ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট
উইকিপিডিয়া থেকে, বিনামূল্যে একটি বিশ্বকোষ
দি ইস্ট বেংগল রেজিমেন্ট বা ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি পদাতিক রেজিমেন্ট। এটি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সর্ববৃহৎ সংগঠন। এই রেজিমেন্টটি প্রতিষ্ঠা করেন মেজর আবদুল গণি।[৩]
দি ইস্ট বেংগল রেজিমেন্ট | |
---|---|
![]() রেজিমেন্টের চিহ্ন | |
সক্রিয় | ১৫ই ফেব্রুয়ারি ১৯৪৮-বর্তমান |
দেশ | বাংলাদেশ |
শাখা | বাংলাদেশ সেনাবাহিনী |
ধরন | পদাতিক |
ভূমিকা | পদাতিক যুদ্ধ |
আকার | ৪৫টি ব্যাটালিয়ন[১] |
অংশীদার | রেজিমেন্ট |
গ্যারিসন/সদরদপ্তর | ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সেন্টার, চট্টগ্রাম সেনানিবাস |
ডাকনাম | দি টাইগার্স |
নীতিবাক্য | সৌম্য, শক্তি, ক্ষিপ্রতা |
পতাকা | জমাটবাধা রক্তের রং (বিসিসি ৩৭) |
কুচকাত্তয়াজ | চল চল চল |
বার্ষিকী | ১৫ই ফেব্রুয়ারি |
যুদ্ধসমূহ |
|
কমান্ডার | |
বর্তমান কমান্ডার | ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওবায়দুল হক[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] |
কর্নেল কমান্ড্যান্ট | জেনারেল ওয়াকার উজ জামান (সেনাপ্রধান)[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] |
উল্লেখযোগ্য কমান্ডার | মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী[২] (প্রতিষ্ঠাকালীন অধিনায়ক)
লেফটেনেন্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান বীরউত্তম মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ |
প্রতীকসমূহ | |
ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পতাকা | ![]() |
ইতিহাস
সারাংশ
প্রসঙ্গ
ব্রিটিশ শাসন থেকে পাকিস্তানের স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৪৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট গঠিত হয় যা প্রতিষ্ঠা করেন মেজর আবদুল গণি। ক্যাপ্টেন গণি বাঙালি মুসলমানদের নিয়ে রেজিমেন্ট গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সিনিয়র ব্রিটিশ ও বাঙালি অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে থাকেন। ১৯৪৭ সালে ভারত বিভক্তির পর ব্রিটিশ জেনারেল মেসারভি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর প্রথম সেনাপ্রধান নিযুক্ত হন। আগে থেকেই তিনি ক্যাপ্টেন গণিকে চিনতেন এবং মহাযুদ্ধে বাঙালি সৈনিক, অফিসার ও ক্যাপ্টেন গণির বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা সম্পর্কে অবগত ছিলেন। সে সুবাদে তিনি জেনারেল স্যার মেসারভিকে বাঙালি মুসলমানদের নিয়ে একটি রেজিমেন্ট গঠনের অনুরোধ জানিয়ে পত্র লিখেন। মেসারভি এ প্রস্তাবকে অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে গ্রহণ করেন।[৪][৫] ঢাকায় আসার পর বাঙালি রেজিমেন্ট গঠন করার জন্য ক্যাপ্টেন গণি জোর তৎপরতা শুরু করেন। পাকিস্তানের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন ক্যাপ্টেন গণিকে বাঙালি রেজিমেন্ট গড়ার বিষয়ে আশ্বাস প্রদান করেন। ক্যাপ্টেন গণি সারা পূর্ব পাকিস্তান তিনি ঘুরে বেড়াতে থাকেন উপযুক্ত লোকদের ভর্তি করার জন্য। কঠোর পরিশ্রম করতে থাকেন সঠিক ব্যক্তিকে রিক্রুট করার জন্য, যাতে পাকিস্তানের সব রেজিমেন্টের মধ্যে বাঙালি রেজিমেন্টের সৈনিকরা হয় সেরা। এসব সৈনিকদেরকে ঢাকার কুর্মিটোলায় কঠোর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।[৪][৫]
