের ঢলানগুলি পুরু কাঠ, ফলের বাগান, মাঠ ও ছবির মত একটা পল্লীতে মোড়া। কিন্নর কৈলাশ পর্বতের শিখরে একটি বিখ্যাত প্রাকৃতিক শিলা শিবলিঙ্গ আছে।এই জেলাটি ১৮৮৯ সালে বহিরাগতের নিকট, প্রবেশের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।পুরানো হিন্দুস্তান-তিব্বত রোড,শতদ্রু নদীর তীর ধরে কিন্নর উপত্যকার মধ্য দিয়ে গিয়ে,পরিশেষে শিপকি লা গিরিবর্ত্মে তিব্বত প্রবেশ করে।
শুধুমাত্র এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলী সব বয়সের মানুষকে আকর্ষণ করে তা নয়।এখানকার সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, রীতিনীতি ইত্যাদিও মানুষকে সমানভাবে আকর্ষণ করে।এখানকার মানুষের গভীর বিশ্বাস ও সংস্কৃতি আছে,সাধারণত, বৌদ্ধ ও হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী।তারা বিশ্বাস করেন নির্বাসনে থাকার সময় পাণ্ডবগণ এসে এই জায়গায় বসবাস করেছিলেন(কারমু গ্রাম)। হাজার বছরের পুরানো বৌদ্ধমঠ আজও এখানে বর্তমান।বৌদ্ধ ও হিন্দু উভয় ধর্মের মানুষেরা শান্তিতে একত্রে বসবাস করেন যা প্রথাগত ভ্রাতৃত্ব ও বন্ধুত্বের প্রতীক। আপেল, চিলগোজা(বাদামী) এবং অন্যান্য শুকনো ফল এখানে উৎপাদিত হয়।উচ্চ ভূখণ্ডর জন্য এখানে দুঃসাহসিক ক্রীড়ার সুবিধা। ট্রেকিং রুটের মধ্যে 'কিন্নর কৈলাশের পরিক্রমা' একটি।
জনসংখ্যার হিসাবে,কিন্নর ভারতের ক্ষুদ্রতম জেলার একটি। এটি একটি পাহাড়ী এলাকা,যার ব্যাপ্তি ২,৩২০ থেকে ৬,৮১৬ মিটার (৭,৬১২ থেকে ২২,৩৬২ ফু)। এটি কিন্নর কৈলাশের জন্য বিখ্যাত , যে পর্বতটি হিন্দুদের নিকট অত্যন্ত পবিত্র।এটি তিব্বত সীমান্তের নিকট অবস্থিত।
বর্তমান দিনের কিন্নরবাসী, একটি সমসত্ব বা একই জাতিপ্রকৃতির নয়, বরঞ্চ তাদের আকৃতি বিশেষ আঞ্চলিক এবং জাতিগত বৈচিত্রের প্রদর্শন করেন। জাতিগত ও সাংস্কৃতিক বণ্টনটি একটু ভাল করে বোঝার জন্য , কিন্নর জেলা তিনটি আঞ্চলিক অংশে বিভক্ত করা যেতে পারে।
নিম্ন কিন্নর, কিন্নর জেলার রামপুর বুশহর শহরের সঙ্গে সীমারেখায় চোরা এবং নিচর ও সাঙলা উপত্যকাসমূহ সহ কল্পা নিয়ে গঠিত। নিম্ন কিন্নরের মানুষেরা, প্রাথমিকভাবে ভূমধ্যসাগরীয় প্রকৃত ধরনের হয়।সংলগ্ন শিমলা জেলার বসবাসরত মানুষ, যাদের সাথে তাদের কিছু সম্বন্ধ আছে, তাদের থেকে এদের পার্থক্য করা কঠিন। নিম্ন কিন্নর জেলার মানুষের বেশিরভাগই হিন্দু, যদিও নৃ-ঐতিহাসিক কারণে বৌদ্ধ প্রভাব ক্রমবর্ধমান হয়েছে।
