ওরাওঁ
দক্ষিণ এশিয়ার উপজাতি উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ওরাওঁ, দক্ষিণ এশিয়ার একটি আদিবাসী। ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্য, ছত্রিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গে এঁদের বাস। এছাড়া, ভারতের বাইরে বাংলাদেশেও এঁরা বাস করেন। বাংলাদেশেই মূলত এখন এদের প্রধান বাস। ওরাঁওরা যে ভাষায় কথা বলেন, তার নাম কুরুখ ভাষা। তাদেরকে কুরুখ জাতিও বলা হয়। এটি দ্রাবিড় ভাষা গোষ্ঠীর অন্তর্গত।

উৎস
ওরাঁও আদিবাসীরা নৃতাত্ত্বিক বিচারে আদি-অস্ট্রেলীয় (প্রোটো-অস্ট্রেলীয়) জনগোষ্ঠীর উত্তর পুরূষ। নৃতত্ত্ববিদগণের মতে একই অম্ফলের মুণ্ডা, মালপাহাডি় ও সাঁওতালদের সঙ্গে ওরাঁওদের ঘনিষ্ঠ জনতাত্ত্বিক সম্পর্ক রযে়ছে। ভারতীয় নৃতাত্ত্বিক সোসাইটির মতানুসারে কুরুখ জাতি বা ওরাঁওদের আদিবাস ছিলো কঙ্কন অঞ্চলে যেখান থেকে তারা অভিবাসিত হয়ে উত্তর ভারতে চলে আসে।[১][২] কঙ্কনি ভাষার সাথে কুরুখ ভাষার উল্লেখযোগ্য সাদৃশ্য রয়েছে।[৩]
জনগণ
২০২০ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশে ওরাওঁ জনসংখ্যা ছিল প্রায় ২লক্ষ ৪৫ হাজার।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
অঞ্চল
বাংলাদেশে বর্তমানে সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া ও রাজশাহী জেলা ওরাওঁদের প্রধান বসতিস্থল। তবে ১৮৮১ সালের লোকগণনায় দেখা যায় যে, উত্তরবঙ্গ ছাড়াও তখন ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম, হবিগঞ্জ ও সিলেট জেলায় কিছুসংখ্যক ওরাঁও আদিবাসীর বসতি ছিল।
ধর্ম
অনেক আদিবাসী জাতির মতো ওরাঁও সমাজও সর্বপ্রাণবাদী প্রকৃতি উপাসক। তবে তাদের ধর্মবিশ্বাসে সৃষ্টিকর্তা হিসেবে সর্বশক্তিমান ‘ধরমেশ’ স্বীকৃত। এই সর্বশক্তিমানের অবস্থান সূর্যে। তাই ধর্মীয় অনুষ্ঠান অধিকাংশই সূর্যকে ঘিরে উদযাপিত হয়। এছাড়া ওরাঁও সমাজ নানা দেবতায় বিশ্বাসী। ঐসব দেবতার প্রতীকী অবস্থান গ্রাম, কৃষিসমপদ, অরণ্য, মহামারি ইত্যাদি বিষয়কে কেন্দ্র করে। এদের তুষ্টির জন্য রযে়ছে ধর্মীয় উৎসব-অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা। কোন কোন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে হিন্দুদের পূজার মিল পাওয়া যায়, যেমন হিন্দু সম্প্রদায়ের ‘ভাদু’ উৎসবের সঙ্গে ওরাওঁদের ‘কারাম’ উৎসবের মিল অত্যন্ত স্পষ্ট। কদম শাখাকে ঘিরে অনুষ্ঠিত এ উৎসবটি বৃক্ষপূজার নামান্তর।
সংস্কৃতি
ওরাওঁদের প্রধান উৎসবের নাম কারাম। বর্তমানে তারা সনাতন ও খ্রিষ্টান ধর্ম পালন করে।
তথ্য উৎস
আরও দেখুন
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.