Loading AI tools
মুহাম্মদ তাকি উসমানির বই উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
ইসলামী ব্যাংকিং ও অর্থায়ন পদ্ধতি দেওবন্দি ইসলামি পণ্ডিত ও আধুনিক ইসলামি ব্যাংকিংয়ের অন্যতম স্বপ্নদ্রষ্টা মুহাম্মদ তাকি উসমানির ইংরেজি ভাষায় রচিত ইসলামি ব্যাংকিং ও অর্থসংস্থান বিষয়ে একটি গবেষণামূলক প্রামাণ্য গ্রন্থ যাতে লেখক প্রচলিত অর্থায়ন পদ্ধতি ও ব্যাংকিং পদ্ধতি ইসলাম মােতাবেক ঢেলে সাজানাের উপায় বাস্তব উদাহরণসহ ইসলামি অর্থায়ন সম্পর্কিত মৌলনীতিসমূহের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ, বিভিন্ন প্রশ্ন ও সমস্যা সম্পর্কে বিস্তারিত আলােকপাত করেছেন। গ্রন্থটি ইসলামি অর্থনীতিবিদ ও আলেমদের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছে এবং লেখক ইসলামি উন্নয়ন ব্যাংক পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।
লেখক | মুহাম্মদ তাকি উসমানি |
---|---|
মূল শিরোনাম | ইংরেজি: An introduction to Islamic finance, প্রতিবর্ণীকৃত: এন ইন্ট্রোডাকশন টু ইসলামিক ফাইনেন্স |
অনুবাদক |
|
প্রচ্ছদ শিল্পী | ইবনে মুমতায |
দেশ | পাকিস্তান |
ভাষা | ইংরেজি (মূল) |
মুক্তির সংখ্যা | ১ খণ্ড |
বিষয় | ইসলামি ব্যাংকিং ও অর্থসংস্থান[1][2][3] |
প্রকাশিত |
|
প্রকাশক | ইদারাতুল মাআরিফ (ইংরেজি), মাকতাবাতুল আশরাফ (বাংলা) |
মিডিয়া ধরন | |
পৃষ্ঠাসংখ্যা |
|
আইএসবিএন | ৯৭৮৯০৪১১১৬১৯২ |
ওসিএলসি | ৪৯৪৯৫২০২ |
৩৩২/.০৯১৭/৬৭১ | |
এলসি শ্রেণী | এইচজি১৮৭.৪ .ইউ৮৬ ২০০২ |
ওয়েবসাইট | imam.gov.bd |
লেখক ১৯৯৮ সালে এই গ্রন্থটি রচনা করেন, যা সর্বপ্রথম “An Introduction To Islamic Finance” নামে প্রকাশ করেছিল পাকিস্তানের করাচিতে অবস্থিত ইদারাতুল মাআরিফ। পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ভারত থেকেও এটি প্রকাশিত হয়েছে। পাকিস্তানের ইসলামি পণ্ডিত মুহাম্মদ যাহিদ “ইসলামি ব্যাংকারি কি বুনিয়াদি” নামে এই গ্রন্থের উর্দু অনুবাদ করেছেন। ২০০৫ সালে এই গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ করেন ঢাকার জামিয়া কারিমিয়া আরাবিয়ার অধ্যাপক মুহাম্মদ জাবের হুসাইন। এটি প্রকাশ করেছে মাকতাবাতুল আশরাফ। ‘মুকাদ্দিমাতুন ফিত তামওয়িলিল ইসলামি’ (مقدمة في التمويل الإسلامي) নামে এর একটি আরবি অনুবাদ প্রকাশ করেছে দামেস্কের দারুর রাওয়াদ, অনুবাদক উমর আহমদ কাশখার।[4] এছাড়াও বিভিন্ন ভাষায় এর অনুবাদ সহজলভ্য।
বইটি সহজ ভাষায় রচিত হয়েছে, যাতে ইসলামি অর্থনীতির সাথে অপরিচিত যেকেউই বুঝতে পারে।[5][6] ‘জার্নাল অফ ইসলামিক ফাইনান্স’ এর একটি পর্যালোচনায় বলা হয়েছে,
“ | ইসলামি অর্থায়ন সম্পর্কে এটি দুর্দান্ত একটি কাজ, আমাদের বিশ্বাস ইসলামি অর্থায়ন শিখতে এবং জানার ইচ্ছুকদের জন্য বইটি অপরিহার্য, কাজটি উচ্চমানের এবং এর বহুগুণ রয়েছে। | ” |
— [4] |
লেখক গ্রন্থটি রচনার কারণ উল্লেখ করতে গিয়ে বলেছেন,
“ | বিগত কয়েক দশক যাবৎ মুসলমানগণ তাঁদের জীবনকে ইসলামি মূলনীতির ভিত্তিতে নতুন করে বিনির্মাণের প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। মুসলমানগণ প্রচন্ডভাবে এ কথা অনুধাবন করতে পেরেছে যে, বিগত কয়েক শতাব্দী যাবৎ পাশ্চাত্যের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক আগ্রাসন তাদেরকে বিশেষভাবে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে আল্লাহ প্রদত্ত জীবনব্যবস্থার উপর আমল করা থেকে বঞ্চিত করে রেখেছে। ফলে রাজনৈতিক স্বাধীনতা লাভের পর মুসলিম জনগণ তাদের জীবনকে