ক্যাপ্টেন গণি ও অন্য অফিসারদের আপ্রাণ চেষ্টায় মাত্র পাঁচ মাসে প্রথম ইস্ট বেঙ্গল গঠনের সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত করা হয়েছিল। ১৯৪৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম দিকে ব্রিটিশ সেনা অফিসার লে. কর্নেল ভি জে ই প্যাটারসনকে প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক হিসেবে নিয্ক্তু করা হয় এবং রেজিমেন্টের জ্যেষ্ঠ বাঙালি সেনাকর্মকর্তা মেজর আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী[২][৬] সদ্যজাত ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রশিক্ষণ সংস্থা বা ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টাল সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক/কমান্ড্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন, তিনি সর্বপ্রথম ১ম ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে গঠন ও কমান্ড করেন ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ১ম ব্যাটালিয়নে উত্থাপন করেন। ১৯৪৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার কুর্মিটোলা সেনানিবাসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রথম ব্যাটালিয়ন ১ ইস্ট বেঙ্গল, যা "সিনিয়র টাইগার" নামে পরিচিত। তৎকালীন পাকিস্তানের ইতিহাসে অত্যন্ত জাঁকজমকপূর্ণ ও বর্ণাঢ্য এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এ প্রদেশের গভর্নর স্যার ফ্রেডারিক ব্রাবোর্ন, মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিমুদ্দিন, মন্ত্রী নবাব হাবিবুল্লাহ, মন্ত্রী হাসান আলী, মুখ্যমন্ত্রী নুরুল আমিন, মন্ত্রী এস এম আফজাল, মন্ত্রী হবীবুল্লাহ বাহার চৌধুরী, মন্ত্রী আবদুল হামিদ, সামরিক বাহিনীর উপ-আঞ্চলিক অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার আইয়ুব খান (পরে পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি), উচ্চপদস্থ সব সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা। পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের পর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পতাকা উত্তোলন করেন গভর্নর ফ্রেডারিক ব্রাবোর্ন।[৪][৫]
১৯৬৫ ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধ
১৯৬৫ সালের ভারত–পাকিস্তান যুদ্ধে ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট অংশগ্রহণ করে অত্যন্ত সাহসিকতা প্রদর্শন করে। উক্ত যুদ্ধে প্রথম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টকে বামবাওয়ালি-রাভী-বেদিয়ান খাল (বিআরবি খাল) বরাবর মোতায়েন করে লাহোর রক্ষার দায়িত্ব দেয়া হয়। বারংবার ভারতীয় আক্রমণের মুখেও ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সফলতার সাথে পালন করে। যুদ্ধ শেষে এই রেজিমেন্ট পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সকল ইউনিটের মধ্যে সর্বাধিক বীরত্বসূচক পদক লাভ করে।[৭]
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ
১৯৭১ সালের মার্চ মাসে, পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের উপর সামরিক হামলার প্রতিক্রিয়া সরূপ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট বিদ্রোহ করে। তবে কেউ কেউ পাকিস্তান বাহিনীর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। বিদ্রোহ করা অনেকে পাকিস্তানীদের হাতে নিহতও হন।[৮]
ভূমিকা
ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সেনাবাহিনীর সবচেয়ে বড় সৈন্য বিন্যাস। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল পদাতিক ব্রিগেডেই এই রেজিমেন্টের ব্যাটেলিয়ন আছে। এই রেজিমেন্টের মূল দায়িত্ব হচ্ছে সম্মুখ যুদ্ধে শত্রুকে প্রতিহত ও পরাজিত করা। এই রেজিমেন্ট বৈশ্বিক শান্তি-রক্ষায় বাংলাদেশের অঙ্গীকারও বাস্তবায়ন করছে, যা বাংলাদেশকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বাধিক সৈন্য প্রেরণকারী দেশগুলোর একটি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। [৯]
আরও দেখুন
তথ্যসূত্র
বহিঃসংযোগ
Wikiwand - on
Seamless Wikipedia browsing. On steroids.