Remove ads
দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
কেনেথ কলিন ব্ল্যান্ড (ইংরেজি: Colin Bland; জন্ম: ৫ এপ্রিল, ১৯৩৮ - মৃত্যু: ১৪ এপ্রিল, ২০১৮) দক্ষিণ রোডেশিয়ার বুলাওয়ে এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকান আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ছিলেন। ১৯৬০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি।[১]
ব্যক্তিগত তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|---|
পূর্ণ নাম | কেনেথ কলিন ব্ল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জন্ম | বুলাওয়াও, দক্ষিণ রোডেশিয়া | ৫ এপ্রিল ১৯৩৮|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
মৃত্যু | ১৪ এপ্রিল ২০১৮ ৮০) লন্ডন, ইংল্যান্ড | (বয়স|||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ডাকনাম | গোল্ডেন ঈগল | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ব্যাটিংয়ের ধরন | ডানহাতি | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
বোলিংয়ের ধরন | ডানহাতি মিডিয়াম | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
ভূমিকা | অল-রাউন্ডার | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
আন্তর্জাতিক তথ্য | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
জাতীয় দল |
| |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
টেস্ট অভিষেক (ক্যাপ ২০৬) | ৮ ডিসেম্বর ১৯৬১ বনাম নিউজিল্যান্ড | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
শেষ টেস্ট | ২৩ ডিসেম্বর ১৯৬৬ বনাম অস্ট্রেলিয়া | |||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান | ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||||||||||||
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ২২ এপ্রিল ২০১৮ |
ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটে রোডেশিয়া, ইস্টার্ন প্রভিন্স, অরেঞ্জ ফ্রি স্টেটের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। দলে তিনি মূলতঃ অল-রাউন্ডার হিসেবে খেলতেন। ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিংয়ে পারদর্শীতা দেখিয়েছেন ‘গোল্ডেন ঈগল’ ডাকনামে পরিচিত কলিন ব্ল্যান্ড।[২]
মিল্টন হাই স্কুলে অধ্যয়ন করেছেন কলিন ব্ল্যান্ড। বিদ্যালয়ের ছাত্র অবস্থাতেই রোডেশিয়ার পক্ষে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ১৯৫৬-৫৭ মৌসুমে পিটার মে’র নেতৃত্বাধীন ইংরেজ দল দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আসে। সফরকারী দলের বিপক্ষেই তার এ অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। এরপর ১৯৫৬ থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত দলের পক্ষে ৫৫বার মাঠে নামেন।[৩] পরবর্তীকালে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রাদেশিক দল - ইস্টার্ন প্রভিন্স ও অরেঞ্জ ফ্রি স্টেটের প্রতিনিধিত্ব করেছেন।[৪]
ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনি সমান জনপ্রিয়তা লাভ করেন ও সমানভাবে কার্যকারিতা প্রকাশ করেন। ১৯৬৭-৬৮ মৌসুমে রোডেশিয়ার সদস্যরূপে তিন ঘণ্টায় ১৯৭ রান তুলেন। ব্যাটিং অনুপযোগী পিচে নিম্নমূখী রানের খেলায় বর্ডারের বিপক্ষে তার খেলার ধরন তুলে ধরেন। এছাড়াও, ডানহাতি মিডিয়াম-ফাস্ট বোলার হিসেবেও বেশ সফল ছিলেন।
দীর্ঘদেহী ও মার্জিত শৈলীর অধিকারী ডানহাতি ব্যাটসম্যান হিসেবে বেশ সুনাম কুড়িয়েছেন। ১৯৬০-এর দশকে দক্ষিণ আফ্রিকার পক্ষে ২১ টেস্টে অংশগ্রহণের সুযোগ হয় কলিন ব্ল্যান্ডের। ১৯৬১ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার টেস্ট দলের সদস্য হিসেবে মনোনীত হন। এরপর থেকে ১৯৬৬-৬৭ মৌসুম পর্যন্ত দলের নিয়মিত খেলোয়াড়ের মর্যাদা লাভ করেন। ১৯৬১-৬২ মৌসুমে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডারবান টেস্টে কেনেথ ওয়াল্টার ও পিটার পোলকের সাথে তার একযোগে টেস্ট অভিষেক পর্ব সম্পন্ন হয়। দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবৈষম্যবাদ নীতির প্রচলন থাকায় তখন দলটি কেবলমাত্র ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট খেলায় অংশ নিতো। ফলশ্রুতিতে কেবলমাত্র ২১ টেস্টে অংশ নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় কলিন ব্ল্যান্ডকে। এ সময়ে তিন সেঞ্চুরি সহযোগে ১,৬৬৯ রান তুলতে পেরেছেন।
