একুশে টেলিভিশন (২১ ফেব্রুয়ারি উল্লেখে), যা ইটিভি নামেও পরিচিত, একটি বাংলা ভাষার বাংলাদেশী বেসরকারি স্যাটেলাইট এবং কেবল টেলিভিশন চ্যানেল। এটি ঢাকার কাওরান বাজারে অবস্থিত এবং সংবাদ ও সাম্প্রতিক ঘটনা সংক্রান্ত অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল।[1]

দ্রুত তথ্য একুশে টেলিভিশন, উদ্বোধন ...
একুশে টেলিভিশন
উদ্বোধন১৪ এপ্রিল ২০০০; ২৪ বছর আগে (2000-04-14) (মূল)
২৯ মার্চ ২০০৭; ১৭ বছর আগে (2007-03-29) (পুনরায় উদ্বোধন)
বন্ধ২৯ আগস্ট ২০০২; ২২ বছর আগে (2002-08-29) (মূল)
মালিকানাআব্দুস সালাম
স্লোগানপরিবর্তনে অঙ্গিকারবদ্ধ
দেশবাংলাদেশ
ভাষাবাংলা
প্রচারের স্থানদেশজুড়ে
বিশ্বজুড়ে (অনলাইনের মাধ্যমে)
প্রধান কার্যালয়কারওয়ান বাজার, ঢাকা, বাংলাদেশ
ওয়েবসাইটwww.ekushey-tv.com
স্ট্রিমিং মিডিয়া
ekushey-tv.com/etvlive/
বন্ধ
একুশে টেলিভিশনের সদর দপ্তর, কারওয়ান বাজার ঢাকা

২০০০ সালের ১৪ই এপ্রিল এ এস মাহমুদ "পরিবর্তনে অঙ্গীকারবদ্ধ" (বর্তমানেও ব্যবহৃত) স্লোগানের মাধ্যমে একুশে টেলিভিশন নামক একটি দেশব্যাপী টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠান করেন, যা বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে প্রথম।[2][3] দ্রুতই এটি বাংলাদেশে জনপ্রিয়তা পায় এবং সেখানকার সবচেয়ে বেশি দেখা টেলিভিশন নেটওয়ার্কে পরিণত হয়।

পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ প্রচার এবং "অবৈধ" লাইসেন্সের মাধ্যমে সম্প্রচারের অভিযোগ এনে বিএনপি সরকার কর্তৃক ২০০২ সালে একুশে টেলিভিশনের সম্প্রচার বন্ধ করে দেওয়া হয়। ২০০৫ সালে এটি সম্প্রচারে ফিরে আসার লাইসেন্স পাওয়ার পর ২০০৭ সালের ২৯ মার্চে শুধু স্যাটেলাইট এবং কেবল টেলিভিশনে একুশে টেলিভিশন পুনরায় সম্প্রচার শুরু করে।[4]

দেশের প্রথমদিককার বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলির মধ্যে অন্যতম একুশে টেলিভিশন এর টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশনের অস্তিত্বের সময় বাংলাদেশের টেলিভিশন মার্কেটে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। এটি দেশ এবং এর সমাজে পরিবর্তন আনতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধও ছিল।[3] প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য একুশে টেলিভিশন স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যেও সম্প্রচার করেছিল।

ইতিহাস

১৯৯৭-২০০২: মূল টেরেস্ট্রিয়াল সম্প্রচার

বাংলাদেশে একটি বেসরকারি টেলিভিশন সংস্থার পরিকল্পনা ১৯৯৭ সালের আগের দিকে ঘটে যখন ফরহাদ মাহমুদ, এ এস মাহমুদের সন্তান, একটি স্থানীয় হোটেলে সাইমন ড্রিংয়ের সাথে যোগাযোগ করেন। তখন এটিএন বাংলা এবং চ্যানেল আই এর মতো বাংলাদেশে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল থাকতেও এগুলির কাছে টেরেস্ট্রিয়ালে সম্প্রচার করার অনুমতি ছিল না, এবং সেই অধিকার শুধু বাংলাদেশ টেলিভিশনের কাছে ছিল।

'একুশে' নামটি নির্বাচন করা হয়েছিল কারণ, ড্রিংয়ের অনুসারে, এটি ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারিতে ঘটিত বাংলা ভাষা আন্দোলন এবং আসন্ন একবিংশ শতাব্দীর একটি ইঙ্গিত। ১৯৯৯ সালের মার্চে একুশে টেলিভিশন একটি পনের বছরের লাইসেন্স পায়, যা উনাদের কে টেরেস্ট্রিয়ালে সম্প্রচার করার অনুমতি দেয়। সম্প্রচার করার জন্য উনারা বাংলাদেশ টেলিভিশনের সুযোগ-সুবিধাও ব্যবহার করতে পারবে। প্রাথমিকভাবে এটির আনুষ্ঠানিক সম্প্রচার শুরু হওয়ার কথা ছিল ১৯৯৯ সালের ১৬ ডিসেম্বরে, যা বিজয় দিবস ছিল।[5]

