Loading AI tools
১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত 'সারেং বৌ' চলচ্চিত্রের সঙ্গীত। উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
“ওরে নীল দরিয়া আমায় দে রে দে ছাড়িয়া” বাংলা ভাষায় রচিত চলচ্চিত্রের একটি সংগীত। এই সংগীত বা গানটি ১৯৭৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বাংলাদেশি চলচ্চিত্র সারেং বৌ-এর অন্তর্গত।[1] এই গানের গীতিকার ছিলেন মুকুল চৌধুরী। আলম খানের সুর ও সঙ্গীত পরিচালনায় এই গানে কন্ঠ দেন প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী আব্দুল জব্বার।[2][3][4] ঢাকার ইপসা রেকর্ডিং স্টুডিও-তে ধারণকৃত গানটির সঙ্গীতায়জনে নিরীক্ষামূলক রাগ সংগীতের সাথে গ্রামীণ সুরের মিশ্রণ আছে। চলচ্চিত্রে 'সারেং বউয়ের স্বামী বাড়ি ফিরে আসছেন' এমন একটি স্বপ্নে এই গানের ব্যবহার করা হয়েছে। ফারুক এই গানের দৃশ্যায়নে ঠোঁট মিলান, যিনি এই ছবিতে সারেং-এর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। জনপ্রিয়তার নিরিখে গানটির কয়েকবার পুনরুৎপাদন হয়েছে। গানটি আরটিভি কর্তৃক স্বর্ণযুগের সেরা বাংলা নাগরিক গান হিসেবে স্বীকৃত।
"ওরে নীল দরিয়া আমায় দে রে দে ছাড়িয়া" | ||
---|---|---|
সারেং বৌ অ্যালবাম থেকে | ||
আব্দুল জব্বার কর্তৃক সঙ্গীত | ||
ভাষা | বাংলা | |
মুক্তিপ্রাপ্ত | ১৬ জুন, ১৯৭৮ | |
স্টুডিও | ইপসা রেকর্ডিং স্টুডিও | |
স্থান | কাকরাইল, ঢাকা, বাংলাদেশ | |
ধারা | চলচ্চিত্র সংগীত | |
লেখক | মুকুল চৌধুরী | |
সুরকার | আলম খান | |
প্রযোজক | আলম খান | |
সঙ্গীত ভিডিও | ||
ইউটিউবে "ওরে নীল দরিয়া আমায় দে রে দে ছাড়িয়া" |
আব্দুল্লাহ আল মামুন ১৯৭৪-৭৫ সালে শহীদ বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লাহ কায়সার রচিত সারেং বৌ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্র নির্মাণের পরিকল্পনা করেন। চলচ্চিত্রে সারেং নিজের বাড়ি ফিরছে-এমন একটি দৃশ্যপটে তিনি সংগীত আয়োজনের জন্য সুরকার আলম খানকে তার পরিকল্পনার কথা জানান। আলম খান ১৯৬৯ সালে একটি অস্থায়ী সুর তৈরি করে রেখেছিলেন, যা তিনি কোন গানে ব্যবহার করেননি। আব্দুল্লাহ আল মামুনের পরিকল্পনা শুনে তিনি এই গানের সঙ্গীত আয়োজনের জন্য ঐ অস্থায়ী সুরটি মনোনীত করেন।[5] গানের গীতিকার মুকুল চৌধুরী ঐ অস্থায়ী সুর অনুযায়ী প্রথমে গানের মুখরা এবং পরবর্তীতে ছায়াছবির গল্প ও গানের দৃশ্যায়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী অন্তরা সহ সম্পূর্ণ গীতি রচনা করেন।[2][3] আব্দুল্লাহ আল মামুন এই গানে কন্ঠ দেওয়ার জন্য আব্দুল জব্বারের নাম প্রস্তাব করেছিলেন। সুরকার আলম খান আব্দুল জব্বারের কথা মাথায় রেখে গানের সুর করেছিলেন।[6][7][8]
আলম খান এই গানের জন্য দুই ধাপে সুরারোপ করেন। গানের মুখরার জন্য ১৯৬৯ সালে তৈরি করা সুর ব্যবহার করেন। গীতিকার মুকুল চৌধুরী এই গানের অন্তরা লেখার পর, অন্তরার কথা অনুযায়ী পরবর্তী সুর আরোপ করেন। নিরীক্ষাধর্মী এই গানের সুরে ভূপালি ও বিলাবল রাগের সাথে বাংলাদেশের গ্রামীণ সুরের মিশ্রণ করা হয়।[9] সঙ্গীত আয়োজনে তবলা, ঢোল, বেহালা, বাঁশি, কী-বোর্ড, জাইলোফোন, একোর্ডিয়ান ব্যবহার করা হয়েছিল। দৃশ্যায়ন পরিকল্পনা অনুযায়ী এই গানে রেলগাড়ি চলার শব্দ, সাম্পান, বৈঠা, পানির ছপছপ শব্দ এবং শেষে একতারার শব্দ সংযোজন করা হয়েছিল।[3]
গানটি কাকরাইলের ইপসা রেকর্ডিং স্টুডিওতে একক সঙ্গীত আয়োজনে ধারণ করা হয়েছিল।[2][6] সম্পূর্ণ সঙ্গীত ধারণ করার জন্য শব্দ প্রকৌশলী আব্দুল মজিদ তিনটি মাইক্রোফোন ব্যবহার করেছিলেন। একটি মাইক্রোফোনে আব্দুল জব্বারের কন্ঠ ধারণ; দ্বিতীয় মাইক্রোফোনে ১২ জন রিদম প্লেয়ারের ইফেক্ট ধারণ এবং তৃতীয় মাইক্রোফোনে ১০ জন বাদ্যযন্ত্রশিল্পীর বাজনা ধারণ করা হয়েছিল।[3]
চলচ্চিত্রে 'সারেং বউয়ের স্বামী বাড়ি ফিরে আসছেন' এমন একটি স্বপ্নে এই গানের ব্যবহার করা হয়েছে। ফারুক এই গানের দৃশ্যায়নে ঠোঁট মিলান, যিনি এই ছবিতে সারেং-এর ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। ছায়াছবির পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন এই গানের প্রথম অন্তরা রেলগাড়িতে, দ্বিতীয় অন্তরা সাম্পানে এবং সবশেষে মেঠোপথে চলচ্চিত্রায়ণ করেন।[5][7]
ওরে নীল দরিয়া, বাংলা চলচ্চিত্র সংগীতের চিরসবুজ গানগুলির মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচিত।[10] বাংলাদেশের বাইরেও এই গান জনপ্রিয়। সুইডিশ গায়িকা জয়ি প্র্যাঙ্কস এই গান গেয়েছেন।[11][12] ২০১৮ সালে আরটিভির একটি জরিপে দর্শকদের সর্বোচ্চ ভোটে এই গানটি স্বর্ণযুগের সেরা বাংলা নাগরিক গান-এর স্বীকৃতি পায়।[13][14] চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই গানটি টেলিভিশনের চলচ্চিত্র সংগীতানুষ্ঠান, কনসার্ট ও আপাতবাস্তব টেলিভিশন অনুষ্ঠানে বহুবার পরিবেশন করা হয়েছে। বিভিন্ন ব্যান্ড দল এই গানটি নতুন করে পরিবেশনের উদাহরণ রয়েছে।[15] টেলিযোগাযোগ প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন তাদের একটি বিজ্ঞাপনে এই গান ব্যবহার করেছে।[6][16]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.