১৯৬৩-৬৪ মৌসুমে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিডনি টেস্টে ১২৬ রান তুলেন। ঐ সিরিজে ৬১.১৬ গড়ে ৩৬৭ রান সংগ্রহ করেন তিনি। এরপর নিউজিল্যান্ডে ৬৯.০০ গড়ে ২০৭ রান করেছিলেন। ১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে পুনরায় তিনি তার দক্ষতা প্রদর্শন করেন। জোহেন্সবার্গে ১৪৪ রান তুলেন। সিরিজ শেষে ৭১.৫০ গড়ে ৫৭২ রান করেন। পরবর্তী গ্রীষ্মে ৯০৬ রান তুলেন। তিন টেস্টে ৪৭.৬৬ গড়ে ২৮৬ রান তুলেছিলেন। ঐ সফরটিই ২৯ বছরের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বশেষ সিরিজ ছিল।
১৯৬৪-৬৫ মৌসুমে জোহেন্সবার্গে সফরকারী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রান তুলেন। দক্ষিণ আফ্রিকা তখন ফলো-অনের আশঙ্কায় ভুগছিল ও দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৯/৪ থাকা অবস্থায় তিনি মাঠে নামেন। চার ঘণ্টারও অধিক সময় পিচে অবস্থান করে অপরাজিত ১৪৪ রান তুলে খেলা রক্ষা করেন।[৫]
১৯৬৫ সালে লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দূর্দান্ত ক্রীড়াশৈলী প্রদর্শনে সক্ষমতা দেখিয়েছেন। কেন ব্যারিংটনকে রান আউট করেন দর্শনীয়ভাবে। এরপর জিম পার্কসকেও একইভাবে আউট করেন। ফলে ইংল্যান্ড দল প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থেকেও ড্রয়ের পথে যেতে বাধ্য হয়।[৬]
১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে জোহেন্সবার্গে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মর্মান্তিকভাবে তার টেস্ট খেলোয়াড়ী জীবনের সমাপ্তি ঘটে। বলকে আটকাতে গিয়ে তিনি বাউন্ডারি সীমানায় আঘাতপ্রাপ্ত হন। এতে তার বাম হাঁটু গুরুতরভাবে জখমপ্রাপ্ত হয়।
ব্ল্যান্ডের পরিচিতি আসে মূলতঃ তার ফিল্ডিংয়ের কারণে। তিনি তার সময়কালে সেরা কভার ফিল্ডারের মর্যাদা পেয়েছেন। কখনোবা তাকে সেরা ফিল্ডারের আসনে বসানো হয়ে থাকে। পুরো খেলায় তৎপরতা দেখিয়ে খেলার মোড় ঘুরাতে সক্ষমতা দেখিয়েছেন।
বুলাওয়েতে জন্মগ্রহণকারী কলিন ব্ল্যান্ড ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা কভার অঞ্চলে ফিল্ডিংকারীর মর্যাদা লাভ করেছেন। গতি, ভারসাম্য রক্ষা ও বলকে উইকেটের দিকে ইপ্সিত লক্ষ্যে পাঠানোয় তার জুড়ি মেলা ভার। এরজন্যে তাকে ক্রমাগত একটি স্ট্যাম্পে লক্ষ্য নিয়ে অনুশীলন কার্য সম্পন্ন করতে হয়েছিল। তার এ কর্মকাণ্ড পরবর্তীতে ১৯৯০-এর দশকে বিখ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেটার জন্টি রোডসের মাঝে দেখা যায়। তবে, ব্যাট হাতে তেমন সফলতা না পেলেও একাকী ফিল্ডিংয়ে অতিরিক্ত ২০ থেকে ৩০ রান আটকিয়ে দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। ব্যাট হাতে অনেক সময় বোলারের মাথার উপর দিয়ে সীমানায় নিয়ে যেতে সক্ষমতা দেখান।
১৯৬৫ সালের সফর সম্পর্কে ব্রায়ান জনস্টন স্মৃতিচারণ করে বলেন যে, প্রথমবারের মতো দর্শকদের কাছে শুনতে পাই যে তারা খেলা দেখতে যাবে কেবলমাত্র একজন ফিল্ডারকে দেখার জন্যে।"[৭]
১৯৬৬ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটারের মর্যাদা লাভ করেন কলিন ব্ল্যান্ড। স্টুয়ার্ট সারিজের সাথে দুইজন খেলোয়াড়ের একজনরূপে ব্যাটিং, বোলিং কিংবা উইকেট-রক্ষণের চেয়ে ফিল্ডিংয়ের কারণে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছিলেন। ১৯৯৯ সালে পিটার ভ্যান ডার মারউইকে উইজডেন কর্তৃক এক স্বাক্ষাৎকারে বিংশ শতাব্দীর সেরা পাঁচজন অসাধারণ ক্রিকেটারের নাম জানতে চাইলে তিনি কলিন ব্ল্যান্ডকে এ তালিকায় স্থান দেন। তার সম্পর্কে মারউই জানান যে, তিনি ফিল্ডিংয়ের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছেন এবং তার সমকক্ষ আর কেউ হতে পারেননি।[৮]
১৯৬৬-৬৭ মৌসুমে সিরিজের প্রথম টেস্টের পর গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হন। ফলশ্রুতিতে, তাকে জোরপূর্বক টেস্ট আঙ্গিনা থেকে চলে আসতে হয়। তাস্বত্ত্বেও, ১৯৭৩-৭৪ মৌসুম পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অংশগ্রহণ অব্যাহত রাখেন।
১৪ এপ্রিল, ২০১৮ তারিখে ইংল্যান্ডের লন্ডনে ৮০ বছর বয়সে কলিন ব্ল্যান্ডের দেহাবসান ঘটে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.