অবশেষে একুশে টেলিভিশন ২০০০ সালের ১৪ এপ্রিলে সম্প্রচার শুরু করে, বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি টেরেস্ট্রিয়াল টেলিভিশন চ্যানেল হিসেবে। এটি সপ্তাহের দিনে বারো ঘণ্টার জন্য এবং সপ্তাহান্তের দিনে সতের ঘণ্টার জন্য সম্প্রচার করেছে।[5] এটি দেশের জনসংখ্যার অর্ধেকের কাছে পৌঁছেছিল, এবং দ্রুতই নাগরিকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায়।[6] সংবাদ, সংস্কৃতি এবং বিনোদন সহ এর বৈচিত্র্যময় পরিসরের অনুষ্ঠানসমূহ সহ, একুশে টেলিভিশন ৪ কোটি দর্শকদের কাছে পৌঁছতে পেরেছে এবং বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি দেখা টেলিভিশন নেটওয়ার্ক হওয়ার দাবি করেছে।[3]

ড্রিং একুশেকে অনেক বাংলাদেশীদের জন্য বাহিরের বিশ্বের জানালা হিসেবে বর্ণনাও করেছেন। চ্যানেলটি বাংলাদেশ টেলিভিশনের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে ভিএইচএফ ব্যান্ডে পাঁচটি ট্রান্সমিটারে পরিচালিত ছিল। ২০০১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বরে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে হাইকোর্ট একুশে টেলিভিশনকে সাময়িকভাবে সম্প্রচার বন্ধ করার নির্দেশ দেয়, যেহেতু তারা রায় দিয়েছিল যে চ্যানেলটির সম্প্রচার করার কোনও উপযুক্ত অধিকার নেই, কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট পরে আদেশটি বাতিল করে দেয় এবং একুশে সম্প্রচার অব্যাহত রাখে।[7][8]

২০০২ সালের ২৯ আগস্টে বাংলাদেশের বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই একুশে টেলিভিশনের যুক্তরাজ্যভিত্তিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইমন ড্রিং এবং অন্য তিনজন নির্বাহীর ওয়ার্ক পারমিট বাতিল করা হয়।[9][10] এবং সমস্ত সম্প্রচার বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছিল। বাংলাদেশ সময়ে বিকাল ৫টায় এর বন্ধের আগে এটি একটি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা প্রচারিত করেছিল, একুশে সম্প্রচারের জন্য দেওয়া লাইসেন্সকে ‘অবৈধ’ বলে সুপ্রীম কোর্টের রায়ের পর।

উনারা বাংলাদেশ টেলিভিশনের সুযোগ-সুবিধাগুলিকে "অন্যায়ভাবে" ব্যবহার করার জন্য এবং বিএনপি এবং এর ইসলামপন্থী মিত্রদের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট হওয়ার জন্যও অভিযুক্ত হয়েছিল, কিন্তু একুশে এই দাবিগুলি অস্বীকার করেছিল এবং বলেছিল যে তাদের সংবাদ অনুষ্ঠান রাজনৈতিকভাবে সংযুক্ত ছিল না এবং সবসময় নিরপেক্ষ ছিল।[11][12][13] বন্ধের পর একুশের প্রতিষ্ঠাতা এ এস মাহমুদ এর পরিবারের সাথে ইংল্যান্ডে চলে যান, এবং ২০০৪ সালের ২২ জানুয়ারিতে তিনি সেইখানে মারা যান।[3] এইভাবে আজকের হিসেবে বাংলাদেশ টেলিভিশন টেরেস্ট্রিয়ালে সম্প্রচার করার বাংলাদেশের একমাত্র টেলিভিশন সংস্থা হিসেবে আবার রয়ে গেল।

অনুষ্ঠানসমূহ

সাইমন ড্রিং

১৯৯৭ সালে একুশে'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে সাইমন ড্রিং গুরুদায়িত্ব পালন করেন। তার সহযাত্রি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট সাংবাদিক মিশুক মুনীর | ২০০২ সালে একুশে টেলিভিশন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে প্রচলিত সম্প্রচার আইন লঙ্ঘনজনিত কারণে তাদের সম্প্রচার কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে সরকার কর্তৃক তিনি এবং তাঁর সহযোগী তিনজন নির্বাহী পরিচালক প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে অভিযুক্ত হন।[14]

আরও দেখুন

তথ্যসূত্র

বহিঃসংযোগ

Wikiwand in your browser!

Seamless Wikipedia browsing. On steroids.

Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.

Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.