ইসলামি শিক্ষার আলােকে সাজানাের লক্ষ্যে নিজেদের ইসলামি স্বাতন্ত্র্য ও স্বকীয়তাকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অর্থনৈতিক অঙ্গনে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে শরীয়াহ মোতাবেক পরিচালনা করার লক্ষ্যে সেগুলােতে সংস্কার সাধন করা মুসলমানদের জন্য এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। বিশেষত এমন এক পরিবেশে যার গােটা অর্থ ব্যবস্থা সুদের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে সে পরিবেশে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে সুদবিহীন ভিত্তির উপর পুনর্গঠন করা অত্যন্ত দুরূহ কাজ। যেসব লােক শরীয়তের মূলনীতি, আদর্শ এবং তার অর্থনৈতিক দর্শন সম্পর্কে পুরােপুরি ওয়াকিফহাল নন, তারা কখনও কখনও মনে করে থাকেন যে, ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সুদমুক্ত করলে উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলাে আর ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান থাকবে না বরং সেগুলাে সমাজ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে রূপারিত রূপান্তরিত হয়ে যাবে। যার উদ্দেশ্য হবে বিনা লাভে আর্থিক সেবা প্রদান করা। প্রকৃতপক্ষে এ ধারণাটি সম্পূর্ণ ভ্রান্ত। শরিয়তের দৃষ্টিতে সুদবিহীন ঋণ একটি নির্দিষ্ট পরিমণ্ডলের জন্য; ব্যাপকভাবে ব্যবসায়িক লেনদেনের জন্য নয়। বরং তা পারস্পরিক সহযােগিতা এবং কল্যাণমুখী কর্মকাণ্ডের জন্য হয়ে থাকে। তবে যেখানে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পুঁজি সরবরাহের প্রশ্ন জড়িত সেখানে ইসলামি শরিয়তের নিজস্ব এক স্বয়ংসম্পূর্ণ দিক নির্দেশনা বা নীতিমালা রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ইসলামের মূলনীতি হলাে, যে ব্যক্তি অপরকে ঋণ প্রদান করছেন তাকে প্রথমে এ সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, তিনি কি এ ঋণ দ্বারা শুধু দ্বিতীয় পক্ষকে সাহায্য করতে চান, নাকি তার মুনাফায় অংশীদার হতে চান? যদি তিনি এ ঋণ প্রদানের মাধ্যমে ঋণগ্রহীতাকে কেবল সাহায্য করতে চান তাহলে ঋণগ্রহীতা থেকে ঋণের পরিমাণের চেয়ে অতিরিক্ত দাবী করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তার মূল পুঁজি নিরাপদ ও সুরক্ষিত থাকবে (অর্থাৎ দ্বিতীয় পক্ষের ক্ষতি বা লােকসান হলেও ঋণদাতার মূলধন ফেরৎ পাওয়ার অধিকার সংরক্ষিত থাকবে)। কিন্তু মূল পুঁজির অতিরিক্ত কোন মুনাফার হকদার তিনি হবেন না। আর তিনি যদি অন্যকে এই উদ্দেশ্যে পুঁজি সরবরাহ করেন যে, তার ব্যবসায় অর্জিত মুনাফায় অংশ নিবেন এমতাবস্থায় তিনি অর্জিত মুনাফায় পূর্ব সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আনুপাতিক হারে মুনাফা দাবী করতে পারবেন। তবে, এ ক্ষেত্রে যদি লােকসান হয়ে যায় তাহলে তাকে উক্ত লােকসানেরও দায় বহন করতে হবে। সুতরাং এ থেকে প্রতীয়মান হয় যে, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে সুদের পরিসমাপ্তির অর্থ এই নয় যে, পুঁজির যােগানদাতা কোন মুনাফা অর্জন করতে পারবে না। বরং যদি ব্যবসার উদ্দেশ্যে পুঁজির যোগান দেওয়া হয়, তাহলে লাভ লােকসানে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এ লক্ষ্য অর্জিত হতে পারে। এ জন্যই ইসলামি বাণিজ্য আইনের শুরুতেই মুশারাকা এবং মুদারাবা পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এমন কিছু ক্ষেত্র আছে যে সকল ক্ষেত্রে কোনভাবেই মুশারাকা এবং মুদারাবা পদ্ধতিতে অর্থায়ন করা যায় না, সেসব ক্ষেত্রে