উত্তরা (নগর)
বাংলাদেশের ঢাকা শহরের একটি উপশহর উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
বাংলাদেশের ঢাকা শহরের একটি উপশহর উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
উত্তরা মডেল টাউন বা কেবল উত্তরা হল বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার একটি শহরতলি। উত্তরা নামটি এসেছে বাংলা শব্দ উত্তর থেকে। এটি গাজীপুর যাওয়ার পথে এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন স্থানে অবস্থিত।
উত্তরা | |
---|---|
শহরতলি | |
উত্তরা মডেল টাউন | |
উত্তরার অবস্থান | |
স্থানাঙ্ক: ২৩.৮৬৬৭° উত্তর ৯০.৪০৪২° পূর্ব | |
দেশ | বাংলাদেশ |
বিভাগ | ঢাকা বিভাগ |
জেলা | ঢাকা জেলা |
সিটি কর্পোরেশন | ডিএনসিসি |
প্রতিষ্ঠাকাল | ১৯৬৬ |
প্রতিষ্ঠাতা | রাজউক |
আয়তন | |
• মোট | ৩৬.৯১ বর্গকিমি (১৪.২৫ বর্গমাইল) |
উচ্চতা[1] | ২৩ মিটার (৭৫ ফুট) |
জনসংখ্যা (২০১১) | |
• মোট | ১,৭৯,৯০৭ |
• জনঘনত্ব | ৪,৮৭৪.২০/বর্গকিমি (১২,৬২৪.১/বর্গমাইল) |
সময় অঞ্চল | বিএসটি (ইউটিসি+৬) |
ডাক কোড | ১২৩০ |
১৯৬৬ সালে ঢাকা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট, ঢাকা জেলায় নর্থ স্যাটেলাইট টাউন প্রকল্প-এর অধীনে একটি স্যাটেলাইট টাউন নির্মাণের পরিকল্পনা করে। ১৯৮০ সালে ডিআইটি উত্তরা আবাসিক মডেল টাউন প্রকল্পে প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করে।[2]
রাজউক[টীকা 1] ১৯৯২ সালে প্রকল্পের প্রথম ধাপ সম্পন্ন করে। এ পর্যায়ে রাজউক ৯৫০ একর জমিতে বিভিন্ন আকারের ৬ হাজার প্লট বরাদ্দ দিয়েছে।[4] ১ম পর্বে সমাপ্ত সেক্টরগুলি হল সেক্টর ১, সেক্টর ২, সেক্টর ৩, সেক্টর ৪, সেক্টর ৫, সেক্টর ৬, সেক্টর ৭, সেক্টর ৮, সেক্টর ৯, এবং সেক্টর ১০৷
উত্তরা মডেল টাউনের দ্বিতীয় পর্যায় ১৯৯২ সালে[5] শুরু হয় ও ১৯৯৮ সালে সমাপ্ত হয়। ২য় পর্বে সম্পন্ন করা সেক্টরগুলো হল সেক্টর ১১, সেক্টর ১২, সেক্টর ১৩ এবং সেক্টর ১৪৷
তৃতীয় পর্যায়ের সময় প্রায় ২,১৫০ একর (৮.৭ বর্গকিলোমিটার) জমি অধিগ্রহণ করা হয়। প্রায় ১০,০০০ আবাসিক প্লট এবং ২২৫,৫১২ অ্যাপার্টমেন্ট সহ সুযোগ-সুবিধা এবং নগর সুবিধা প্রদান করা হয়েছিল। তৃতীয় ধাপের আনুমানিক ব্যয় ছিল ২৩.১৬ বিলিয়ন টাকা। সম্প্রসারণ প্রকল্পের সময়সীমা জুন ২০২২ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।[4] ৩য় পর্যায়ে পরিকল্পিত সেক্টরগুলি হল সেক্টর ১৫, সেক্টর ১৬, সেক্টর ১৭ ও সেক্টর ১৮৷
২০১১ সালের বাংলাদেশ আদমশুমারিতে উত্তরার জনসংখ্যা ছিল ১৭৯,৯০৭ জন। ২০১১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পুরুষ জনসংখ্যার ৫৬.৩৩% এবং মহিলা ৪৩.৬৭% এবং উত্তরার জনসংখ্যার প্রায় ৮০% প্রাপ্তবয়স্ক। উত্তরার সাক্ষরতার হার ৯০.৪৯% (৭+ বছর)।[6]
উত্তরা সেক্টর নামে প্রশাসনিক ও ভৌগোলিক বিভাগে বিভক্ত। উত্তরায় ১৮টি সেক্টর রয়েছে।[7] প্রতিটি সেক্টর পৃথক সেক্টর কল্যাণ সংঘের অধীনে রয়েছে।[8] উত্তরার সকল সেক্টর কল্যাণ সমিতিগুলো নিয়ে গঠিত উত্তরা সমিতি।[9] উত্তরার এলাকাগুলো ডিএনসিসির ১ নং ওয়ার্ড[10] ও ৫১ নং ওয়ার্ডের অধীনস্থ।[11] । রাজনৈতিকভাবে এই এলাকা ঢাকা-১৮ আসনের আওতাধীন।[12]
