Loading AI tools
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
এ্যানেট সুসানা এ্যাক্রয়েড বেভারীজ (১৮৪২ - ১৯২৯) ( যিনি এ্যানেট এ্যাক্রয়েড নামে অধিক পরিচিত) বাংলার নারী শিক্ষা সংস্কার কাজের জন্য এবং প্রাচ্যবিশারদ হিসেবে বিখ্যাত ছিলেন।[1] তার পুত্র লর্ড উইলিয়ম বেভারীজ একজন খ্যাতনাম ব্রিটিশ অর্থনীতিবিদ।
এ্যানেট সুসানা এ্যাক্রয়েড বেভারীজ | |
---|---|
জন্ম | ১৮৪২ |
মৃত্যু | ১৯২৯ |
পেশা | নারী শিক্ষা সংস্কার, প্রাচ্যবিশারদ |
দাম্পত্য সঙ্গী | হেনরী বেভারীজ |
তিনি ইংল্যান্ডের ওরচেস্টারশায়ারের স্টাউরব্রীজের একটি ব্যবসায়ী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। এ্যানেট তার যুগে মেয়েদের জন্য লভ্য শিক্ষার মধ্যে সর্বোচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। তিনি ১৮৬০ সাল থেকে ১৮৬৩ সাল পর্যন্ত লন্ডনের বেডফোর্ড কলেজে লেখাপড়া করেন। শিক্ষা গ্রহণের শেষে তিনি কিছুদিন কাজ করেন। এ সময় তিনি ইংল্যান্ডে কেশবচন্দ্র সেনের বক্তৃতায় উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলার নারী শিক্ষা উন্নয়নের জন্য ১৮৭৩ সালে ভারতের উদ্দেশ্যে যাত্রা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।[1] তার ভারতে আসার আগেই, মেরি অ্যান কুক ও মেরি কার্পেন্টার ভারতে এসেছিলেন এবং বেথুন ১৮৪৯ সালে মহিলাদের জন্য বেথুন স্কুল স্থাপন করেছিলেন [2] কিন্তু এই বিদ্যালয় ছাত্রীদের সেই ভাবে আকর্ষণ করেতে পারেনি।
পরবর্তীসময়ে তিনি বিখ্যাত বঙ্গীয় ব্রাহ্ম সংস্কারকের সাথে কলহে জড়িয়ে পড়েন এবং জনজীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ১৮৭৩ সালের নভেম্বর মাসে তার প্রচেষ্টার ফলে কলকাতায় ১২ জন ছাত্রী নিয়ে হিন্দু মহিলা বিদ্যালয় (পরবর্তীতে নাম হয় বঙ্গ মহিলা বিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠিত হয়। এ্যানেটের কঠোর তত্ত্বাবধানে স্কুলটি পশ্চিমা ধাঁচে পরিচালিত হচ্ছিল। ১৮৭৫ সালের ৬ এপ্রিল এ্যানেট তার পরিকল্পনায় হতাশ হয়ে বারাসাতে কর্মরত আই.সি.এস সদস্য হেনরী বেভারীজকে বিয়ে করেন এবং স্কুলটির প্রশাসনিক কর্তৃত্ব প্রগতিশীল ব্রাহ্ম সমাজের কাছে হস্তান্তর করেন। স্কুলটি কিছুদিন বন্ধ থাকার পর ১৮৭৬ সালে বাংলা মহিলা বিদ্যালয় নামে পুনরায় চালু হয়। ১৮৭৮ সাল নাগাদ বেথুন কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য স্কুলটিকে বেথুন স্কুলের সাথে সংযুক্ত করা হয়।তার বিয়ের পর বাংলা নারী শিক্ষা সংস্কার আন্দোলন একজন যোগ্য নেতৃত্ব হারায়। এ্যানেট একজন জেলা জজের স্ত্রী হিসেবে সম্পূর্ণভাবে ব্যস্ত জীবন কাটালেও সম্পূর্ণ ভিন্ন ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এ মর্যাদায় তিনি বর্তমান বাংলাদেশ এবং ভারতের বাংলা ও বিহারে ভ্রমণ করে সময় কাটান।
মধ্যযুগীয় ভারতীয় গ্রন্থাবলির নির্ভরযোগ্য ইংরেজি অনুবাদ ছিল এ্যানেটের স্থায়ী অবদান। জীবনের শেষভাগে তিনি ফার্সি ও তুর্কি ভাষা শিখতে শুরু করেন এবং প্রাচ্য ভাষা গবেষণার জগতে প্রবেশ করেন; এক্ষেত্রে তার স্বামী একজন সহযোদ্ধা ও সঙ্গী ছিলেন। তিনি একজন স্বীকৃত প্রাচ্য ভাষাবিদ এবং ফার্সি ও তুর্কি ভাষায় লিখিত গ্রন্থাবলির অনুবাদক ছিলেন। এ অনুবাদগুলির মধ্যে ছিল গুলবদন বেগমের হুমায়ুননামা এবং বাবুরনামার নতুন অনুবাদ। এ অনুবাদগুলিকে পাণ্ডিত্যপূর্ণ অনুবাদ বলে গণ্য করা হয়। রাজনৈতিকভাবে রক্ষণশীল এ্যানেট তৎকালীন ইংল্যান্ডে বিকাশমান নারী ভোটাধিকার আন্দোলনের বিরোধী ছিলেন। প্রকৃতপক্ষে, তিনি পিটফোর্ডের নারী ভোটাধিকার বিরোধী দলের সেক্রেটারি ছিলেন।[1]
এ্যানেট তার সুবিখ্যাত পুত্র লর্ড উইলিয়ম বেভারীজের লন্ডনের বাড়িতে বৃদ্ধা অবস্থায় ৮৭ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। বেভারীজ তাদের নিজস্ব চিঠিপত্রের সমৃদ্ধ সংগ্রহের ওপর ভিত্তি করে রচিত পিতা-মাতার জীবনী ইনিন্ডয়া কল্ড দেম ( India Called Them )-এ এ্যানেট ও হেনরীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।[3]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.