মধ্য কিন্নর,মুরাং তহসিল সহ কনম এবং কল্পার মধ্যবর্তী এলাকা নিয়ে গঠিত। মধ্য কিন্নরের মানুষেরা মিশ্র বর্ণগত সন্তানসমূহ।কি ছুজনেরা মঙ্গোলীয় ধরনের এবং কিছুজনের মধ্যে ভূমধ্যসাগরীয় বৈশিষ্ট্য আছে।কিছু ক্ষেত্রে নানারকম মাত্রার উপরিউক্ত দুই ধরনের সংমিশ্রনের রয়েছে।অধিবাসীরা বৌদ্ধ এবং হিন্দু।অনেকের উভয় ধর্মের প্রতিই বিশ্বাস আছে। অধিকাংশ ঘরেই বৌদ্ধ পতাকা দেখতে পাওয়া যায়।
উচ্চ কিন্নর, জেলার অবশিষ্ট উত্তর-পূর্ব অংশ নিয়ে গঠিত,পো (শহর) এবং হাংরাং উপত্যকার মধ্যবর্তী এলাকা।হাংরাং উপত্যকা তিব্বতের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত। উচ্চ কিন্নরের মধ্যে সর্বপ্রধান মঙ্গোলীয় প্রকৃতির হয় ,যদিও ভূমধ্যসাগরীয় বৈশিষ্ট্যর সঙ্গে কিছু মানুষজন পু-র কাছাকাছি এলাকায় দেখা যায়।কিছু ব্যক্তির আকৃতি বিভিন্ন মাত্রায় ভূমধ্যসাগরীয় এবং মঙ্গোলীয় উপাদানের মিশ্রণ প্রদর্শন করে। তবে হাংরাং উপত্যকার মানুষ প্রায় সর্বজনীন মঙ্গোলীয় প্রকৃতির হয়। তারা বেশিরভাগই মহাযান বৌদ্ধ ধর্ম পালন করেন।
কিন্নরবাসী সঙ্গীত, নৃত্য ও গান গাওয়ায় খুবই অনুরাগী।
কিন্নর সমাজের দুটি বিস্তৃত পেশাগত গোষ্ঠী আছে - কৃষক ও কারুশিল্পীগণ,সম্ভবত বিভিন্ন জাতি বংশোদ্ভুত। এই গোষ্ঠীগুলি হল গুর্জর,কানেত,রাজপুত এবং তফসিলি জাতি।কানেতগণ প্রধানত এই অঞ্চলের চাষী সম্প্রদায় নিয়ে গঠিত এবং তারা সম্মানসূচক উপাধি নেগী ব্যবহার করেন।কানেতদের মধ্যে তিনটি শ্রেণী আছে।কানেতের প্রথম শ্রেণীতে পঞ্চাশের মতন উপ-জাতি আছে,দ্বিতীয় শ্রেণীতে সতেরটি উপ-জাতি আছে এবং তৃতীয় শ্রেণীতে তিনটি উপ-জাতি আছে,যারা কুমোরের কাজ করেন। ওয়াজা কানেতগণ, তৃতীয় শ্রেণীর অন্তর্গত এবং কানেতদের মধ্যে নিম্নস্থ মনে করা হয়। বৃত্তি উপর ভিত্তি করে দুটি তফসিলি শ্রেণী আছে।ঐতিহ্যগতভাবে এক দল জামাকাপড় বানান,অন্যদিকে আর এক শ্রেনী প্রাথমিকভাবে কামারের কাজ করেন। একটি তৃতীয় শ্রেণী/বর্ণ যারা ছুতোরের কাজ করেন। তফসিলি জাতিতে কামার ও ছুতার, তাঁতিদের থেকে নিজেদের উচ্চতর মানেন।
শিক্ষাবিদ জগতে,মূল ভাষাটি 'কিন্নরী বা কান্নরী' হিসাবে পরিচিত। এটা এখন পর্যন্ত অসংহত গবেষণায় পাওয়া,একটি তিব্বতী বর্মণ ভাষা। স্থানীয়রা যদিও এ অঞ্চলের সব কটি ভাষার ক্ষেত্রেই এই শব্দটি ব্যবহার করেন।তারা শুধু, -স্কাদ শব্দটির আগে যেখানে ভাষাটি বলা হয় সেই অঞ্চলের নাম জুড়ে দেন।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.