এরাতোস্থেনেস
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
'সাইরিনের ইরাথোস থেনিস বা ইরাটোসথেনিস (খ্রিষ্টপূর্ব ২৭৬[১] – খ্রিষ্টপূর্ব ১৯৫/১৯৪[২]) ছিলেন একজন গ্রিক গণিতজ্ঞ, ভূগোলবিদ, কবি, জ্যোতির্বিদ, এবং সঙ্গীত তত্ত্ববিদ। তিনি ছিলেন জ্ঞানপিপাসু ব্যক্তি, যিনি আলেকজান্দ্রিয়া গ্রন্থগারে কেবলমাত্র জ্ঞানার্জনের জন্য কর্মরত ছিলেন। তিনি জ্ঞানের অন্যতম শাখা ভূগোল এবং এর কতিপয় পরিভাষা উদ্ভাবন করেন, যা আজ আমদের জ্ঞান তৃষ্ণা মেটাচ্ছে।[৩]
পৃথিবীর ব্যাস আবিষ্কার
ইরাতোস্থিনিস লক্ষ করেন বছরের নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট সময়ে সিয়েনে (বর্তমান আসওয়ান, মিশর) লম্বভাবে বা সোজাভাবে পোতা দন্ড ছায়া ফেলে না। কিন্তু ঐ সময়ে আলেকজান্দ্রিয়াতে (মিশরের একটি প্রাচীন শহর) পোতা দন্ড ছায়া ফেলে। তিনি দুই স্থানের মধ্যবর্তী দূরুত্ব পরিমাপ করেন ৮০০ কিলোমিটার।

পরবর্তীতে তিনি হিসাব করে দেখেন এই দুই স্থান হতে পৃথিবীর কেন্দ্রের সংযোজক সরলরেখাদ্বয় পৃথিবীর কেন্দ্রে 7.2° কোণ উৎপন্ন করে।
7.2° ব্যবধানের জন্য মধ্যবর্তী দূরত্ব হয় = 800 কি.মি.
অতএব,360° ব্যবধানের জন্য মধ্যবর্তী দূরত্ব হয় =
কি.মি.
= 40,000 কি.মি.।
সুতরাং, পৃথিবীর পরিধি 2πr= 40,000 কি.মি.। অতএব, ব্যাসার্ধ r= 40,000/2π = 6366.18 km যা প্রায় সঠিক। উপরোক্তভাবে ইরাতোস্থিনিস সর্বপ্রথম পৃথিবীর ব্যাসার্ধ নির্ণয় করেন।
কাজ
তিনি তিন খন্ডের জিওগ্রাফিকা নামক একটি মূল্যবান গ্রন্থ রচনা করেছিলেন। বইটিতে তৎকালীন জ্ঞাত পৃথিবীর পূর্নাঙ্গ মানচিত্র সন্নিবেশ করেন এবং সমগ্র পৃথিবীকে পাঁচটি জলবায়ুভিত্তিক অঞ্চলে বিভক্ত করেন।[৪]
এরিস্টটলের সাথে মতভেদ
মহান গ্রীক দার্শনিক এরিস্টটলের সাথে জলবায়ু বিষয়ক তত্ত্বে তার মতপার্থক্য ছিলো। তিনি তাপমাত্রা ভিত্তিক অঞ্চলগুলো সম্পর্কে নিজের আলাদা তত্ত্ব প্রদান করেন। তিনি বলেন,
পৃথিবীর উষ্ণতম ও শুষ্ক মরুভূমিগুলো নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে ক্রান্তীয় এলাকার নিকটে অবস্থিত যা থেকে নিরক্ষীয় অঞ্চলের নিকটবর্তী এলাকার তাপমাত্রা তুলনামূলকভাবে কম, সেহেতু নিরক্ষীয় অঞ্চলও বাসযোগ্য পৃথিবীর অন্তর্ভুক্ত।
তিনি পৃথিবীর জলবায়ুগত নিয়ন্ত্রণের ব্যাখ্যা দিয়েছেন। তার মতে আরব অঞ্চলের অভ্যন্তরভাগ এবং উত্তরাঞ্চ খুবই অনুর্বর এবং বালুকাময়। তাই সেখানে শুধুমাত্র খেজুর ও কাটাজাতীয় বাবলা গাছ জন্মে। এখানে পানির প্রবাহ নেই বলে অধিবাসীরা অধিকাংশই উপজাতীয় যাযাবর শ্রেণির। কিন্তু আরব উপদ্বীপের উপকূলীয় অঞ্চলে সামুদ্রিক প্রভাব রয়েছে। তাই গ্রীস্মকালে বৃষ্টিপাত হয়। ফলে সেখানকার জমি অধিক উর্বর এবং পশুপালন ও কৃষিকাজের উপযোগী। তাই এই সব এলাকায় স্থায়ী বসতি গড়ে উঠেছে।
তথ্যসূত্র
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.