উত্তরা একটি পরিকল্পিত শহর এবং ঢাকার অভিজাত শহরতলির একটি।[21] সে জন্য এবং অনেক আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্যের জন্য, উত্তরা ঢাকার অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান।[22] ২০১৯ সালে বি-প্রপার্টি পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী, বসবাসের জন্য উত্তরা ঢাকাবাসীর প্রথম পছন্দ। বি-প্রপার্টির প্রধান নির্বাহী মিঃ নুসওয়ার্দী বলেন, চাহিদার কারণে উত্তরায় অ্যাপার্টমেন্টের দামও দিন দিন বাড়ছে। তিনি আরও বলেন, ‘আগামী দশ বছরের মধ্যে ঢাকা উত্তরার খুব কাছের পূর্বাচলে স্থানান্তরিত হবে। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে কয়েক বছরের মধ্যে। এছাড়াও, এলাকাটি বিমানবন্দরের কাছাকাছি। অনেক ব্যবসা উত্তর দিকে চলে যাচ্ছে। ফলে মানুষ থাকার জন্য উত্তরাকেই বেছে নিচ্ছে।"[23]
উত্তরা বাংলাদেশি নাটকের চিত্রধারণের জন্য জনপ্রিয়।[24] বেশিরভাগ নাটকের শুটিং হয় এই এলাকায়।[25]
৭ নম্বর সেক্টরের সেতুর চারপাশে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের পথখাবারের দোকান। রয়েছে ফুচকা, চাটপাটি, দই ফুচকা, চিকেন ফ্রাই, চিকেন স্পাইসি, ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, সল্টেড কেক, চিকেন রোল, নুডলস ও কফি কর্নার।[26] উত্তরায় অনেক রেস্টুরেন্ট আছে। অনেকেই খেতে যান এসব রেস্টুরেন্টে।[27]
উত্তরা মডেল টাউনে ৮টি পার্ক রয়েছে। এগুলো ৩, ৪, ৫, ৭, ১১, ১২, ১৩ ও ১৪ নম্বর সেক্টরে অবস্থিয়। এছাড়াও ৩, ৫, ৭, ৯, ১১, ১৩ ও ১৪ নম্বর সেক্টরে রয়েছে হ্রদ। ফান পার্ক এবং ইলেকট্রোফান নামে উত্তরায় দুটি শিশু বিনোদন কেন্দ্র রয়েছে।[28] ১৫ নম্বর সেক্টরে ফ্যান্টাসি আইল্যান্ড নামে একটি শিশু বিনোদন পার্ক রয়েছে।[29]
অনেক পরিবহনব্যবস্থা উত্তরায় বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে।[30] এই শহরে অনেক ট্যাক্সি পরিষেবা পাওয়া যায় যেমন উবার,[31] সহজ ইত্যাদি।
উত্তরার বাসিন্দারা বিভিন্ন উদ্দেশ্যে কাছাকাছি বা প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাতায়াতের জন্য ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন ব্যবহার করে।[32] যা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বিপরীতে অবস্থিত,[33] বিমানবন্দর সড়ক থেকে এখানে প্রবেশ করা যায়।
নির্মাণাধীন ঢাকা মেট্রো রেলের প্রথম রুট, মূলত উত্তরা থেকে রাজধানীর দক্ষিণে সায়েদাবাদ[34] থেকে শুরু হওয়ার কথা ছিল।[35] এটি মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত লাইন সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উত্তরায় তিনটি মেট্রো স্টেশন তৈরি করা হবে, যার মধ্যে রয়েছে: উত্তরা উত্তর, উত্তরা মধ্য এবং উত্তরা দক্ষিণ।[36]
ঢাকার কুর্মিটোলায় একটি বিমানবন্দর রয়েছে যার নাম শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। আট লেনের বিমানবন্দর সড়ক দিয়ে এখানে যাওয়া যায়।[37] বিমানবন্দরের উত্তরে উত্তরা এলাকা এবং গাজীপুর শহর এবং দক্ষিণে ঢাকা শহর অবস্থিত। বিমানবন্দরের বাইরে (মুখোমুখী) একটি রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে যার নাম ঢাকা বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন।[33]
৩ নং সেক্টরে একটি সাব-পোস্ট অফিস রয়েছে।[44] এর পোস্টাল কোড হল ১২৩০।
উত্তরার সেক্টর ১২-এ একটি আরপিও (আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস) রয়েছে।[45]
উত্তরা শহরে দুটি থানা রয়েছে।
উত্তরায় অনেক হাসপাতাল আছে। ৬ নং সেক্টরে কুয়েত বাংলাদেশ মৈত্রী সরকারি হাসপাতাল নামে একটি সরকারি হাসপাতাল আছে।
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.