অর্থায়নের জন্য সমকালীন আলিমগণ অন্যান্য কিছু প্রক্রিয়াও উদ্ভাবন করেছেন, যেগুলাে অর্থায়নের লক্ষ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন- মুরাবাহা, ইজারা, সালাম এবং ইসতিসনা। বিগত দু'দশক যাবৎ ইসলামি ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে অর্থায়নের ইসলামি পদ্ধতিসমূহ ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে তা পরিপূর্ণভাবে সুদী অর্থায়নের বিকল্প নয়। আবার এ ধারনাও সম্পূর্ণ ভ্রান্ত যে, ইসলামি অর্থায়ন পদ্ধতিসমূহ হুবহু সুদী অর্থায়ন পদ্ধতির ন্যায় ব্যবহার করা যায়। বরং ইসলামী অর্থায়ন পদ্ধতিসমূহের রয়েছে নিজস্ব মূলনীতি, দর্শন এবং শর্তাবলী। যেগুলাে ব্যতীত সে পদ্ধতিসমূহকে শরীয়তের দৃষ্টিতে অর্থায়ন পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার করা বৈধ হবে না। সুতরাং এ পদ্ধতিসমূহ সম্পর্কে মৌলিক ধারণার অভাব এবং তৎসংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে অজ্ঞতা ইসলামি অর্থায়নকে সুদভিত্তিক প্রচলিত অর্থায়নের সাথে খলত-মলত ও জগাখিচুড়ি করে ফেলার কারণ হয়ে যেতে পারে। আমার বক্ষমান এ গ্রন্থটি বিভিন্ন বিষয় সংবলিত। যার উদ্দেশ্য ইসলামি অর্থায়নের মূলনীতি এবং তার নিয়মাবলী সম্পর্কে মৌলিক ধারণা দেয়া। বিশেষ করে অর্থায়নের যে পদ্ধতিসমূহ ইসলামি ব্যাংক এবং অন্যান্য নন-ব্যাংকিং অর্থায়ন প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত হচ্ছে সেসব অর্থায়ন পদ্ধতির গভীরে বিদ্যমান মূলনীতিসমূহ শরিয়তের দৃষ্টিতে গ্রহণীয় হওয়ার জন্য প্রয়ােজনীয় শর্তাবলী এবং সেগুলাে বাস্তবায়নের পদ্ধতিসমূহ সবিস্তারে বর্ণনা করার প্রয়াস পেয়েছি। সাথে সাথে ঐ পদ্ধতিসমূহ বাস্তবায়ন ও প্রয়ােগের ক্ষেত্রে উদ্ভূত বাস্তব সমস্যাবলী এবং শরিয়তের আলােকে সেগুলাের সম্ভাব্য সমাধানের উপরও আলােকপাত করেছি। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কয়েকটি ইসলামি ব্যাংকের শরীয়াহ সুপারভাইজারী বাের্ডের সদস্য বা চেয়ারম্যান হওয়ার সুবাদে আমার কাছে তাদের কর্মপদ্ধতি যথেষ্ট দুর্বল হিসেবে পরিলক্ষিত হয়েছে। যার মৌলিক কারণ হল, শরিয়তের সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলী, সম্পর্কিত মূলনীতি ও নিয়ম কানুন সম্পর্কে সম্যক ধারণা না থাকা। এ বাস্তব অভিজ্ঞতা বক্ষমান গ্রন্থটি পাঠকদের খেদমতে উপস্থাপন করার প্রয়ােজনীয়তার অনুভূতিকে শাণিত করেছে। গ্রন্থটিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়বস্তুর উপর আমি সহজবােধ্য ও সাবলীলভাবে আলােকপাত করেছি যেন সাধারণ পাঠকবৃন্দ যাদের ইসলামি অর্থায়নের নীতিমালা গভীরভাবে অধ্যয়নের সুযােগ হয়নি তারাও সহজে অনুধাবন করতে পারেন। আশাকরি আমার এ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা ইসলামী অর্থায়নের নীতিমালা এবং ইসলামি ব্যাংকিং ও প্রচলিত ব্যাংকিংয়ের মধ্যকার পার্থক্য সহজভাবে অনুধাবন করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। | ” |
— [7] |
গ্রন্থের শুরুতে লেখক একটি পাণ্ডিত্যপূর্ণ ভূমিকা দিয়েছেন। আলোচ্য বিষয় ও অধ্যায় সমূহ:[7]
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.
Every time you click a link to Wikipedia, Wiktionary or Wikiquote in your browser's search results, it will show the modern Wikiwand interface.
Wikiwand extension is a five stars, simple, with minimum permission required to keep your browsing private, safe and transparent.