Loading AI tools
বাংলার মুঘল সুবাহদার উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ইসলাম খান মাশহাদি বাংলার সুবাহদার ছিলেন। তিনি ১৬৩৫ সাল থেকে ১৬৩৯ সাল পর্যন্ত[1] বাংলার সুবাহদার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।[2] তিনি বাংলার সুবাহদার হবার পূর্বে গুজরাটের শাসনকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন।[3]
ইসলাম খান মাশহাদি | |
---|---|
বাংলার সুবাহদার | |
কাজের মেয়াদ ১৬৩৫ – ১৬৩৯ | |
পূর্বসূরী | আযম খান |
উত্তরসূরী | শাহ সুজা |
ইসলাম খান মাশহাদির শাসনামলে আসাম ও আরাকানের সাথে মুঘলদের বিরোধের নজির দেখা গিয়েছিল। আসামের রাজা প্রতাপ সিং কামরূপের রাজা পরীক্ষিত নারায়ণের ভাই বলী নারায়ণকে কামরূপ আক্রমণে প্ররোচনা প্রদান করে তার গৃহীত সম্প্রসারণ নীতির প্রয়োগ শুরু করেন। এছাড়া, কামরূপের মুঘল থানাদার রাজা ছত্রজিৎ মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা করে বলী নারায়ণকে কামরূপের মুঘল সদর দফতরে হাজো আক্রমণে উৎসাহিত করেন। কামরূপের ফৌজদার আবদুস সালামের সাহায্যার্থে ইসলাম খান শেখ মহিউদ্দীন, মুহম্মদ সালিহ্ কাম্বুহ্, মির্জা মুহম্মদ বুখারী ও জয়নাল আবেদীনের অধীনে সৈন্য সাহায্য প্রেরণ করেন। প্রথমদিকে মুঘল বাহিনী শত্রুপক্ষকে সীমান্তের ওপারে বিতাড়িত করে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত মুঘল বাহিনী প্রতিপক্ষ অহোম বাহিনীর আক্রমণ ও ছত্রজিতের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে পরাজয় বরণ করে।[3] এরপর, মীর জৈনউদ্দীন আলীর নেতৃত্বে ঢাকা থেকে আরেকটি বাহিনী প্রেরণ করা হয়। তারপর, মুঘল বাহিনী অহোমদের পরাজিত করে এবং ধুবড়ি পর্যন্ত অগ্রসর হয় ও ছত্রজিৎ মুঘল বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়।[3] এরপর ছত্রজিৎকে ঢাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয় ও ছত্রজিৎ মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন। যুদ্ধের পর মুঘল বাহিনী শ্রীঘাট ও পান্ডু অধিকার করে এবং বলী নারায়ণ আসামে পালিয়ে যান।[3] ১৬৩৮-৩৯ সালে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে সম্পাদিত চুক্তির ফলে দ্বিপাক্ষিক শত্রুতার অবসান ঘটে এবং উত্তরে বরনদী পর্যন্ত রাজ্যের সীমানা প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন গৌহাটিতে মুঘল সদর দফতর প্রতিষ্ঠিত হয়।[3]
অহোম-মুঘল দ্বন্দ্বের অবসানের পর আরাকানের সঙ্গে মুঘলদের বৈরী সম্পর্কের সূচনা ঘটে। ১৬৩৮ সালে আরাকানের রাজা শ্রীসুদর্শনের মৃত্যু হলে এক রাজকর্মচারী "নরপতি" উপাধি ধারণ করে সিংহাসন দখল করেন।[3] এরপর, শ্রীসুদর্শনের ভাই মংগত রায় চট্টগ্রামে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং আরাকানের ক্ষমতা দখলকারীকে বিতাড়িত করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তার সৈন্য সংখ্যা কম হওয়ায় তিনি মুঘলদের সাহায্য প্রার্থনা করেন। ইসলাম খান মাশহাদি মংগত রায়কে সাহায্য করার জন্য ভুলুয়া ও জগদিয়ার মুঘল থানাদারদের নির্দেশ দেন। মুঘল বাহিনী আরাকান নৌবাহিনীকে পিছু হটতে বাধ্য করে এবং মংগত রায় ফেনী নদী অতিক্রম করতে সক্ষম হন।[3] এরপর, মুঘল বাহিনীর শত্রুপক্ষ মুঘল বাহিনীর ওপর আক্রমণ চালায়। তখন ইসলাম খান পুনরায় সৈন্য সাহায্য পাঠান এবং হামলাকারীদের পুনরায় পিছু হটতে বাধ্য করেন।[3] এরপর, চট্টগ্রামে বসতি স্থাপনকারী পর্তুগিজরা মংগত রায়ের পক্ষ অবলম্বন করে। তারপর, পর্তুগিজ নৌবাহিনীর সাহায্য বঞ্চিত আরাকানিদের নৌশক্তি দিন দিন দুর্বল হতে থাকে। এটি ১৬৬৬ সালে শায়েস্তা খানের অধীনে মুঘলদের চট্টগ্রাম অধিকারের পথ প্রশস্ত করেছিল।[3]
অহোমীয় ও আরাকানিদের সাথে মুঘলদের দ্বন্দ্বের অবসান ঘটার পর ইসলাম খান মাশহাদিকে প্রধানমন্ত্রীর (উজির-ই-দিউয়ান-ই-আলা) দায়িত্ব গ্রহণের জন্য মুঘল রাজ দরবারে আনা হয় এবং তার স্থলে শাহ সুজাকে বাংলার সুবাহদার হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।[3][4]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.